দ্বিতীয় ধাপে আরও কমল ভোটের হার, এবার রাজনীতিকে দুষলেন সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৪, ১৮: ১৬
আপডেট : ২১ মে ২০২৪, ১৮: ৩৪

চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। দ্বিতীয় ধাপে ভোট পড়ার হার ৩০ শতাংশের কিছু বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ভোট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিইসি।

সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘বিকেল ৪টায় ভোট শেষ হয়েছে। নির্বাচনে সহিংসতা ঘটেনি, হাতাহাতি হয়েছে দু-একটা জায়গায়। সেখানে একজন কি দুজন আহত হয়ে হসপিটালে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য সহিংসতা হয়নি। নির্বাচন মোটামুটি ভালোই শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৷ নির্বাচনে উপস্থিতির যে হার এটি থার্টি প্লাস হতে পারে। তবে একেবারে নির্ভুল তথ্য আপনারা বুধবার পাবেন।’

পুলিশ ও প্রশাসন তৎপর ছিল জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর ছিল। এবার প্রতিটি কেন্দ্রে বিভিন্ন বাহিনীর অধিকসংখ্যক সদস্য মোতায়েন ছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যেটা সব সময় বলি, টিভিতে তাকিয়ে থাকি। কোথাও কোথাও মিডিয়ার কিছু কর্মীও আহত হয়েছেন। সাহস করে যাঁরা ছবি তুলতে গেছেন তাঁরা হয়তো হেনস্তার শিকার হয়েছেন। আমরা সঠিক তথ্য এখনো পাইনি। হাতাহাতিতে ৩০ জন আহত হয়েছেন, একজন বা দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন। গতকাল রাতে একজনের হাত কেটে গেছে।’

সিইসি আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেখানেই অন্যায়, অনাচার হয়েছে, ভোট কারচুপির চেষ্টা হয়েছে সেখানেই হস্তক্ষেপ করেছে। মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিছু কারচুপির জন্য ১০ জনকে তাৎক্ষণিক কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুইজন নিহত হয়েছেন। এটা ভোটকে কেন্দ্র করে নয়। গরম বা কোনো কারণে। আমরা তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’

প্রথম ধাপে বলেছিলেন ধান কাটা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। এই ধাপে আরও কম পড়ার কারণ কী? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে ৩০ শতাংশ ভোটকে কখনোই উৎসাহব্যঞ্জক মনে করি না। একটা প্রধানতম কারণ হতে পারে, দেশের একটা বড় রাজনৈতিক দল (বিএনপি), তারা প্রকাশ্যে এবং ঘোষণা দিয়ে ভোট বর্জন করেছে। জনগণকে ভোট প্রদানেও নিরুৎসাহিত করেছে।

সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশে এই ধরনের চেষ্টা হতে পারে। পক্ষে-বিপক্ষ থাকতে পারে। ভোট নিয়ে কোনো সংকট নেই। সংকটটি হচ্ছে রাজনীতিতে। আমি মনে করি, রাজনীতি যদি আরও সুস্থ ধারায় প্রবাহিত হয়, আগামীতে হয়তো ভোটের স্বল্পতার যে সমস্যাটুকু, এটা হয়তো কাটিয়ে উঠবে।’

যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশে ভোটারদের স্বশাসনটা বুঝতে হবে—এমন মন্তব্য করে সিইসি বলেন, ‘স্বশাসনটা হচ্ছে, নিজেই নিজেকে শাসন করবে, তাদের নিজেদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে। এটা হচ্ছে সচেতনতা, এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের একটা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। সেদিক থেকে আমরা আশা করি, রাজনীতিতে যে সংকটটা রয়েছে সেটা কাটিয়ে উঠবে এবং সুস্থ ধারায় রাজনীতি প্রবাহিত হবে। ভোটাররা উৎসাহী হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসবে।’

সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এই তথ্য আমাদের কাছে নেই। বাংলাদেশ বিস্তৃত জমিন। কোথাও কোথাও এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আমরা স্বচ্ছতা ও দৃশ্যমানতায় বিশ্বাস করি। আপনারা জনগণের কাছে উপস্থাপনের মতো যেকোনো তথ্য সংগ্রহ করবেন, আমাদের সাপোর্ট আপনাদের প্রতি থাকবে। তথ্যগুলো যদি সঠিক হয়, আমরা সেটা দেখব। বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য আমরা দুঃখিত। মিডিয়া যেন স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে জন্য আমরা আইনও করেছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত