পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগের বিচারকে অবৈধ বলে রায় দেওয়ার পরদিনই তাঁর জামিনের আবেদন গ্রহণ করলেন সুপ্রিম কোর্ট। আজ বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন ইমরান খানের আইনজীবী নাইম পানজুথা। 

এক্স প্ল্যাটফর্মে তাঁর আইনজীবী বলেন, উভয় পক্ষের যুক্তিতর্কের পর পরবর্তী শুনানিতে সিদ্ধান্ত আসবে। জামিন আবেদনের বিষয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়াও নেবে সুপ্রিম কোর্ট। তবে শুনানির জন্য কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। 

সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরানের খানের বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা আছে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তোশাখানা থেকে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির অভিযোগে গত ৫ আগস্ট তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনের মামলায় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে কারাগারের ভেতরে আদালত বসিয়ে ইমরান খানের বিচার যেভাবে করা হচ্ছে, সেটাকে বেআইনি ঘোষণা করেছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। 

তার মানে, এই বিচারপ্রক্রিয়া আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। গত মাসে রাষ্ট্রীয় গোপনীয় নথি ফাঁসের মামলায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়।

• ‘ইমরানকে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে’

ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত একটি গোপন তারবার্তা পাঠান ইসলামাবাদে। কিন্তু ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত বছর তাঁর বিরুদ্ধে সেই তারবার্তা ফাঁস করার অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে এ মামলা করা হয়।

পারমাণবিক অস্ত্রধারী পাকিস্তানে দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতার কেন্দ্রে ছিলেন ইমরান খান। পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হারার পর ২০২২ সালে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। ইমরান তখন বলেছিলেন, সেনাবাহিনীর শীর্ষ পদে নিয়োগের ব্যাপারে জেনারেলদের সঙ্গে মতানৈক্যের ফলেই তাঁকে পদচ্যুত করা হয়েছে। ইমরান তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগকে অস্বীকার করে বলেছেন, রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই সেনাবাহিনীসহ তাঁর শত্রুরা এসব মামলা সাজিয়েছে।

• সাইফার মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ইমরান ও কোরেশি, হতে পারে মৃত্যুদণ্ডও 

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে ১৯8৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাকিস্তানের শাসনক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করা সেনাবাহিনী।

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির পার্লামেন্ট নির্বাচনে ইমরান খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। তবে তাঁর দল পিটিআই নওয়াজ শরিফের দলের মুখোমুখি হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ১৯৯৯ সালের অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ২০১৭ সালে আদালতের রায়ে আবারও ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। চার বছর স্বেচ্ছা নির্বাসনের পর গত মাসে দেশে ফিরেছেন নওয়াজ শরিফ।