গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি এমন রাজনৈতিক দল যে তারা নিজেদের গঠনতন্ত্র মানে না। বিএনপির গঠনতন্ত্রে আছে, সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারে না। কিন্তু বিএনপির একটা নেতাও আজ সে কথা বলে না। খালেদা জিয়া ও তার ছেলে দুজনেই সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ওরা নিয়ম মানে না, আইন মানে না। সেই দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না।’
আজ শনিবার দুপুরে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তালিমপুর-তেলিহাটি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এ জনসভায় সভাপতিত্ব করেন কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
আওয়ামী লীগ-বিএনপির তুলনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি খালেদা জিয়ার ছেলে সেই দলের নেতা। এরপরও যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করেন, তাঁরা ভুল করেন। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের সংগঠন। এ দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই দল গড়ে উঠেছে। তাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নতি হয়। আর বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতসহ যে দলগুলো আছে—এরা কারা? অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়া। সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছে। উচ্চ আদালতের রায় আছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সেই সময় ক্ষমতা দখলকারী অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে থেকে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দল তৈরি করেছিল, সেই দলই হচ্ছে বিএনপি। এরা মানুষের কল্যাণও চায় না, মঙ্গলও চায় না। মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়ায়। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। কাজেই এদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না। এ দেশের মাটি-মানুষের সংগঠন আওয়ামী লীগ। জনগণের জন্য কাজ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছেছে।’
বিশ্বব্যাংক ও পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি। জনগণের ভাগ্য গড়তে ক্ষমতায় এসেছি। তাই যখন কেউ মিথ্যা অপবাদ দেয়, সেই অপবাদ মেনে নিতে আমি রাজি না। বিশ্বব্যাংক মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। আমরা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি বলেই এত দ্রুত গোপালগঞ্জ, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া আসতে পারছি। দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পেরেছি। ‘বাংলাদেশের মানুষ আত্মমর্যাদা নিয়েই চলে। আমাদের অপবাদ দিলে, আমরা তা মানব না। তাই জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে সবাই সতর্ক থাকবেন। যার যার নিজেদের সন্তান, তারা যেন কোনো সময় মাদক বা জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়—এ ব্যাপারে আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
আওয়ামী লীগ-বিএনপির তুলনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেকে অনেক কথা বলেন। কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করেন। এখানে একটা কথা বলতে চাই, ২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপি ৩০০টি আসনের মধ্যে পেয়েছিল মাত্র ৩০টি। আওয়ামী লীগ মহাজোট করেছিল, আর বিএনপির ছিল ২০ দলীয় জোট। তাহলে দুই দল এক হয় কীভাবে? বিএনপি সরকারের আমলে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, গ্রেনেড হামলা, ৬৩ জেলায় বোমা হামলা, দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ওরা মানুষকে কিছু দেয়নি। মানুষের অর্থকড়ি সব লুটপাট করে বিদেশে নিয়ে গেছে।’
সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ ও দরিদ্র মানুষের কল্যাণের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আজকে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। হতদরিদ্র, বিধবা, বয়স্ক ও স্বামী পরিত্যক্তদের আমরা ভাতা দিয়ে যাচ্ছি। হতদরিদ্রদের মাঝে বিনা পয়সায় খাবার আমরা বিতরণ করছি। ছাত্রছাত্রীদের প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি-উপবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি। এমনকি যারা প্রতিবন্ধী তারা ভাতা পাচ্ছে এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদেরও আমরা বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছি। যাতে তারাও পড়ালেখা করতে পারে, সে সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দিচ্ছি।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারীকরণ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেকটি উপজেলায় যেখানে সরকারি স্কুল বা কলেজ ছিল না, সেসব উপজেলায় আমরা স্কুল-কলেজ তৈরি করে দিয়েছি। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ৩৬ হাজার প্রাইমারি স্কুল সরকারি করেছিলেন। জাতির পিতাকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছে—কেউ কিন্তু প্রাইমারি স্কুল সরকারি করেনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার আসার পর আমরা ২৬ হাজার স্কুল সরকারি করেছি। অনেক স্কুল ও মাদ্রাসা আমরা এমপিওভুক্ত করে দিয়ে শিক্ষকদের বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রত্যেকটি স্কুলে আমরা ডিজিটাল ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি করেছি। শিশুকাল থেকেই যাতে তারা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ পায়, তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ওয়াদা করেছিলাম সকল ঘর আলোকিত করব। আজকে বাংলাদেশের সব জায়গায় ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। আবার এই বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে অনুরোধ করব বিশ্ববাজারে তেলের দাম, গ্যাসের দাম—সবকিছুর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবহারে আপনারা সবাই সাশ্রয়ী হবেন। যত কম ব্যবহার করা যায়। বিদেশে, এমনকি লন্ডনেও প্রায় বিদ্যুতের দাম বেড়েছে দেড় শ ভাগ। আমরা কিন্তু যে টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি, তার অর্ধেক মূল্যে দিচ্ছি মানুষের কাছে। সেচের জন্য ২০% ভর্তুকি দিয়ে দিচ্ছি। পাশাপাশি সোলার প্যানেলের মাধ্যমে যাতে সেচকাজ হয়, সেই পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। তবে যে কথা দিয়েছিলাম ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেব, সব ঘর আলোকিত করব—সেটা আল্লাহর রহমতে করতে পেরেছি। আপনারাই আমাকে সেই শক্তি দিয়েছেন।’
আশ্রয়ণ প্রকল্প বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক, মাতৃসদন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে মানুষকে বিনা পয়সায় ৩০ প্রকার ওষুধ দিচ্ছি। মাতৃত্বকালীন সেবা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের মাতৃ মৃত্যুর হার কমেছে। শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। আমরা মাতৃত্বকালীন ভাতাও দিয়ে থাকি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ভূমিহীন পরিবারকে বিনা পয়সায় ঘর করে দেবেন। কিন্তু তিনি সে কাজ সম্পন্ন করে যেতে পারেননি। আমি তাঁর সে অসম্পন্ন কাজ সম্পন্ন করার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-১ করেছি। এরপর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর মাধ্যমে আমরা এখন দুই কাঠা করে জমি ও বিনা মূল্যে ঘর, জীবন-জীবিকার জন্য অর্থ এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এতে বাংলাদেশে একটি পরিবারও ভূমিহীন থাকবে না। জাতির পিতার অঙ্গীকার আমরা বাস্তবে রূপ দান করব।’
প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের কৃষকেরা কষ্ট করে চাষবাস করে। বর্গাচাষিরা কখনো ব্যাংক থেকে ঋণ পেত না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বর্গাচাষিরা বিনা জামানতে কৃষি ব্যাংকের ঋণ যাতে নিতে পারে, সেই ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ সরকার করে দিয়েছে। কৃষকদের উপকরণ কার্ড আমরা দিচ্ছি। পাশাপাশি ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে ভর্তুকির টাকা সরাসরি পাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কৃষকেরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায়, তার ব্যবস্থাও আমরা করে দিয়েছি।’
তথ্যপ্রযুক্তি ও ব্যাংক ঋণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সবার হাতে মোবাইল ফোন। আওয়ামী লীগ সরকার আসার আগে কারও হাতে এত মোবাইল ফোন ছিল না। ’৯৬ সালে সরকারে এসে তখনই আমরা মোবাইল ফোন দিই। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এখন সব তথ্য পাওয়া যায়। সব সংবাদ পাওয়া যায়। মানুষের জীবনযাত্রা যাতে উন্নত হয়, সে ব্যবস্থা করেছি। কারণ, ডিজিটাল বাংলাদেশ শুধু মুখে বলা না; প্রত্যেকটি অঞ্চলেই যাতে সবাই ইন্টারনেট সার্ভিস পায়, ব্রডব্যান্ড সার্ভিস পায়—সে ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। আমাদের দেশে প্রতিটি পরিবার যেন নিজের এতটুকু জমি খালি না থাকে। আমার বাড়ি, আমার খামার; নিজের বাড়িতে নিজে কিছু উৎপাদন করা তার জন্য আমরা ঋণ সুবিধা দিই। আবার সেখানে আপনারা যদি কেউ উৎপাদন করেন, আবার সেখানে কিছু টাকা জমানত পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক করে দিয়েছি। সেই ব্যাংকে কেউ ২০০ টাকা জমাতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা আরও ২০০ টাকা উপহার হিসেবে দুই বছর দিই। যা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে জমা থাকে। যার মাধ্যমে নিজের কাজ করে নিজের পরিবার উন্নত করতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে পুষ্টিবাগান করে দিচ্ছি। শুধু খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা নয়, পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য প্রত্যেকটা বাড়ির আঙিনায় আমার পুষ্টির বাগান করে দিচ্ছি। আমরা কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেকটা উপজেলায় কারিগরি স্কুল করে দিচ্ছি, যেন সব ছেলেমেয়ে কারিগরি শিক্ষাটা নিতে পারে। দেশে-বিদেশে যাতে কাজের সুবিধা হয়, সে ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। সারা দেশে একদিকে শত শত সড়ক ও সেতু নির্মাণ করেছি এবং আরেক দিকে শত শত সেতু উদ্বোধন করেছি। কোনো সরকার এটা করতে পারে নাই। আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া যেটা হলো অসম্ভব।’
নদীশাসনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নদীগুলো ড্রেজিং করছি, নৌপথ সচল করার পদক্ষেপ নিয়েছি। খাল-বিল, জলাধার যেগুলো আছে, সেগুলোসহ আমরা অনাবাদি জমি আবাদ করার পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা চাই বাংলাদেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। এ জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, অনাবাদি জমি চাষের উপযোগী করতে। আর টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার দায়িত্ব আমার। কোথাও যেন কোনো জমি অনাবাদি না থাকে, সেগুলো আমরা পরিষ্কার করে আবাদ করার সুযোগ করে দেব। যার যার জমি সে সে চাষ করবেন, ফসল ফলাবেন—সেটাই আমরা চাই। আর সে ব্যবস্থাই করে দিচ্ছি। সড়কপথ, নৌপথ সবগুলো আমরা করে দিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। করোনা যেমন মোকাবিলা করেছি। বিএনপির আমলে দেশের ৪০ ভাগ মানুষ দরিদ্র ছিল। আমরা তা ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছি। যদি করোনার অতিমারি ও ইউক্রেন যুদ্ধ না হতো, তাহলে দেশকে আরও উন্নতির পথে নিয়ে যেতে পারতাম। তারপরও আমি বলব আমাদের মাটি উর্বর, আমাদের মানুষ আছে। দেশকে আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
এর আগে সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে সড়কপথে কোটালীপাড়া বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে পৌঁছান। সেখানে তিনি পৌনে দুই ঘণ্টা অবস্থান করেন। পরে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে জনসভাস্থলের দিকে যাত্রা করেন। সভাস্থলে পৌঁছেন দুপুর ১২টা ৪২ মিনিটে। উদ্বোধন মঞ্চে পৌঁছে ৪৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
উদ্বোধনের পরে মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। মোনাজাত শেষে ১২টা ৪৬ মিনিটে সভামঞ্চে উঠে হাত নেড়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে তিনি সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। ২৫ মিনিটের বক্তব্যে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। সভা শেষে প্রধানমন্ত্রী সড়কপথে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি এমন রাজনৈতিক দল যে তারা নিজেদের গঠনতন্ত্র মানে না। বিএনপির গঠনতন্ত্রে আছে, সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারে না। কিন্তু বিএনপির একটা নেতাও আজ সে কথা বলে না। খালেদা জিয়া ও তার ছেলে দুজনেই সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ওরা নিয়ম মানে না, আইন মানে না। সেই দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না।’
আজ শনিবার দুপুরে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তালিমপুর-তেলিহাটি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এ জনসভায় সভাপতিত্ব করেন কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
আওয়ামী লীগ-বিএনপির তুলনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি খালেদা জিয়ার ছেলে সেই দলের নেতা। এরপরও যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করেন, তাঁরা ভুল করেন। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের সংগঠন। এ দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই দল গড়ে উঠেছে। তাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নতি হয়। আর বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতসহ যে দলগুলো আছে—এরা কারা? অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়া। সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছে। উচ্চ আদালতের রায় আছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সেই সময় ক্ষমতা দখলকারী অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে থেকে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দল তৈরি করেছিল, সেই দলই হচ্ছে বিএনপি। এরা মানুষের কল্যাণও চায় না, মঙ্গলও চায় না। মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়ায়। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। কাজেই এদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না। এ দেশের মাটি-মানুষের সংগঠন আওয়ামী লীগ। জনগণের জন্য কাজ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছেছে।’
বিশ্বব্যাংক ও পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি। জনগণের ভাগ্য গড়তে ক্ষমতায় এসেছি। তাই যখন কেউ মিথ্যা অপবাদ দেয়, সেই অপবাদ মেনে নিতে আমি রাজি না। বিশ্বব্যাংক মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। আমরা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি বলেই এত দ্রুত গোপালগঞ্জ, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া আসতে পারছি। দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পেরেছি। ‘বাংলাদেশের মানুষ আত্মমর্যাদা নিয়েই চলে। আমাদের অপবাদ দিলে, আমরা তা মানব না। তাই জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে সবাই সতর্ক থাকবেন। যার যার নিজেদের সন্তান, তারা যেন কোনো সময় মাদক বা জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়—এ ব্যাপারে আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
আওয়ামী লীগ-বিএনপির তুলনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেকে অনেক কথা বলেন। কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করেন। এখানে একটা কথা বলতে চাই, ২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপি ৩০০টি আসনের মধ্যে পেয়েছিল মাত্র ৩০টি। আওয়ামী লীগ মহাজোট করেছিল, আর বিএনপির ছিল ২০ দলীয় জোট। তাহলে দুই দল এক হয় কীভাবে? বিএনপি সরকারের আমলে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, গ্রেনেড হামলা, ৬৩ জেলায় বোমা হামলা, দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ওরা মানুষকে কিছু দেয়নি। মানুষের অর্থকড়ি সব লুটপাট করে বিদেশে নিয়ে গেছে।’
সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ ও দরিদ্র মানুষের কল্যাণের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আজকে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। হতদরিদ্র, বিধবা, বয়স্ক ও স্বামী পরিত্যক্তদের আমরা ভাতা দিয়ে যাচ্ছি। হতদরিদ্রদের মাঝে বিনা পয়সায় খাবার আমরা বিতরণ করছি। ছাত্রছাত্রীদের প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি-উপবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি। এমনকি যারা প্রতিবন্ধী তারা ভাতা পাচ্ছে এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদেরও আমরা বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছি। যাতে তারাও পড়ালেখা করতে পারে, সে সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দিচ্ছি।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারীকরণ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেকটি উপজেলায় যেখানে সরকারি স্কুল বা কলেজ ছিল না, সেসব উপজেলায় আমরা স্কুল-কলেজ তৈরি করে দিয়েছি। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ৩৬ হাজার প্রাইমারি স্কুল সরকারি করেছিলেন। জাতির পিতাকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছে—কেউ কিন্তু প্রাইমারি স্কুল সরকারি করেনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার আসার পর আমরা ২৬ হাজার স্কুল সরকারি করেছি। অনেক স্কুল ও মাদ্রাসা আমরা এমপিওভুক্ত করে দিয়ে শিক্ষকদের বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রত্যেকটি স্কুলে আমরা ডিজিটাল ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি করেছি। শিশুকাল থেকেই যাতে তারা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ পায়, তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ওয়াদা করেছিলাম সকল ঘর আলোকিত করব। আজকে বাংলাদেশের সব জায়গায় ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। আবার এই বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে অনুরোধ করব বিশ্ববাজারে তেলের দাম, গ্যাসের দাম—সবকিছুর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবহারে আপনারা সবাই সাশ্রয়ী হবেন। যত কম ব্যবহার করা যায়। বিদেশে, এমনকি লন্ডনেও প্রায় বিদ্যুতের দাম বেড়েছে দেড় শ ভাগ। আমরা কিন্তু যে টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি, তার অর্ধেক মূল্যে দিচ্ছি মানুষের কাছে। সেচের জন্য ২০% ভর্তুকি দিয়ে দিচ্ছি। পাশাপাশি সোলার প্যানেলের মাধ্যমে যাতে সেচকাজ হয়, সেই পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। তবে যে কথা দিয়েছিলাম ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেব, সব ঘর আলোকিত করব—সেটা আল্লাহর রহমতে করতে পেরেছি। আপনারাই আমাকে সেই শক্তি দিয়েছেন।’
আশ্রয়ণ প্রকল্প বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক, মাতৃসদন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে মানুষকে বিনা পয়সায় ৩০ প্রকার ওষুধ দিচ্ছি। মাতৃত্বকালীন সেবা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের মাতৃ মৃত্যুর হার কমেছে। শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। আমরা মাতৃত্বকালীন ভাতাও দিয়ে থাকি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ভূমিহীন পরিবারকে বিনা পয়সায় ঘর করে দেবেন। কিন্তু তিনি সে কাজ সম্পন্ন করে যেতে পারেননি। আমি তাঁর সে অসম্পন্ন কাজ সম্পন্ন করার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-১ করেছি। এরপর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর মাধ্যমে আমরা এখন দুই কাঠা করে জমি ও বিনা মূল্যে ঘর, জীবন-জীবিকার জন্য অর্থ এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এতে বাংলাদেশে একটি পরিবারও ভূমিহীন থাকবে না। জাতির পিতার অঙ্গীকার আমরা বাস্তবে রূপ দান করব।’
প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের কৃষকেরা কষ্ট করে চাষবাস করে। বর্গাচাষিরা কখনো ব্যাংক থেকে ঋণ পেত না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বর্গাচাষিরা বিনা জামানতে কৃষি ব্যাংকের ঋণ যাতে নিতে পারে, সেই ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ সরকার করে দিয়েছে। কৃষকদের উপকরণ কার্ড আমরা দিচ্ছি। পাশাপাশি ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে ভর্তুকির টাকা সরাসরি পাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কৃষকেরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায়, তার ব্যবস্থাও আমরা করে দিয়েছি।’
তথ্যপ্রযুক্তি ও ব্যাংক ঋণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সবার হাতে মোবাইল ফোন। আওয়ামী লীগ সরকার আসার আগে কারও হাতে এত মোবাইল ফোন ছিল না। ’৯৬ সালে সরকারে এসে তখনই আমরা মোবাইল ফোন দিই। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এখন সব তথ্য পাওয়া যায়। সব সংবাদ পাওয়া যায়। মানুষের জীবনযাত্রা যাতে উন্নত হয়, সে ব্যবস্থা করেছি। কারণ, ডিজিটাল বাংলাদেশ শুধু মুখে বলা না; প্রত্যেকটি অঞ্চলেই যাতে সবাই ইন্টারনেট সার্ভিস পায়, ব্রডব্যান্ড সার্ভিস পায়—সে ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। আমাদের দেশে প্রতিটি পরিবার যেন নিজের এতটুকু জমি খালি না থাকে। আমার বাড়ি, আমার খামার; নিজের বাড়িতে নিজে কিছু উৎপাদন করা তার জন্য আমরা ঋণ সুবিধা দিই। আবার সেখানে আপনারা যদি কেউ উৎপাদন করেন, আবার সেখানে কিছু টাকা জমানত পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক করে দিয়েছি। সেই ব্যাংকে কেউ ২০০ টাকা জমাতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা আরও ২০০ টাকা উপহার হিসেবে দুই বছর দিই। যা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে জমা থাকে। যার মাধ্যমে নিজের কাজ করে নিজের পরিবার উন্নত করতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে পুষ্টিবাগান করে দিচ্ছি। শুধু খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা নয়, পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য প্রত্যেকটা বাড়ির আঙিনায় আমার পুষ্টির বাগান করে দিচ্ছি। আমরা কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেকটা উপজেলায় কারিগরি স্কুল করে দিচ্ছি, যেন সব ছেলেমেয়ে কারিগরি শিক্ষাটা নিতে পারে। দেশে-বিদেশে যাতে কাজের সুবিধা হয়, সে ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। সারা দেশে একদিকে শত শত সড়ক ও সেতু নির্মাণ করেছি এবং আরেক দিকে শত শত সেতু উদ্বোধন করেছি। কোনো সরকার এটা করতে পারে নাই। আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া যেটা হলো অসম্ভব।’
নদীশাসনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নদীগুলো ড্রেজিং করছি, নৌপথ সচল করার পদক্ষেপ নিয়েছি। খাল-বিল, জলাধার যেগুলো আছে, সেগুলোসহ আমরা অনাবাদি জমি আবাদ করার পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা চাই বাংলাদেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। এ জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, অনাবাদি জমি চাষের উপযোগী করতে। আর টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার দায়িত্ব আমার। কোথাও যেন কোনো জমি অনাবাদি না থাকে, সেগুলো আমরা পরিষ্কার করে আবাদ করার সুযোগ করে দেব। যার যার জমি সে সে চাষ করবেন, ফসল ফলাবেন—সেটাই আমরা চাই। আর সে ব্যবস্থাই করে দিচ্ছি। সড়কপথ, নৌপথ সবগুলো আমরা করে দিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। করোনা যেমন মোকাবিলা করেছি। বিএনপির আমলে দেশের ৪০ ভাগ মানুষ দরিদ্র ছিল। আমরা তা ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছি। যদি করোনার অতিমারি ও ইউক্রেন যুদ্ধ না হতো, তাহলে দেশকে আরও উন্নতির পথে নিয়ে যেতে পারতাম। তারপরও আমি বলব আমাদের মাটি উর্বর, আমাদের মানুষ আছে। দেশকে আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
এর আগে সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে সড়কপথে কোটালীপাড়া বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে পৌঁছান। সেখানে তিনি পৌনে দুই ঘণ্টা অবস্থান করেন। পরে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে জনসভাস্থলের দিকে যাত্রা করেন। সভাস্থলে পৌঁছেন দুপুর ১২টা ৪২ মিনিটে। উদ্বোধন মঞ্চে পৌঁছে ৪৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
উদ্বোধনের পরে মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। মোনাজাত শেষে ১২টা ৪৬ মিনিটে সভামঞ্চে উঠে হাত নেড়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে তিনি সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। ২৫ মিনিটের বক্তব্যে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। সভা শেষে প্রধানমন্ত্রী সড়কপথে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেন।
মানবমুক্তির মহান সংগ্রামে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কমরেড হেনা দাস অবিচল ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের মুক্তির সংগ্রামে কমরেড হেনা দাস ছিলেন অগ্রসৈনিক।’
৯ ঘণ্টা আগেসবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়—নীতি অনুসরণ করে ভারতসহ প্রতিবেশী সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
১২ ঘণ্টা আগেকঠিন সময়ে দলের প্রতি নেতা–কর্মীদের একাগ্রতা ও ত্যাগ আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শক্তি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকুন, আমাদের পেজ থেকে প্রকাশিত প্রতিটি বার্তা ছড়িয়ে দিন। সে জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগেসশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার, বীর সিপাহসালার মেজর এম এ জলিলকে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব...
১৫ ঘণ্টা আগে