কৃষকদের দিল্লিযাত্রা ঠেকাতে নয়ডার সীমান্ত বন্ধ, হরিয়ানায় ব্যারিকেড

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪: ১৩
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫: ৪৬

বেশ কয়েকটি দাবিদাওয়া নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মিছিল করে প্রবেশের পরিকল্পনা করেছেন নয়ডার কৃষকেরা। কিন্তু তাঁদের এই যাত্রা ঠেকাতে দিল্লি-নয়ডা সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তাকর্মীরা যানবাহনে তল্লাশি করছেন। এতে দিল্লি-নয়ডা সীমান্তে ব্যাপক যানজটের খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

দিল্লিতে কৃষকদের প্রবেশ এবং যেকোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে ব্যাপক তৎপর ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ছাড়াও বিশেষ ফোর্সের কর্মীদেরও ডাকা হয়েছে। ঘটনাস্থলে রয়েছে দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশের বিশেষ যান। চারপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন।

দিল্লিতে ঐতিহাসিক প্রতিবাদের তিন বছর পর কৃষকেরা আবারও বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে আরেক দফা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রতিবেশী হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশে পুলিশ বিক্ষোভকারী কৃষকদের পৃথক কয়েকটি দলকে আটকানোর ব্যবস্থা করেছে। কৃষকেরা যেন কোনোভাবেই দিল্লিতে প্রবেশ করতে না পারেন তা নিশ্চিত করার জন্য সীমান্তে রাখা হয়েছে সিমেন্ট, বালুর ব্যাগ এবং কাঁটাতার।

নয়ডার কৃষকদের দাবি, স্থানীয় উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তাঁদের জমি অধিগ্রহণ করলেও কৃষকদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। তাই ক্ষতিপূরণের মাত্রা বাড়ানো এবং উন্নত প্লটের দাবিতে নয়ডার কৃষকেরা কয়েক মাস ধরেই বিক্ষোভ করছেন। দাবি আদায়ে তারা আজ সংসদে মিছিল করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

কৃষকদের সীমান্তে জড়ো হওয়া বা দিল্লিতে প্রবেশ বন্ধ করতে নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ জারি করেছে নয়ডা পুলিশ। যানবাহন চলাচলের একটি নির্দেশনা জারি করে পুলিশ বলেছে যে, কৃষকদের আন্দোলনের কারণে যাত্রীরা চলাচলে অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে।

নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার আদেশে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা হৃদেশ কাথেরিয়া বলেছেন, দেশবিরোধী শক্তিগুলোর শান্তি বিঘ্ন করার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তায় জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা শিবহারি মীনা বলেছেন যে, নয়ডা-দিল্লির সীমান্তজুড়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পুরো সীমান্ত ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করা হয়েছে। দিল্লির দিকে যাওয়া সমস্ত যানবাহনে তল্লাশি চলছে। সাধারণ মানুষ যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হয় তার জন্য আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করছি।’

গত মঙ্গলবার দিল্লিতে কৃষকেরা প্রবেশের চেষ্টা করলে হরিয়ানার সঙ্গে দিল্লি সীমান্তে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এবারও কৃষকদের বাধা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। হরিয়ানা পুলিশ নোটিশ জারি করে প্রতিবাদে যোগ না দেওয়ার জন্য কৃষকদের বলেছে। হুমকি দিয়ে এটাও বলা হয়েছে যে, প্রতিবাদে যোগ দিলে কৃষকদের ‘বিশাল ক্ষতি’ হবে।

ফসলের জন্য ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের (এমএসপি) গ্যারান্টি দেওয়ার আইন, কৃষকদের জন্য পেনশন, শস্যবিমা এবং কৃষকদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত এফআইআর বাতিলের দাবিতে গত মঙ্গলবার ট্রাক্টর মিছিলের পরিকল্পনা করেছিলেন হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের কৃষকেরা। হরিয়ানা পুলিশ পাঞ্জাবের সঙ্গে সীমান্তে কৃষকদের আটকাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সহায়তা চেয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া সম্মিলিত কিষান মোর্চা এই বিক্ষোভে অংশ নয়। এই আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছে সম্মিলিত কিষান মোর্চা (অরাজনৈতিক)। হরিয়ানার বেশ কয়েকটি কৃষক দলও এই বিক্ষোভে যোগ দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত