Ajker Patrika

সিদ্ধান্তের পরেও টিসিবির কার্ড পাননি প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২২, ১৬: ৩৮
সিদ্ধান্তের পরেও টিসিবির কার্ড পাননি প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ

এ বছরের রমজান মাসে নিম্ন আয়ের ১ কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) পণ্য সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সে সময় সরকারের আড়াই হাজার টাকা নগদ সহায়তাপ্রাপ্ত ৩৫ লাখ পরিবারকে এই কর্মসূচির আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা জরিপে দেখা গেছে, আড়াই হাজার নগদ সহায়তাপ্রাপ্ত পরিবারগুলোর মধ্যে ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ ফ্যামিলি কার্ড পায়নি। আর যারা পায়নি, তাদের মধ্যে ৮০ দশমিক ৪ শতাংশই অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বাদ পড়ার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) এক ওয়েবিনারে ‘টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির রিসার্চ ফেলো মোহাম্মদ নূরে আলম। 

ওয়েবিনারে জানানো হয়, ঢাকা ও বরিশাল বাদে দেশের ৩৫টি জেলার ১ হাজার ৪৭ জন নিম্ন আয়ের মানুষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এ বছরের ১৮ থেকে ২৬ এপ্রিল এই গবেষণার জরিপ কার্যক্রম চালানো হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এক সভায় করোনার সময় নগদ প্রণোদনা পাওয়া ৩৫ লাখ দরিদ্র কর্মহীন পরিবারকে টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রমজানে ৩৫ লাখ পরিবারের সঙ্গে আরও ৬৫ লাখ পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ১ কোটি পরিবারকে খাদ্যসহায়তা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে এ গবেষণার জরিপে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারী উত্তরদাতা যাঁরা ইতিপূর্বে আড়াই হাজার টাকা নগদ সহায়তা পেয়েছিলেন, তাঁদের ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ ফ্যামিলি কার্ড পাননি। যাঁরা কার্ড পাননি তাঁদের ৮০ দশমিক ৪ শতাংশকে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানান।

জরিপে উত্তরদাতাদের ৫১ দশমিক ৩ শতাংশ মনে করেন, তালিকা প্রণয়নের সময় যোগ্য-হতদরিদ্র ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সচ্ছল ও রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ এবং তাঁদের আত্মীয়স্বজনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ৭৬ দশমিক ১ শতাংশ উত্তরদাতার মতে, তালিকায় সচ্ছল ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর বাইরে ৬৫ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তাঁদের আত্মীয়স্বজনকে এবং ৪৪ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতার মতে, তালিকায় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

অন্যদিকে ফ্যামিলি কার্ড পাওয়া ব্যক্তিদের ৪ শতাংশ জানান, কার্ড পেতে তাঁদের অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হতে হয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে কার্ড পেতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়েছে। ৪ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তাঁরা উপকারভোগী বাছাই কমিটির সদস্য নন এমন ব্যক্তির কাছ থেকে কার্ড পেয়েছেন। এই কার্ডদাতারা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক দলের নেতা।

ওয়েবিনারে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, ব্যবস্থাপনা, নির্দেশনা ও জবাবদিহির ঘাটতি ছিল। অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে এই কার্যক্রম থেকে প্রকৃত নিম্ন আয়ের মানুষ বাদ পড়েছেন। দলীয় রাজনৈতিক বিবেচনায় তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া পরিহার করার পরামর্শ দেন তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ: ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, নিষিদ্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে পন্টিংয়ের আরেকটি রেকর্ড ভাঙলেন কোহলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত