Ajker Patrika

সরকারের পতনের আন্দোলনে জনসাধারণকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৪, ১৩: ২২
সরকারের পতনের আন্দোলনে জনসাধারণকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি: ফখরুল

ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারপতনের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। আজ রোববার রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আহ্বান জানান। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে ছাত্রদের এই যৌক্তিক, ন্যায়সংগত, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছি। আজ আমরা তাদের নতুন ঘোষণাকে সমর্থন জানাচ্ছি এবং এই ভয়াবহ দানবীয় খুনি শাসকগোষ্ঠীর পতনের লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি, পেশাজীবী, শ্রমিক, কৃষকসহ আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে এই অবৈধ খুনি হাসিনা সরকারের পতন নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ 
 
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জাতির এক চরম ক্রান্তিলগ্নে আপনাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তথা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন দমন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার যে নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা আশ্রয় নিয়েছে, তা উপমহাদেশের ইতিহাসে বিরল ঘটনা।’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডারেরা পাখি শিকারের মতো নির্বিচারে গুলি করে লাশের পর লাশের স্তূপ সৃষ্টি করেছে, ব্যাপক রক্তপাত ঘটিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন। সরকার তাদের এই বর্বরতা আড়াল করতে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে কিছু স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে এর দায় বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে।’ 

মিথ্যা অভিযোগে নিরীহ ছাত্র-জনতার সঙ্গে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনসহ অন্যান্য বিরোধী দলের সিনিয়র নেতা, কেন্দ্রীয়, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, গ্রাম পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের আটক করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আটকাভিযান এখনো চলছে। আন্দোলন দমাতে সান্ধ্য আইন দিয়ে, সেনাবাহিনী নামিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে রাতে বিভিন্ন এলাকায় ব্লক রেইড দিয়ে নিরীহ ছাত্রসহ বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা করেছে। আটক করতে গিয়ে বাসা-বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী, ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা ছাত্র ও নেতা-কর্মীদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছে। আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের না পেয়ে তাদের বাবা, ভাই ও অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে। চলছে গ্রেপ্তার বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি। মূলত সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারের হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসযজ্ঞ আড়াল করতেই তথাকথিত তৃতীয় পক্ষ আবিষ্কারের জন্য সরকারের বিরামহীন এই প্রচেষ্টা চলছে, যা জনসাধারণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।’ 

সরকার প্রথম থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবি অস্বীকার করে নিষ্ঠুরভাবে দমন করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে দেশকে ধ্বংস ও নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে গেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন বলপূর্বক দমন করতে রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করে চলছে নজিরবিহীন তৎপরতা। দেশে আজ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জনগণের ওপর যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। চারদিকে শুধু অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা। এর সম্পূর্ণ দায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ আওয়ামী লীগ সরকারের।’ 

শিক্ষার্থীদের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন দমনে গণহত্যা, নৈরাজ্য, ধ্বংস, দমন, নিপীড়ন দেখে সারা বিশ্ব স্তম্ভিত জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার ছাত্র, যুবক, শিশু, নারীসহ জনতাকে নির্বিচারে নির্দয়ভাবে হত্যা করে মানবতাকে হত্যা করেছে। সরকারের মানবতাবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিশ্ব বিবেক জাগ্রত হয়েছে। দেশ-বিদেশে সরকার ধিক্কৃত ও ঘৃণিত। দেশের সকল মানুষ ও গণতন্ত্রকামী বিশ্ব গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং আটককৃত নেতা-কর্মীসহ নিরীহ ছাত্র-জনতাকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানালেও সরকার কূটকৌশল করে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।’ 

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এসব দাবিতে ছাত্র-জনতার কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার আবারও নিরাপত্তা বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের ছাত্র-জনতার ওপর লেলিয়ে দিয়ে আরও হত্যা, নির্যাতন, দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে। যার ফলশ্রুতিতে সমগ্র দেশ আজ অগ্নিগর্ভ। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সকল জনপদ ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ বিদ্রোহে মুখরিত। সমগ্র দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিক, আইনজীবী, লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, শ্রমজীবী মানুষসহ ধর্ম-বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে শামিল হয়ে গণজাগরণের সৃষ্টি করেছে। গড়ে উঠেছে অভাবনীয় জাতীয় ঐক্য, জনগণের ঐক্য। সমগ্র দেশ আজ গণহত্যাকারী সরকারের বিরুদ্ধে এক এককাট্টা। গ্রাম ও শহরের ঘরে ঘরে আর্তনাদের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে খুনি সরকারের পদত্যাগের দাবি।’ 

ছাত্র-জনতার এক দাবি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন গতকাল (শনিবার) এক দফা দাবি অর্থাৎ স্বৈরাচার সরকারের পদত্যাগের দাবি সংবলিত এক দফা ঘোষণাপত্র উত্থাপন করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল আগে থেকেই গণতন্ত্র হত্যাকারী, ভোটাধিকারসহ জনগণের মৌলিক অধিকার হরণকারী, জাতীয় স্বার্থ বিপন্নকারী, জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী লুটেরা দুর্নীতিবাজ আওয়ামী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। সেই আন্দোলনও দমন করতে সরকার হত্যা, গুম, দমন, নিপীড়নের স্টিমরোলার চালিয়ে ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন কায়েম করেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তথা আপামর জনসাধারণের উত্থাপিত এক দফা ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সম্পূর্ণ একাত্মতা ঘোষণা করছে। বিএনপি জাতির এই চরম ক্রান্তিলগ্নে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে গণতন্ত্র প্রিয় আপামর জনসাধারণ এবং বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি রাজপথে নেমে এসে ছাত্র জনতার সঙ্গে একাত্ম হয়ে গণহত্যাকারী স্বৈরাচারী সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে অসহযোগ আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানাচ্ছে। শত শত শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। ইনশা আল্লাহ ছাত্র জনতার বিজয় অবশ্যম্ভাবী।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘তীব্র গণ-আন্দোলনে পতন অবশ্যম্ভাবী জেনে আওয়ামী লীগ আবার সংঘাত, সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। গত রাতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে কারাগারে আটক বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, বর্তমান আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর চট্টগ্রামের বাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে গুলিবর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ করে। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়কসহ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের বাসায়, মিরপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকের পারিবারিক রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালিয়ে ভাঙচুর করে। সন্ত্রাসীরা রুমিন ফারহানাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তার বাড়ির আশে-পাশে অন্যান্য বাড়িতেও সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। আমিনুল হকের রেস্টুরেন্টে লুটপাট করে। এ সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।’ 

এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ গতরাতে সন্ত্রাস চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আমরা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী তৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলতে চাই, এসব করে তারা সরকারের পতন ঠেকাতে পারবে না বলেও জানান তিনি। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে আজ এক গণ-অভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছে। ছাত্রদের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সাঈদ, মুগ্ধসহ শত নিরীহ ছাত্র শিশু ও জনতার রক্তে অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর হাত রঞ্জিত হয়েছে। জনগণ এই ভয়াবহ গণহত্যার প্রতিবাদে রাস্তায় বেরিয়ে আসছে। ছাত্র, শ্রমিক, পেশাজীবী, চাকরিজীবী, মা বোন, পিতা-মাতা, শিক্ষক, সাংবাদিক, শিল্পী, লেখক আজ এক কাতারে। দলমত, বয়স, ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষ ফুলে উঠেছে ক্রোধে। দ্রোহের মিছিলে শরিক হচ্ছে সকল স্তরের সকল শ্রেণির সকল বয়সের মানুষ। আমি তাদের অভিবাদন জানাই।’ 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গতকাল শহীদ মিনারে জনতার উত্তাল সমুদ্রে সামনে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কারীর এই অবৈধ খুনি সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেছে এবং অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছে। দেশের সকল মানুষ এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। আমরা ২০১২ সাল থেকে এই সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করে আসছি। অবৈধ সরকার ক্ষমতায় চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা বাতিল করে চিরস্থায়ীভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। দেশের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস করেছে নজির বিহীন দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। এখন ছাত্রদের ন্যায় সংগত দাবি কোটা ব্যবস্থায় ব্যক্তিক সংস্কারের আন্দোলনকে নির্মম নিষ্ঠুর ভাবে দমন করতে গিয়ে শত শত তাজা প্রাণের রক্ত ঝরিয়েছে, শত শত মায়ের বুক খালি করেছে, শত সন্তানরা পিতাকে হারিয়েছে। এমনকি ৪ বছরের শিশুও রেহাই পায়নি। গণহত্যার মাধ্যমে ছাত্রদের আক্রমণকে দমন করতে ব্যর্থ হয়ে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। ছাত্র জনতার ঐক্যের মধ্য দিয়ে যে চূড়ান্ত আন্দোলন সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত, তাকে স্তব্ধ করার ক্ষমতা কারও নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

পররাষ্ট্রের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কমিটি

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশেষ ট্রেনে ভোটের প্রচার করা যাবে না

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চাওয়া নেতা-কর্মীদের যাতায়াতের জন্য ১০টি বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বিএনপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাত শর্তে এসব ট্রেন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর দেশের ১০টি রুটে এসব বিশেষ ট্রেন পরিচালিত হবে। ট্রেন পরিচালনায় কোন কোন শর্ত মানতে হবে, তা জানিয়ে রেলওয়ে মহাপরিচালককে আলাদা চিঠি দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। শর্তের মধ্যে রয়েছে, কোনো অবস্থাতেই এসব ট্রেনকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যম, বাহন বা উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। ট্রেনের ভেতরে বা বাইরে নির্বাচনসংক্রান্ত কোনো ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার, প্রতীক, লোগো বা সদৃশ কাঠামো, মাইক, সাউন্ড সিস্টেম বা অন্য কোনো প্রচারণামূলক উপকরণ ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ট্রেনে চলাচলের সময় কোনো ধরনের স্লোগান, মিছিল বা রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া যাবে না। নির্ধারিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, ছাদে বা ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রী আরোহণও করা যাবে না। এসব শর্ত না মানলে বা ট্রেন, রেলপথ কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি করলে ট্রেনের ভাড়া গ্রহণকারীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বিশেষ ট্রেন পরিচালনার জন্য নির্ধারিত সময়সূচি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই নিয়মিত ট্রেনের চলাচল বা সময়সূচি ব্যাহত করা যাবে না। পূর্বনির্ধারিত স্টেশন ছাড়া অন্য কোনো স্টেশনে ট্রেন থামানোর অনুরোধ গ্রহণযোগ্য হবে না। কোনো কারণে নির্বাচন কমিশন, সরকার বা রেলওয়ে বিশেষ ট্রেন পরিচালনা স্থগিত, সীমিত বা বাতিল করার সিদ্ধান্ত দিতে পারবে, এ বিষয়ে কোনো আপত্তি গ্রহণ করা হবে না।

বিশেষ ট্রেন পরিচালনার কারণে ২৫ ডিসেম্বর পশ্চিমাঞ্চলের নিয়মিত তিনটি কমিউটার ট্রেন—রোহনপুর, ঢালারচর ও রাজবাড়ী এক্সপ্রেস চলাচল করবে না।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ করে ২৪ ডিসেম্বর রাতে অতিরিক্ত বগিসহ সাতটি বিশেষ ট্রেন রিজার্ভের অনুমতি চেয়ে ১৮ ডিসেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় বিএনপি। লন্ডন থেকে ২৫ ডিসেম্বর দেশে পৌঁছাবেন তারেক রহমান। ওই দিন পূর্বাচলে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষিত হওয়ার কারণে বিশেষ ট্রেন ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলেই আমরা এসব শর্ত দিয়েছি। কোনোভাবেই এসব বিশেষ ট্রেন নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার করা যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

পররাষ্ট্রের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কমিটি

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির খুনিদের গ্রেপ্তারে প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট বক্তব্য শোনা যায়নি: সাদিক কায়েম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদির খুনিদের গ্রেপ্তারে প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট বক্তব্য শোনা যায়নি: সাদিক কায়েম

হাদির খুনিদের গ্রেপ্তারে প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট বক্তব্য শোনা যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি আবু সাদিক কায়েম। তিনি বলেছেন, ‘শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির জানাজায় লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতির মধ্যেও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য শোনা যায়নি।’ বিচার নিশ্চিতের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে সুস্পষ্ট ও দায়িত্বশীল অবস্থান নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

আজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় পাঠানো তাঁর এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় হাদি হত্যার দ্রুততম ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথাও জানান ভিপি সাদিক কায়েম।

সাদিক কায়েম বলেন, শহীদ ওসমান হাদিকে হারিয়ে তাঁর পরিবার আজ দিশেহারা। ছোট্ট সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে তাঁর স্ত্রী ন্যায়বিচারের আশায় অপেক্ষায় দিন গুনছেন। গভীর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে ‘শহীদি শপথ’ গ্রহণ করেছেন শহীদের হাতে গড়া ইনকিলাব মঞ্চের সহযোদ্ধারা।

ডাকসু ভিপি আরও বলেন, এত কিছুর পরও এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়লেও শহীদ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে তেমন কোনো কার্যকর তৎপরতা এখনো দৃশ্যমান নয়। খুনি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানসহ এই হত্যাকাণ্ডের হুকুমদাতা কেউই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি, এমনকি খুনির অবস্থান সম্পর্কেও সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি।

ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে শহীদ ওসমান হাদির হত্যার বিচারের দাবি ও আন্দোলনকে ছাত্র-জনতার মন থেকে মুছে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। গণমাধ্যমেও এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে পর্যাপ্ত ফলোআপ সংবাদ চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ তাঁর।

সব ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টাকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার কথা জানিয়ে সাদিক কায়েম বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যম, রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন, সুশীল সমাজসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে শহীদ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা শপথ করছি, শহীদ ওসমান হাদির স্বপ্নের ইনসাফভিত্তিক, সার্বভৌম ও মর্যাদাশীল একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

পররাষ্ট্রের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কমিটি

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক দখলে প্রতিযোগিতা করছে বিএনপি-জামায়াত: নাহিদ ইসলাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‘ইলেকশনস ডায়ালগ: ইয়র পার্টি ভোটার কোয়েশ্চেনস’ শীর্ষক সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘ইলেকশনস ডায়ালগ: ইয়র পার্টি ভোটার কোয়েশ্চেনস’ শীর্ষক সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক দখলে নিতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে একধরনের ‘প্রতিযোগিতা’ চলছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে দ্য ডেইলি স্টারের আয়োজনে শুরু হওয়া ‘স্টার নির্বাচনী সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন নাহিদ।

অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান, পারস্পরিক আস্থাহীনতা, নির্বাচন ঘিরে উদ্বেগ, ‘নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণের প্রতিশ্রুতিসহ নানান বিষয়ে দলের অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, এই ভোটগুলো নিশ্চিত করতে তারা (জামায়াত-বিএনপি) কিছু লক্ষণ দেখাচ্ছে। তারা বলছে, মামলাগুলো (আওয়ামী লীগের) প্রত্যাহার করা হবে।

আওয়ামী লীগের নেতাদের বিএনপি ও অন্যান্য দলে অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে নাহিদ কুমিল্লার দেবিদ্বারের একটি ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, দেবিদ্বারে গণমাধ্যম ও পুলিশ সুপারের সামনে বড় আয়োজন করে ২০০ জন আওয়ামী লীগের লোক বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। এটা শুধু একটি উদাহরণ।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ট্রুথ কমিশনের মাধ্যমে ‘আওয়ামী লীগ প্রশ্ন’ সমাধান না হওয়ায় দেশ ভুগছে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী দলকে যারা সমর্থন করেছে আর যারা গণহত্যা বা সন্ত্রাসে জড়িত—এই দুই শ্রেণির মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য করতে হবে।

এর আগে এক দর্শক বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন কি না এবং তা ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে?’ এর জবাবে মির্জা ফখরুল অভিযোগটিকে ‘সাধারণীকরণ’ বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি লড়াই করেছি। আমরা এতটা দেউলিয়া অবস্থায় পৌঁছাইনি যে ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে কাজ করতে হবে।’

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদও জামায়াতে ইসলামীর ক্ষেত্রে এমন অভিযোগ নাকচ করেন। এমন ধারণার জন্য তিনি ‘হলুদ সাংবাদিকতা’কে দায়ী করে বলেন, ‘আমাদের দলে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এত রক্ত ও জীবন দেওয়ার পর ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে কাজ করার প্রশ্নই ওঠে না।’ তবে নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ দেওয়া হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এ প্রসঙ্গে বলেন, অনুপ্রবেশ নিয়ে বিতর্ক অর্থহীন, কারণ এটি বাংলাদেশের রাজনীতির একটি বাস্তবতা। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ‘অতীতে আমরা দেখেছি, পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে কীভাবে ছাত্রলীগের নির্বাহী সদস্য হওয়া যেত।’ তবে তাঁর মতে, ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঠেকাতে হলে কেবল ব্যক্তি নয়, বরং ‘লুটপাটের অর্থনীতিকে’ উপড়ে ফেলতে হবে।

সংলাপে মির্জা ফখরুল বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনায় দেশের মানুষ আবারও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এবং নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বলেন, বিএনপি শুরু থেকে নির্বাচনের পক্ষে থাকলেও বিলম্বের কারণে নির্বাচন বানচালের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মির্জা ফখরুল জানান, বিএনপি ‘ভিশন-২০৩০’ ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ধাপে ধাপে দেশকে স্থিতিশীল করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে।

সিপিবির মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমও নির্বাচন বিলম্ব বা ভন্ডুল করার রাজনৈতিক অপচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। তিনি সম্প্রতি গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলাগুলো ‘সুপরিকল্পিত’ বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ হলেও কেবল নির্বাচনেই সব সমস্যার সমাধান হবে, এই ধারণা ভুল।

জনগণের ক্ষমতায়ন, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ এবং অর্থ ও দুর্নীতির প্রভাবমুক্ত রাজনীতির ওপর মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম জোর দেন। তিনি বলেন, সমাজতন্ত্রের লক্ষ্য নিয়েই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল এবং সেই লক্ষ্য সামনে রেখে নির্বাচনে জনগণের কাছে যাওয়ার অঙ্গীকার করছে সিপিবি।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ ‘ইনসাফের বাংলাদেশ’ ও মানবিক সমাজ গড়ার ভিশন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও দুর্বৃত্তায়ন দূর করে নিরাপদ ও আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই তাঁদের লক্ষ্য। শিক্ষা খাতে অবৈতনিক শিক্ষা, প্রযুক্তিনির্ভর পাঠ্যক্রম এবং জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। নারী, কৃষক, শ্রমিক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুযোগ বাড়িয়ে বেকারত্ব শূন্যে নামানোর পরিকল্পনার কথাও তিনি তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ডেইলি স্টারের কনসাল্টিং এডিটর কামাল আহমেদ এই আয়োজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবনা ও নাগরিকদের চাওয়া জানতে দ্য ডেইলি স্টার আয়োজন করে ‘স্টার নির্বাচনী সংলাপ’। আজ বেলা সাড়ে ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন-মৈত্রী সম্মেলনে এই আয়োজন শুরু হয়।

ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনামের পক্ষে যুগ্ম সম্পাদক আশা মেহরীন আমিন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘ডেইলি স্টার একটি সৎ, জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ সরকারে বিশ্বাস করে, যারা আমাদের মৌলিক অধিকারগুলো সমুন্নত রাখবে। এটি শুধু একটি নির্বাচিত সরকারের অধীনেই সম্ভব, যা কেবল একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব হবে। তবে আমরা এটাও জানি যে, সরকার যতই চেষ্টা করুক না কেন, এটা সম্ভব করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সহযোগিতার প্রয়োজন।’

আশা মেহরীন আমিন আরও বলেন, ‘এখন থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করার এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য সবকিছু করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’

অনুষ্ঠানে অংশ নেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক, নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ, নাগরিক অধিকারকর্মী মিজানুর রহমান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

পররাষ্ট্রের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কমিটি

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার মামলায় নিরীহ গ্রেপ্তারদের মুক্তি না দিলে বাড়বে ক্ষোভ: হেফাজত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার মামলায় নিরীহ গ্রেপ্তারদের মুক্তি না দিলে বাড়বে ক্ষোভ: হেফাজত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মামলায় গ্রেপ্তার নিরীহ সমালোচনাকারীদের মুক্তি দাবি করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি করেন হেফাজতের এই দুই নেতা।

বিবৃতিতে মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও সাজেদুর রহমান বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে যারা নিরীহ সমালোচনাকারী, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় ভারতপন্থী পত্রিকা দুটির ওপর বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার ক্ষোভ বাড়বে বই কমবে না।’

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার ‘শান্তিপূর্ণ’ প্রতিবাদ জারি থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান। তাঁরা বলেন, ‘প্রথম আলো-ডেইলি স্টার নিছক গণমাধ্যম নয়, বরং এ দেশে দিল্লির সাউথ ব্লকের অ্যাজেন্ডা ও বিশেষ মতাদর্শিক রাজনীতির ফুটসোলজার হিসেবে ভাড়া খাটা প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জারি থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ভবনের সামনে একদল লোক জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা ভবন দুটিতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন।

বিবৃতিতে এই দুই নেতা আরও বলেন, ‘মার্কিন ওয়ার অন টেররের সিপাহি ও ভারতপন্থী পত্রিকা হিসেবে সমালোচিত প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার অভিযোগে কোনো নিরীহ সমালোচনাকারীকে গ্রেপ্তার বা নির্যাতন করা যাবে না।’ তবে প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা সহিংস হওয়াও হেফাজতে ইসলাম সমর্থন করে না বলে জানান তাঁরা।

হেফাজতের দুই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, ‘এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে শুধু একজনের পরিচয়ে তাঁর প্রাক্তন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা মাদ্রাসার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত শয়তানির আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’

মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও সাজেদুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে “জঙ্গি” ন্যারেটিভের গডফাদার প্রথম আলো। আর তার দোসর ডেইলি স্টার সেসব ন্যারেটিভ বিদেশিদের গলাধঃকরণ করিয়েছে। এভাবে পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে এ দেশের অগণিত আলেম, মাদ্রাসাছাত্র ও ধর্মপ্রাণ তরুণকে “জঙ্গিবাদের” তকমা দিয়ে জেল-জুলুমের সম্মতি উৎপাদন করা হয়েছিল। এর দায় পত্রিকা দুটি কখনো এড়াতে পারে না।’

মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও সাজেদুর রহমান আরও বলেন, ‘এক-এগারোর সময় পত্রিকা দুটির গণবিরোধী ভূমিকা আজও আমাদের জন্য সতর্কতা। প্রথম আলো-ডেইলি স্টার নিছক গণমাধ্যম নয়, বরং এ দেশে দিল্লির সাউথ ব্লকের অ্যাজেন্ডা ও বিশেষ মতাদর্শিক রাজনীতির ফুটসোলজার হিসেবে ভাড়া খাটা প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশপন্থী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জারি থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

পররাষ্ট্রের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কমিটি

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত