কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
নির্বাচনকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হয়েছে। আইন পাস করে এবারই প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেছেন।
কোটালীপাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মূল শক্তি ও সাহস হচ্ছে টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়াবাসী। আর বাংলাদেশের জনগণ তো আছেই। এ জন্য আমি সর্বক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছি। আপনাদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আপনারা আমার নির্বাচনী এলাকার দায়িত্ব নিয়েছেন বলেই আমি সারা দেশের কথা ভাবতে পারছি। আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আপনারা আমাকে প্রার্থী করেছেন। আগামী ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। এর আগে ভোট চাওয়া যায় না। নির্বাচনী একটি শৃঙ্খলা আছে। আমাদের সেই শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। আমরা নির্বাচনকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে এসেছি। আমরা আইন পাস করে এবারই প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। এটাকে স্থায়ীভাবে রূপ দেওয়াটাই আমাদের উদ্দেশ্য।’
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশকে যেভাবে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে মারল। মারতে মারতে যখন বেহুঁশ হয়ে গেছে, তখন তাঁর মাথা থেকে হেলমেট ফেলে দিয়ে কোপাল। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স পোড়ানো হলো। সেখানে পুলিশদেরও আহত করা হলো। এমনকি সাধারণ রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা করা হলো। এই হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের চরিত্র। তাদের ওপর জনগণের আস্থা-বিশ্বাস থাকবে কীভাবে? এদের আন্দোলন মানেই জ্বালাও-পোড়াও। এদের শিক্ষাটা বোধ হয় ইসরায়েলের কাছ থেকে নেওয়া। ইসরায়েলেরা হাসপাতালে বোম্বিং করে নারী, শিশু, রোগীদের আহত করেছে। সেখানেও কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের ওপর আক্রমণ হয়েছে। ছোট ছোট শিশুসহ যেভাবে মানুষ হত্যা করছে। বিএনপি-জামায়াত বোধ হয় ইসরায়েলের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘২০০৭ সালে খালেদা জিয়ার ছেলে মুচলেকা দিয়ে চলে গেল লন্ডন। তখন বলল, আর জীবনে রাজনীতি করব না। এখন ওখানে বসে হুকুম দিয়ে দিয়ে মানুষ হত্যা করাচ্ছে। জিয়াউর রহমান যেমন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনীর অফিসার, সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে। ঠিক একইভাবে জিয়ার বউ ক্ষমতায় এসে আমাদের আন্দোলনরত নেতা-কর্মীদের হত্যা করে। আর তার ছেলেও এখন একই কাজ করছে। জিয়া পরিবার পুরোটাই একটি খুনি পরিবার। তারা মানুষ খুন আর দুর্ভোগ ছাড়া আর কিছুই চায় না। নিজেরা ক্ষমতায় থেকে সমানে অর্থ বানিয়েছে, সম্পদের পাহাড় গড়েছে। এরা মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। এটাই তাদের চরিত্র।’
নিজের শাসনামলের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা দেশের অনেক উন্নয়ন করেছিলাম। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর আমরা দেশটি যেখানে রেখে গিয়েছিলাম, সেখান থেকে আবার পিছিয়ে পড়েছিল। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা কমে গিয়েছিল, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গিয়েছিল। একে একে সবকিছু আবার পেছন দিকে চলে গিয়েছিল। আমাদের ছিল ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। আর সে আন্দোলনে আমরা সফল হয়েছি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশকে নিয়ে জাতির পিতা শূন্য হাতে যাত্রা শুরু করেছিলেন। তখন একটি টাকাও রিজার্ভ মানি ছিল না। কোনো খাবার ছিল না। তখন কোনো ফসল হয়নি। রাস্তাঘাট কিছুই ছিল না। যা ছিল তা-ও ধ্বংসস্তূপ। ওই অবস্থায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন দেশে ফিরে আসলেন, তখন তিনি এই ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে দায়িত্বভার নিয়েছিলেন। ওই সময় একজন বিদেশি সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, দেশে তো কিছুই নাই, কোনো রিসোর্স নেই, আপনি কীভাবে এ দেশ গড়ে তুলবেন? তখন জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘‘আমার মাটি আছে, দেশের মানুষ আছে। আমি মাটি ও মানুষ দিয়ে এ দেশ গড়ে তুলব।”’
দেশে ফিরে আসার কথা বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘১৯৮১ সালে আমি যেদিন বাংলাদেশে ফিরে আসি, সেই দিন ঘোষণা দিয়েছিলাম বাংলাদেশের মানুষ আমার আপনজন, তারাই আমার আত্মীয়। আমি সেই দিন বাংলাদেশের সকল মানুষ ও মুজিব আদর্শের সৈনিকদের ভালোবাসার ছোঁয়া পেয়েছিলাম। এরাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। বাংলাদেশে আসার পর আমার চলার পথ মসৃণ ছিল না। যে ঘাতকেরা আমার বাবা-মাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, তাদের বিচার হবে না। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে, বিচার হতে রেহাই দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭১ সালে যারা গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগ করে বাংলাদেশের সম্পদ পুড়িয়েছে, লুটপাট করেছে, নারীদের ওপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছে। সেই সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুরু করেছিলেন। সেই বিচার পরবর্তীতে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সময় যারা জেলখানায় ছিল, তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তারাই তখন কেউ প্রধানমন্ত্রী, কেউ মন্ত্রী, কেউ উপদেষ্টা, আবার কেউ সরকারের উচ্চপর্যায়ে বসা ছিল। সেই অবস্থায় আমি বাংলাদেশে ফিরে আসলাম। তখন আমাকে অনেকেই দেশে ফিরতে নিষেধ করেছিলেন। অনেকেই বলেছিল, আপনি যাচ্ছেন আপনার কী হবে! তখন আমি আমার মনের তাগিদে দেশে ফিরে এসেছিলাম। আর সেই দিন আমার ছোট বোন রেহানা বলেছিল আমি বাচ্চাদের দেখব। তুমি দেশে ফিরে যাও।’
নিজের জীবনের ওপর হামলার কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বারবার আমি মৃত্যুকে সামনে দেখেছি। এই কোটালীপাড়াই বিশাল বিশাল বোম মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছিল। একজন সামান্য চায়ের দোকানদার খুঁজে বের করল সেই বোমা। একটি ছিল ৭৬ কেজি, আরেকটি ছিল ৮৬ কেজি। এই দুটি বোমা মাটির নিচে পোঁতা ছিল। সেখান থেকে আমি উদ্ধার পেলাম। আর তা ছাড়া যেদিন থেকে এই বাংলাদেশে এসেছি, সেদিন থেকেই সভা-সমাবেশে আক্রমণ, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, সরাসরি গুলি প্রতিনিয়ত হচ্ছে। এই অবস্থায় আল্লাহ আমাকে বারবার বাঁচিয়ে এনেছে। এর মধ্য দিয়ে ’৯৬ সালে সরকার গঠন করি। ২০০৯ সাল থেকে একটানা ক্ষমতায় আছি। অন্তত এটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশটা তো বদলে গেছে। বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। এখন আর দেশের মানুষের খাদ্যের হাহাকার নেই। খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পেরেছি। শিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছি। ঠিক যেমনটি জাতির পিতা চেয়েছিলেন। একটানা ক্ষমতায় থাকার ফলে আমরা এমনটা পেরেছি। আমরা একটানা ক্ষমতায় না থাকলে দেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান হতো না।’
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মেদ, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ আয়নাল হোসেন শেখ বক্তব্য দেন।
এ সময় বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহবুব আলী খান, সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী নাজমা আক্তার, সহকারী একান্ত সচিব গাজী হাফিজুর রহমান লিকুসহ কোটালীপাড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হয়েছে। আইন পাস করে এবারই প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেছেন।
কোটালীপাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মূল শক্তি ও সাহস হচ্ছে টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়াবাসী। আর বাংলাদেশের জনগণ তো আছেই। এ জন্য আমি সর্বক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছি। আপনাদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আপনারা আমার নির্বাচনী এলাকার দায়িত্ব নিয়েছেন বলেই আমি সারা দেশের কথা ভাবতে পারছি। আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আপনারা আমাকে প্রার্থী করেছেন। আগামী ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। এর আগে ভোট চাওয়া যায় না। নির্বাচনী একটি শৃঙ্খলা আছে। আমাদের সেই শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। আমরা নির্বাচনকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে এসেছি। আমরা আইন পাস করে এবারই প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। এটাকে স্থায়ীভাবে রূপ দেওয়াটাই আমাদের উদ্দেশ্য।’
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশকে যেভাবে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে মারল। মারতে মারতে যখন বেহুঁশ হয়ে গেছে, তখন তাঁর মাথা থেকে হেলমেট ফেলে দিয়ে কোপাল। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স পোড়ানো হলো। সেখানে পুলিশদেরও আহত করা হলো। এমনকি সাধারণ রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা করা হলো। এই হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের চরিত্র। তাদের ওপর জনগণের আস্থা-বিশ্বাস থাকবে কীভাবে? এদের আন্দোলন মানেই জ্বালাও-পোড়াও। এদের শিক্ষাটা বোধ হয় ইসরায়েলের কাছ থেকে নেওয়া। ইসরায়েলেরা হাসপাতালে বোম্বিং করে নারী, শিশু, রোগীদের আহত করেছে। সেখানেও কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের ওপর আক্রমণ হয়েছে। ছোট ছোট শিশুসহ যেভাবে মানুষ হত্যা করছে। বিএনপি-জামায়াত বোধ হয় ইসরায়েলের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘২০০৭ সালে খালেদা জিয়ার ছেলে মুচলেকা দিয়ে চলে গেল লন্ডন। তখন বলল, আর জীবনে রাজনীতি করব না। এখন ওখানে বসে হুকুম দিয়ে দিয়ে মানুষ হত্যা করাচ্ছে। জিয়াউর রহমান যেমন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনীর অফিসার, সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে। ঠিক একইভাবে জিয়ার বউ ক্ষমতায় এসে আমাদের আন্দোলনরত নেতা-কর্মীদের হত্যা করে। আর তার ছেলেও এখন একই কাজ করছে। জিয়া পরিবার পুরোটাই একটি খুনি পরিবার। তারা মানুষ খুন আর দুর্ভোগ ছাড়া আর কিছুই চায় না। নিজেরা ক্ষমতায় থেকে সমানে অর্থ বানিয়েছে, সম্পদের পাহাড় গড়েছে। এরা মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। এটাই তাদের চরিত্র।’
নিজের শাসনামলের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা দেশের অনেক উন্নয়ন করেছিলাম। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর আমরা দেশটি যেখানে রেখে গিয়েছিলাম, সেখান থেকে আবার পিছিয়ে পড়েছিল। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা কমে গিয়েছিল, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গিয়েছিল। একে একে সবকিছু আবার পেছন দিকে চলে গিয়েছিল। আমাদের ছিল ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। আর সে আন্দোলনে আমরা সফল হয়েছি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশকে নিয়ে জাতির পিতা শূন্য হাতে যাত্রা শুরু করেছিলেন। তখন একটি টাকাও রিজার্ভ মানি ছিল না। কোনো খাবার ছিল না। তখন কোনো ফসল হয়নি। রাস্তাঘাট কিছুই ছিল না। যা ছিল তা-ও ধ্বংসস্তূপ। ওই অবস্থায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন দেশে ফিরে আসলেন, তখন তিনি এই ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে দায়িত্বভার নিয়েছিলেন। ওই সময় একজন বিদেশি সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, দেশে তো কিছুই নাই, কোনো রিসোর্স নেই, আপনি কীভাবে এ দেশ গড়ে তুলবেন? তখন জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘‘আমার মাটি আছে, দেশের মানুষ আছে। আমি মাটি ও মানুষ দিয়ে এ দেশ গড়ে তুলব।”’
দেশে ফিরে আসার কথা বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘১৯৮১ সালে আমি যেদিন বাংলাদেশে ফিরে আসি, সেই দিন ঘোষণা দিয়েছিলাম বাংলাদেশের মানুষ আমার আপনজন, তারাই আমার আত্মীয়। আমি সেই দিন বাংলাদেশের সকল মানুষ ও মুজিব আদর্শের সৈনিকদের ভালোবাসার ছোঁয়া পেয়েছিলাম। এরাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। বাংলাদেশে আসার পর আমার চলার পথ মসৃণ ছিল না। যে ঘাতকেরা আমার বাবা-মাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, তাদের বিচার হবে না। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে, বিচার হতে রেহাই দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭১ সালে যারা গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগ করে বাংলাদেশের সম্পদ পুড়িয়েছে, লুটপাট করেছে, নারীদের ওপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছে। সেই সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুরু করেছিলেন। সেই বিচার পরবর্তীতে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সময় যারা জেলখানায় ছিল, তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তারাই তখন কেউ প্রধানমন্ত্রী, কেউ মন্ত্রী, কেউ উপদেষ্টা, আবার কেউ সরকারের উচ্চপর্যায়ে বসা ছিল। সেই অবস্থায় আমি বাংলাদেশে ফিরে আসলাম। তখন আমাকে অনেকেই দেশে ফিরতে নিষেধ করেছিলেন। অনেকেই বলেছিল, আপনি যাচ্ছেন আপনার কী হবে! তখন আমি আমার মনের তাগিদে দেশে ফিরে এসেছিলাম। আর সেই দিন আমার ছোট বোন রেহানা বলেছিল আমি বাচ্চাদের দেখব। তুমি দেশে ফিরে যাও।’
নিজের জীবনের ওপর হামলার কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বারবার আমি মৃত্যুকে সামনে দেখেছি। এই কোটালীপাড়াই বিশাল বিশাল বোম মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছিল। একজন সামান্য চায়ের দোকানদার খুঁজে বের করল সেই বোমা। একটি ছিল ৭৬ কেজি, আরেকটি ছিল ৮৬ কেজি। এই দুটি বোমা মাটির নিচে পোঁতা ছিল। সেখান থেকে আমি উদ্ধার পেলাম। আর তা ছাড়া যেদিন থেকে এই বাংলাদেশে এসেছি, সেদিন থেকেই সভা-সমাবেশে আক্রমণ, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, সরাসরি গুলি প্রতিনিয়ত হচ্ছে। এই অবস্থায় আল্লাহ আমাকে বারবার বাঁচিয়ে এনেছে। এর মধ্য দিয়ে ’৯৬ সালে সরকার গঠন করি। ২০০৯ সাল থেকে একটানা ক্ষমতায় আছি। অন্তত এটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশটা তো বদলে গেছে। বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। এখন আর দেশের মানুষের খাদ্যের হাহাকার নেই। খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পেরেছি। শিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছি। ঠিক যেমনটি জাতির পিতা চেয়েছিলেন। একটানা ক্ষমতায় থাকার ফলে আমরা এমনটা পেরেছি। আমরা একটানা ক্ষমতায় না থাকলে দেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান হতো না।’
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মেদ, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ আয়নাল হোসেন শেখ বক্তব্য দেন।
এ সময় বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহবুব আলী খান, সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী নাজমা আক্তার, সহকারী একান্ত সচিব গাজী হাফিজুর রহমান লিকুসহ কোটালীপাড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়—নীতি অনুসরণ করে ভারতসহ প্রতিবেশী সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
২৯ মিনিট আগেকঠিন সময়ে দলের প্রতি নেতা–কর্মীদের একাগ্রতা ও ত্যাগ আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শক্তি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকুন, আমাদের পেজ থেকে প্রকাশিত প্রতিটি বার্তা ছড়িয়ে দিন। সে জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেসশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার, বীর সিপাহসালার মেজর এম এ জলিলকে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব...
৪ ঘণ্টা আগেসেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা তিন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, আসিফ ভূঁইয়া সজীব ও নাহিদ ইসলাম। একই অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্
১ দিন আগে