Ajker Patrika

আওয়ামী লীগের হাতে কিছুই নিরাপদ নয়: নুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮: ২৭
আওয়ামী লীগের হাতে কিছুই নিরাপদ নয়: নুর

দুষ্ট চক্রের হাতে শিক্ষাব্যবস্থা চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর। তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থায় ভুলের ইতিহাস আওয়ামী লীগের জন্য নতুন কিছু নয়, এর আগেও তারা করেছে। শুধু শিক্ষা নয়, তাদের হাতে কিছুই নিরাপদ নয়। সিন্ডিকেটের ওপরেই দেশটা চলছে।’

আজ শুক্রবার বিকেলে প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত ‘ভুলে ভরা পাঠ্যবইয়ে বিকৃত ইতিহাস: শিশু-শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সর্বজন গ্রহণযোগ্য লোকদের নিয়ে একটি কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষাক্রমের পরিবর্তন আনার আহ্বান জানিয়ে নুর বলেন, ‘শুধু শিশুরা নয়, গোটা শিক্ষার ভবিষ্যৎ কোন দিকে, সেটাই এখন বড় কথা। এর আগে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে তাকাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক হওয়ার জন্য এমপি থেকে শুরু করে শ্রমিকনেতার কাছে যাচ্ছেন শিক্ষকেরা। ভালো মেধা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি দলের অনুসারী না হওয়ায় নিয়োগ হচ্ছে না। এমনটি চলতে থাকলে কীভাবে ভালো কিছুর আশা করতে পারি আমরা।’ 

নুরুল হক নুর বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কাদের দখলে, সেটা ভাবতে হবে। যে বই ছাপানো হচ্ছে, সেটি পার্শ্ববর্তী ভারতে গিয়ে হচ্ছে। এ দেশের ঠিকাদারেরা পাচ্ছে না। শিক্ষাব্যবস্থা কী হবে, প্রতিবেশী দাদারাই নির্ধারণ করছে। যে ভুলের কথা হচ্ছে, এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মূলত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে ধর্মীয় নেতাদের রাস্তায় নামিয়ে সংঘাত সৃষ্টি করে কর্তৃত্ববাদীদের দেখাতে চায় সরকার। সেখান থেকে ফায়দা তুলে পুনরায় ক্ষমতায় যেতে চায় আওয়ামী লীগ।’ 

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পেশাজীবী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও এডুকেশন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (ইআরএফ) চেয়ারম্যান শামসুল আলম। 

মূল প্রবন্ধ তুলে ধরে শামসুল আলম তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় অত্যন্ত চমৎকার ও সুদীর্ঘ ইতিহাস থাকলেও অত্যন্ত সুকৌশলে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে দীর্ঘদিন ধরে যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তার পরিপূর্ণ বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এবারের পাঠ্যক্রমে। ইসলামবিদ্বেষ, মুসলিম ইতিহাসের বিকৃতায়ন এবং বিকৃত যৌনাচার—এই তিন উদ্দেশ্য সামনে রেখে এবারের শিক্ষাব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। এর বাইরেও ভুলে ভরা বইগুলোতে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও সংবিধান নিয়ে বানোয়াট, মনগড়া ও বিকৃত সব ইতিহাসের ছড়াছড়ি রয়েছে। এমনকি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যাপারেও ভুলভাল তথ্য দেওয়া হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘ইসলামে পর্দাকে জরুরি করা হলেও সপ্তম শ্রেণির রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের লেখা ‘অবরোধবাসিনী’ গল্পের মাধ্যমে পর্দার বিধানের প্রতি বিদ্বেষ ও তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। বৌদ্ধধর্ম ও তার শাসনব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, তাদের মুদ্রা, মন্দির, স্থাপনা, ধর্মীয় দেবীর ছবি, বৌদ্ধবিহার আর মন্দিরের ছবি রয়েছে পুরো বইজুড়ে। ছবি ও ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে নগ্ন ও অর্ধনগ্ন ছবিই বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে মসজিদের ছবি এসেছে মাত্র তিনটি।’ 

শামসুল আলম বলেন, ‘ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাসের বইগুলোতে মুসলমান শাসন আমল নিয়ে বিষোদ্‌গার করা হয়েছে। মুসলিম বিজেতা ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজীকে দখলদার হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’ 

বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে বইগুলো যাওয়ার আগে কয়েক ধাপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হওয়ার কথা। সেখানে এত এত ভুলে ভরা বই কীভাবে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেন? তাই বোঝা যায়, এটি ভুল নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে। জাতিকে মেধাশূন্য করার এটা গভীর যড়যন্ত্র। এটি বাংলাদেশের নয়, পার্শ্ববর্তী দাদাদের দেওয়া পাঠ্যক্রম। 

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, চৌর্যবৃত্তির সর্বোচ্চ সীমা ছাড়িয়েছেন জাফর ইকবাল। জাতিকে শিকলে বন্দী করার যে ফন্দি আঁটছেন তাঁরা, সেটি প্রতিহত করতে হবে। এ জন্য দল-মতনির্বিশেষে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ: ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, নিষিদ্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে পন্টিংয়ের আরেকটি রেকর্ড ভাঙলেন কোহলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত