শিশুটি মায়ের কাছেই থাকবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২১, ১৮: ০৪

বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর থেকে মায়ের কাছেই ছিল শিশুটি। তার বয়স এখন দশ বছর। দুবছর আগে বিচ্ছেদ হয় বাবা–মার। তবে সম্প্রতি বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পারিবারিক আদালত শিশুটির বাবার কাছে থাকার নির্দেশ দেন। তবে হাইকোর্ট বলেছেন, শিশুটি মায়ের কাছেই থাকবে।

আজ রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এর ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ পারিবারিক আদালতের ওই নির্দেশ বাতিল করে আদেশ দেন।

শিশুটির মায়ের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ কেএম ফখরুল ইসলাম। তিনি জানান, পারিবারিক আদালতের আদেশ বাতিল করে হাইকোর্ট শিশুটিকে মায়ের জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বাবা ইচ্ছে করলে সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। তবে এই নির্দেশে আর কী কী শর্ত আছে তা জানা যায়নি। পূর্ণাঙ্গ আদেশ পাওয়ার পর তা বলা যাবে।

মামলার সূত্রে জানা যায়, শিশুটি মায়ের কাছেই ছিল। এ অবস্থায় ১০ বছর বয়সী কন্যাশিশুটিকে নিজ হেফাজতে নিতে পারিবারিক আদালতে মামলা করেন বাবা। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন পারিবারিক আদালত আদেশ দেন, শিশুটি ২১ দিন বাবার (বাদী) হেফাজতে থাকবে। আর সপ্তাহে দুই দিন শুক্র ও শনিবার শিশুটি মায়ের (বিবাদী) হেফাজতে থাকবে। বাবা শিশুটির স্কুলের অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করবেন।

সন্তানকে নিজ হেফাজতে রাখতে পারিবারিক আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন শিশুটির মা। শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ পারিবারিক আদালতের গত ৩০ জুন দেওয়া আদেশ ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন।

বাদী ও বিবাদীর মধ্যে ২০০৭ সালে বিয়ে হয়। ২০১১ সালে তাঁদের কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। পারিবারিক অশান্তি দেখা দেওয়ায় ২০১৯ সালের ১২ মে তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে শিশুটি মায়ের কাছেই ছিল।

মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের আইনগত অভিভাবক বাবাই, আর মা সন্তানের তত্ত্বাবধায়ক। বাবা–মার বিচ্ছেদ হলে ছেলের ক্ষেত্রে সাত বছর বয়স পর্যন্ত এবং মেয়ে সন্তানের বয়ঃসন্ধি বয়স পর্যন্ত মা সন্তানদের নিজের কাছে রাখতে পারবেন। সন্তানের ভালোর জন্য প্রয়োজনে আদালতের অনুমতি নিয়ে আরও বেশি সময় তিনি রাখতে পারেন। তবে মা দ্বিতীয় বিয়ে করলে সন্তান হেফাজতে রাখার ক্ষমতা হারাবেন।

সন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়ে বিরোধ থাকলে পারিবারিক আদালতের আশ্রয় নেওয়া যাবে। পারিবারিক আদালত আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে সন্তানের কল্যাণ বিবেচনায় বাবা–মা যে কারও কাছে রাখার আদেশ দিতে পারেন আদালত। সন্তানের ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতা হলে তার মতামতকেও আদালত গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত