Ajker Patrika

আন্তর্জাতিক এআই সনদে স্বাক্ষর করেনি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১: ৫৯
ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত এআই সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের নেতারা। ছবি: রয়টার্স
ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত এআই সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের নেতারা। ছবি: রয়টার্স

ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ঘোষণা করা আন্তর্জাতিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সনদে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে এআই উন্নয়নে উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া ওই ঘোষণায় ফ্রান্স, চীন ও ভারতসহ ৬০টি দেশ স্বাক্ষর করেছে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার বিবিসি জানিয়েছে, ঘোষণার সব অংশের সঙ্গে একমত হতে পারেনি যুক্তরাজ্য। তাই তারা শুধু জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ উদ্যোগগুলোতে স্বাক্ষর করবে।

এদিকে ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত ওই সম্মেলনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর অতিরিক্ত বিধিনিষেধ প্রযুক্তির বিকাশকে ধ্বংস করে দিতে পারে।’

তিনি জানান, ট্রাম্প প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ এই সুযোগ নষ্ট করবে না। নিরাপত্তার চেয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ভ্যান্স বলেন, ‘এআই উন্নয়নের জন্য এমন বিধিনিষেধ প্রয়োজন যা উদ্ভাবনকে বাধাগ্রস্ত না করে বরং উৎসাহিত করবে। বিশেষ করে ইউরোপীয় নেতাদের উচিত নতুন প্রযুক্তির বিষয়ে আশাবাদী হওয়া, ভীত নয়।’

ইউরোপের নেতাদের মধ্যে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ অবশ্য এআই-এর কঠোর নিয়ম প্রয়োগের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এআই প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের নিয়ম প্রয়োজন।’

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন বলেছেন, ‘এই সম্মেলন বাস্তব পদক্ষেপের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। আর এটিই এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’ তিনি ইউরোপের ‘উন্মুক্ত প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন-ভিত্তিক’ এআই নীতির ওপর জোর দেন।

৬০টি দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির মূল লক্ষ্যসমূহ হলো—এআই প্রযুক্তির সমতা ও প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা। এআই উন্নয়নকে স্বচ্ছ, নিরাপদ ও বিশ্বস্ত করা এবং মানুষ ও পরিবেশের জন্য টেকসই এআই নিশ্চিত করা।

এ ছাড়া প্রথমবারের মতো এআই-এর বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয়টিও আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ভবিষ্যতে অনেক ছোট দেশের সমপরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ করতে পারে বলে এই প্রযুক্তি।

সোথেবির এআই বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রু ডাডফিল্ড বলেছেন, ‘এই ঘোষণায় স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে যুক্তরাজ্য তার নিরাপদ, নৈতিক ও বিশ্বস্ত এআই নেতা হিসেবে অর্জিত অবস্থানকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।’

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় জানিয়েছে—এখনো আলোচনাগুলো সক্রিয় আছে। ফ্রান্সের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের এআই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

এই সম্মেলনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।

যুক্তরাজ্য এখন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি ইউরোপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ার কৌশল অবলম্বন করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত