ট্রাম্পের অধীনে কেমন হবে ইসরায়েল–মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি

অনলাইন ডেস্ক    
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২: ৩৬
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ০৭
গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় আহত এক নারীকে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁর স্বজনেরা। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে চলছে গণনা। বিভিন্ন জরিপে কমলা হ্যারিসকে এগিয়ে থাকতে দেখা গেলেও ভোটের ময়দানে এখনো পর্যন্ত এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত কমলা হ্যারিস ২১০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে এগিয়ে আছেন। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর চেয়ে ৩৬ ভোট বেশি, অর্থাৎ ২৪৬টি আসনে এগিয়ে আছেন।

এই পরিস্থিতিতে নিউইয়র্ক টাইমসের ‘প্রেসিডেনশিয়াল ফোরকাস্ট’ বা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভবিষ্যদ্বাণী বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পই যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাঁর জয়ের সম্ভাবনা ৯৫ শতাংশের বেশি বলে দেখিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। একই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমটি অনুমান করছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩০৬টির মতো ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কে হবেন তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে আগামী দিনে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কেমন হবে এবং একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি কেমন হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের দৃঢ় সমর্থক। তাঁর আমলেই মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে বিতর্কিত জেরুসালেমে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। তিনি আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের শান্তিচুক্তির উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু উপেক্ষা করে গেছেন ফিলিস্তিনিদের অধিকার। কেবল তাই নয়, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আগ্রাসনকেও সমর্থন দিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও তিনি বলেছেন, এই সংঘাত দ্রুত শেষ হওয়া উচিত।

ট্রাম্পের অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তিনি ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষায় অতি তৎপর। সেই তুলনায় ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ তাঁর কাছে নগণ্য। ফলে, তিনি দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে যুদ্ধ বন্ধ হবে এমন আশা না করাই ভালো।

একই সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে গিয়েছিলেন। ফলে আগামী দিনে ইসরায়েল যদি ইরানে হামলা চালাতে চায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাতে বাধা দেবে—এমন আশা না করাই যৌক্তিক। ট্রাম্প ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ঘোরতর বিরোধী। তিনি প্রেসিডেন্ট হলে হয়তো যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত হবে না, কিন্তু ইসরায়েলকে দিয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লেবানন ও গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ ইসরায়েলকে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এ বিষয়ে ট্রাম্পের অবস্থান কী হতে পারে তা এখনো নিশ্চিত হয়। তবে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলাপকালে তাঁকে বলেছেন—তিনি প্রেসিডেন্ট হয়ে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার আগেই যেন এসব অঞ্চলে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ হয়।

আবার এই ট্রাম্পই নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফ্লোরিডায় সাক্ষাৎকালে বলেছিলেন, ‘নেতানিয়াহু লেবানন ও গাজায় যা মন চায় করতে পারেন।’ ফলে, মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে লেবানন ও গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে ট্রাম্পের অবস্থান কী হবে তা একেবারেই ধোঁয়াটে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত