Ajker Patrika

ধর্ষণের প্রতিবাদে পুলিশের হামলা-মামলা, ২১০ বিক্ষুব্ধ নাগরিকের বিবৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা            
প্রধান উপদেষ্টা বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রধান উপদেষ্টা বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ধর্ষণ ও নিপীড়নের প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশের হামলা, মিথ্যা মামলা এবং কতিপয় গোষ্ঠীর সহিংসতা ও বিদ্বেষমূলক অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ২১০ নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। আজ শনিবার গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, নারীর ওপর হামলা, হুমকি, মব সহিংসতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি যখন প্রতিবাদ করছে, তখন তাদের ওপর পুলিশের নির্মম হামলায় আমরা ক্ষুব্ধ।’

এতে বলা হয়, ‘গত ১১ মার্চ দুপুরে ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে ৯ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা ও স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি ছিল। ওই কর্মসূচিতে নারীদের ওপর পুলিশ নগ্নভাবে আক্রমণ করেছে। কোনো নারী পুলিশের উপস্থিতিও আমরা সেখানে দেখতে পাইনি। হামলার পর আবার ১২ মার্চ পুলিশ সেই আহতদের নামে, ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে এজাহার দায়ের করেছে। এর মধ্যে একজন আসামি হলেন-ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড, যিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলেন না। অথচ গতকাল (শুক্রবার) রাতে ডিবি পুলিশ তাঁর বাসায় গিয়ে এই মামলায় গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে। ফেসবুকে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ তাঁকে কিছু দূর নিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ছেড়ে দেয়।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এর আগেও শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিভিত্তিক আন্দোলন, ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকের আন্দোলন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুপারিশকৃত সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে পুলিশের যে আক্রমণ দেখা গেছে-তা হাসিনা আমলের কথাই মনে করিয়ে দেয়। এ দিকে আবার কতিপয় চিহ্নিত গোষ্ঠী যখন দেশের লেখক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, হত্যার হুমকি দিচ্ছে, মব সন্ত্রাস চালাচ্ছে-তখন পুলিশসহ সরকারি প্রশাসন নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।’

তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা সরকারের এই ভূমিকায় বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। আমরা অবিলম্বে হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচার এবং আন্দোলনকারীদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবি করছি। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশের হামলা-বাধা-মামলার তৎপরতা বন্ধ করে, অগণতান্ত্রিক সন্ত্রাসী বৈষম্যবাদী বিভিন্ন অপশক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’

এই বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেছেন বলে উল্লেখ রয়েছে, তাঁরা হলেন—‘গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. হারুন-অর-রশিদ, আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিন, লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট রেহনুমা আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গীতি আরা নাসরিন, আইনজীবী ও রাজনৈতিক কর্মী হাসনাত কাইয়ুম, চলচ্চিত্র কর্মী বিধান রিবেরু।’

আরও রয়েছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, মানবাধিকার কর্মী ইলিরা দেওয়ান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, সমকালের নির্বাহী সম্পাদক আবু সাইদ খান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক হানিয়্যুম মারিয়া খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামাল চৌধুরী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌভিক রেজা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস ডিসিপ্লিন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সাংবাদিক ও সাবেক ছাত্রনেতা সাখাওয়াত ফাহাদ, ৯০-এর সাবেক ছাত্রনেতা আখতার সোবহান মাসরুর, সাবেক ছাত্রনেতা আশরাফী নিতু প্রমুখ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত