Ajker Patrika

‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গঠনের লক্ষ্যেই দেশটির এই আগ্রাসন: রুশ দার্শনিক দুগিন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১৪: ২০
‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গঠনের লক্ষ্যেই দেশটির এই আগ্রাসন: রুশ দার্শনিক দুগিন

রুশ দার্শনিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক আলেকজান্দর দুগিন লেবাননে ইসরায়েলি স্থল অভিযানের বেশ আগেই এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি বলেছিলেন, লেবাননে এই অভিযান কেবল সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এটি আরও সম্প্রসারিত হতে পারে, যাতে ইসরায়েলের বর্তমান শাসকশ্রেণি একটি ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গঠন করতে পারে। 

রুশ ভাষায় লেখা দুগিনের নিবন্ধের ভিত্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে লেবাননের সম্প্রচারমাধ্যম আল-মায়েদিন। দুগিনের লেখা নিবন্ধটির শিরোনাম হলো, ‘নাসরুল্লাহর মৃত্যু ইসরায়েলের বিপর্যয়কর উত্থানের ইঙ্গিত’। এতে তিনি বলেছেন, ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ তৈরির লক্ষ্যে আঞ্চলিক সম্প্রসারণের উচ্চাকাঙ্ক্ষার অংশ হিসেবে ইসরায়েল লেবানন ও তার বাইরে স্থল আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। 

দুগিন বলেন, মধ্যপ্রাচ্য ‘প্রতিরোধের অক্ষ’ বলে যে জোট আছে, সেটির প্রতি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সমর্থন ব্যাপক। হিজবুল্লাহর নেতা হিসেবে প্রয়াত হাসান নাসরুল্লাহ পুরো মুসলিম বিশ্বে ইসরায়েলবিরোধী প্রতিরোধের একজন অগ্রসেনানী ছিলেন। তিনি বলেন, ক্ষমতার ভারসাম্যের ক্ষেত্রে এমন এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহর হত্যাকাণ্ড কেবল লেবানিজ প্রতিরোধের জন্য নয় বরং প্রতিরোধের বৃহত্তর অক্ষের জন্য একটি বড় উসকানি হিসেবে বিবেচিত হবে। 

ইরানের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়টি স্মরণ করে দুগিন বলেন, ইসরায়েল তার আঞ্চলিক প্রতিপক্ষগুলোকে যেভাবে আক্রমণ করছে, সেই চিত্র সাধারণ নয়। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল খুব কার্যকরভাবে, সুনির্দিষ্টভাবে এবং একটি সমন্বিত পদ্ধতিতে কাজ করে। তবে এ ক্ষেত্রে সামষ্টিকভাবে পশ্চিমা বিশ্বের যে সমর্থন ইসরায়েলের প্রতি আছে এবং তারা যেভাবে তাদের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগত উপায়গুলো ইসরায়েলকে ব্যবহার করতে দেয়, তার জন্য তারা একটি ধন্যবাদ পেতেই পারে।’ 

দুগিন উল্লেখ করেন, যেহেতু তারা (পশ্চিমা বিশ্ব) প্রযুক্তিতে অগ্রগামী ছিল এবং রয়ে গেছে, ‘তাই কীভাবে এর (ইসরায়েলের) মোকাবিলা করা হবে তা ভাবাই অনেক কঠিন’। বিশেষ করে প্রযুক্তিগত দিক থেকে উন্নত দেশগুলোর নাগরিকেরা যখন চাইলেই ইসরায়েলের নাগরিক হতে পারে, তখন তা মোকাবিলা করা আসলেই কঠিন। 

রুশ এই দার্শনিক আরও বলেন, ‘অন্য কথায়, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ইহুদিবাদের আদর্শের সঙ্গে একমত সমর্থকদের এক বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক থেকে ইসরায়েল উপকৃত হয়। এটি ইসরায়েলকে কেবল একটি রাষ্ট্র হিসেবে নয়, একটি নেটওয়ার্ক কাঠামো হিসেবেও একটি বড় সুবিধা দেয়।’ 

এই রাজনীতি বিশ্লেষক বলেন, ইসরায়েলের পদক্ষেপগুলো মূলত তারা যেসব অঞ্চল দখল করেছে সেখানকার (ইহুদিবাদী) চরমপন্থী দলগুলোর সমর্থনে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ তৈরির একটি ইহুদিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা পরিচালিত। দুগিন ব্যাখ্যা করেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তাঁর মন্ত্রীরাসহ এই কট্টরপন্থী দলগুলো মসীহের আগমনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ কারণে তাদের একটি লক্ষ্য এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করা এবং ‘থার্ড টেম্পল’ বা তৃতীয় মন্দির তৈরির জন্য আল-আকসা মসজিদকে ধ্বংস করা। 

দুগিন আরও বলেন, ইসরায়েল আঞ্চলিক সম্প্রসারণ এবং ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ তৈরি করার উচ্চাকাঙ্ক্ষার অংশ হিসেবে লেবানন এবং তার বাইরে স্থল আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সম্ভবত এখন লেবানন এবং তার বাইরে ইসরায়েলের স্থল আক্রমণ দেখা যাবে সি-টু-সি বা সমুদ্র থেকে সমুদ্রে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ তৈরি করার জন্য। নেতানিয়াহু, তাঁর কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রী স্মতরিচ এবং বেন গভিরের প্রকল্পগুলো যতই ইউটোপিয়ান চরমপন্থী হোক না কেন, এগুলো এখনই আমাদের চোখের সামনে বাস্তবায়িত হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত