Ajker Patrika

বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চায় গণ অধিকার পরিষদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চায় গণ অধিকার পরিষদ

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর জাতি যেসব বুদ্ধিজীবীদের হারিয়েছে তাঁদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাও চেয়েছে দলটি। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ দাবির কথা জানান দলটির সদস্যসচিব নুরুল হক নুর। 

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আবদুর রব। তিনিও গণ অধিকার পরিষদের নেতাদের এই দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে তাদের আন্দোলন সংগ্রামকে বেগবান করতে উৎসাহ দেন। 

আবদুর রব বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে কী অর্জন করেছি, কী পেয়েছি আর কী হারিয়েছি সেটা মূল্যায়ন করা হয়নি। আমি মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছি মরার জন্য। এখন তো মরেই আছি। তোমরা তরুণ প্রজন্ম আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাও। দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনো। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বুদ্ধিজীবীদের কোন তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া যোদ্ধাদের তালিকাও প্রকাশ করা হয়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 
 
সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই ৫০ বছরে একটা বড় অর্জন হয়েছে। তা হলো সাতজন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা হয়েছে। সাবেক সেনা প্রধানের ভিসা বাতিল করেছে। বিশ্ববাসী জানল যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। শুধু সাতজন নয়, আরও দু শ ব্যক্তির তালিকা রয়েছে যাদের আমেরিকা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আসছে। ডা. মুরাদ দুই দেশ ঘুরে জায়গা পাননি। এমন মুরাদ আরও রয়েছে বলেও জানান স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠক। 

বিনা ভোটের সরকার জনগণের ভোটের নির্বাচিত বলা লজ্জার উল্লেখ করে রব বলেন, আমি খুবই লজ্জা পাই যখন সরকার বলে আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। মানুষ জনগণের সরকার চায়, ভোটের সরকার চায়, গণতন্ত্রের সরকার চায়। দলীয় সরকার আর চায় না। 

গণপরিষদের আলোচনা সভায় অংশ নেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। আজও হত্যা থেমে নেই। এখন হত্যার কারণ তারা গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছেন বুদ্ধিজীবীরা। অবস্থার পরিবর্তন বেশি হয়নি বলে দাবি এই মুক্তিযোদ্ধার। ৫০ বছর পরেও এই বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা কোনোভাবে উপস্থাপিত হয়নি। 

গণ অধিকার পরিষদের আন্দোলন সংগ্রামের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম বলেন, আপনাদের সঙ্গে আমরা আছি। কল্যাণ পার্টি আপনাদের সঙ্গে থাকবে। 

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম। তিনি বলেন, বাকশাল থেকেও খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা দিনাতিপাত করছি। বুদ্ধিজীবী যারা আছেন তাঁরা নির্যাতিত হচ্ছেন। মাঠে ময়দানে গত ৫০ বছরে আন্দোলন সংগ্রামে মারা গেছেন তার চেয়ে বেশি মানুষ মরেছে এই সরকারের আমলে নির্যাতিত হয়ে। এই নিপীড়ন তো আর সহ্য করা যায় না। ২০২৩ সালের নির্বাচন যেন এই সরকারের শেষ নির্বাচন। আওয়ামী লীগের মরণকাল। এটা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের আপনাদের রক্ত দিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশটা একটা বারুদের গুদামে পরিণত হয়ে আছে। এই গুদামে কেউ যদি একটা দেশলাই নিক্ষেপ করতে পারে আগুন জ্বল জ্বল করে জ্বলবে। 

গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়ে বলেন, আজ দেশে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্‌যাপন করছে সরকার। অথচ স্বাধীনতা বিরোধীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমাদের দুর্ভাগ্য ৫০ বছরে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো তালিকা করতে পারেনি সরকার। ১৪ ডিসেম্বর যারা জীবন দিয়েছে তাঁদের কোনো তালিকা নেই; তথ্য নেই। প্রকৃত অর্থে বুদ্ধিজীবীদের সম্মান দেওয়া হয়নি। 
 
আমরা নতুন প্রজন্ম কোনো হানাহানির রাজনীতি চাই না। এটা বন্ধ করতে হবে উল্লেখ করে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশ করার দাবিও জানান ডাকসুর এই সাবেক ভিপি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত