৪৬তম বি‌সিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি

মো. নুর আলম
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৯: ৫৭
Thumbnail image

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করতে চাইলে ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য’-এর কোনো বিকল্প নেই। বিসিএস প্রিলিমিনারি সিলেবাস অনুযায়ী বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে ৩৫টি প্রশ্ন থাকে। এর মধ্যে বাংলা সাহিত্যে ২০ ও বাংলা ভাষা অংশে ১৫ নম্বর।

বাংলা সাহিত্য
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস এবং এর যুগ বিভাজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন যুগের উল্লেখযোগ্য কবি ও সাহিত্যিক সম্পর্কে জানা আবশ্যক। চর্যাপদের আদ্যোপান্ত, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌, প্রবোধকুমার বাগচী ও সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের অবদান বিস্তারিত পড়তে হবে।
■    মধ্যযুগের মঙ্গলকাব্য, মুসলিম সাহিত্য, অনুবাদ সাহিত্য, জীবনীগ্রন্থ, লোকসাহিত্য ও আরকান রাজসভার গুরুত্বপূর্ণ কবি-সাহিত্যিকদের গুরুত্ব দিয়ে পড়বেন এবং এর সঙ্গে যুগসন্ধিক্ষণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেবেন। প্রাচীন ও মধ্যযুগের ব্যাপ্তি খুব বেশি হলেও এখানে পড়া তুলনামূলক কম এবং একটু বুঝে-শুনে পড়লে ৫-এর মধ্যে ৫ নম্বর পাওয়া যাবে।
■    ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ, উইলিয়াম কেরিসহ অন্যান্য পণ্ডিতের বাংলা সাহিত্যে অবদান সম্পর্কে ভালোভাবে পড়তে হবে।
■    কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক, যেমন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, প্যারিচাদ মিত্র, রাজা রামমোহন রায়, বঙ্কিমচন্দ্র, মাইকেল মধুসূদন, মীর মশাররফ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল, জসীমউদ্‌দীন, বেগম রোকেয়া, শরৎচন্দ্র চ‌ট্টোপাধ‌্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, জীবনানন্দ দাশ, জহির রায়হান, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, মুনীর চৌধুরী, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, শওকত ওসমান, শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, সমরেশ মজুমদার ও বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে সবিস্তর ধারণা রাখতে হবে।
■    এসব লেখকের ব্যতিক্রমধর্মী লেখা ভালো করে পড়তে হবে, যেমন জসীমউদ্‌দীনের কাব্যের থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে স্মৃতিকথা, উপন্যাস, নাটক, ভ্রমণকাহিনি ও প্রবন্ধের ওপর। এতে যেমন মনে রাখা সহজ হবে, তেমনি ব্যতিক্রমধর্মী প্রশ্ন এলেও ভালো করা যাবে।
■    আহমদ ছফা, আনিসুজ্জামান, হুমায়ুন আজাদ, আহমদ শরীফ, বদরুদ্দিন ওমর, আবদুল্লাহ আল মামুন, জাহানারা ইমাম, আরজ আলী মাতুব্বর ও নির্মলেন্দু গুণ—তাঁদের গুরুত্বসহকারে পড়তে হবে।
■    উল্লেখযোগ্য ঘটনা, চরিত্রসহ বিভিন্ন সময় আলোচিত ও সমালোচিত গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে এবং বাংলা সাহিত্যে যা কিছু প্রথম তা পড়তে হবে।
■    সাহিত্যবিষয়ক সংগঠন, যেমন বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, মুসলিম সাহিত্য সমাজ, হিন্দু কলেজ ও ইয়ংবেঙ্গল, বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতি, পঞ্চপাণ্ডব, সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম, উপাধি, বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনি বিস্তারিত পড়তে হবে।
■    বেঙ্গল গেজেট, দিকদর্শন, কালি ও কলম, কবিতা, সমাচার দর্পণ, সমাচার সভারাজেন্দ্র, সবুজপত্র, লাঙ্গল, মোসলেম ভারত, কল্লোল, সমকাল, বেগম, নবযুগ, হিতকরী, বাংলা একাডেমি পত্রিকা, সওগাতসহ সমকালীন আলোচিত সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশক ও প্রকাশকাল জানতে হবে।
■    মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনভিত্তিক গল্প, কবিতা, গান, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও নাটক খুব গুরুত্বপূর্ণ বিধায় চর্চায় রাখতে হবে।

বাংলা ভাষা
■    সিলেবাসের বিষয় ধরে ধরে প্রথমে বিগত বছরের বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করবেন। ব্যাকরণ অংশটি ভালো করে প্রস্তুতি নিলে সহজেই নম্বর ওঠানো যায়।
■    নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণ (নতুন ও পুরোনো) বইটা খুব ভালো করে পড়তে হবে, বিশেষ করে উদাহরণগুলো ভালো করে পড়তে হবে। সঙ্গে একটি এমসিকিউ বাংলা গাইডও রাখতে পারেন। এতে বিগত বছরে আসা বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান দেখে নিতে পারবেন।
■    বানান ও বাক্য শুদ্ধি, পরিভাষা, সমার্থক শব্দ, ধ্বনি ও বর্ণ, শব্দ, বাগধারা, বাক্য সংকোচন, উপসর্গ, প্রত্যয় ও সন্ধি গুরুত্বসহকারে পড়তে হবে।
■    নিপাতনে সিদ্ধ, বিশেষ নিয়মে গঠিত কিংবা ব্যতিক্রমধর্মী যত নিয়ম আছে সবই পড়তে হবে।
■    বিদেশি শব্দের মধ্যে আরবি, ফারসি, পর্তুগিজ, তুর্কি, ফরাসি ও মিশ্র শব্দ মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। এগুলো সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ।
■    পারিভাষিক শব্দ, সমাস, কারক, বিরাম চিহ্ন, বচন, পুরুষ, দ্বিরুক্তি শব্দ, লিঙ্গ, ণত্ব-ষত্ব বিধান এগুলোও ভালো করে পড়তে হবে। 
■    ব্যাকরণ নিয়ে রচিত বিখ্যাত গ্রন্থ অবশ্যই ভালোভাবে পড়ে যাবেন। ব্যাকরণের কোনো অধ্যায় যদি কারও খুব বেশি কঠিন লাগে, তবে এড়িয়ে যান।

বিসিএস বাংলা ভাষা ও সাহিত্য রেফারেন্স বুক:
■    বাংলা ব্যাকরণ ৯ম-১০ম শ্রেণির বোর্ড বই (নতুন ও পুরোনো সংস্করণ)
■    বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা- ড. সৌমিত্র শেখর
■    অনুশীলন করার জন্য গাইড বই (এমপিথ্রি বাংলা/অগ্রদূত বাংলা/প্রফেসর’স)। 
■    প্রশ্ন ব্যাংক (৩৫-৪৫তম) সমাধান ব্যাখ্যাসহ পড়বেন এবং বিশ্লেষণ করে নতুন কী প্রশ্ন হতে পারে! ভাববেন।

মো. নুর আলম, সহকারী পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন

অনু‌লিখন: জে‌লি খাতুন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত