বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে আইনের অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ সোমবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড শর্তযুক্তভাবে স্থগিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায় তিনি মুক্তি পেয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, আইন পরিবর্তন করতে হলে খালেদা জিয়ার শর্তযুক্ত মুক্তি বাতিল করে সহাবস্থান আনতে হবে। এরপর আবার অন্য বিবেচনা করা যাবে। তাঁকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে আইনের অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন এটা আইন মন্ত্রণালয়ের বিষয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করতে হয়। সে আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ওপর নির্ভর করে এ ব্যাপারটি।
আনিসুল হক বলেন, ‘এখন আইনের যে পরিস্থিতি তাতে যদি কোনো পরিবর্তন আনতে হয় তাহলে খালেদা জিয়ার যে আগের শর্তযুক্ত মুক্তি, সেটাকে বাতিল করতে হবে। বাতিল করে সহাবস্থান যাওয়ার পরে আবার অন্য বিবেচনা করা যাবে। আমার মনে হয় আইনের অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই।’
একই ইস্যুতে স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একধরনের ঠেলাঠেলি লক্ষ করা যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনো ঠেলাঠেলি নেই। আমি পরিষ্কার করেছি, যদি কোনো আবেদন আসে সে আবেদন সরাসরি আইন মন্ত্রণালয় করা যায় না, এটি আইন। সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করতে হবে আইন মোতাবেক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। এর মধ্যে ঠেলাঠেলির কী দেখলেন আপনারা?’
বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক একটা কথা বলেছেন, ১৯৯০ সালের ১৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একটি ঘোষণা আছে। সেখানে বলা আছে, যদি কোনো সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হয় তখন সে দেশের সরকারের দায়িত্ব তাঁকে বিদেশে পাঠানো—এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘একটা কথা জাতিসংঘে বলা আছে। এখানে আমাদের দেশের আইনটা অগ্রাধিকার পাবে এবং সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশের আইনে যে অবস্থান তাঁকে ৪০১ ধারায় যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে... আমি বহুবার বলেছি, এই আইনের অবস্থায় এটার কোনো পরিবর্তন করা যাবে না।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে আইনের শাসন আছে। আমরা আদালতকে শ্রদ্ধা করি।’