বর্তমানে কোনো মুক্তিযোদ্ধা সরকারি চাকরিতে কর্মরত নেই: সংসদে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৩, ১৯: ৪১
আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৩, ২০: ১৮

বর্তমানে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকারি চাকরিতে কর্মরত নেই বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধার সর্বশেষ জন্মতারিখ ৩০ মে, ১৯৫৯। সে অনুযায়ী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বিধি মোতাবেক চাকরিকাল হবে ৩০ মে, ২০১৯ পর্যন্ত। বর্তমানে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকারি চাকরিতে বিধি অনুযায়ী কর্মরত নেই। 

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে ঢাকা-১১ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। 

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সসংক্রান্ত ১৭ জানুয়ারি, ২০১৮ সালে পরিপত্র জারি করে বলে জানান আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা বিতরণ আদেশ, ২০২০’ এর নির্দেশনা অনুসরণে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা পরিচালনা করা হয়ে থাকে। উক্ত আদেশে এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সমন্বিত তালিকাভুক্ত এমএএসধারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান করা হয়। চাকরিরত বা চাকরিরত নয় এমন সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জীবিতকাল পর্যন্ত এবং মৃত্যুর পর ওয়ারিশগণ স্ত্রী ও সন্তানগণ ভাতা প্রাপ্য হয়। 

লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে সংসদ কার্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাকল্পে এবং ফোর্সেস গোল-২০৩০ অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে ৮ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান রয়েছে। ভবিষ্যতে বিমান বাহিনীকে যুগোপযোগী ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ফোর্সেস গোল ২০৩০-এর আলোকে আরও উন্নত প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। 

তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাকল্পে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে বর্তমানে দুটি সাবমেরিনসহ ছোট-বড় ৬৫টির অধিক যুদ্ধজাহাজ এবং দুটো হেলিকপ্টার ও চারটি মেরিটাইম এয়ারক্রাফট রয়েছে। 

আনিসুল হক বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে বাজেট বরাদ্দের ওপর ভিত্তি করে পর্যায়ক্রমে ফ্রিগেট, করভেট, অফসোর পেট্রল ভেসেল (ওপিভি), মাইন কাউন্টার মেজার ভেজেল (এমসিএমভি), লার্জ পেট্রল ক্রাফট (এলপিসি), ওশান টাগ, হারবার টাগ, ওয়েল ট্যাংকার, লজিস্টিক শিপ, ফ্লোটিং ক্রেন, হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে ভেসেল ও হোভার ক্রাফট সংযুক্তি পরিকল্পনা রয়েছে। 

জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, প্রণোদনা, পুনর্বাসন, আর্থিক সুবিধা ও কৃষি ঋণ প্রাপ্তির জন্য কৃষকদের নিবন্ধন করে ‘কৃষি উপকরণ কার্ড’ প্রদান করা হয়। সারা দেশে এ কার্ডধারী কৃষকের সংখ্যা ২ কোটি ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৯ জন। 

নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, বোরো মৌসুমে সেচ বাবদ কৃষি খাতে ভর্তুকি (২০ শতাংশ রিবেট) প্রদান করা হয়। ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত বোরো মৌসুমে কৃষি খাতে সেচ বাবদ ১ হাজার ১৩২ কোটি ৭০ লাখ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে। 

সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, জরিপসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে জিরো টলারেন্স নীতিতে তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। বর্তমানে ৫৮টি বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে। বিভাগীয় মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ৩১ জন জরিপ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। 

জরিপের সকল স্তরে ঢাকা জোনের ভূমি মালিকগণ এসএমএস ও ইমেইল পেয়ে থাকেন, যা পর্যায়ক্রমে সকল জোনে প্রয়োগ চলমান রয়েছে বলে জানান ভূমিমন্ত্রী। তিনি বলেন, শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনার আওতায় দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক সভা এবং সেমিনার আয়োজন করা হয়। তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী সেবাগ্রহীতাদের সেবা প্রদান করা হয়। ডাক বিভাগের মাধ্যমে সেবাগ্রহীতার বাসায় ম্যাপ পৌঁছে দেওয়া হয়। জরিপ কার্যক্রম ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে এ ব্যাপারে দুর্নীতি কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম নাজমা আকতারের প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ভূমিসংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন সংশোধনীর জন্য গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। এ আইনটি সংশোধিত হলে সংশ্লিষ্ট মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। 

বর্তমানে সমগ্র বাংলাদেশে ডিজিটাল জরিপ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান ভূমিমন্ত্রী। ডিজিটাল জরিপ হলে মামলা মোকদ্দমার সংখ্যা অনেকাংশে কমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন ভূমিমন্ত্রী। 

কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের কারণে পৃথিবীব্যাপী জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রকৃতি ধ্বংসের বর্তমান ধারা চলতে থাকলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১০ লাখ প্রজাতি বিলুপ্ত হতে পারে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত