মণিপুরে ধর্ষণের পর জীবন্ত পোড়ান হলো ৩ সন্তানের জননীকে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ০৭
Thumbnail image
গত বছরের মে মাসেও মণিপুরে এক নারীকে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ভারতের এই রাজ্যটিতে এ ধরনের ঘটনা প্রায় নিয়মিতই ঘটছে বছর খানেক ধরে। ছবিটি গত বছরের জুলাই মাসের ২১ তারিখে তোলা। ছবি: এএফপি

ভারতের মণিপুর রাজ্যে ধর্ষণের পর জীবন্ত পোড়ানো হয়েছে তিন সন্তানের জননীকে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাতে। মণিপুরের জিরিবাম জেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় মেইতেই গোষ্ঠীর সশস্ত্র সদস্যরা এ কাজ করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে মেইতেই গোষ্ঠীর একদল সশস্ত্র সদস্য ৩১ বছর বয়সী ওই স্কুলশিক্ষিকাকে ধর্ষণ করে। পরে তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি স্বামী, এক শিশুসন্তান ও দুই কন্যার সঙ্গে বসবাস করতেন। এ ঘটনার পাশাপাশি মেইতেই গোষ্ঠীর সদস্যরা গ্রামের ২০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পুলিশের কাছে ওই নারীর স্বামী একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারীকে ‘সশস্ত্র মেইতেই সন্ত্রাসীরা’ ধর্ষণ করে এবং পরে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে হত্যা করে। এক পুলিশ কর্মকর্তা দ্য টেলিগ্রাফকে বলেছেন, ‘গায়ে আগুন দেওয়ার কারণে ওই নারী মারা গেছেন। তাঁর লাশ পরিবারের কাছে রয়েছে।’

পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘মৃত্যুর কারণ বিস্তারিত জানার জন্য আমরা ময়নাতদন্তের জন্য ওই নারীর মরদেহ আসামের শিলচরে পাঠানোর চেষ্টা করছি।’ তিনি জানান, পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত। পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি, কীভাবে ওই নারী পুড়েছেন এবং কতগুলো বাড়ি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ২০টি বাড়ি পুড়ে গেছে বলে আমরা খবর পেয়েছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করার পর প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে। জিরিবাম জেলার পুলিশ সুপারের উদ্যোগে স্থানীয় মেইতেই ও হামার জনগোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু করার ঠিক আগে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল। এলাকায় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সিআরপিএফ, আসাম রাইফেলস এবং পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, হামার, কুকি ও জুমি—একই জাতি গোষ্ঠী জু’র অন্তর্ভুক্ত। এর আগে, গত ১৯ অক্টোবর কুকি-জো-হামার গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধ হয়। এরপর থেকে পরিস্থিতি তুলনামূলক শান্ত ছিল। হামার গোষ্ঠীর এই স্কুলশিক্ষিকাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

মণিপুরে বছরের বেশি সময় ধরে মেইতেই ও অন্যান্য জনজাতির মধ্যকার সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩৮। এ ছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৬০ হাজারে বেশি মানুষ। গত বছরের মে মাসে মণিপুরে এই দাঙ্গা শুরু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত