Ajker Patrika

উত্তরাখণ্ডে মসজিদ-মাদ্রাসা ভাঙাকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ দাঙ্গায় বহু হতাহত 

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২: ১৩
উত্তরাখণ্ডে মসজিদ-মাদ্রাসা ভাঙাকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ দাঙ্গায় বহু হতাহত 

ভারতের উত্তরাখণ্ডে একটি মাদ্রাসা ও সংলগ্ন একটি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গায় আড়াই শতাধিক মানুষ হতাহত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এখন পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছে। রাজ্যের হালদাওয়ানি জেলার স্থানীয় পৌর কর্তৃপক্ষ মাদ্রাসা ও মসজিদটি বেআইনিভাবে তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে ভাঙতে গেলে এই দাঙ্গা ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এ ঘটনার পর এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং দাঙ্গাকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় ইন্টারনেট পরিষেবাও। ঘটনাস্থলের আশপাশের স্কুলও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কর্তৃপক্ষ বুলডোজার নিয়ে বনভুলপুরার ‘মালিক কে বাগিচা’ এলাকার মাদ্রাসা ও মসজিদ ভাঙতে আসে। এ সময় সেখানে থাকা স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষকে জানায়, সেখানকার মসজিদ ভেঙে ফেলার কোনো আদেশ আদালত দেয়নি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের কথা শুনতে প্রস্তুত ছিল না। 

স্থানীয়রা জানান, কর্মকর্তারা মাদ্রাসার ভবন ভাঙার আদেশের কাগজপত্র দেখাতে অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের কথা-কাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টি সংঘর্ষে রূপ নেয়। একজন প্রত্যক্ষদর্শী দ্য ওয়্যারকে বলেন, ‘আমাদের নারীদের পুরুষ পুলিশ সদস্যরা লাঠিপেটা করেছে এবং অন্তত চারজন পুরুষ ওই এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।’ 

স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিস্থিতি সন্ধ্যার দিকে শান্ত হয়ে যাওয়ার পরও রাতের বেলায় পুলিশ তাদের দরজায় গুলি করেছে। এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা যখন রাতে আমাদের ঘরে ছিলাম, তখনই পুলিশ আমাদের দরজায় গুলি করেছে। আমরা একটা ভয়ের পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছি, এটা বন্ধ হওয়া উচিত।’ 

স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে অন্তত ৫০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা, পৌরসভার কর্মী। বাদ পড়েননি সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সংবাদকর্মীরাও। পুলিশের ভাষ্য, স্থানীয়রা পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগকে ‘বেআইনি কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। 

পুলিশের বক্তব্যের জন্য স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে দ্য ওয়্যার যোগাযোগ করলেও পুলিশ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। 

এই সংঘর্ষের সূত্র ধরে স্থানীয়রা নিকটবর্তী পুলিশ স্টেশনের বাইরে থাকা যানবাহনে আগুন দেয়। সামগ্রিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সেখানে কারফিউ জারি করা হয়। নৈনীতালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বনভুলপুরায় কারফিউ জারির নির্দেশ দিয়েছেন। 

বনভুলপুরার যে মাদ্রাসাটি ভাঙা হয়েছে, তা মূলত একটি রেলওয়ে কলোনির অংশ। সেখানে প্রায় ৪ হাজার পরিবার বসবাস করে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রেলের জন্য এই কলোনির জমি অধিগ্রহণ করার চেষ্টা করে আসছে। বিষয়টি নিয়ে এর আগে একবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত