Ajker Patrika

র‍্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যুর পর মামলা আইনের অপব্যবহার: আইনমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৩, ১৪: ১৫
র‍্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যুর পর মামলা আইনের অপব্যবহার: আইনমন্ত্রী

যুগ্ম সচিব এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনকে র‍্যাব তুলে নেওয়ার পর তাদেরই হেফাজতে তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ওই নারীকে তুলে নেওয়া, র‍্যাব হেফাজতে মৃত্যু ও মামলার প্রক্রিয়া নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এতথ্য জানান।

গত ২২ মার্চ রাজশাহীর বিভাগীয় স্থানীয় সরকার পরিচালক এনামুল হককে সঙ্গে নিয়ে নওগাঁর মুক্তির মোড় এলাকা থেকে ভূমি অফিসের কর্মচারী জেসমিনকে তুলে নেয় র‍্যাব। ওই দিনই রাত সাড়ে ৯টায় জেসমিনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসে র‍্যাব। ২৪ মার্চ সকাল ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। 

এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘নওগাঁর ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের কথা যদি বলেন, তাহলে একটা কথা পরিষ্কার করে বলি, সেটা হচ্ছে যে এই ভদ্রমহিলাকে যখন তুলে নেওয়া, তখন কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলা ছিল না।’

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভদ্রমহিলার অবশ্যই দুর্ভাগ্য ও ট্র্যাজেডি যে, তিনি যখন মারা যান তখনও কিন্তু মামলা ছিল না। মামলা হয়েছে তার পরের দিন। তাহলে ডিজিটাল সিকিউরিটি সিকিউরিটি অ্যাক্টের এখানে অপব্যবহার করা হয়েছে এবং মামলায় কোনো প্রসিড করা হয়নি।’

রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এনামুল হকের মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, জেসমিন তাঁর নামে ফেসবুকে একটি আইডি খুলে প্রতারণা করছিলেন। তবে এই আইডি ভূমি কর্মচারী জেসমিনই খুলেছে কি না সেবিষয়ে পুলিশের কাছে কোনো তথ্য ছিল না।

এনামুল হক কীভাবে নিশ্চিত হলেন যে জেসমিনই ভুয়া আইডি খুলেছিলেন, এমন প্রশ্নে রাজপাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক রুহুল আমিন বলেন, ‘সেটা তো আমরা বলতে পারব না। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো অনুসন্ধান নেই। র‍্যাব হয়তো তদন্ত করছিল, তারা বলতে পারে।’

ওই মামলায় জেসমিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল কি না জানতে চাইলে রুহুল আমিন বলেন, ‘আমরা তো আসামি পাইনি। র‍্যাব নিয়ে এসে হাসপাতালে রেখেছিল। আমাদের তো দেয়নি। তাই গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।

‘তবে মৃত্যুর পর আইনগত প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এই মামলার মাধ্যমেই। আলাদা কোনো মামলা হয়নি।’

মামলা ছাড়া শুধু কারও মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে র‍্যাব কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করে স্বীকারোক্তি নিতে পারে কি না তা জানতে চেয়েছে উচ্চ আদালত। জেসমিনের মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে সংশ্লিষ্ট র‍্যাব সদস্যদের তালিকাও চেয়েছে আদালত। 

সুলতানা জেসমিনের বিরুদ্ধে মামলার বাদী এনামুল হকের দেওয়া এজাহার এবং র‍্যাবের বক্তব্য অনুযায়ী, অফিশিয়াল কাজে নওগাঁ আসার পথে নওগাঁ বাসস্ট্যান্ডে র‍্যাবের টহল দলের কাছে অভিযোগ দেন এনামুল হক। এরপর র‍্যাব তাঁকে নিয়ে অভিযানে যায় এবং নওগাঁর মুক্তির মোড় এলাকা থেকে জেসমিনকে আটক করে। এরপর সেই এলাকাতেই এনামুল হকসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তির উপস্থিতিতে সুলতানা জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে জেসমিন অসুস্থ হয়ে পড়েন।

হাইকোর্ট জানতে চেয়েছেন, সুলতানা জেসমিনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ এবং হাসপাতালে নেওয়ার আগে পর্যন্ত সবকিছু আইনানুগ হয়েছে কি না। রাষ্ট্রপক্ষকে এসব প্রশ্ন সংক্রান্ত আইন ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। আর এ বিষয়ে আগামী ৫ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন নওগাঁ দাবি করেছেন, সুলতানা জেসমিনের উচ্চ রক্তচাপ ছিল, মৃত্যু হয়েছে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে। তবে জেসমিনের মাথায় আঘাতের চিহ্ন এবং ডান হাতের কনুইয়ের কাছে মাংসের ভেতর জমাটবাঁধা রক্ত পেয়েছে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত