আরাফাত রহমান

ফেসবুক ব্যবহার করতে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে বকা শোনেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে সময়ের অপচয় হয়। কিন্তু এটাই আবার আয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোটখাটো ব্যবসা—সবারই প্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। তবে এর জন্য শেখা চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা। ব্যবসা বা নিজের উদ্যোগের নামে একটি পেজ করলেই চলে না। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজের ব্যবসাকে লাভবান করতে হলে সঠিক ব্যবস্থাপনা শেখা ভীষণ জরুরি।
সাধারণত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে নিজেদের প্রচার চালাতে একটি পেজ খুলেই কাজ সারে। এর চেয়ে যারা একটু অগ্রসর, তারা দেখা যায় পেজের প্রচারের জন্য কিছু টাকা ব্যয় করে। এটুকু করেই অনেকে ভাবেন, অনেকটাই করা হলো। এমন যারা ভাবেন, তারা বলতে হয় বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই সামনে হাজির হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের প্রসঙ্গটি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। এ জন্যই বড় বড় ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী—সবাই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী লোক খোঁজে। বলা যায়, সময়ের সঙ্গে এই পেশায় দক্ষ লোকের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের কাজ
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের মূল কাজ হলো একটি ব্যবসাকে অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত লোকজন বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে সেগুলো পর্যালোচনা করে এবং পণ্য কেনে। এখানকার মার্কেটিংকে বলা যায় ‘রিয়েল টাইম মার্কেটিং’। তাই একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারের মূল কাজ হলো—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের আয়
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট যথাযথভাবে শিখতে পারলে দেশের পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানিগুলোতেও কাজের সুবিধা পেতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনকর্মী হিসেবে আপনি যেভাবে আয় করতে পারেন, তা হচ্ছে—
ফ্রিল্যান্সিং: ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে আমাদের দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সের ডটকম, পিপল পার আওয়ারসহ বিভিন্ন সাইটে নিজের প্রোফাইল খুলে পছন্দের কাজে বিড (কাজের বিপরীতে নিজের মজুরি জানিয়ে কার্যাদেশ পাওয়ার আবেদন) করতে পারবেন বা যোগাযোগ করতে পারবেন বায়ার বা ক্রেতার সঙ্গে। একজন মোটামুটি দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার প্রতি মাসে ৩০০ ডলার–১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান: বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ দিচ্ছে। কথায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলেও মূল কাজ থাকে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষানবিশ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের বেতন ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। নির্বাহী পদে প্রতিষ্ঠান ও চাকরির কাজের পরিধি ভেদে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন হয়। বিডিজবসে, ফেসবুকের বিভিন্ন নিয়োগভিত্তিক পেজে নিয়মিত এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাওয়া যায়।
বিদেশি প্রতিষ্ঠান: বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করার আগে আপনার একটি পোর্টফোলিও থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো অভিজ্ঞ লোক নিতে পছন্দ করে। আপনি দেশে বসেই লিংকডইনের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করতে পারেন। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ঘণ্টা ভিত্তিতে বা মাসিক চুক্তি—দুভাবেই নিয়োগ করে। ভালো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ ও দক্ষতার ভিত্তিতে মাসে ৮০০-১৫০০ ডলার আয়ের সুযোগ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে
একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কোর্স: বর্তমানে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কোর্স অফার করে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগেও বিভিন্ন ধরনের কোর্স করানো হচ্ছে। এগুলোর যেকোনো একটিতে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য কোর্স করতেই হবে, তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলে ইউটিউব, ইউডেমি, কোর্সেরাসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কোর্সটি করতে পারবেন।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন ও কনটেন্ট শেয়ার করুন: ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দুনিয়ায় নিজের অবস্থান তৈরির জন্য একটি ভালো পোর্টফোলিও খুবই দরকার। প্রথম দিকে কাজ পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। শুরুটা ঠিকঠাক করতে হলে যা করতে পারেন—
*কাজ শেখার প্রথমদিকে বিভিন্ন ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কয়েক মাসের জন্য তাদের বিনা মূল্যে সেবা দিতে পারেন। কারণ, প্রথম দিকে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাকে আপনার বিনিয়োগ হিসেবে ধরতে পারেন। এমনও হতে পারে, আপনি যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন, তারাই আপনাকে পরে নিয়োগ দিতে পারে।
*বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য ইন্টার্ন নিয়োগ করে। ইন্টার্নশিপের জন্য সাধারণত ৮০০০-১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই ধরনের ইন্টার্নশিপগুলোতে কাজের চাপ থাকে। ফলে আপনার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা হয়ে যাবে।
*বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিজের অ্যাকাউন্ট/পেজ/চ্যানেল খুলে কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন এবং অরগানিকভাবে ফলোয়ার বাড়াতে পারেন। ফলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্যাপারে আপনার ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা হবে। তা ছাড়া আপনার কনটেন্ট মার্কেটিং নিয়ে ভালো ধারণা হয়ে যাবে।
যে দক্ষতাগুলো জরুরি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এর মধ্যে শুরুতে থাকে লেখার বিষয়টি। এর সঙ্গে ডিজাইন সম্পর্কিত জ্ঞান থাকলে প্রাথমিক কাজটা ভালোভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়। মোটাদাগে বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠলে তবেই এ পেশায় ভালো করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে—
কপি রাইটিং: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্য ও সেবা বিপণনে দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে উঠতে হলে লেখালেখির অভ্যাস থাকাটা ভীষণ জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখের সামনে ঘোরা এবং আকর্ষণীয় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ছবি বা ভিডিওর সঙ্গে দেখবেন কিছু লেখা রয়েছে। এই ক্যাপশনগুলোই কিন্তু পাঠক ও দর্শককে আকৃষ্ট করে। এর ওপরই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি ওই বিজ্ঞাপনের ভেতরে ঢুকবেন কিনা। মানুষকে আপনার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত করতে হলে চাই আকর্ষণীয় ক্যাপশন। ক্যাপশন ভালো ও আকর্ষণীয় হলেই মানুষ পণ্যটি কিনতে বেশি আগ্রহী হবে। তাই একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারকে বিজ্ঞাপনী ভাষা রপ্ত করতে হবে। এই কপি রাইটিং ভালোমতো আয়ত্ত করতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের পেজ ও গ্রুপগুলো ফলো করতে পারেন। তা ছাড়া নিজের মতো করে একটা কপি লিখে আশপাশের মানুষকে দেখাতে পারেন এবং তাঁদের মতামত নিতে পারেন। কারণ, আপনার চারপাশে থাকা মানুষদের একজনই আপনার পণ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কিনবেন।
গ্রাফিক ডিজাইন: সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি ও ভিডিও কনটেন্ট হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ রাখে। বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্কে অন্য কিছুর চেয়ে ছবি ৫০০০ গুণ দ্রুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই আপনার যদি গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে ধারণা থাকে ও আকর্ষণীয় সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুতই একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে আপনি সফল হতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে আপনি ক্যানভা (Canva) দিয়ে শুরু করতে পারেন। পরে এডোবি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর শিখে নিতে পারেন।
কাস্টোমার সাপোর্ট বা কমিউনিটি ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোক্তারা বিভিন্ন সময় ফেসবুক পেজের ইনবক্সে মেসেজ দেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি ও বিক্রয়-পরবর্তী সেবা নিশ্চিত করতে পারাটা একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
বিপণন কৌশল: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বা বিপণন কৌশল নিয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একজন ভোক্তাকে সেলস ফানেলের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। সেলস ফানেলের ওপরের দিকে থাকে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের আপনাদের পণ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। তার পরবর্তী ধাপে থাকে ব্র্যান্ড কনসিডারেশন। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের পণ্যটি ক্রয়ে আগ্রহী করে তুলবেন। আর শেষ ধাপটি হচ্ছে কনভারশন। এই ধাপে এসে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী চূড়ান্তভাবে আপনার পণ্যের ক্রেতায় পরিণত হবে।
সেলস ফানেল ছাড়াও কোন ধরনের চ্যানেলে কোন ধরনের অডিয়েন্স পাওয়া যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেমন তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ব্যবহার করে। আবার ফেসবুকে আপনি সব শ্রেণি ও বয়সের লোকেদের পাবেন। ইউটিউবে ইন্টারেস্টভিত্তিক অডিয়েন্সের উপস্থিতি আবার বেশি। তাই আপনার পণ্যের প্রকরণ বুঝে প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া কোন সময় আপনি আপনার কনটেন্ট আপলোড করবেন, কোন সময় মানুষ বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে—এসব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে।
বিশ্লেষণ: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণী বা অ্যানালিটিক্যাল টুলস ব্যবহার করতে জানতে হবে। আপনি যদি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে কী ধরনের পোস্ট আপনি শেয়ার করছেন, সেগুলো কতজন মানুষের কাছে পৌঁছাল, কতজন পোস্টটির সঙ্গে যুক্ত হলো, পোস্টটির ফলে কতজন মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে এসেছে, কোন পণ্যটি অর্ডার করেছে, কখন ক্রেতারা বেশি সক্রিয় থাকে—এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে প্ল্যাটফর্মগুলোয় আপনার কার্যক্রম সাজাতে হবে। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব অ্যানালিটিকস আছে। যেগুলোর বিভিন্ন মেট্রিক্স নিয়ে আপনার অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে।
ব্যয় নির্ধারণ: সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবসার পেইড মার্কেটিং করতে হয়। অর্থাৎ আপনার ব্যবসা বা পণ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হবে। অবশ্যই এই বিনিময় হবে ডলারে। আর বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ তৈরি, টুলস কেনাসহ নানা খরচ তো আছেই। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে যেন আপনার বিনিয়োগ উঠে আসে, সে হিসাব করা এবং এর বাজেট নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
কোন কোন প্ল্যাটফর্মে কাজ করা শিখবেন
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট শিখতে হলে প্রথমে আপনাকে কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে চিহ্নিত করতে হবে, যেগুলোর আপনি কাজ করবেন। প্রধানত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন, টুইটার, পিন্টারেস্ট, টিকটক, কোরা—এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখাটা বাঞ্ছনীয়। কারণ, এই প্ল্যাটফর্মগুলোতেই অধিকাংশ ব্যবহারকারীরা থাকে। ভিডিও নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই ইউটিউব সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো কিন্তু আবার একটি থেকে অন্যটি আলাদা। ফলে এগুলোয় কাজের জন্য চাই আলাদা আলাদা প্রস্তুতি। একেক প্ল্যাটফর্মে একেক বয়স, শ্রেণি ও পেশার লোকেরা থাকে। আবার ভিন্ন ভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টের ভিন্নতাও পাওয়া যায়। যেমন ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে ছবিনির্ভর, আবার ইউটিউব পুরোপুরি ভিডিওনির্ভর। আবার টিকটক ভিডিওনির্ভর হলেও সেখানকার ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য কম। কম দৈর্ঘ্যের ভিডিওর ফিচার নিয়ে অবশ্য ইউটিউব, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোও হাজির হয়েছে। তাই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং এসবের নতুন নতুন সব ফিচার সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়।
বর্তমান সময়কে বলা হয় চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের যুগ। এই সময় গতানুগতিক চাকরির পেছনে না ছুটে দক্ষতা অর্জন করলে খুব সহজেই সম্মানজনকভাবে আয় করতে পারবেন। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার উত্তরোত্তর বাড়ছে; সামনে আরও বাড়বে। ফেসবুক নিজেদের মূল কোম্পানির নাম এরই মধ্যে ‘মেটা’ রেখেছে। তারা মেটাভার্সের কথা বলছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও বসে নেই। মেটাভার্সের যে বাস্তবতা আসছে সামনে, তাতে ব্যবসা বা যে কোনো ধরনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই এই খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা দিন দিন বাড়বে। ফলে নতুন এই দুনিয়ায় নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে এখন থেকেই লেগে পড়ুন।
প্রযুক্তি সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

ফেসবুক ব্যবহার করতে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে বকা শোনেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে সময়ের অপচয় হয়। কিন্তু এটাই আবার আয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোটখাটো ব্যবসা—সবারই প্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। তবে এর জন্য শেখা চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা। ব্যবসা বা নিজের উদ্যোগের নামে একটি পেজ করলেই চলে না। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজের ব্যবসাকে লাভবান করতে হলে সঠিক ব্যবস্থাপনা শেখা ভীষণ জরুরি।
সাধারণত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে নিজেদের প্রচার চালাতে একটি পেজ খুলেই কাজ সারে। এর চেয়ে যারা একটু অগ্রসর, তারা দেখা যায় পেজের প্রচারের জন্য কিছু টাকা ব্যয় করে। এটুকু করেই অনেকে ভাবেন, অনেকটাই করা হলো। এমন যারা ভাবেন, তারা বলতে হয় বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই সামনে হাজির হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের প্রসঙ্গটি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। এ জন্যই বড় বড় ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী—সবাই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী লোক খোঁজে। বলা যায়, সময়ের সঙ্গে এই পেশায় দক্ষ লোকের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের কাজ
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের মূল কাজ হলো একটি ব্যবসাকে অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত লোকজন বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে সেগুলো পর্যালোচনা করে এবং পণ্য কেনে। এখানকার মার্কেটিংকে বলা যায় ‘রিয়েল টাইম মার্কেটিং’। তাই একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারের মূল কাজ হলো—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের আয়
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট যথাযথভাবে শিখতে পারলে দেশের পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানিগুলোতেও কাজের সুবিধা পেতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনকর্মী হিসেবে আপনি যেভাবে আয় করতে পারেন, তা হচ্ছে—
ফ্রিল্যান্সিং: ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে আমাদের দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সের ডটকম, পিপল পার আওয়ারসহ বিভিন্ন সাইটে নিজের প্রোফাইল খুলে পছন্দের কাজে বিড (কাজের বিপরীতে নিজের মজুরি জানিয়ে কার্যাদেশ পাওয়ার আবেদন) করতে পারবেন বা যোগাযোগ করতে পারবেন বায়ার বা ক্রেতার সঙ্গে। একজন মোটামুটি দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার প্রতি মাসে ৩০০ ডলার–১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান: বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ দিচ্ছে। কথায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলেও মূল কাজ থাকে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষানবিশ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের বেতন ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। নির্বাহী পদে প্রতিষ্ঠান ও চাকরির কাজের পরিধি ভেদে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন হয়। বিডিজবসে, ফেসবুকের বিভিন্ন নিয়োগভিত্তিক পেজে নিয়মিত এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাওয়া যায়।
বিদেশি প্রতিষ্ঠান: বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করার আগে আপনার একটি পোর্টফোলিও থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো অভিজ্ঞ লোক নিতে পছন্দ করে। আপনি দেশে বসেই লিংকডইনের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করতে পারেন। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ঘণ্টা ভিত্তিতে বা মাসিক চুক্তি—দুভাবেই নিয়োগ করে। ভালো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ ও দক্ষতার ভিত্তিতে মাসে ৮০০-১৫০০ ডলার আয়ের সুযোগ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে
একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কোর্স: বর্তমানে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কোর্স অফার করে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগেও বিভিন্ন ধরনের কোর্স করানো হচ্ছে। এগুলোর যেকোনো একটিতে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য কোর্স করতেই হবে, তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলে ইউটিউব, ইউডেমি, কোর্সেরাসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কোর্সটি করতে পারবেন।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন ও কনটেন্ট শেয়ার করুন: ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দুনিয়ায় নিজের অবস্থান তৈরির জন্য একটি ভালো পোর্টফোলিও খুবই দরকার। প্রথম দিকে কাজ পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। শুরুটা ঠিকঠাক করতে হলে যা করতে পারেন—
*কাজ শেখার প্রথমদিকে বিভিন্ন ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কয়েক মাসের জন্য তাদের বিনা মূল্যে সেবা দিতে পারেন। কারণ, প্রথম দিকে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাকে আপনার বিনিয়োগ হিসেবে ধরতে পারেন। এমনও হতে পারে, আপনি যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন, তারাই আপনাকে পরে নিয়োগ দিতে পারে।
*বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য ইন্টার্ন নিয়োগ করে। ইন্টার্নশিপের জন্য সাধারণত ৮০০০-১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই ধরনের ইন্টার্নশিপগুলোতে কাজের চাপ থাকে। ফলে আপনার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা হয়ে যাবে।
*বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিজের অ্যাকাউন্ট/পেজ/চ্যানেল খুলে কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন এবং অরগানিকভাবে ফলোয়ার বাড়াতে পারেন। ফলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্যাপারে আপনার ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা হবে। তা ছাড়া আপনার কনটেন্ট মার্কেটিং নিয়ে ভালো ধারণা হয়ে যাবে।
যে দক্ষতাগুলো জরুরি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এর মধ্যে শুরুতে থাকে লেখার বিষয়টি। এর সঙ্গে ডিজাইন সম্পর্কিত জ্ঞান থাকলে প্রাথমিক কাজটা ভালোভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়। মোটাদাগে বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠলে তবেই এ পেশায় ভালো করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে—
কপি রাইটিং: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্য ও সেবা বিপণনে দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে উঠতে হলে লেখালেখির অভ্যাস থাকাটা ভীষণ জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখের সামনে ঘোরা এবং আকর্ষণীয় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ছবি বা ভিডিওর সঙ্গে দেখবেন কিছু লেখা রয়েছে। এই ক্যাপশনগুলোই কিন্তু পাঠক ও দর্শককে আকৃষ্ট করে। এর ওপরই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি ওই বিজ্ঞাপনের ভেতরে ঢুকবেন কিনা। মানুষকে আপনার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত করতে হলে চাই আকর্ষণীয় ক্যাপশন। ক্যাপশন ভালো ও আকর্ষণীয় হলেই মানুষ পণ্যটি কিনতে বেশি আগ্রহী হবে। তাই একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারকে বিজ্ঞাপনী ভাষা রপ্ত করতে হবে। এই কপি রাইটিং ভালোমতো আয়ত্ত করতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের পেজ ও গ্রুপগুলো ফলো করতে পারেন। তা ছাড়া নিজের মতো করে একটা কপি লিখে আশপাশের মানুষকে দেখাতে পারেন এবং তাঁদের মতামত নিতে পারেন। কারণ, আপনার চারপাশে থাকা মানুষদের একজনই আপনার পণ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কিনবেন।
গ্রাফিক ডিজাইন: সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি ও ভিডিও কনটেন্ট হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ রাখে। বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্কে অন্য কিছুর চেয়ে ছবি ৫০০০ গুণ দ্রুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই আপনার যদি গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে ধারণা থাকে ও আকর্ষণীয় সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুতই একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে আপনি সফল হতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে আপনি ক্যানভা (Canva) দিয়ে শুরু করতে পারেন। পরে এডোবি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর শিখে নিতে পারেন।
কাস্টোমার সাপোর্ট বা কমিউনিটি ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোক্তারা বিভিন্ন সময় ফেসবুক পেজের ইনবক্সে মেসেজ দেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি ও বিক্রয়-পরবর্তী সেবা নিশ্চিত করতে পারাটা একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
বিপণন কৌশল: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বা বিপণন কৌশল নিয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একজন ভোক্তাকে সেলস ফানেলের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। সেলস ফানেলের ওপরের দিকে থাকে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের আপনাদের পণ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। তার পরবর্তী ধাপে থাকে ব্র্যান্ড কনসিডারেশন। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের পণ্যটি ক্রয়ে আগ্রহী করে তুলবেন। আর শেষ ধাপটি হচ্ছে কনভারশন। এই ধাপে এসে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী চূড়ান্তভাবে আপনার পণ্যের ক্রেতায় পরিণত হবে।
সেলস ফানেল ছাড়াও কোন ধরনের চ্যানেলে কোন ধরনের অডিয়েন্স পাওয়া যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেমন তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ব্যবহার করে। আবার ফেসবুকে আপনি সব শ্রেণি ও বয়সের লোকেদের পাবেন। ইউটিউবে ইন্টারেস্টভিত্তিক অডিয়েন্সের উপস্থিতি আবার বেশি। তাই আপনার পণ্যের প্রকরণ বুঝে প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া কোন সময় আপনি আপনার কনটেন্ট আপলোড করবেন, কোন সময় মানুষ বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে—এসব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে।
বিশ্লেষণ: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণী বা অ্যানালিটিক্যাল টুলস ব্যবহার করতে জানতে হবে। আপনি যদি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে কী ধরনের পোস্ট আপনি শেয়ার করছেন, সেগুলো কতজন মানুষের কাছে পৌঁছাল, কতজন পোস্টটির সঙ্গে যুক্ত হলো, পোস্টটির ফলে কতজন মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে এসেছে, কোন পণ্যটি অর্ডার করেছে, কখন ক্রেতারা বেশি সক্রিয় থাকে—এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে প্ল্যাটফর্মগুলোয় আপনার কার্যক্রম সাজাতে হবে। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব অ্যানালিটিকস আছে। যেগুলোর বিভিন্ন মেট্রিক্স নিয়ে আপনার অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে।
ব্যয় নির্ধারণ: সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবসার পেইড মার্কেটিং করতে হয়। অর্থাৎ আপনার ব্যবসা বা পণ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হবে। অবশ্যই এই বিনিময় হবে ডলারে। আর বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ তৈরি, টুলস কেনাসহ নানা খরচ তো আছেই। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে যেন আপনার বিনিয়োগ উঠে আসে, সে হিসাব করা এবং এর বাজেট নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
কোন কোন প্ল্যাটফর্মে কাজ করা শিখবেন
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট শিখতে হলে প্রথমে আপনাকে কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে চিহ্নিত করতে হবে, যেগুলোর আপনি কাজ করবেন। প্রধানত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন, টুইটার, পিন্টারেস্ট, টিকটক, কোরা—এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখাটা বাঞ্ছনীয়। কারণ, এই প্ল্যাটফর্মগুলোতেই অধিকাংশ ব্যবহারকারীরা থাকে। ভিডিও নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই ইউটিউব সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো কিন্তু আবার একটি থেকে অন্যটি আলাদা। ফলে এগুলোয় কাজের জন্য চাই আলাদা আলাদা প্রস্তুতি। একেক প্ল্যাটফর্মে একেক বয়স, শ্রেণি ও পেশার লোকেরা থাকে। আবার ভিন্ন ভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টের ভিন্নতাও পাওয়া যায়। যেমন ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে ছবিনির্ভর, আবার ইউটিউব পুরোপুরি ভিডিওনির্ভর। আবার টিকটক ভিডিওনির্ভর হলেও সেখানকার ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য কম। কম দৈর্ঘ্যের ভিডিওর ফিচার নিয়ে অবশ্য ইউটিউব, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোও হাজির হয়েছে। তাই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং এসবের নতুন নতুন সব ফিচার সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়।
বর্তমান সময়কে বলা হয় চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের যুগ। এই সময় গতানুগতিক চাকরির পেছনে না ছুটে দক্ষতা অর্জন করলে খুব সহজেই সম্মানজনকভাবে আয় করতে পারবেন। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার উত্তরোত্তর বাড়ছে; সামনে আরও বাড়বে। ফেসবুক নিজেদের মূল কোম্পানির নাম এরই মধ্যে ‘মেটা’ রেখেছে। তারা মেটাভার্সের কথা বলছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও বসে নেই। মেটাভার্সের যে বাস্তবতা আসছে সামনে, তাতে ব্যবসা বা যে কোনো ধরনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই এই খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা দিন দিন বাড়বে। ফলে নতুন এই দুনিয়ায় নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে এখন থেকেই লেগে পড়ুন।
প্রযুক্তি সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
আরাফাত রহমান

ফেসবুক ব্যবহার করতে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে বকা শোনেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে সময়ের অপচয় হয়। কিন্তু এটাই আবার আয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোটখাটো ব্যবসা—সবারই প্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। তবে এর জন্য শেখা চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা। ব্যবসা বা নিজের উদ্যোগের নামে একটি পেজ করলেই চলে না। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজের ব্যবসাকে লাভবান করতে হলে সঠিক ব্যবস্থাপনা শেখা ভীষণ জরুরি।
সাধারণত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে নিজেদের প্রচার চালাতে একটি পেজ খুলেই কাজ সারে। এর চেয়ে যারা একটু অগ্রসর, তারা দেখা যায় পেজের প্রচারের জন্য কিছু টাকা ব্যয় করে। এটুকু করেই অনেকে ভাবেন, অনেকটাই করা হলো। এমন যারা ভাবেন, তারা বলতে হয় বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই সামনে হাজির হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের প্রসঙ্গটি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। এ জন্যই বড় বড় ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী—সবাই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী লোক খোঁজে। বলা যায়, সময়ের সঙ্গে এই পেশায় দক্ষ লোকের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের কাজ
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের মূল কাজ হলো একটি ব্যবসাকে অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত লোকজন বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে সেগুলো পর্যালোচনা করে এবং পণ্য কেনে। এখানকার মার্কেটিংকে বলা যায় ‘রিয়েল টাইম মার্কেটিং’। তাই একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারের মূল কাজ হলো—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের আয়
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট যথাযথভাবে শিখতে পারলে দেশের পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানিগুলোতেও কাজের সুবিধা পেতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনকর্মী হিসেবে আপনি যেভাবে আয় করতে পারেন, তা হচ্ছে—
ফ্রিল্যান্সিং: ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে আমাদের দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সের ডটকম, পিপল পার আওয়ারসহ বিভিন্ন সাইটে নিজের প্রোফাইল খুলে পছন্দের কাজে বিড (কাজের বিপরীতে নিজের মজুরি জানিয়ে কার্যাদেশ পাওয়ার আবেদন) করতে পারবেন বা যোগাযোগ করতে পারবেন বায়ার বা ক্রেতার সঙ্গে। একজন মোটামুটি দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার প্রতি মাসে ৩০০ ডলার–১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান: বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ দিচ্ছে। কথায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলেও মূল কাজ থাকে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষানবিশ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের বেতন ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। নির্বাহী পদে প্রতিষ্ঠান ও চাকরির কাজের পরিধি ভেদে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন হয়। বিডিজবসে, ফেসবুকের বিভিন্ন নিয়োগভিত্তিক পেজে নিয়মিত এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাওয়া যায়।
বিদেশি প্রতিষ্ঠান: বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করার আগে আপনার একটি পোর্টফোলিও থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো অভিজ্ঞ লোক নিতে পছন্দ করে। আপনি দেশে বসেই লিংকডইনের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করতে পারেন। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ঘণ্টা ভিত্তিতে বা মাসিক চুক্তি—দুভাবেই নিয়োগ করে। ভালো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ ও দক্ষতার ভিত্তিতে মাসে ৮০০-১৫০০ ডলার আয়ের সুযোগ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে
একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কোর্স: বর্তমানে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কোর্স অফার করে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগেও বিভিন্ন ধরনের কোর্স করানো হচ্ছে। এগুলোর যেকোনো একটিতে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য কোর্স করতেই হবে, তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলে ইউটিউব, ইউডেমি, কোর্সেরাসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কোর্সটি করতে পারবেন।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন ও কনটেন্ট শেয়ার করুন: ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দুনিয়ায় নিজের অবস্থান তৈরির জন্য একটি ভালো পোর্টফোলিও খুবই দরকার। প্রথম দিকে কাজ পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। শুরুটা ঠিকঠাক করতে হলে যা করতে পারেন—
*কাজ শেখার প্রথমদিকে বিভিন্ন ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কয়েক মাসের জন্য তাদের বিনা মূল্যে সেবা দিতে পারেন। কারণ, প্রথম দিকে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাকে আপনার বিনিয়োগ হিসেবে ধরতে পারেন। এমনও হতে পারে, আপনি যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন, তারাই আপনাকে পরে নিয়োগ দিতে পারে।
*বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য ইন্টার্ন নিয়োগ করে। ইন্টার্নশিপের জন্য সাধারণত ৮০০০-১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই ধরনের ইন্টার্নশিপগুলোতে কাজের চাপ থাকে। ফলে আপনার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা হয়ে যাবে।
*বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিজের অ্যাকাউন্ট/পেজ/চ্যানেল খুলে কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন এবং অরগানিকভাবে ফলোয়ার বাড়াতে পারেন। ফলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্যাপারে আপনার ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা হবে। তা ছাড়া আপনার কনটেন্ট মার্কেটিং নিয়ে ভালো ধারণা হয়ে যাবে।
যে দক্ষতাগুলো জরুরি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এর মধ্যে শুরুতে থাকে লেখার বিষয়টি। এর সঙ্গে ডিজাইন সম্পর্কিত জ্ঞান থাকলে প্রাথমিক কাজটা ভালোভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়। মোটাদাগে বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠলে তবেই এ পেশায় ভালো করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে—
কপি রাইটিং: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্য ও সেবা বিপণনে দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে উঠতে হলে লেখালেখির অভ্যাস থাকাটা ভীষণ জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখের সামনে ঘোরা এবং আকর্ষণীয় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ছবি বা ভিডিওর সঙ্গে দেখবেন কিছু লেখা রয়েছে। এই ক্যাপশনগুলোই কিন্তু পাঠক ও দর্শককে আকৃষ্ট করে। এর ওপরই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি ওই বিজ্ঞাপনের ভেতরে ঢুকবেন কিনা। মানুষকে আপনার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত করতে হলে চাই আকর্ষণীয় ক্যাপশন। ক্যাপশন ভালো ও আকর্ষণীয় হলেই মানুষ পণ্যটি কিনতে বেশি আগ্রহী হবে। তাই একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারকে বিজ্ঞাপনী ভাষা রপ্ত করতে হবে। এই কপি রাইটিং ভালোমতো আয়ত্ত করতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের পেজ ও গ্রুপগুলো ফলো করতে পারেন। তা ছাড়া নিজের মতো করে একটা কপি লিখে আশপাশের মানুষকে দেখাতে পারেন এবং তাঁদের মতামত নিতে পারেন। কারণ, আপনার চারপাশে থাকা মানুষদের একজনই আপনার পণ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কিনবেন।
গ্রাফিক ডিজাইন: সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি ও ভিডিও কনটেন্ট হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ রাখে। বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্কে অন্য কিছুর চেয়ে ছবি ৫০০০ গুণ দ্রুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই আপনার যদি গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে ধারণা থাকে ও আকর্ষণীয় সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুতই একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে আপনি সফল হতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে আপনি ক্যানভা (Canva) দিয়ে শুরু করতে পারেন। পরে এডোবি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর শিখে নিতে পারেন।
কাস্টোমার সাপোর্ট বা কমিউনিটি ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোক্তারা বিভিন্ন সময় ফেসবুক পেজের ইনবক্সে মেসেজ দেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি ও বিক্রয়-পরবর্তী সেবা নিশ্চিত করতে পারাটা একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
বিপণন কৌশল: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বা বিপণন কৌশল নিয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একজন ভোক্তাকে সেলস ফানেলের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। সেলস ফানেলের ওপরের দিকে থাকে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের আপনাদের পণ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। তার পরবর্তী ধাপে থাকে ব্র্যান্ড কনসিডারেশন। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের পণ্যটি ক্রয়ে আগ্রহী করে তুলবেন। আর শেষ ধাপটি হচ্ছে কনভারশন। এই ধাপে এসে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী চূড়ান্তভাবে আপনার পণ্যের ক্রেতায় পরিণত হবে।
সেলস ফানেল ছাড়াও কোন ধরনের চ্যানেলে কোন ধরনের অডিয়েন্স পাওয়া যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেমন তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ব্যবহার করে। আবার ফেসবুকে আপনি সব শ্রেণি ও বয়সের লোকেদের পাবেন। ইউটিউবে ইন্টারেস্টভিত্তিক অডিয়েন্সের উপস্থিতি আবার বেশি। তাই আপনার পণ্যের প্রকরণ বুঝে প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া কোন সময় আপনি আপনার কনটেন্ট আপলোড করবেন, কোন সময় মানুষ বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে—এসব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে।
বিশ্লেষণ: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণী বা অ্যানালিটিক্যাল টুলস ব্যবহার করতে জানতে হবে। আপনি যদি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে কী ধরনের পোস্ট আপনি শেয়ার করছেন, সেগুলো কতজন মানুষের কাছে পৌঁছাল, কতজন পোস্টটির সঙ্গে যুক্ত হলো, পোস্টটির ফলে কতজন মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে এসেছে, কোন পণ্যটি অর্ডার করেছে, কখন ক্রেতারা বেশি সক্রিয় থাকে—এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে প্ল্যাটফর্মগুলোয় আপনার কার্যক্রম সাজাতে হবে। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব অ্যানালিটিকস আছে। যেগুলোর বিভিন্ন মেট্রিক্স নিয়ে আপনার অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে।
ব্যয় নির্ধারণ: সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবসার পেইড মার্কেটিং করতে হয়। অর্থাৎ আপনার ব্যবসা বা পণ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হবে। অবশ্যই এই বিনিময় হবে ডলারে। আর বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ তৈরি, টুলস কেনাসহ নানা খরচ তো আছেই। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে যেন আপনার বিনিয়োগ উঠে আসে, সে হিসাব করা এবং এর বাজেট নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
কোন কোন প্ল্যাটফর্মে কাজ করা শিখবেন
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট শিখতে হলে প্রথমে আপনাকে কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে চিহ্নিত করতে হবে, যেগুলোর আপনি কাজ করবেন। প্রধানত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন, টুইটার, পিন্টারেস্ট, টিকটক, কোরা—এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখাটা বাঞ্ছনীয়। কারণ, এই প্ল্যাটফর্মগুলোতেই অধিকাংশ ব্যবহারকারীরা থাকে। ভিডিও নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই ইউটিউব সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো কিন্তু আবার একটি থেকে অন্যটি আলাদা। ফলে এগুলোয় কাজের জন্য চাই আলাদা আলাদা প্রস্তুতি। একেক প্ল্যাটফর্মে একেক বয়স, শ্রেণি ও পেশার লোকেরা থাকে। আবার ভিন্ন ভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টের ভিন্নতাও পাওয়া যায়। যেমন ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে ছবিনির্ভর, আবার ইউটিউব পুরোপুরি ভিডিওনির্ভর। আবার টিকটক ভিডিওনির্ভর হলেও সেখানকার ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য কম। কম দৈর্ঘ্যের ভিডিওর ফিচার নিয়ে অবশ্য ইউটিউব, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোও হাজির হয়েছে। তাই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং এসবের নতুন নতুন সব ফিচার সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়।
বর্তমান সময়কে বলা হয় চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের যুগ। এই সময় গতানুগতিক চাকরির পেছনে না ছুটে দক্ষতা অর্জন করলে খুব সহজেই সম্মানজনকভাবে আয় করতে পারবেন। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার উত্তরোত্তর বাড়ছে; সামনে আরও বাড়বে। ফেসবুক নিজেদের মূল কোম্পানির নাম এরই মধ্যে ‘মেটা’ রেখেছে। তারা মেটাভার্সের কথা বলছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও বসে নেই। মেটাভার্সের যে বাস্তবতা আসছে সামনে, তাতে ব্যবসা বা যে কোনো ধরনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই এই খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা দিন দিন বাড়বে। ফলে নতুন এই দুনিয়ায় নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে এখন থেকেই লেগে পড়ুন।
প্রযুক্তি সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

ফেসবুক ব্যবহার করতে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে বকা শোনেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে সময়ের অপচয় হয়। কিন্তু এটাই আবার আয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোটখাটো ব্যবসা—সবারই প্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। তবে এর জন্য শেখা চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা। ব্যবসা বা নিজের উদ্যোগের নামে একটি পেজ করলেই চলে না। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজের ব্যবসাকে লাভবান করতে হলে সঠিক ব্যবস্থাপনা শেখা ভীষণ জরুরি।
সাধারণত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে নিজেদের প্রচার চালাতে একটি পেজ খুলেই কাজ সারে। এর চেয়ে যারা একটু অগ্রসর, তারা দেখা যায় পেজের প্রচারের জন্য কিছু টাকা ব্যয় করে। এটুকু করেই অনেকে ভাবেন, অনেকটাই করা হলো। এমন যারা ভাবেন, তারা বলতে হয় বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই সামনে হাজির হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের প্রসঙ্গটি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। এ জন্যই বড় বড় ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী—সবাই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী লোক খোঁজে। বলা যায়, সময়ের সঙ্গে এই পেশায় দক্ষ লোকের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের কাজ
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের মূল কাজ হলো একটি ব্যবসাকে অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত লোকজন বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে সেগুলো পর্যালোচনা করে এবং পণ্য কেনে। এখানকার মার্কেটিংকে বলা যায় ‘রিয়েল টাইম মার্কেটিং’। তাই একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারের মূল কাজ হলো—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের আয়
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট যথাযথভাবে শিখতে পারলে দেশের পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানিগুলোতেও কাজের সুবিধা পেতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনকর্মী হিসেবে আপনি যেভাবে আয় করতে পারেন, তা হচ্ছে—
ফ্রিল্যান্সিং: ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে আমাদের দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সের ডটকম, পিপল পার আওয়ারসহ বিভিন্ন সাইটে নিজের প্রোফাইল খুলে পছন্দের কাজে বিড (কাজের বিপরীতে নিজের মজুরি জানিয়ে কার্যাদেশ পাওয়ার আবেদন) করতে পারবেন বা যোগাযোগ করতে পারবেন বায়ার বা ক্রেতার সঙ্গে। একজন মোটামুটি দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার প্রতি মাসে ৩০০ ডলার–১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান: বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ দিচ্ছে। কথায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলেও মূল কাজ থাকে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষানবিশ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের বেতন ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। নির্বাহী পদে প্রতিষ্ঠান ও চাকরির কাজের পরিধি ভেদে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন হয়। বিডিজবসে, ফেসবুকের বিভিন্ন নিয়োগভিত্তিক পেজে নিয়মিত এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাওয়া যায়।
বিদেশি প্রতিষ্ঠান: বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করার আগে আপনার একটি পোর্টফোলিও থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো অভিজ্ঞ লোক নিতে পছন্দ করে। আপনি দেশে বসেই লিংকডইনের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করতে পারেন। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ঘণ্টা ভিত্তিতে বা মাসিক চুক্তি—দুভাবেই নিয়োগ করে। ভালো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ ও দক্ষতার ভিত্তিতে মাসে ৮০০-১৫০০ ডলার আয়ের সুযোগ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে
একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কোর্স: বর্তমানে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কোর্স অফার করে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগেও বিভিন্ন ধরনের কোর্স করানো হচ্ছে। এগুলোর যেকোনো একটিতে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য কোর্স করতেই হবে, তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলে ইউটিউব, ইউডেমি, কোর্সেরাসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কোর্সটি করতে পারবেন।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন ও কনটেন্ট শেয়ার করুন: ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দুনিয়ায় নিজের অবস্থান তৈরির জন্য একটি ভালো পোর্টফোলিও খুবই দরকার। প্রথম দিকে কাজ পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। শুরুটা ঠিকঠাক করতে হলে যা করতে পারেন—
*কাজ শেখার প্রথমদিকে বিভিন্ন ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কয়েক মাসের জন্য তাদের বিনা মূল্যে সেবা দিতে পারেন। কারণ, প্রথম দিকে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাকে আপনার বিনিয়োগ হিসেবে ধরতে পারেন। এমনও হতে পারে, আপনি যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন, তারাই আপনাকে পরে নিয়োগ দিতে পারে।
*বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য ইন্টার্ন নিয়োগ করে। ইন্টার্নশিপের জন্য সাধারণত ৮০০০-১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই ধরনের ইন্টার্নশিপগুলোতে কাজের চাপ থাকে। ফলে আপনার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা হয়ে যাবে।
*বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিজের অ্যাকাউন্ট/পেজ/চ্যানেল খুলে কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন এবং অরগানিকভাবে ফলোয়ার বাড়াতে পারেন। ফলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্যাপারে আপনার ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা হবে। তা ছাড়া আপনার কনটেন্ট মার্কেটিং নিয়ে ভালো ধারণা হয়ে যাবে।
যে দক্ষতাগুলো জরুরি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এর মধ্যে শুরুতে থাকে লেখার বিষয়টি। এর সঙ্গে ডিজাইন সম্পর্কিত জ্ঞান থাকলে প্রাথমিক কাজটা ভালোভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়। মোটাদাগে বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠলে তবেই এ পেশায় ভালো করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে—
কপি রাইটিং: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্য ও সেবা বিপণনে দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে উঠতে হলে লেখালেখির অভ্যাস থাকাটা ভীষণ জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখের সামনে ঘোরা এবং আকর্ষণীয় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ছবি বা ভিডিওর সঙ্গে দেখবেন কিছু লেখা রয়েছে। এই ক্যাপশনগুলোই কিন্তু পাঠক ও দর্শককে আকৃষ্ট করে। এর ওপরই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি ওই বিজ্ঞাপনের ভেতরে ঢুকবেন কিনা। মানুষকে আপনার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত করতে হলে চাই আকর্ষণীয় ক্যাপশন। ক্যাপশন ভালো ও আকর্ষণীয় হলেই মানুষ পণ্যটি কিনতে বেশি আগ্রহী হবে। তাই একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারকে বিজ্ঞাপনী ভাষা রপ্ত করতে হবে। এই কপি রাইটিং ভালোমতো আয়ত্ত করতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের পেজ ও গ্রুপগুলো ফলো করতে পারেন। তা ছাড়া নিজের মতো করে একটা কপি লিখে আশপাশের মানুষকে দেখাতে পারেন এবং তাঁদের মতামত নিতে পারেন। কারণ, আপনার চারপাশে থাকা মানুষদের একজনই আপনার পণ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কিনবেন।
গ্রাফিক ডিজাইন: সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি ও ভিডিও কনটেন্ট হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ রাখে। বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্কে অন্য কিছুর চেয়ে ছবি ৫০০০ গুণ দ্রুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই আপনার যদি গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে ধারণা থাকে ও আকর্ষণীয় সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুতই একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে আপনি সফল হতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে আপনি ক্যানভা (Canva) দিয়ে শুরু করতে পারেন। পরে এডোবি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর শিখে নিতে পারেন।
কাস্টোমার সাপোর্ট বা কমিউনিটি ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোক্তারা বিভিন্ন সময় ফেসবুক পেজের ইনবক্সে মেসেজ দেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি ও বিক্রয়-পরবর্তী সেবা নিশ্চিত করতে পারাটা একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
বিপণন কৌশল: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বা বিপণন কৌশল নিয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একজন ভোক্তাকে সেলস ফানেলের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। সেলস ফানেলের ওপরের দিকে থাকে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের আপনাদের পণ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। তার পরবর্তী ধাপে থাকে ব্র্যান্ড কনসিডারেশন। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের পণ্যটি ক্রয়ে আগ্রহী করে তুলবেন। আর শেষ ধাপটি হচ্ছে কনভারশন। এই ধাপে এসে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী চূড়ান্তভাবে আপনার পণ্যের ক্রেতায় পরিণত হবে।
সেলস ফানেল ছাড়াও কোন ধরনের চ্যানেলে কোন ধরনের অডিয়েন্স পাওয়া যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেমন তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ব্যবহার করে। আবার ফেসবুকে আপনি সব শ্রেণি ও বয়সের লোকেদের পাবেন। ইউটিউবে ইন্টারেস্টভিত্তিক অডিয়েন্সের উপস্থিতি আবার বেশি। তাই আপনার পণ্যের প্রকরণ বুঝে প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া কোন সময় আপনি আপনার কনটেন্ট আপলোড করবেন, কোন সময় মানুষ বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে—এসব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে।
বিশ্লেষণ: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণী বা অ্যানালিটিক্যাল টুলস ব্যবহার করতে জানতে হবে। আপনি যদি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে কী ধরনের পোস্ট আপনি শেয়ার করছেন, সেগুলো কতজন মানুষের কাছে পৌঁছাল, কতজন পোস্টটির সঙ্গে যুক্ত হলো, পোস্টটির ফলে কতজন মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে এসেছে, কোন পণ্যটি অর্ডার করেছে, কখন ক্রেতারা বেশি সক্রিয় থাকে—এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে প্ল্যাটফর্মগুলোয় আপনার কার্যক্রম সাজাতে হবে। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব অ্যানালিটিকস আছে। যেগুলোর বিভিন্ন মেট্রিক্স নিয়ে আপনার অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে।
ব্যয় নির্ধারণ: সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবসার পেইড মার্কেটিং করতে হয়। অর্থাৎ আপনার ব্যবসা বা পণ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হবে। অবশ্যই এই বিনিময় হবে ডলারে। আর বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ তৈরি, টুলস কেনাসহ নানা খরচ তো আছেই। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে যেন আপনার বিনিয়োগ উঠে আসে, সে হিসাব করা এবং এর বাজেট নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
কোন কোন প্ল্যাটফর্মে কাজ করা শিখবেন
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট শিখতে হলে প্রথমে আপনাকে কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে চিহ্নিত করতে হবে, যেগুলোর আপনি কাজ করবেন। প্রধানত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন, টুইটার, পিন্টারেস্ট, টিকটক, কোরা—এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখাটা বাঞ্ছনীয়। কারণ, এই প্ল্যাটফর্মগুলোতেই অধিকাংশ ব্যবহারকারীরা থাকে। ভিডিও নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই ইউটিউব সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো কিন্তু আবার একটি থেকে অন্যটি আলাদা। ফলে এগুলোয় কাজের জন্য চাই আলাদা আলাদা প্রস্তুতি। একেক প্ল্যাটফর্মে একেক বয়স, শ্রেণি ও পেশার লোকেরা থাকে। আবার ভিন্ন ভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টের ভিন্নতাও পাওয়া যায়। যেমন ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে ছবিনির্ভর, আবার ইউটিউব পুরোপুরি ভিডিওনির্ভর। আবার টিকটক ভিডিওনির্ভর হলেও সেখানকার ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য কম। কম দৈর্ঘ্যের ভিডিওর ফিচার নিয়ে অবশ্য ইউটিউব, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোও হাজির হয়েছে। তাই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং এসবের নতুন নতুন সব ফিচার সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়।
বর্তমান সময়কে বলা হয় চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের যুগ। এই সময় গতানুগতিক চাকরির পেছনে না ছুটে দক্ষতা অর্জন করলে খুব সহজেই সম্মানজনকভাবে আয় করতে পারবেন। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার উত্তরোত্তর বাড়ছে; সামনে আরও বাড়বে। ফেসবুক নিজেদের মূল কোম্পানির নাম এরই মধ্যে ‘মেটা’ রেখেছে। তারা মেটাভার্সের কথা বলছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও বসে নেই। মেটাভার্সের যে বাস্তবতা আসছে সামনে, তাতে ব্যবসা বা যে কোনো ধরনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই এই খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা দিন দিন বাড়বে। ফলে নতুন এই দুনিয়ায় নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে এখন থেকেই লেগে পড়ুন।
প্রযুক্তি সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১ দিন আগে
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১ দিন আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
২ দিন আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
২ দিন আগেপল্লব শাহরিয়ার

একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ। এই প্রযুক্তির ময়দানেই মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে দুই পরাশক্তি—যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের প্রতীক হয়ে উঠেছে বহু দশক ধরে। অন্যদিকে চীন দেখিয়ে দিয়েছে পরিকল্পনা আর গতির সমন্বয়ে কত দ্রুত প্রযুক্তিকে বাস্তব শক্তিতে রূপ দেওয়া যায়। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এই দুই দেশের প্রযুক্তি ব্যবসা আর উদ্ভাবনের চিত্র দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায়, এটা কোনো একতরফা লড়াই নয়। যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে মৌলিক গবেষণা, এআই সফটওয়্যার ও স্টার্টআপ সংস্কৃতিতে। আবার চীন এগিয়ে রয়েছে উৎপাদন, বাস্তব প্রয়োগ এবং প্রযুক্তিকে জাতীয় কৌশলের অংশ বানানোয়।
এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, পিছিয়ে থেকেও বিপজ্জনক চীন
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন প্রযুক্তির বড় যুদ্ধক্ষেত্র। কে আগে ভালো এআই বানাবে, সেটা এখন আর শুধু ব্যবসার প্রশ্ন নয়; এটা ক্ষমতা, নিরাপত্তা আর ভবিষ্যৎ প্রভাবেরও প্রশ্ন। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে যদি যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের দিকে তাকাই, তাহলে একটা অদ্ভুত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা চোখে পড়ে। আর তা হলো, যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে রয়েছে।
এ ছাড়া চীন পিছিয়েও ভীষণভাবে বিপজ্জনক!এআই উদ্ভাবনের মূল শিকড় এখনো মূলত যুক্তরাষ্ট্রে। বড় ভাষা মডেল, জেনারেটিভ এআই, মাল্টিমোডাল সিস্টেম—এই ধারণাগুলোর জন্ম, বিকাশ আর পরিপক্বতা বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে। শুধু প্রযুক্তি নয়, এর পেছনে আরও আছে গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পের সংযোগ, ঝুঁকি নেওয়ার সাহস এবং বিশাল বিনিয়োগ। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে এআই দ্রুত গবেষণা থেকে পণ্যে রূপ নেয়। নতুন কোনো ধারণা জন্মানোর পর সেটাকে স্টার্টআপ, সফটওয়্যার বা প্ল্যাটফর্মে পরিণত করতে খুব বেশি সময় লাগে না।
এআই সফটওয়্যারগুলোর নিয়ন্ত্রণ, বিশ্বের প্রভাবশালী এআই প্ল্যাটফর্ম, ডেভেলপার টুলস আর ক্লাউড অবকাঠামোর বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। এর মানে শুধু ভালো এআই বানানো নয়, বরং বিশ্ব কীভাবে এআই ব্যবহার করবে, সেটার মানদণ্ডও তারা ঠিক করছে। কিন্তু চীনের এআই যাত্রা একেবারে ভিন্ন পথে। চীন হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের মতো সবচেয়ে উন্নত কিংবা সৃজনশীল এআই এখনো বানাতে পারেনি। কিন্তু তারা যেটা করেছে, সেটাই তাদের সবচেয়ে বিপজ্জনক করে তুলেছে। এআই প্রযুক্তিকে তারা দ্রুত, ব্যাপক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাস্তবে নামিয়েছে।
চীনে এআই কোনো পরীক্ষাগারের বিষয় নয়; এটা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায়, কারখানায় উৎপাদনে, সরকারি প্রশাসনে, নজরদারি ব্যবস্থায় আর সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ঢুকে গেছে। বিশাল জনসংখ্যা আর ডেটার সুবিধা নিয়ে চীন এআই প্রশিক্ষণ ও প্রয়োগে এমন স্কেল তৈরি করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অনেক সময় সম্ভব হয় না।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চীনে এআই প্রযুক্তির উন্নয়ন শুধু ব্যবসার হাতে নেই। রাষ্ট্র সরাসরি এই খেলায় আছে। এতে গতি বেড়েছে, সিদ্ধান্ত দ্রুত হয়েছে, আর প্রযুক্তি সরাসরি জাতীয় কৌশলের অংশ হয়ে উঠেছে। ঠিক এখানেই চীন পিছিয়ে থেকেও হয়ে গেছে বিপজ্জনক।
চিপ যুদ্ধ: এই লড়াই এআইয়ের ভবিষ্যৎ কেন ঠিক করবে
এআই নিয়ে সব কথা এসে ঠেকে যায় যে বিষয়ে, তার নাম চিপ। যত বুদ্ধিমান অ্যালগরিদমই বানানো হোক, শক্তিশালী চিপ ছাড়া এআই আসলে অচল। তাই যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল যুদ্ধটা হচ্ছে এই সেমিকন্ডাক্টর কিংবা চিপ নিয়ে।
এ মুহূর্তে বাস্তবতা হলো, চিপের দুনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আছে; বিশেষ করে এআইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর, ডিজাইন সফটওয়্যার আর আর্কিটেকচারের বড় অংশ এখনো আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে। ফলে বিশ্বজুড়ে যত আধুনিক এআই তৈরি হচ্ছে, তার মস্তিষ্কের বড় অংশই কোনো না কোনোভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল।
এই এগিয়ে থাকার কারণ শুধু প্রযুক্তি নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ ইকোসিস্টেম। গবেষণা, ডিজাইন, সফটওয়্যার টুল, ক্লাউড অবকাঠামো—দেশটিতে সব একসঙ্গে কাজ করছে। ফলে নতুন এআই মডেল তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আছে দ্রুততা ও স্থায়িত্ব—দুটোই।
চীনের সমস্যা শুরু এখানেই, আর তাই এখান থেকে তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। কারণ, চীন খুব ভালোভাবে বুঝে গেছে যে তারা যদি চিপের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকে, তাহলে এআইতে সত্যিকারের স্বাধীনতা কখনোই আসবে না। তাই ২০২৫ সালে চীন যা করছে, সেটা হলো সরাসরি প্রযুক্তিগত বাধা ভাঙার চেষ্টা না করে; বরং বিকল্প পথ তৈরি করা।
চীন এখন চিপের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে স্বনির্ভর হওয়ার কৌশল নিয়েছে। উন্নত চিপে সীমাবদ্ধতা থাকলেও তারা মাঝারি ক্ষমতার চিপকে বড় পরিসরে ব্যবহার করে এআই চালানোর পদ্ধতি তৈরি করছে। এটা আপাতদৃষ্টে দুর্বলতা মনে হলেও আসলে এটা ভিন্নধর্মী শক্তি। এতে চীন এমন এআই সিস্টেম বানাতে শিখছে, যেগুলো কম খরচে, কম রিসোর্সে কাজ করতে পারে। ভবিষ্যতে এই দক্ষতাই বড় সুবিধা হয়ে উঠতে পারে; বিশেষ করে উন্নয়নশীল বাজারে।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ। চীনে চিপ উন্নয়ন শুধু বেসরকারি খাতের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। সরাসরি অর্থ, নীতি আর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে রাষ্ট্র। এতে ফল আসতে সময় লাগলেও ধারাবাহিকতা নষ্ট হচ্ছে না। এই চিপ যুদ্ধের প্রভাব সরাসরি এআইয়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে। কারণ, যে দেশ বেশি শক্তিশালী ও সহজলভ্য চিপ বানাতে পারবে, সে দেশই বেশি এআই প্রশিক্ষণ চালাতে পারবে, দ্রুত নতুন মডেল আনতে পারবে এবং বিশ্ববাজারে নিজের মানদণ্ড চাপিয়ে দিতে পারবে।
ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা
প্রযুক্তির আরও একটি ক্ষেত্র আছে, যা সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক প্রভাবকে আঘাত বা শক্তি দিতে পারে। এটি হলো ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা এখানেও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি এখানে এসেছে দুটো দিক থেকে। প্রথমত, উচ্চমানের গবেষণা এবং উদ্ভাবনের ওপর ভিত্তি করে। এআই-চালিত ড্রোন, নজরদারি প্রযুক্তি, আধুনিক স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত সেন্সর—এসব ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বনেতা। দ্বিতীয়ত হলো, অভিজ্ঞতা। দীর্ঘমেয়াদি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ইতিহাস এবং বহুজাতিক সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে রেখেছে; বিশেষ করে জটিল সাইবার ডিফেন্স এবং মহাকাশভিত্তিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে।
অন্যদিকে চীনের কৌশল আলাদা। তারা এখানে দ্রুততা ও পরিসরকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে চীন দ্রুত নতুন প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তায় চীন এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর কার্যক্রম চালাচ্ছে। এটি শুধু আক্রমণাত্মক নয়, প্রতিরক্ষা ও নজরদারিতেও সমানভাবে শক্তিশালী।
ভবিষ্যতের প্রযুক্তি দৌড়ে কারা এগিয়ে
২০২৫ সালে প্রযুক্তি লড়াই শুধু উদ্ভাবনের নয়; এটি ক্ষমতা, বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় কৌশলের প্রতিফলন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা অনেকটা দুই ভিন্ন পথের গল্প—একটি দেশ স্বাধীন উদ্ভাবন ও স্টার্টআপের ওপর নির্ভরশীল, অন্যটি রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ও দ্রুত বাস্তবায়নের কৌশলে এগিয়ে।
এই দ্বন্দ্ব একে অপরকে বাতিল করে না; বরং দুই দেশের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা আরও ধারালো ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে। ভবিষ্যতের প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন + বাস্তবায়ন + নিরাপত্তা—এই তিনের সমন্বয় যে দেশ ভালো করতে পারবে, সেই দেশ আগামী দশকের প্রযুক্তিগত প্রভাব নির্ধারণ করবে। সংক্ষেপে, ২০২৫ সালের প্রযুক্তি মানচিত্র বলছে, উদ্ভাবনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র, বাস্তব প্রয়োগের দিক থেকে চীন, আর বিশ্ব এই দুই শক্তির প্রতিযোগিতার মধ্যে টেকসই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে।

একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ। এই প্রযুক্তির ময়দানেই মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে দুই পরাশক্তি—যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের প্রতীক হয়ে উঠেছে বহু দশক ধরে। অন্যদিকে চীন দেখিয়ে দিয়েছে পরিকল্পনা আর গতির সমন্বয়ে কত দ্রুত প্রযুক্তিকে বাস্তব শক্তিতে রূপ দেওয়া যায়। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এই দুই দেশের প্রযুক্তি ব্যবসা আর উদ্ভাবনের চিত্র দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায়, এটা কোনো একতরফা লড়াই নয়। যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে মৌলিক গবেষণা, এআই সফটওয়্যার ও স্টার্টআপ সংস্কৃতিতে। আবার চীন এগিয়ে রয়েছে উৎপাদন, বাস্তব প্রয়োগ এবং প্রযুক্তিকে জাতীয় কৌশলের অংশ বানানোয়।
এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, পিছিয়ে থেকেও বিপজ্জনক চীন
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন প্রযুক্তির বড় যুদ্ধক্ষেত্র। কে আগে ভালো এআই বানাবে, সেটা এখন আর শুধু ব্যবসার প্রশ্ন নয়; এটা ক্ষমতা, নিরাপত্তা আর ভবিষ্যৎ প্রভাবেরও প্রশ্ন। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে যদি যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের দিকে তাকাই, তাহলে একটা অদ্ভুত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা চোখে পড়ে। আর তা হলো, যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে রয়েছে।
এ ছাড়া চীন পিছিয়েও ভীষণভাবে বিপজ্জনক!এআই উদ্ভাবনের মূল শিকড় এখনো মূলত যুক্তরাষ্ট্রে। বড় ভাষা মডেল, জেনারেটিভ এআই, মাল্টিমোডাল সিস্টেম—এই ধারণাগুলোর জন্ম, বিকাশ আর পরিপক্বতা বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে। শুধু প্রযুক্তি নয়, এর পেছনে আরও আছে গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পের সংযোগ, ঝুঁকি নেওয়ার সাহস এবং বিশাল বিনিয়োগ। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে এআই দ্রুত গবেষণা থেকে পণ্যে রূপ নেয়। নতুন কোনো ধারণা জন্মানোর পর সেটাকে স্টার্টআপ, সফটওয়্যার বা প্ল্যাটফর্মে পরিণত করতে খুব বেশি সময় লাগে না।
এআই সফটওয়্যারগুলোর নিয়ন্ত্রণ, বিশ্বের প্রভাবশালী এআই প্ল্যাটফর্ম, ডেভেলপার টুলস আর ক্লাউড অবকাঠামোর বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। এর মানে শুধু ভালো এআই বানানো নয়, বরং বিশ্ব কীভাবে এআই ব্যবহার করবে, সেটার মানদণ্ডও তারা ঠিক করছে। কিন্তু চীনের এআই যাত্রা একেবারে ভিন্ন পথে। চীন হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের মতো সবচেয়ে উন্নত কিংবা সৃজনশীল এআই এখনো বানাতে পারেনি। কিন্তু তারা যেটা করেছে, সেটাই তাদের সবচেয়ে বিপজ্জনক করে তুলেছে। এআই প্রযুক্তিকে তারা দ্রুত, ব্যাপক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাস্তবে নামিয়েছে।
চীনে এআই কোনো পরীক্ষাগারের বিষয় নয়; এটা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায়, কারখানায় উৎপাদনে, সরকারি প্রশাসনে, নজরদারি ব্যবস্থায় আর সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ঢুকে গেছে। বিশাল জনসংখ্যা আর ডেটার সুবিধা নিয়ে চীন এআই প্রশিক্ষণ ও প্রয়োগে এমন স্কেল তৈরি করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অনেক সময় সম্ভব হয় না।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চীনে এআই প্রযুক্তির উন্নয়ন শুধু ব্যবসার হাতে নেই। রাষ্ট্র সরাসরি এই খেলায় আছে। এতে গতি বেড়েছে, সিদ্ধান্ত দ্রুত হয়েছে, আর প্রযুক্তি সরাসরি জাতীয় কৌশলের অংশ হয়ে উঠেছে। ঠিক এখানেই চীন পিছিয়ে থেকেও হয়ে গেছে বিপজ্জনক।
চিপ যুদ্ধ: এই লড়াই এআইয়ের ভবিষ্যৎ কেন ঠিক করবে
এআই নিয়ে সব কথা এসে ঠেকে যায় যে বিষয়ে, তার নাম চিপ। যত বুদ্ধিমান অ্যালগরিদমই বানানো হোক, শক্তিশালী চিপ ছাড়া এআই আসলে অচল। তাই যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল যুদ্ধটা হচ্ছে এই সেমিকন্ডাক্টর কিংবা চিপ নিয়ে।
এ মুহূর্তে বাস্তবতা হলো, চিপের দুনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আছে; বিশেষ করে এআইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর, ডিজাইন সফটওয়্যার আর আর্কিটেকচারের বড় অংশ এখনো আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে। ফলে বিশ্বজুড়ে যত আধুনিক এআই তৈরি হচ্ছে, তার মস্তিষ্কের বড় অংশই কোনো না কোনোভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল।
এই এগিয়ে থাকার কারণ শুধু প্রযুক্তি নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ ইকোসিস্টেম। গবেষণা, ডিজাইন, সফটওয়্যার টুল, ক্লাউড অবকাঠামো—দেশটিতে সব একসঙ্গে কাজ করছে। ফলে নতুন এআই মডেল তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আছে দ্রুততা ও স্থায়িত্ব—দুটোই।
চীনের সমস্যা শুরু এখানেই, আর তাই এখান থেকে তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। কারণ, চীন খুব ভালোভাবে বুঝে গেছে যে তারা যদি চিপের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকে, তাহলে এআইতে সত্যিকারের স্বাধীনতা কখনোই আসবে না। তাই ২০২৫ সালে চীন যা করছে, সেটা হলো সরাসরি প্রযুক্তিগত বাধা ভাঙার চেষ্টা না করে; বরং বিকল্প পথ তৈরি করা।
চীন এখন চিপের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে স্বনির্ভর হওয়ার কৌশল নিয়েছে। উন্নত চিপে সীমাবদ্ধতা থাকলেও তারা মাঝারি ক্ষমতার চিপকে বড় পরিসরে ব্যবহার করে এআই চালানোর পদ্ধতি তৈরি করছে। এটা আপাতদৃষ্টে দুর্বলতা মনে হলেও আসলে এটা ভিন্নধর্মী শক্তি। এতে চীন এমন এআই সিস্টেম বানাতে শিখছে, যেগুলো কম খরচে, কম রিসোর্সে কাজ করতে পারে। ভবিষ্যতে এই দক্ষতাই বড় সুবিধা হয়ে উঠতে পারে; বিশেষ করে উন্নয়নশীল বাজারে।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ। চীনে চিপ উন্নয়ন শুধু বেসরকারি খাতের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। সরাসরি অর্থ, নীতি আর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে রাষ্ট্র। এতে ফল আসতে সময় লাগলেও ধারাবাহিকতা নষ্ট হচ্ছে না। এই চিপ যুদ্ধের প্রভাব সরাসরি এআইয়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে। কারণ, যে দেশ বেশি শক্তিশালী ও সহজলভ্য চিপ বানাতে পারবে, সে দেশই বেশি এআই প্রশিক্ষণ চালাতে পারবে, দ্রুত নতুন মডেল আনতে পারবে এবং বিশ্ববাজারে নিজের মানদণ্ড চাপিয়ে দিতে পারবে।
ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা
প্রযুক্তির আরও একটি ক্ষেত্র আছে, যা সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক প্রভাবকে আঘাত বা শক্তি দিতে পারে। এটি হলো ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা এখানেও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি এখানে এসেছে দুটো দিক থেকে। প্রথমত, উচ্চমানের গবেষণা এবং উদ্ভাবনের ওপর ভিত্তি করে। এআই-চালিত ড্রোন, নজরদারি প্রযুক্তি, আধুনিক স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত সেন্সর—এসব ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বনেতা। দ্বিতীয়ত হলো, অভিজ্ঞতা। দীর্ঘমেয়াদি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ইতিহাস এবং বহুজাতিক সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে রেখেছে; বিশেষ করে জটিল সাইবার ডিফেন্স এবং মহাকাশভিত্তিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে।
অন্যদিকে চীনের কৌশল আলাদা। তারা এখানে দ্রুততা ও পরিসরকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে চীন দ্রুত নতুন প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তায় চীন এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর কার্যক্রম চালাচ্ছে। এটি শুধু আক্রমণাত্মক নয়, প্রতিরক্ষা ও নজরদারিতেও সমানভাবে শক্তিশালী।
ভবিষ্যতের প্রযুক্তি দৌড়ে কারা এগিয়ে
২০২৫ সালে প্রযুক্তি লড়াই শুধু উদ্ভাবনের নয়; এটি ক্ষমতা, বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় কৌশলের প্রতিফলন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা অনেকটা দুই ভিন্ন পথের গল্প—একটি দেশ স্বাধীন উদ্ভাবন ও স্টার্টআপের ওপর নির্ভরশীল, অন্যটি রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ও দ্রুত বাস্তবায়নের কৌশলে এগিয়ে।
এই দ্বন্দ্ব একে অপরকে বাতিল করে না; বরং দুই দেশের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা আরও ধারালো ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে। ভবিষ্যতের প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন + বাস্তবায়ন + নিরাপত্তা—এই তিনের সমন্বয় যে দেশ ভালো করতে পারবে, সেই দেশ আগামী দশকের প্রযুক্তিগত প্রভাব নির্ধারণ করবে। সংক্ষেপে, ২০২৫ সালের প্রযুক্তি মানচিত্র বলছে, উদ্ভাবনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র, বাস্তব প্রয়োগের দিক থেকে চীন, আর বিশ্ব এই দুই শক্তির প্রতিযোগিতার মধ্যে টেকসই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১ দিন আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
২ দিন আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
২ দিন আগেটি এইচ মাহির

গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা। সম্প্রতি গুগল পরীক্ষামূলকভাবে কিছু নতুন এআই টুল চালু করেছে, যেগুলো এখনো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয়নি।

ডিসকো
ওয়েব ব্রাউজারের জন্য গুগল সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে নতুন এআই টুল ডিসকো। এই টুল মূলত ইন্টারনেট ব্রাউজিং সহজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। সাধারণত ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় একসঙ্গে অনেক ট্যাব খুলতে হয়। এতে কাজ এলোমেলো হয়ে যায়। ডিসকো এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে। এটি একাধিক খোলা ট্যাবকে একসঙ্গে গুছিয়ে কাজ করার সুযোগ দেবে। এমনকি খোলা ট্যাবগুলো থেকে আলাদা ওয়েব অ্যাপও তৈরি করতে পারবে। ডিসকো গুগলের জেমিনি থ্রি এআই দিয়ে পরিচালিত।
এই টুল ট্যাবগুলোকে জেনট্যাবস নামে আলাদা ওয়েব অ্যাপে রূপান্তর করবে। গুগলের মতে, এতে ব্রাউজার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও সহজ ও কার্যকর হবে; বিশেষ করে শিক্ষার্থী, গবেষক ও পেশাজীবীদের জন্য এটি বেশ উপকারী হতে পারে। তবে টুলটি এখনো সবার জন্য উন্মুক্ত হয়নি।
ভাইব কোডিং
গুগল তাদের এআই স্টুডিওতে ভাইব কোডিং নামে নতুন একটি সুবিধা যুক্ত করেছে। এই টুলের মাধ্যমে কোডিং না জেনেও অ্যাপ তৈরি করা যাবে। ব্যবহারকারীকে শুধু সাধারণ ভাষায় বলতে হবে, তিনি কোন ধরনের অ্যাপ তৈরি করতে চান। এরপর গুগল এআই স্টুডিও নিজেই সেই ধারণা অনুযায়ী একটি সম্পূর্ণ অ্যাপ তৈরি করে দেবে। এই অ্যাপে থাকবে ডিজাইন, প্রয়োজনীয় ফিচার এবং কোড। ব্যবহারকারী চাইলে পরে কোড পরিবর্তন করতে পারবেন। অ্যাপ তৈরির সময় এআই থেকে বিভিন্ন পরামর্শও পাওয়া যাবে। কোডিং বা প্রযুক্তিগত জটিলতা ছাড়া সহজে অ্যাপ বানানো সম্ভব হবে। এতে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট আরও সহজ হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

মিক্সবোর্ড
গুগলের জনপ্রিয় এআই টুলগুলোর একটি হলো ন্যানো বানানা। এই টুল ব্যবহার করে প্রতিদিন অনেক এআই ছবি তৈরি করা হচ্ছে। ছবি তৈরির ক্ষেত্রে এটি বেশ কার্যকর একটি টুল। ন্যানো বানানার ওপর ভিত্তি করেই গুগল চালু করেছে নতুন টুল মিক্সবোর্ড। এটি একটি পরীক্ষামূলক এআই-চালিত আইডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে চিন্তা, পরিকল্পনা
ও ধারণাগুলো সহজে সাজিয়ে উপস্থাপন করা যায়। মিক্সবোর্ডে পিডিএফ, ছবি ও ভিডিও আপলোড করা যাবে। এরপর একটি ছোট নির্দেশনা লিখতে হবে। এরপর এআই সেই বিষয় অনুযায়ী একটি ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন কিংবা সাজানো রিপোর্ট তৈরি করে দেবে।
গবেষণা, পরিকল্পনা তৈরি অথবা উপস্থাপনার কাজে এই টুল ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে গুগলের এই নতুন এআই টুল যুক্তরাষ্ট্রে বেটা সংস্করণে চালু রয়েছে।
সূত্র: গুগল ব্লগ

গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা। সম্প্রতি গুগল পরীক্ষামূলকভাবে কিছু নতুন এআই টুল চালু করেছে, যেগুলো এখনো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয়নি।

ডিসকো
ওয়েব ব্রাউজারের জন্য গুগল সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে নতুন এআই টুল ডিসকো। এই টুল মূলত ইন্টারনেট ব্রাউজিং সহজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। সাধারণত ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় একসঙ্গে অনেক ট্যাব খুলতে হয়। এতে কাজ এলোমেলো হয়ে যায়। ডিসকো এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে। এটি একাধিক খোলা ট্যাবকে একসঙ্গে গুছিয়ে কাজ করার সুযোগ দেবে। এমনকি খোলা ট্যাবগুলো থেকে আলাদা ওয়েব অ্যাপও তৈরি করতে পারবে। ডিসকো গুগলের জেমিনি থ্রি এআই দিয়ে পরিচালিত।
এই টুল ট্যাবগুলোকে জেনট্যাবস নামে আলাদা ওয়েব অ্যাপে রূপান্তর করবে। গুগলের মতে, এতে ব্রাউজার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও সহজ ও কার্যকর হবে; বিশেষ করে শিক্ষার্থী, গবেষক ও পেশাজীবীদের জন্য এটি বেশ উপকারী হতে পারে। তবে টুলটি এখনো সবার জন্য উন্মুক্ত হয়নি।
ভাইব কোডিং
গুগল তাদের এআই স্টুডিওতে ভাইব কোডিং নামে নতুন একটি সুবিধা যুক্ত করেছে। এই টুলের মাধ্যমে কোডিং না জেনেও অ্যাপ তৈরি করা যাবে। ব্যবহারকারীকে শুধু সাধারণ ভাষায় বলতে হবে, তিনি কোন ধরনের অ্যাপ তৈরি করতে চান। এরপর গুগল এআই স্টুডিও নিজেই সেই ধারণা অনুযায়ী একটি সম্পূর্ণ অ্যাপ তৈরি করে দেবে। এই অ্যাপে থাকবে ডিজাইন, প্রয়োজনীয় ফিচার এবং কোড। ব্যবহারকারী চাইলে পরে কোড পরিবর্তন করতে পারবেন। অ্যাপ তৈরির সময় এআই থেকে বিভিন্ন পরামর্শও পাওয়া যাবে। কোডিং বা প্রযুক্তিগত জটিলতা ছাড়া সহজে অ্যাপ বানানো সম্ভব হবে। এতে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট আরও সহজ হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

মিক্সবোর্ড
গুগলের জনপ্রিয় এআই টুলগুলোর একটি হলো ন্যানো বানানা। এই টুল ব্যবহার করে প্রতিদিন অনেক এআই ছবি তৈরি করা হচ্ছে। ছবি তৈরির ক্ষেত্রে এটি বেশ কার্যকর একটি টুল। ন্যানো বানানার ওপর ভিত্তি করেই গুগল চালু করেছে নতুন টুল মিক্সবোর্ড। এটি একটি পরীক্ষামূলক এআই-চালিত আইডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে চিন্তা, পরিকল্পনা
ও ধারণাগুলো সহজে সাজিয়ে উপস্থাপন করা যায়। মিক্সবোর্ডে পিডিএফ, ছবি ও ভিডিও আপলোড করা যাবে। এরপর একটি ছোট নির্দেশনা লিখতে হবে। এরপর এআই সেই বিষয় অনুযায়ী একটি ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন কিংবা সাজানো রিপোর্ট তৈরি করে দেবে।
গবেষণা, পরিকল্পনা তৈরি অথবা উপস্থাপনার কাজে এই টুল ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে গুগলের এই নতুন এআই টুল যুক্তরাষ্ট্রে বেটা সংস্করণে চালু রয়েছে।
সূত্র: গুগল ব্লগ

সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১ দিন আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
২ দিন আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
২ দিন আগেফিচার ডেস্ক

বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে। ফলে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ও নতুন শক্তিচালিত জাহাজে বিনিয়োগ বাড়িয়ে চীন বৈশ্বিক জাহাজনির্মাণ শিল্পে নিজেদের আধিপত্য আরও শক্ত করছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ জোরদার হওয়ার কারণে সমুদ্রের জাহাজেও এখন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এই পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে চীনের ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
আগামী তিন বছরে সমুদ্রে নামবে বৈদ্যুতিক জাহাজ
বিশ্বের বড় ইভি ব্যাটারি নির্মাতা সিএটিএল জানিয়েছে, তাদের তৈরি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে সমুদ্রে চলাচল শুরু করবে। বর্তমানে বৈশ্বিক ইভি ব্যাটারি বাজারের প্রায় ৩৮ শতাংশ সিএটিএলের দখলে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সাল থেকে জাহাজে ব্যাটারি ব্যবহারের প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে। এ পর্যন্ত ৯০০টি নৌযানে ব্যাটারি সরবরাহ করেছে তারা। তাদের ব্যাটারি সংযুক্ত চীনের প্রথম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ক্রুজ জাহাজ ‘ইউজিয়ান ৭৭’ চলতি বছরের জুলাই থেকে চালু হয়েছে।
কনটেইনার জাহাজে গোশনের ব্যাটারি
গোশন হাই টেক জানিয়েছে, তাদের তৈরি ব্যাটারি প্যাক ব্যবহার করে ১৩২টি স্ট্যান্ডার্ড কনটেইনার বহনে সক্ষম একটি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ সফলভাবে চালানো সম্ভব হয়েছে। ‘পাফার ফিশ ব্লু ০১’ নামের জাহাজটি যৌথভাবে তৈরি করেছে চীনের উহু শিপইয়ার্ড ও সানদিয়ানশুই নিউ এনার্জি টেকনোলজি। জাহাজটি এরই মধ্যে চায়না ক্ল্যাসিফিকেশন সোসাইটি থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তিগত সনদ পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছর এই জাহাজ বাণিজ্যিকভাবে চলাচল শুরু করবে।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা
২০২৩ সালের শেষে বিশ্বের প্রথম ৭০০ কনটেইনার বহনে সক্ষম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক কনটেইনার জাহাজ সরবরাহ করে চীন। ক্লার্কসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষের দিকে বৈশ্বিক জাহাজ নির্মাণ অর্ডারের ৬৫ শতাংশ ছিল চীনা প্রতিষ্ঠানের দখলে।
গভীর সমুদ্রের এখনো সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ চালু হয়নি। এর প্রধান কারণ হলো ব্যাটারির অতিরিক্ত ওজন, যা জাহাজের ধারণক্ষমতা ও কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে চলাচল করার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত চার্জিং অবকাঠামো এখনো গড়ে ওঠেনি। তবে আশা করা যাচ্ছে, ২০২৬ সালে চীন এই বাজারে সবার আগে প্রবেশ করবে।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে। ফলে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ও নতুন শক্তিচালিত জাহাজে বিনিয়োগ বাড়িয়ে চীন বৈশ্বিক জাহাজনির্মাণ শিল্পে নিজেদের আধিপত্য আরও শক্ত করছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ জোরদার হওয়ার কারণে সমুদ্রের জাহাজেও এখন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এই পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে চীনের ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
আগামী তিন বছরে সমুদ্রে নামবে বৈদ্যুতিক জাহাজ
বিশ্বের বড় ইভি ব্যাটারি নির্মাতা সিএটিএল জানিয়েছে, তাদের তৈরি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে সমুদ্রে চলাচল শুরু করবে। বর্তমানে বৈশ্বিক ইভি ব্যাটারি বাজারের প্রায় ৩৮ শতাংশ সিএটিএলের দখলে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সাল থেকে জাহাজে ব্যাটারি ব্যবহারের প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে। এ পর্যন্ত ৯০০টি নৌযানে ব্যাটারি সরবরাহ করেছে তারা। তাদের ব্যাটারি সংযুক্ত চীনের প্রথম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ক্রুজ জাহাজ ‘ইউজিয়ান ৭৭’ চলতি বছরের জুলাই থেকে চালু হয়েছে।
কনটেইনার জাহাজে গোশনের ব্যাটারি
গোশন হাই টেক জানিয়েছে, তাদের তৈরি ব্যাটারি প্যাক ব্যবহার করে ১৩২টি স্ট্যান্ডার্ড কনটেইনার বহনে সক্ষম একটি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ সফলভাবে চালানো সম্ভব হয়েছে। ‘পাফার ফিশ ব্লু ০১’ নামের জাহাজটি যৌথভাবে তৈরি করেছে চীনের উহু শিপইয়ার্ড ও সানদিয়ানশুই নিউ এনার্জি টেকনোলজি। জাহাজটি এরই মধ্যে চায়না ক্ল্যাসিফিকেশন সোসাইটি থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তিগত সনদ পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছর এই জাহাজ বাণিজ্যিকভাবে চলাচল শুরু করবে।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা
২০২৩ সালের শেষে বিশ্বের প্রথম ৭০০ কনটেইনার বহনে সক্ষম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক কনটেইনার জাহাজ সরবরাহ করে চীন। ক্লার্কসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষের দিকে বৈশ্বিক জাহাজ নির্মাণ অর্ডারের ৬৫ শতাংশ ছিল চীনা প্রতিষ্ঠানের দখলে।
গভীর সমুদ্রের এখনো সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ চালু হয়নি। এর প্রধান কারণ হলো ব্যাটারির অতিরিক্ত ওজন, যা জাহাজের ধারণক্ষমতা ও কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে চলাচল করার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত চার্জিং অবকাঠামো এখনো গড়ে ওঠেনি। তবে আশা করা যাচ্ছে, ২০২৬ সালে চীন এই বাজারে সবার আগে প্রবেশ করবে।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১ দিন আগে
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১ দিন আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
২ দিন আগেফিচার ডেস্ক

এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে। ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ তাঁদের প্রথম নাম ব্যবহার করেন, আর প্রায় ৪৪ শতাংশ মানুষ তাঁদের পাসওয়ার্ডে পোষা প্রাণীর নাম অথবা জন্মতারিখ জুড়ে দেন। এমনকি ২৬ শতাংশ মানুষ তাঁদের প্রাক্তনের নামও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করছেন। অথচ ৮১ শতাংশ মানুষ বেশ আত্মবিশ্বাসী যে তাঁদের পাসওয়ার্ড খুব নিরাপদ। নর্ডপাসের ২ দশমিক ৫ টেরাবাইট লিক হওয়া ডেটা বলছে ভিন্ন কথা। তারা জানিয়েছে, বেশির ভাগ পাসওয়ার্ড ভাঙতে ১ সেকেন্ডও লাগে না।
মহাদেশভেদে মানুষের এই পাসওয়ার্ড নির্বাচনের অদ্ভুত খেয়ালগুলো দেখে নেওয়া যাক।
ইউরোপে ফুটবল, আভিজাত্য ও কি-বোর্ডের কারসাজি
ইউরোপীয়দের কাছে কি-বোর্ডের বিন্যাস আর ফুটবলপ্রেমই পাসওয়ার্ডের প্রধান উৎস। যুক্তরাজ্যে জনপ্রিয় পাসওয়ার্ডগুলোর মধ্যে password, ashley এবং ফুটবল ক্লাব liverpool তালিকায় বেশ ওপরের দিকে।
ফ্রান্সে কি-বোর্ড সাজানো থাকে azerty ঢঙে, তাই সেখানে 123456-এর পরেই এর রাজত্ব। পাশাপাশি doudou বা marseille-এর মতো ফরাসি শব্দও জনপ্রিয় পাসওয়ার্ড হিসেবে। জার্মানিতে passwort এবং dragon শব্দটি দেখা যায় পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে।
ইতালিতে নিজের প্রিয় ফুটবল দলের প্রতি ভালোবাসা এতটাই যে Juventus শব্দটি সেখানে পাসওয়ার্ডের তালিকায় চতুর্থ। তবে তারা কিছুটা সৃজনশীলও বটে। অনেকে cambiami ব্যবহার করেন। এর অর্থ আমাকে পরিবর্তন করো।
স্পেনে দেশপ্রেম প্রবল। তাই পাসওয়ার্ড হিসেবে সেখানে España শব্দটি বেশ জনপ্রিয়। পর্তুগালে আবার ফুটবল ক্লাব benfica বা sporting শব্দ দুটি পাসওয়ার্ডের তালিকায় আধিপত্য বিস্তার করে আছে।
উত্তরের দেশগুলোর মধ্যে ডেনমার্কে webhompass বা hejmeddig (হ্যালো ইউ) এবং সুইডেনে hejsan শব্দগুলোর আধিপত্য আছে পাসওয়ার্ড হিসেবে। ফিনল্যান্ডে পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয় শব্দ salasana-এর ইংরেজে অর্থই হলো পাসওয়ার্ড। পোল্যান্ডে দেশপ্রেম ফুটে ওঠে polska শব্দে। এটি সে দেশে পাসওয়ার্ডের শব্দ হিসেবে জনপ্রিয়। সুইজারল্যান্ডে পর্তুগিজ অভিবাসীদের প্রভাবে Portugal শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে আছে ১৫ নম্বরে। এ ছাড়া অস্ট্রিয়ায় michael, বেলজিয়ামে azerty, নেদারল্যান্ডসে welkom01, আয়ারল্যান্ডে liverpool এবং চেক প্রজাতন্ত্রে martin কিংবা veronika-এর মতো সাধারণ শব্দগুলো পাসওয়ার্ড হিসেবে খুবই জনপ্রিয়।
আমেরিকায় যা গোপন কিন্তু প্রকাশ্য
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাসওয়ার্ডে ব্যবহৃত জনপ্রিয় শব্দ হলো secret। কী অদ্ভুত পরিহাস, যা গোপন করার কথা, তা-ই পাসওয়ার্ড! আমেরিকানরা baseball ও iloveyou শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে ভালোবাসে। কানাডায় আবার জাতীয় খেলা hockey-এর জয়জয়কার। মেক্সিকোতে alejandro বা carlos-এর মতো শব্দ এবং ব্রাজিলে brasil বা rental শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়। চিলিতে তাদের ফুটবল দল colocolo পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়, আর কলম্বিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে দেশের নাম Colombia-ই শেষ কথা।
সংখ্যাতত্ত্ব ও সংস্কৃতির প্রভাব এশিয়া এবং ওশেনিয়ায়
এশিয়ায় পাসওয়ার্ড নির্বাচনে সংখ্যাতত্ত্বের প্রভাব স্পষ্ট। জাপানে 123456789 সংখ্যার এই সিরিজ পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহারের শীর্ষে রয়েছে।
আর তারা কি-বোর্ড প্যাটার্ন 1qaz2wsx-ও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পছন্দ করে। চীনে জনপ্রিয় wangyut2 আর হংকংয়ে 5201314। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবেগের ছোঁয়া বেশি। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় sayang পাসওয়ার্ডটি বেশ ওপরের দিকে দেখা যায়।
এর অর্থ প্রিয়তম। ফিলিপাইনেও দেখা যায় iloveyou-এর আধিপত্য। থাইল্যান্ডে 221225-এর মতো সংখ্যা বেশ ব্যবহৃত হয় পাসওয়ার্ড হিসেবে।
ভারতে মানুষ সরলতা পছন্দ করে। তাই 123456 বা india123 এবং Indya123-ই মানুষের প্রথম পছন্দ। তুরস্কে এক অদ্ভুত ধরনের ঘটনা দেখা যায়। দেশটিতে ব্রিটিশ ব্যান্ড Anathema এতই জনপ্রিয় যে এটি পাসওয়ার্ডের শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অভিবাসীদের প্রভাবে pakistan শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ১১ নম্বরে রয়েছে। ওশেনিয়া অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে password শব্দটির ব্যবহারের চল বেশি। এর পাশাপাশি pokemon বা lizottes শব্দ দুটিও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আফ্রিকায় ভালোবাসার সহজ পাঠ
দক্ষিণ আফ্রিকায় পাসওয়ার্ড হিসেবে মানুষ 123456 এই সংখ্যার সেট থেকে বেরিয়ে কিছুটা রোমান্টিক হয়ে 123love ব্যবহার করতে পছন্দ করেন।
সূত্র: নর্ডপাস, ইভিএন এক্সপ্রেস

এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে। ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ তাঁদের প্রথম নাম ব্যবহার করেন, আর প্রায় ৪৪ শতাংশ মানুষ তাঁদের পাসওয়ার্ডে পোষা প্রাণীর নাম অথবা জন্মতারিখ জুড়ে দেন। এমনকি ২৬ শতাংশ মানুষ তাঁদের প্রাক্তনের নামও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করছেন। অথচ ৮১ শতাংশ মানুষ বেশ আত্মবিশ্বাসী যে তাঁদের পাসওয়ার্ড খুব নিরাপদ। নর্ডপাসের ২ দশমিক ৫ টেরাবাইট লিক হওয়া ডেটা বলছে ভিন্ন কথা। তারা জানিয়েছে, বেশির ভাগ পাসওয়ার্ড ভাঙতে ১ সেকেন্ডও লাগে না।
মহাদেশভেদে মানুষের এই পাসওয়ার্ড নির্বাচনের অদ্ভুত খেয়ালগুলো দেখে নেওয়া যাক।
ইউরোপে ফুটবল, আভিজাত্য ও কি-বোর্ডের কারসাজি
ইউরোপীয়দের কাছে কি-বোর্ডের বিন্যাস আর ফুটবলপ্রেমই পাসওয়ার্ডের প্রধান উৎস। যুক্তরাজ্যে জনপ্রিয় পাসওয়ার্ডগুলোর মধ্যে password, ashley এবং ফুটবল ক্লাব liverpool তালিকায় বেশ ওপরের দিকে।
ফ্রান্সে কি-বোর্ড সাজানো থাকে azerty ঢঙে, তাই সেখানে 123456-এর পরেই এর রাজত্ব। পাশাপাশি doudou বা marseille-এর মতো ফরাসি শব্দও জনপ্রিয় পাসওয়ার্ড হিসেবে। জার্মানিতে passwort এবং dragon শব্দটি দেখা যায় পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে।
ইতালিতে নিজের প্রিয় ফুটবল দলের প্রতি ভালোবাসা এতটাই যে Juventus শব্দটি সেখানে পাসওয়ার্ডের তালিকায় চতুর্থ। তবে তারা কিছুটা সৃজনশীলও বটে। অনেকে cambiami ব্যবহার করেন। এর অর্থ আমাকে পরিবর্তন করো।
স্পেনে দেশপ্রেম প্রবল। তাই পাসওয়ার্ড হিসেবে সেখানে España শব্দটি বেশ জনপ্রিয়। পর্তুগালে আবার ফুটবল ক্লাব benfica বা sporting শব্দ দুটি পাসওয়ার্ডের তালিকায় আধিপত্য বিস্তার করে আছে।
উত্তরের দেশগুলোর মধ্যে ডেনমার্কে webhompass বা hejmeddig (হ্যালো ইউ) এবং সুইডেনে hejsan শব্দগুলোর আধিপত্য আছে পাসওয়ার্ড হিসেবে। ফিনল্যান্ডে পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয় শব্দ salasana-এর ইংরেজে অর্থই হলো পাসওয়ার্ড। পোল্যান্ডে দেশপ্রেম ফুটে ওঠে polska শব্দে। এটি সে দেশে পাসওয়ার্ডের শব্দ হিসেবে জনপ্রিয়। সুইজারল্যান্ডে পর্তুগিজ অভিবাসীদের প্রভাবে Portugal শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে আছে ১৫ নম্বরে। এ ছাড়া অস্ট্রিয়ায় michael, বেলজিয়ামে azerty, নেদারল্যান্ডসে welkom01, আয়ারল্যান্ডে liverpool এবং চেক প্রজাতন্ত্রে martin কিংবা veronika-এর মতো সাধারণ শব্দগুলো পাসওয়ার্ড হিসেবে খুবই জনপ্রিয়।
আমেরিকায় যা গোপন কিন্তু প্রকাশ্য
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাসওয়ার্ডে ব্যবহৃত জনপ্রিয় শব্দ হলো secret। কী অদ্ভুত পরিহাস, যা গোপন করার কথা, তা-ই পাসওয়ার্ড! আমেরিকানরা baseball ও iloveyou শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে ভালোবাসে। কানাডায় আবার জাতীয় খেলা hockey-এর জয়জয়কার। মেক্সিকোতে alejandro বা carlos-এর মতো শব্দ এবং ব্রাজিলে brasil বা rental শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়। চিলিতে তাদের ফুটবল দল colocolo পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়, আর কলম্বিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে দেশের নাম Colombia-ই শেষ কথা।
সংখ্যাতত্ত্ব ও সংস্কৃতির প্রভাব এশিয়া এবং ওশেনিয়ায়
এশিয়ায় পাসওয়ার্ড নির্বাচনে সংখ্যাতত্ত্বের প্রভাব স্পষ্ট। জাপানে 123456789 সংখ্যার এই সিরিজ পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহারের শীর্ষে রয়েছে।
আর তারা কি-বোর্ড প্যাটার্ন 1qaz2wsx-ও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পছন্দ করে। চীনে জনপ্রিয় wangyut2 আর হংকংয়ে 5201314। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবেগের ছোঁয়া বেশি। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় sayang পাসওয়ার্ডটি বেশ ওপরের দিকে দেখা যায়।
এর অর্থ প্রিয়তম। ফিলিপাইনেও দেখা যায় iloveyou-এর আধিপত্য। থাইল্যান্ডে 221225-এর মতো সংখ্যা বেশ ব্যবহৃত হয় পাসওয়ার্ড হিসেবে।
ভারতে মানুষ সরলতা পছন্দ করে। তাই 123456 বা india123 এবং Indya123-ই মানুষের প্রথম পছন্দ। তুরস্কে এক অদ্ভুত ধরনের ঘটনা দেখা যায়। দেশটিতে ব্রিটিশ ব্যান্ড Anathema এতই জনপ্রিয় যে এটি পাসওয়ার্ডের শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অভিবাসীদের প্রভাবে pakistan শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ১১ নম্বরে রয়েছে। ওশেনিয়া অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে password শব্দটির ব্যবহারের চল বেশি। এর পাশাপাশি pokemon বা lizottes শব্দ দুটিও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আফ্রিকায় ভালোবাসার সহজ পাঠ
দক্ষিণ আফ্রিকায় পাসওয়ার্ড হিসেবে মানুষ 123456 এই সংখ্যার সেট থেকে বেরিয়ে কিছুটা রোমান্টিক হয়ে 123love ব্যবহার করতে পছন্দ করেন।
সূত্র: নর্ডপাস, ইভিএন এক্সপ্রেস

সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১ দিন আগে
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১ দিন আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
২ দিন আগে