প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে ‘প্রতিবন্ধী কোটা না থাকা সংবিধান পরিপন্থী’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ২২: ৪৮
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২২, ১০: ৪১

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় নারী, পোষ্য ও পুরুষ কোটা থাকলেও প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত কোনো কোটা নেই। বিষয়টি সংবিধান পরিপন্থী বলে মনে করছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিষয়টি তদন্ত করে কমিশনে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।

আজ বুধবার কমিশনের উপপরিচালক সুস্মিতা পাইক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কথা বলা হয়।

চিঠিতে গত ২১ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ না পাওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রত্যাশী। তাঁদের অভিযোগ, শত প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে তাঁরা নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে তাঁদের মৌখিক পরীক্ষায় পাস করানো হয়নি। এতে তাঁরা নিরুপায় হয়ে পড়েছেন। গত ২০ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এসব কথা বলেন। তাঁরা দাবি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে তাঁদের যেন বিশেষভাবে চাকরি দেওয়া হয়। তা না হলে তাঁরা ২৭ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে শিক্ষার যাবতীয় সনদ পুড়িয়ে ফেলবেন।

ওই সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘তাঁরা (প্রতিবন্ধী) বলেন, বহু ত্যাগ ও পরিশ্রম করে তাঁরা উচ্চশিক্ষা অর্জন করেছেন। কিন্তু তাঁদের সনদের কোনো মূল্যায়ন হচ্ছে না। স্বাধীনতার এত বছরেও প্রতিবন্ধীদের জন্য কোনো নীতিমালা না হওয়ায়ও তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গত ১৪ ডিসেম্বর নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়। ৩৭ হাজার ৫৭৪ প্রার্থীকে সহকারী শিক্ষক পদে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। এই নিয়োগে ৬০ শতাংশ নারী কোটা, ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। তবে প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা ছিল না।’

চিঠির শেষাংশে বলা হয়, ‘শত প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে মৌখিক পরীক্ষায় পাস না করিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করার বিষয়টি বৈষম্যের জন্ম দেয়, যা সংবিধান পরিপন্থী ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে কমিশন মনে করে। এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় নারী, পোষ্য এবং পুরুষ কোটা থাকলেও প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত কোনো কোটা না থাকার বিষয়টিও সংবিধান পরিপন্থী। কারণ তারা হচ্ছে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের মধ্যে অন্যতম।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে আগামী বছরের ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত