অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বে প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আইন কার্যকর করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এআই-এর বিকাশ ও ব্যবহারে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করবে যুগান্তকারী এই আইন। এর ফলে ইউরোপে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে যুক্তরাষ্ট্রের টেক জায়ান্টগুলো।
এআইকে নিয়ে আলাদাভাবে তৈরি আইনটি গত মে মাসে অনুমোদন দেয় ইইউ সদস্য রাষ্ট্র, আইনপ্রণেতা ও ইউরোপীয় কমিশন। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) আইনটি কার্যকর করেছে (ইইউ)।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আইন কী, যা আছে এতে
এআই-এর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনগুলোর অন্যতম এই আইন। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করবে। ২০২০ সালে প্রথম আইনটির কার্যকরের প্রস্তাব দেয় ইউরোপীয় কমিশন।
প্রাথমিকভাবে আইনটির লক্ষ্য থাকবে বড় বড় মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি। এসব কোম্পানিই সবচেয়ে উন্নত এআই সিস্টেমের প্রধান নির্মাতা ও ডেভেলপার। তবে এই আইনের আওতায় অন্যান্য ব্যবসায়িক কোম্পানিও পড়বে, এমনকি অপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও।
ইউরোপীয় ইউনিয়নজুড়ে এআই-এর ব্যাপক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ নিয়ন্ত্রক কাঠামো নির্ধারণ করেছে আইনটি। সেই সঙ্গে প্রযুক্তিটি নিয়ন্ত্রণের জন্য ঝুঁকিভিত্তিক (ঝুঁকি চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করা) পদ্ধতি প্রয়োগ করবে।
ব্রাসেলসের আইন সংস্থা লিঙ্কলেটার্সের ট্যানগুই ভ্যান ওভারস্ট্রেটেন বলেছেন, ‘এই ধরনের আইন বিশ্বে এটিই প্রথম। এটি ব্যবসার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। যারা এআই সিস্টেম ডেভেলপ করছে ও নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এগুলো শুধু ব্যবহার করছে, তাদের উপর বিশেষ প্রভাব পড়বে।’
এআই নিয়ন্ত্রণে একটি ঝুঁকিভিত্তিক পদ্ধতি প্রয়োগ করবে আইনটি। এর অর্থ হল— সমাজের জন্য ঝুঁকির স্তরের ওপর নির্ভর করে প্রযুক্তির বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রিত করা হবে।
উদাহরণস্বরূপ, এআই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ‘উচ্চ-ঝুঁকি’ হিসেবে বিবেচিত হলে এআই আইনের অধীনে কঠোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হবে। এই ধরনের বাধ্যবাধকতাগুলোর মধ্যে আছে— পর্যাপ্ত ঝুঁকি মূল্যায়ন ও প্রশমন ব্যবস্থা, পক্ষপাতের ঝুঁকি কমানোর জন্য উচ্চ-মানের প্রশিক্ষণ ডেটাসেট তৈরি, কর্মকাণ্ডের নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করা ও সম্মতি মূল্যায়নের জন্য বিশদ ডকুমেন্টেশন বাধ্যতামূলক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শেয়ার করতে হবে।
‘উচ্চ-ঝুঁকি’এর এআই সিস্টেমের মধ্যে আছে- স্বয়ংক্রিয় যানবাহন, মেডিকেল ডিভাইস, লোন নেওয়ার সিস্টেম, শিক্ষাগত গ্রেডিং সিস্টেম ও দূরবর্তী বায়োমেট্রিক শনাক্তকরণ সিস্টেম।
ঝুঁকির স্তরের পরিপ্রেক্ষিতে এআইয়ের কোনো অ্যাপ্লিকেশনকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে গণ্য করা হলে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর এর প্রভাব
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিতে পারে এমন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব ও ব্যাপক পরিমাণে বিনিয়োগ করছে মাইক্রোসফট, গুগল, আমাজন, অ্যাপল ও মেটার মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি টেক জায়ান্টগুলো।
এআই প্রযুক্তির বিকাশ ও প্রশিক্ষণের জন্য বিশাল কম্পিউটিং অবকাঠামো প্রয়োজন। এজন্য মাইক্রোসফটের আজুর, আমাজন ওয়েব সার্ভিস ও গুগল ক্লাউডের মতো ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রথমেই নতুন আইনের অধীনে এই ধরনের বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
সফটওয়্যার ফার্ম এপিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লি থম্পসন বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে এআই আইনের প্রভাব পড়বে। ইইউতে কোনো কার্যক্রমের প্রভাব যে কোনো কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ যেখানেই থাকুন না কেন এআই আইন আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে।’
চার্লি থম্পসন আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে ক্রিয়াকলাপ ও ইইউ নাগরিকের ডেটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনটি আরও প্রযুক্তি কোম্পানিকে যাচাই-বাছাই করবে।
আইনি কড়াকড়ি নিয়ে উদ্বেগের কারণে মেটা ইতিমধ্যে ইউরোপে এআই মডেলের কার্যক্রম সীমিত করেছে। তবে ইইউ এর নতুন আইনের কারণে এই পদক্ষেপ নেয়নি মেটা।
এই মাসের শুরুতে মেটা বলে, এটি ইইউতে তার এলএলএএমএ মডেলগুলো চালু করবে না। ইউরোপের সাধারণ ডেটা সুরক্ষা প্রবিধান বা জিডিপিআর মেনে চলছে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তার থাকায় মেটা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জিডিপিআর লঙ্ঘন করতে পারে এমন উদ্বেগের কারণে এআই মডেল প্রশিক্ষণে কোম্পানিটি ইইউ-এর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের পোস্টগুলো ব্যবহার বন্ধ করেছে।
ইইউতে জেনারেটিভ এআইকে যেভাবে দেখছে
এআই আইনে জেনারেটিভ এআইকে ‘জেনারেল পারপাস এআই সিস্টেম-জিপিএআইএ’ বা সাধারণ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই লেবেলের আওতায় এমন টুলগুলোকে বোঝায় যা বিস্তৃত পরিসরে মানুষের মতো বা মানুষের চেয়ে ভালো কাজ করতে পারে। সাধারণ-উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা মডেলগুলোর মধ্যে রয়েছে ওপেনএআইয়ের জিপিটি, গুগলের জেমিনি ও এনথ্রপিকের ক্লড। তবে এসব মডেলের মধ্যেই আইনটি সীমাবদ্ধ নয়।
এসব সিস্টেমের জন্য কঠোর নীতিমালা আরোপ করে এই আইন। যেমন— ইইউ এর কপিরাইট আইনকে সম্মান করা, মডেলগুলোকে কীভাবে প্রশিক্ষিত করা হয় সে সম্পর্কে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, প্রযুক্তিগুলো নিয়মিত পরীক্ষা করা ও পর্যাপ্ত সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যদিও সমস্ত এআই মডেলকে সমানভাবে বিবেচনা করা হয় না।
এআই প্রযুক্তির ডেভেলপাররা বলেন, ‘জনসাধারণের জন্য বিনামূল্যে ও উপযোগী এআই অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে এমন ওপেন সোর্স মডেলগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে ইইউকে। যেগুলো খুব কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে না।’
এই ধরনের ওপেনসোর্স মডেল হলো মেটার এএলএএমএ, স্ট্যাবিলিটি এআই এর স্টাবল ডিফিউশন ও মিস্ট্রালের ৭ বি।
ওপেন সোর্স জেনারেটিভ এআই মডেলের জন্য কিছু ছাড় দেওয়া হবে। তবে এই ছাড় পাওয়ার জন্য ওপেন সোর্স প্রদানকারীদের মডেলগুলোর আর্কিটেকচার সর্বজনীনভাবে অ্যাকসেসের সুবিধা দিতে হবে। মডেলগুলোর ‘অ্যাকসেস, ব্যবহার, পরিবর্তন ও বিতরণ’ এর সুবিধা দিতে হবে।
এআই আইন অনুসারে, যেসব ওপেন সোর্স মডেলগুলো ‘সিস্টেমিক’ ঝুঁকি তৈরি করে, সেগুলো ছাড়ের জন্য গণনা করা হবে না।
এআই আইন ভঙ্গ করলে যা হবে
ইইউয়ের এআই আইন ভঙ্গ করলে কোম্পানিগুলোর ৭.৫ মিলিয়ন (৭৫ লাখ) ইউরো থেকে ৩৫ মিলিয়ন (৩ কোটি ৫০ লাখ) ইউরো বা বিশ্বব্যাপী বার্ষিক আয়ের ১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ থেকে জরিমানা হতে পারে। আইনের কতটুকু লঙ্ঘন করা হয়েছে তার উপর কোম্পানির জরিমানা নির্ভর করবে।
এই জরিমানা জিডিপিআর বা ইউরোপের ডিজিটাল প্রাইভেসি আইনের চেয়ে বেশি। জিডিপিআর আইন লঙ্ঘন করলে কোম্পানিগুলো ২ কোটি ডলার বা বিশ্বব্যাপী বার্ষিক আয়ের ৪ শতাংশ জরিমানা হতে পারে।
সাধারণ-উদ্দেশ্য এআই সিস্টেমসহ এআই মডেলগুলোর তত্ত্বাবধান ইউরোপীয় এআই অফিসের অধীনে পড়বে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করে ইউরোপীয় কমিশন।
ফাইন্যান্সিয়াল টেকনোলজি সংস্থার সম্পদ ব্যবস্থাপনার গ্লোবাল হেড জামিল জিভা বলেন, ‘আইনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে চাইলে কোম্পানিগুলোকে উল্লেখযোগ্য জরিমানা আরোপ করতে হবে।’
অবশেষে এআই আইন কার্যকর হলেও আইনটির বেশির ভাগ বিধান কমপক্ষে ২০২৬ সাল পর্যন্ত কার্যকর হবে না। এআই আইন কার্যকর হওয়ার ১২ মাস পরে সাধারণ-উদ্দেশ্য সিস্টেমের ওপর বিধিনিষেধ শুরু হবে।
জেনারেটিভ এআই সিস্টেমগুলো বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের উপযোগী। তবে ইইউতে ওপেনেআইয়ের চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি ও গুগলের জেমিনিকে নতুন আইন মেনে চলার জন্য ৩৬ মাসের সময় বা ‘ট্রানজিশন পিরিয়ড’ দেওয়া হয়েছে।
তথ্যসূত্র: সিএনবিসি
বিশ্বে প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আইন কার্যকর করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এআই-এর বিকাশ ও ব্যবহারে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করবে যুগান্তকারী এই আইন। এর ফলে ইউরোপে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে যুক্তরাষ্ট্রের টেক জায়ান্টগুলো।
এআইকে নিয়ে আলাদাভাবে তৈরি আইনটি গত মে মাসে অনুমোদন দেয় ইইউ সদস্য রাষ্ট্র, আইনপ্রণেতা ও ইউরোপীয় কমিশন। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) আইনটি কার্যকর করেছে (ইইউ)।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আইন কী, যা আছে এতে
এআই-এর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনগুলোর অন্যতম এই আইন। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করবে। ২০২০ সালে প্রথম আইনটির কার্যকরের প্রস্তাব দেয় ইউরোপীয় কমিশন।
প্রাথমিকভাবে আইনটির লক্ষ্য থাকবে বড় বড় মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি। এসব কোম্পানিই সবচেয়ে উন্নত এআই সিস্টেমের প্রধান নির্মাতা ও ডেভেলপার। তবে এই আইনের আওতায় অন্যান্য ব্যবসায়িক কোম্পানিও পড়বে, এমনকি অপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও।
ইউরোপীয় ইউনিয়নজুড়ে এআই-এর ব্যাপক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ নিয়ন্ত্রক কাঠামো নির্ধারণ করেছে আইনটি। সেই সঙ্গে প্রযুক্তিটি নিয়ন্ত্রণের জন্য ঝুঁকিভিত্তিক (ঝুঁকি চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করা) পদ্ধতি প্রয়োগ করবে।
ব্রাসেলসের আইন সংস্থা লিঙ্কলেটার্সের ট্যানগুই ভ্যান ওভারস্ট্রেটেন বলেছেন, ‘এই ধরনের আইন বিশ্বে এটিই প্রথম। এটি ব্যবসার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। যারা এআই সিস্টেম ডেভেলপ করছে ও নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এগুলো শুধু ব্যবহার করছে, তাদের উপর বিশেষ প্রভাব পড়বে।’
এআই নিয়ন্ত্রণে একটি ঝুঁকিভিত্তিক পদ্ধতি প্রয়োগ করবে আইনটি। এর অর্থ হল— সমাজের জন্য ঝুঁকির স্তরের ওপর নির্ভর করে প্রযুক্তির বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রিত করা হবে।
উদাহরণস্বরূপ, এআই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ‘উচ্চ-ঝুঁকি’ হিসেবে বিবেচিত হলে এআই আইনের অধীনে কঠোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হবে। এই ধরনের বাধ্যবাধকতাগুলোর মধ্যে আছে— পর্যাপ্ত ঝুঁকি মূল্যায়ন ও প্রশমন ব্যবস্থা, পক্ষপাতের ঝুঁকি কমানোর জন্য উচ্চ-মানের প্রশিক্ষণ ডেটাসেট তৈরি, কর্মকাণ্ডের নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করা ও সম্মতি মূল্যায়নের জন্য বিশদ ডকুমেন্টেশন বাধ্যতামূলক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শেয়ার করতে হবে।
‘উচ্চ-ঝুঁকি’এর এআই সিস্টেমের মধ্যে আছে- স্বয়ংক্রিয় যানবাহন, মেডিকেল ডিভাইস, লোন নেওয়ার সিস্টেম, শিক্ষাগত গ্রেডিং সিস্টেম ও দূরবর্তী বায়োমেট্রিক শনাক্তকরণ সিস্টেম।
ঝুঁকির স্তরের পরিপ্রেক্ষিতে এআইয়ের কোনো অ্যাপ্লিকেশনকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে গণ্য করা হলে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর এর প্রভাব
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিতে পারে এমন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব ও ব্যাপক পরিমাণে বিনিয়োগ করছে মাইক্রোসফট, গুগল, আমাজন, অ্যাপল ও মেটার মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি টেক জায়ান্টগুলো।
এআই প্রযুক্তির বিকাশ ও প্রশিক্ষণের জন্য বিশাল কম্পিউটিং অবকাঠামো প্রয়োজন। এজন্য মাইক্রোসফটের আজুর, আমাজন ওয়েব সার্ভিস ও গুগল ক্লাউডের মতো ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রথমেই নতুন আইনের অধীনে এই ধরনের বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
সফটওয়্যার ফার্ম এপিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লি থম্পসন বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে এআই আইনের প্রভাব পড়বে। ইইউতে কোনো কার্যক্রমের প্রভাব যে কোনো কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ যেখানেই থাকুন না কেন এআই আইন আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে।’
চার্লি থম্পসন আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে ক্রিয়াকলাপ ও ইইউ নাগরিকের ডেটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনটি আরও প্রযুক্তি কোম্পানিকে যাচাই-বাছাই করবে।
আইনি কড়াকড়ি নিয়ে উদ্বেগের কারণে মেটা ইতিমধ্যে ইউরোপে এআই মডেলের কার্যক্রম সীমিত করেছে। তবে ইইউ এর নতুন আইনের কারণে এই পদক্ষেপ নেয়নি মেটা।
এই মাসের শুরুতে মেটা বলে, এটি ইইউতে তার এলএলএএমএ মডেলগুলো চালু করবে না। ইউরোপের সাধারণ ডেটা সুরক্ষা প্রবিধান বা জিডিপিআর মেনে চলছে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তার থাকায় মেটা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জিডিপিআর লঙ্ঘন করতে পারে এমন উদ্বেগের কারণে এআই মডেল প্রশিক্ষণে কোম্পানিটি ইইউ-এর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের পোস্টগুলো ব্যবহার বন্ধ করেছে।
ইইউতে জেনারেটিভ এআইকে যেভাবে দেখছে
এআই আইনে জেনারেটিভ এআইকে ‘জেনারেল পারপাস এআই সিস্টেম-জিপিএআইএ’ বা সাধারণ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই লেবেলের আওতায় এমন টুলগুলোকে বোঝায় যা বিস্তৃত পরিসরে মানুষের মতো বা মানুষের চেয়ে ভালো কাজ করতে পারে। সাধারণ-উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা মডেলগুলোর মধ্যে রয়েছে ওপেনএআইয়ের জিপিটি, গুগলের জেমিনি ও এনথ্রপিকের ক্লড। তবে এসব মডেলের মধ্যেই আইনটি সীমাবদ্ধ নয়।
এসব সিস্টেমের জন্য কঠোর নীতিমালা আরোপ করে এই আইন। যেমন— ইইউ এর কপিরাইট আইনকে সম্মান করা, মডেলগুলোকে কীভাবে প্রশিক্ষিত করা হয় সে সম্পর্কে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, প্রযুক্তিগুলো নিয়মিত পরীক্ষা করা ও পর্যাপ্ত সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যদিও সমস্ত এআই মডেলকে সমানভাবে বিবেচনা করা হয় না।
এআই প্রযুক্তির ডেভেলপাররা বলেন, ‘জনসাধারণের জন্য বিনামূল্যে ও উপযোগী এআই অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে এমন ওপেন সোর্স মডেলগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে ইইউকে। যেগুলো খুব কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে না।’
এই ধরনের ওপেনসোর্স মডেল হলো মেটার এএলএএমএ, স্ট্যাবিলিটি এআই এর স্টাবল ডিফিউশন ও মিস্ট্রালের ৭ বি।
ওপেন সোর্স জেনারেটিভ এআই মডেলের জন্য কিছু ছাড় দেওয়া হবে। তবে এই ছাড় পাওয়ার জন্য ওপেন সোর্স প্রদানকারীদের মডেলগুলোর আর্কিটেকচার সর্বজনীনভাবে অ্যাকসেসের সুবিধা দিতে হবে। মডেলগুলোর ‘অ্যাকসেস, ব্যবহার, পরিবর্তন ও বিতরণ’ এর সুবিধা দিতে হবে।
এআই আইন অনুসারে, যেসব ওপেন সোর্স মডেলগুলো ‘সিস্টেমিক’ ঝুঁকি তৈরি করে, সেগুলো ছাড়ের জন্য গণনা করা হবে না।
এআই আইন ভঙ্গ করলে যা হবে
ইইউয়ের এআই আইন ভঙ্গ করলে কোম্পানিগুলোর ৭.৫ মিলিয়ন (৭৫ লাখ) ইউরো থেকে ৩৫ মিলিয়ন (৩ কোটি ৫০ লাখ) ইউরো বা বিশ্বব্যাপী বার্ষিক আয়ের ১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ থেকে জরিমানা হতে পারে। আইনের কতটুকু লঙ্ঘন করা হয়েছে তার উপর কোম্পানির জরিমানা নির্ভর করবে।
এই জরিমানা জিডিপিআর বা ইউরোপের ডিজিটাল প্রাইভেসি আইনের চেয়ে বেশি। জিডিপিআর আইন লঙ্ঘন করলে কোম্পানিগুলো ২ কোটি ডলার বা বিশ্বব্যাপী বার্ষিক আয়ের ৪ শতাংশ জরিমানা হতে পারে।
সাধারণ-উদ্দেশ্য এআই সিস্টেমসহ এআই মডেলগুলোর তত্ত্বাবধান ইউরোপীয় এআই অফিসের অধীনে পড়বে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করে ইউরোপীয় কমিশন।
ফাইন্যান্সিয়াল টেকনোলজি সংস্থার সম্পদ ব্যবস্থাপনার গ্লোবাল হেড জামিল জিভা বলেন, ‘আইনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে চাইলে কোম্পানিগুলোকে উল্লেখযোগ্য জরিমানা আরোপ করতে হবে।’
অবশেষে এআই আইন কার্যকর হলেও আইনটির বেশির ভাগ বিধান কমপক্ষে ২০২৬ সাল পর্যন্ত কার্যকর হবে না। এআই আইন কার্যকর হওয়ার ১২ মাস পরে সাধারণ-উদ্দেশ্য সিস্টেমের ওপর বিধিনিষেধ শুরু হবে।
জেনারেটিভ এআই সিস্টেমগুলো বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের উপযোগী। তবে ইইউতে ওপেনেআইয়ের চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি ও গুগলের জেমিনিকে নতুন আইন মেনে চলার জন্য ৩৬ মাসের সময় বা ‘ট্রানজিশন পিরিয়ড’ দেওয়া হয়েছে।
তথ্যসূত্র: সিএনবিসি
বিশ্বব্যাপী নতুন সিরিজ ফাইন্ড এক্স ৮ উন্মোচন করল চীনের স্মার্টফোন নির্মাতা অপো। এই সিরিজে অপো ফাইন্ড এক্স ও অপো ফাইন্ড এক্স ৮ প্রো মডেল দুটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মডেল দুটিতেই ৫০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা রয়েছে। তবে অপো ফাইন্ড এক্স ৮ প্রো মডেলে আইফোনের মতো ক্যামেরা বাটন যুক্ত করা হয়েছে। সিরিজটিতে মিডিয়াটেক
১৭ ঘণ্টা আগেবৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য সলিড স্টেট ব্যাটারি ব্যাপক পরিমাণে তৈরি করবে হোন্ডা। এ জন্য জাপানে একটি উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করেছে কোম্পানিটি। এখানে ব্যাটারিটি তৈরি পরিকল্পনাটি পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হবে। এই পরিকল্পনা কম খরচে ও টেকসই ব্যাটারি তৈরিতে সহায়ক হবে।
১৯ ঘণ্টা আগেম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্ম মেসেঞ্জারে একযোগে বেশ কিছু ফিচার যুক্ত করেছে মেটা। ফিচারগুলো ভিডিও কল ও অডিও কলের অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করবে। নতুন আপডেটের মাধ্যমে মেসেঞ্জারে নয়েজ সারপ্রেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইভিত্তিক ব্যাকগ্রাউন্ড, এইচডি ভিডিও কল এবং হ্যান্ডস ফ্রি কলিংয়ের মতো ফিচার পাওয়া যাবে। এক ব্লগ প
২১ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের সরকার যেন অ্যাপলের বিরুদ্ধে দায়ের করা অ্যান্টিট্রাস্ট বা প্রতিযোগিতা মামলা খারিজ করে, এ জন্য ফেডারেল বিচারককে অনুরোধ করেছে কোম্পানিটি। টেক জায়ান্টটি বলছে, তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি কাল্পনিক এবং অ্যাপল একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে তা প্রমাণ করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্রের সরকার।
২১ ঘণ্টা আগে