ইশতিয়াক হাসান
বেলিজ সিটি থেকে মোটামুটি ৬০ মাইল দূরে অবস্থান গ্রেট ব্লু হোল বা আশ্চর্য সেই নীল গর্তের। পানির নিচের গভীর এই গর্ত আবার ডুবুরিদের খুব প্রিয় জায়গা। সিংকহোল নামে পরিচিত এ ধরনের গর্তগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় বলে ধারণা গবেষকদের।
গোলাকার আকারের এই গর্তের রং নীল, এটা নাম শুনেই যে কেউ বুঝবেন। প্রায় ৩০০ মিটার (৯৮৪ ফুট) চওড়া গর্তটির গভীরতা কম নয়, ১২৫ মিটার বা ৪১০ ফুট। লাইট হাউস রিফ নামের আংটি আকৃতির একটি গোলাকার প্রবাল দ্বীপের মাঝে আছে এই নীল গর্ত।
বলা চলে, একটি লেগুন বা অগভীর লবণাক্ত জলের হ্রদকে আংটির মতো ঘিরে আছে এই প্রবাল প্রাচীর। আর ওই হ্রদের অগভীর পানির মাঝখানে সেই গভীর নীল গর্তের অবস্থান।
এবার এই নীল গর্তের কীভাবে জন্ম হলো তা বরং জেনে নেওয়া যাক। তুষারযুগের শেষ দিকে এখানে চুনাপাথরের গুহা তৈরি হয়। ওই সময় পানির উচ্চতা ছিল বেশ কম। একপর্যায়ে সাগরের পানির উচ্চতা যখন বাড়তে থাকে, তখন গুহারাজ্য প্লাবিত হয়। এ সময় গুহার অনেকটাই ধসে পড়ে। শেষমেশ থাকে সাগরের মধ্যে পানিভর্তি একটি খাড়া গুহা।
এখন জায়গাটি স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য ডুবুরিদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। নীল গর্তে নেমে সাগর গভীরের ভূস্তরের নানা গঠন দেখতে ভিড় জমান তাঁরা। সারা বছরই এখানে নামতে পারেন ডুবুরিরা। তবে পরিষ্কারভাবে দেখার ও হোয়েল শার্ক দর্শনের জন্য এপ্রিল থেকে জুন মাসকে আদর্শ বলে বিবেচনা করা হয়। বুল হাঙর, ক্যারিবিয়ান রিফ হাঙর, হ্যামারহেডসহ আরও নানা প্রজাতির হাঙর ও বিভিন্ন ধরনের মাছের জন্য বিখ্যাত জায়গাটি।
এমনই এক ডুবুরি জ্যাকুয়েস কস্তউ। ১৯৭১ সালের দিকে এই নীল গর্তকে জনপ্রিয় করে তুলতে ভূমিকা রাখেন তিনি। এ সময় তাঁর জাহাজ কেলিপসোতে চেপে এই এলাকায় আসেন তিনি। জ্যাকুয়েস নীল গর্তে নেমে আবিষ্কার করেন—চুনাপাথরের গুহা থেকেই এর সৃষ্টি। চুনাপাথরসহ নানা খনিজের তৈরি বিশাল সব স্ট্যালেকটাইট ও স্ট্যালাগমাইটের কলামও খুঁজে পান। এগুলোর কোনো কোনোটির দৈর্ঘ্য ৩০-৪০ ফুট। এ সময় তিনি ঘোষণা করেন, এই ব্লু হোল বা নীল গর্ত ডাইভিং বা ডুব দেওয়ার সেরা ১০ জায়গার একটি।
এদিকে পরে নেড মিডলটন নামের এক ব্রিটিশ লেখক ও ডুবুরি অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট বেরিয়ার রিফের আদলে এর নাম দেন গ্রেট ব্লু হোল। এদিকে ২০১২ সালে ডিসকভারি চ্যানেল একে পৃথিবীর বিস্ময়কর ১০ জায়গার একটি তালিকায় এক নম্বরে স্থান দেয়।
এখনো ডুবুরিদের খুব পছন্দের জায়গা বেলিজের এই নীল গর্ত। তাঁরা জানান, গর্তের বা চুনাপাথরের গুহার যত নিচে নামা যায়, পানি তত বেশি স্বচ্ছ। এটি বেলিজ ব্যারিয়ার রিফ রিজার্ভ সিস্টেমের একটি অংশ। গোটা এলাকাটি ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।
এখানে ডুব দিতে যাওয়ার আগে জেনে রাখা ভালো যে কেউ চাইলেই এখানে ডাইভ দিতে পারবেন না। তাঁর অন্তত ২৪টি পূর্ণাঙ্গ ডাইভ দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। গর্তের ওপরের অংশে স্নরকেলিং করা যায়। অর্থাৎ চোখে গগলস, স্নরকেল বা শ্বাস নেওয়ার নল ও সাঁতরানোর ফিন ব্যবহার করে সাঁতার কাটতে পারবেন। আর যেহেতু একে ঘিরে আছে প্রবাল প্রাচীর, তাই শুধু স্নরকেলিং করেই নানা ধরনের বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ মিলবে।
তবে অসাধারণ সৌন্দর্যের পাশাপাশি বেলিজের নীল গর্তে দুর্ঘটনারও রেকর্ড আছে। এতে ডুবুরির মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। যদিও এর ভেতরে কোনো স্রোত নেই। যত গভীরে নামা হয়, নাইট্রোজেনের আধিক্যের কারণে ডুবুরিদের মধ্যে একধরনের অসাড়তা দেখা দেয়। কোনো কোনো রিপোর্টে জানা যায়, ১৩৫ ফুটের নিচে নামা ডুবুরিরা এ ধরনের অনুভূতিশূন্যতা অনুভব করেন বেশি।
গ্রেট ব্লু হোলে সাগরদানবের বিচরণের গুজবও আছে। ১৯৭০ এর দশকের গোড়ার দিকে বেলিজের কায়ে কলকার দ্বীপ থেকে আসা ডাইভারদের একটি দল এর পানিতে বিশাল এক জলচর সরীসৃপের দেখা পাওয়ার দাবি করেন। তাঁদের কথা সত্য হলে ওটার দৈর্ঘ্য ২০ ফুট, চোখ লাল। তবে এই বক্তব্যের পক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির বা এই সাগরদানবকে আর কেউ না দেখায় বিষয়টি ডালপালা মেলেনি। তবে বিষয়টি ওই সময় ডুবুরিদের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি করে।
তবে এ ধরনের দু-চারটি ঘটনায় নীল গর্তের জনপ্রিয়তায় বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি। প্রতিবছর হাজার হাজার ডুবুরি নামেন সেখানে। আপনি যদি ডুবুরি না-ও হন, মধ্য আমেরিকার দেশ বেলিজের আশ্চর্য সুন্দর গ্রেট বেরিয়ার হোলে একটি ভ্রমণ হতেই পারে। স্নরকেলিং করতে তো কোনো বাধা নেই। এর পাশাপাশি বেলিজ নামের দেশটিতে দেখার মতো আছে আরও অনেক কিছুই।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, মেরিন ইনসাইট ডট কম, ছাবিল মার ভিলাস ডট কম
বেলিজ সিটি থেকে মোটামুটি ৬০ মাইল দূরে অবস্থান গ্রেট ব্লু হোল বা আশ্চর্য সেই নীল গর্তের। পানির নিচের গভীর এই গর্ত আবার ডুবুরিদের খুব প্রিয় জায়গা। সিংকহোল নামে পরিচিত এ ধরনের গর্তগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় বলে ধারণা গবেষকদের।
গোলাকার আকারের এই গর্তের রং নীল, এটা নাম শুনেই যে কেউ বুঝবেন। প্রায় ৩০০ মিটার (৯৮৪ ফুট) চওড়া গর্তটির গভীরতা কম নয়, ১২৫ মিটার বা ৪১০ ফুট। লাইট হাউস রিফ নামের আংটি আকৃতির একটি গোলাকার প্রবাল দ্বীপের মাঝে আছে এই নীল গর্ত।
বলা চলে, একটি লেগুন বা অগভীর লবণাক্ত জলের হ্রদকে আংটির মতো ঘিরে আছে এই প্রবাল প্রাচীর। আর ওই হ্রদের অগভীর পানির মাঝখানে সেই গভীর নীল গর্তের অবস্থান।
এবার এই নীল গর্তের কীভাবে জন্ম হলো তা বরং জেনে নেওয়া যাক। তুষারযুগের শেষ দিকে এখানে চুনাপাথরের গুহা তৈরি হয়। ওই সময় পানির উচ্চতা ছিল বেশ কম। একপর্যায়ে সাগরের পানির উচ্চতা যখন বাড়তে থাকে, তখন গুহারাজ্য প্লাবিত হয়। এ সময় গুহার অনেকটাই ধসে পড়ে। শেষমেশ থাকে সাগরের মধ্যে পানিভর্তি একটি খাড়া গুহা।
এখন জায়গাটি স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য ডুবুরিদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। নীল গর্তে নেমে সাগর গভীরের ভূস্তরের নানা গঠন দেখতে ভিড় জমান তাঁরা। সারা বছরই এখানে নামতে পারেন ডুবুরিরা। তবে পরিষ্কারভাবে দেখার ও হোয়েল শার্ক দর্শনের জন্য এপ্রিল থেকে জুন মাসকে আদর্শ বলে বিবেচনা করা হয়। বুল হাঙর, ক্যারিবিয়ান রিফ হাঙর, হ্যামারহেডসহ আরও নানা প্রজাতির হাঙর ও বিভিন্ন ধরনের মাছের জন্য বিখ্যাত জায়গাটি।
এমনই এক ডুবুরি জ্যাকুয়েস কস্তউ। ১৯৭১ সালের দিকে এই নীল গর্তকে জনপ্রিয় করে তুলতে ভূমিকা রাখেন তিনি। এ সময় তাঁর জাহাজ কেলিপসোতে চেপে এই এলাকায় আসেন তিনি। জ্যাকুয়েস নীল গর্তে নেমে আবিষ্কার করেন—চুনাপাথরের গুহা থেকেই এর সৃষ্টি। চুনাপাথরসহ নানা খনিজের তৈরি বিশাল সব স্ট্যালেকটাইট ও স্ট্যালাগমাইটের কলামও খুঁজে পান। এগুলোর কোনো কোনোটির দৈর্ঘ্য ৩০-৪০ ফুট। এ সময় তিনি ঘোষণা করেন, এই ব্লু হোল বা নীল গর্ত ডাইভিং বা ডুব দেওয়ার সেরা ১০ জায়গার একটি।
এদিকে পরে নেড মিডলটন নামের এক ব্রিটিশ লেখক ও ডুবুরি অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট বেরিয়ার রিফের আদলে এর নাম দেন গ্রেট ব্লু হোল। এদিকে ২০১২ সালে ডিসকভারি চ্যানেল একে পৃথিবীর বিস্ময়কর ১০ জায়গার একটি তালিকায় এক নম্বরে স্থান দেয়।
এখনো ডুবুরিদের খুব পছন্দের জায়গা বেলিজের এই নীল গর্ত। তাঁরা জানান, গর্তের বা চুনাপাথরের গুহার যত নিচে নামা যায়, পানি তত বেশি স্বচ্ছ। এটি বেলিজ ব্যারিয়ার রিফ রিজার্ভ সিস্টেমের একটি অংশ। গোটা এলাকাটি ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।
এখানে ডুব দিতে যাওয়ার আগে জেনে রাখা ভালো যে কেউ চাইলেই এখানে ডাইভ দিতে পারবেন না। তাঁর অন্তত ২৪টি পূর্ণাঙ্গ ডাইভ দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। গর্তের ওপরের অংশে স্নরকেলিং করা যায়। অর্থাৎ চোখে গগলস, স্নরকেল বা শ্বাস নেওয়ার নল ও সাঁতরানোর ফিন ব্যবহার করে সাঁতার কাটতে পারবেন। আর যেহেতু একে ঘিরে আছে প্রবাল প্রাচীর, তাই শুধু স্নরকেলিং করেই নানা ধরনের বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ মিলবে।
তবে অসাধারণ সৌন্দর্যের পাশাপাশি বেলিজের নীল গর্তে দুর্ঘটনারও রেকর্ড আছে। এতে ডুবুরির মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। যদিও এর ভেতরে কোনো স্রোত নেই। যত গভীরে নামা হয়, নাইট্রোজেনের আধিক্যের কারণে ডুবুরিদের মধ্যে একধরনের অসাড়তা দেখা দেয়। কোনো কোনো রিপোর্টে জানা যায়, ১৩৫ ফুটের নিচে নামা ডুবুরিরা এ ধরনের অনুভূতিশূন্যতা অনুভব করেন বেশি।
গ্রেট ব্লু হোলে সাগরদানবের বিচরণের গুজবও আছে। ১৯৭০ এর দশকের গোড়ার দিকে বেলিজের কায়ে কলকার দ্বীপ থেকে আসা ডাইভারদের একটি দল এর পানিতে বিশাল এক জলচর সরীসৃপের দেখা পাওয়ার দাবি করেন। তাঁদের কথা সত্য হলে ওটার দৈর্ঘ্য ২০ ফুট, চোখ লাল। তবে এই বক্তব্যের পক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির বা এই সাগরদানবকে আর কেউ না দেখায় বিষয়টি ডালপালা মেলেনি। তবে বিষয়টি ওই সময় ডুবুরিদের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি করে।
তবে এ ধরনের দু-চারটি ঘটনায় নীল গর্তের জনপ্রিয়তায় বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি। প্রতিবছর হাজার হাজার ডুবুরি নামেন সেখানে। আপনি যদি ডুবুরি না-ও হন, মধ্য আমেরিকার দেশ বেলিজের আশ্চর্য সুন্দর গ্রেট বেরিয়ার হোলে একটি ভ্রমণ হতেই পারে। স্নরকেলিং করতে তো কোনো বাধা নেই। এর পাশাপাশি বেলিজ নামের দেশটিতে দেখার মতো আছে আরও অনেক কিছুই।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, মেরিন ইনসাইট ডট কম, ছাবিল মার ভিলাস ডট কম
ওনলিফ্যানস মডেল বনি ব্লু’র চাঞ্চল্যকর দাবি ইন্টারনেটে আলোচনার ঝড় তুলেছে। ২৫ বছর বয়সী এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর জানিয়েছেন, তিনি ১২ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫৭ জন পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।
৩ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে বসবাসকারী এক নারী সম্প্রতি ৫০ হাজার ডলারের একটি লটারি জিতেছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থ ৬০ লাখ টাকার বেশি। মজার বিষয় হলো, যে সংখ্যা ব্যবহার করে এই লটারি বিজয়, সেই সংখ্যা স্বপ্নে পেয়েছিলেন ওই নারী!
৭ দিন আগেদক্ষিণ আফ্রিকান একটি নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান সেখানকার একটি বাড়ি থেকে বিপৎসংকেত বা সতর্কতামূলক অ্যালার্ম পায়। প্রতিষ্ঠানটি দেরি না করে সেখানে একটি দল পাঠায়। তখনই ফাঁস হয় রহস্য। এই অ্যালার্ম বাজিয়েছিল ওই বাড়ির বাসিন্দারা নয়, বরং একটি বানর।
২০ দিন আগেমাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে বাসা। রাত হয়ে যাওয়ায় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ উবারই ভরসা। ২০ মিনিটেই চলে যাওয়া যায়। তবে যানজটে সময় লাগল ২ ঘণ্টা। গন্তব্যে পৌঁছে সোফি দেখলেন ৫ কিলোমিটার রাস্তার জন্য তাঁর বিল এসেছে ৩২১ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৮১৯৭ টাকা)। উবার বুক করার সময় দেখানো প্রাথমিক বিলের প্রায় চার গুণ!
২২ ডিসেম্বর ২০২৪