Ajker Patrika

ইরান আক্রমণে দুই দশকে যেসব বিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি করেছে ইসরায়েল

আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৯: ২১
ইরান আক্রমণে দুই দশকে যেসব বিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি করেছে ইসরায়েল

বিগত কয়েক দশক ধরেই ইরানে হামলার পরিকল্পনা প্রস্তুত করে শাণিয়ে নিয়েছে ইসরায়েল। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে দেশটি ব্যাপক অত্যাধুনিক অস্ত্রও প্রস্তুত করেছে। এরপর সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি যখন অন্য দেশের কাছে সমরাস্ত্র বিক্রি করতে শুরু করেছে, তখনই বিষয়টি জানা গেছে, ইসরায়েল আসলে কতটা অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরি করেছে।

গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলের এফ-১৫ যুদ্ধবিমান নিজ দেশ থেকে ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দূরে ইয়েমেনে গিয়ে হুতি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এই হামলার বিষয়টি ইসরায়েলের ‘প্রয়োজন বিবেচনায় উদ্ভাবন’ বা ইম্প্রোভাইজেশন দক্ষতারই ইঙ্গিত দেয়। সাধারণভাবে এফ-১৫ যুদ্ধবিমান তৈরি করা হয়, আকাশে যুদ্ধের জন্য। কিন্তু ইসরায়েল এই যুদ্ধবিমানগুলোকে নিজস্ব প্রযুক্তি দিয়ে আরও শাণিত করে তুলেছে। নতুন নতুন সব অস্ত্র বহনে সক্ষম করে তুলেছে।

তবে ইয়েমেনে হুতি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো যতটা সহজ ছিল, ইরানের হামলা চালানো ততটা সহজ হবে না। কারণ, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি উভয়ই মাটির অনেক গভীরে অবস্থিত। তবে দেশটির তেল স্থাপনা তুলনামূলক অরক্ষিত। এ ছাড়া, ইরানের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও আছে।

ইরানের দাবি, তারা এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিজেরাই তৈরি করেছে। কিন্তু এখনো সেই অর্থে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কোনো শক্ত পরীক্ষার মুখে পড়েনি। তবে, এই ব্যবস্থাটি রাশিয়ার তৈরি এস-৩০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের সঙ্গে মেলে। সাধারণভাবে, এই ব্যবস্থার ইসরায়েলের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর সক্ষমতা আছে। কিন্তু, গত এপ্রিলে ইসরায়েল যখন ইরানের ইস্পাহানে হামলা চালিয়েছিল তখন এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কোনো এক কারণে সক্রিয় হয়নি। এর বাইরে, ইরানের চার যুগ পুরোনো মিগ-২৯ ও যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৪ মডেলের যুদ্ধবিমান আছে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার পরও এই যুদ্ধবিমানগুলো সক্রিয় আছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীতে।

এসব চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখেই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ২০ বছর ধরে ইরানে সম্ভাব্য হামলা ছক কষেছে। বিনিয়োগ করেছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ও শেকেল। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, ইসরায়েল এমন কিছু অস্ত্র তৈরি করেছে নিজস্ব প্রযুক্তি, যা যুক্তরাষ্ট্র বিক্রি করতে চায়নি। ইসরায়েলের এসব প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও নেই।

রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় দেশগুলো ১৮০০-২০০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য সাধারণত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বা বোম্বার বিমান ব্যবহার করে। তবে ইসরায়েল বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা বোমারু বিমানের জায়গা থেকে সরে এসে যুদ্ধবিমান দিয়েই এই দূরত্বে হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জন করেছে। দেশটির কাছে এক স্কোয়াড্রন অত্যাধুনিক এফ-১৫ আই ও এফ-১৬ আইয়ের চারটি যুদ্ধবিমান আছে—যেগুলোকে ইসরায়েল নিজেদের মতো করে বিশেষায়িত করে নিয়েছে। এই যুদ্ধবিমানগুলো যেতে–আসতে টানা চার ঘণ্টা আকাশে উড্ডয়ন করতে সক্ষম।

বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন এমন একধরনের ফুয়েল ট্যাংক বানিয়েছে—বিশেষ করে এই বিমানগুলোর জন্য। যার ফলে, এই বিমানগুলো দীর্ঘ উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছে। তবে বেশি জ্বালানির জন্য ফুয়েল ট্যাংক তৈরি করা হলেও বিমানগুলোর অ্যারোডাইনামিকস বা রাডারের কার্যক্ষমতায় কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বিদেশি গণমাধ্যমগুলোর খবর ইঙ্গিত করে, ইসরায়েল নিজের প্রযুক্তিতে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের জন্য বিচ্ছিন্নযোগ্য জ্বালানি ট্যাংক তৈরি করেছে। তবে এরপরও স্টেলথ ক্ষমতা বা নিজেতে গোপন রাখার ক্ষমতা বজায় রেখে ইরানে পৌঁছাতে সক্ষম। 
 
আকাশ থেকে নিক্ষেপণযোগ্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানে হামলা 

একুশ শতকের শুরুর দিকে ইসরায়েল দুটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করে। যেগুলো যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপ করা যায়। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর পাল্লা কতটুকু, তা জানা না গেলেও এগুলো যে ইরানের আকাশসীমায় না গিয়েও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার বাইরে থেকে ইসরায়েলকে দেশটিতে শত শত কিলোমিটার দূর থেকে হামলার সুযোগ দেবে; সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সুপারসনিক গতিতে অর্থাৎ শব্দের গতির চেয়েও বেশি গতিতে চলতে সক্ষম। যার ফলে, এগুলোকে ইন্টারসেপ্ট করার সুযোগ কম থাকে এবং লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। 
 
Shavit-2র‍্যাম্পেজ ক্ষেপণাস্ত্র

এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি। ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি এবং দেশটির রকেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এলবিট সিস্টেমস মিলে এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। প্রাথমিকভাবে এগুলোকে ভূমি থেকে নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত করা হলেও পরে এগুলোকে আকাশ থেকে নিক্ষেপের জন্যও মডিফাই করা হয়। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর পাল্লা বেড়ে গেছে। একাধিক নেভিগেশন সিস্টেম থাকায় এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতা অনেক বেশি নির্ভুল।

মাত্র ৪ দশমিক ৭ মিটার লম্বা এবং ৩০ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার পরিধির এই ক্ষেপণাস্ত্রের ভর মাত্র ৫৪০ কেজি। এ ছাড়া, এগুলো ১৫০ কেজির সমান ভরের বিভিন্ন ওয়ারহেড বহন করতে পারে। গঠনগত কারণে, এর পক্ষে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দেওয়া অনেকটাই সহজ। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ইসরায়েলের এফ-১৫, এফ-১৬ এবং এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপ করা সম্ভব। এ ছাড়া, দামের দিক থেকেও এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো খুবই সাশ্রয়ী। মাত্র কয়েক শ ডলার খরচ করেই একেকটি র‍্যাম্পেজ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা সম্ভব।

রকস ক্ষেপণাস্ত্র

ফরাসি অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রাফালে ২০১৯ সালে রকস ক্ষেপণাস্ত্র প্রথমবার প্রকাশ করে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ‘স্যাটেলাইট নেভিগেশন ও ইনর্শিয়াল নেভিগেশন’ সিস্টেম দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেই সঙ্গে এর আছে, অপটিক্যাল টার্গেটিং সিস্টেম। যা এটিতে নিজের মতো করে লক্ষ্যবস্তুতে আলাদাভাবে চিনতে সহায়তা করে। এই ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রটির গতিও সুপারসনিক, অর্থাৎ শব্দের গতির চেয়ে বেশি। এটি ইরানের শাহাব ক্ষেপণাস্ত্রের মতোই অনেকটা।

এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে এফ-১৬ এবং এফ-৩৫–এর মতো যুদ্ধবিমান থেকেই নিক্ষেপ করা যেতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৩০০ কিলোমিটার এবং এগুলো ৫০০ কেজি পর্যন্ত ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। যা এটিকে সুরক্ষিত বা ভূগর্ভস্থ কাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করতে সক্ষম করে তোলে। 

submarin-Israel-3অন্যান্য অত্যাধুনিক অস্ত্র

বিদেশি সূত্রগুলোর ইঙ্গিত, ইসরায়েলের কাছে সারফেস টু সারফেস বা ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রও আছে। জেরিকো নামে পরিচিত এই ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে পারে। তবে ইরান ইসরায়েলে শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলেও, ইসরায়েল ইরানে হামলার ক্ষেত্রে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করবে—এমন সম্ভাবনা কম। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মূলত ফ্রান্সের ড্যাসল্ট কোম্পানি তৈরি করেছিল। পরে ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি এগুলোকে নিজেদের প্রয়োজনমতো মডিফাই করে নিয়েছে।

এ ছাড়া, এলবিট কোম্পানি ৫০০—এমপিআর নামে বাংকার বিধ্বংসী বোমা তৈরি করেছে। যা ৪ মিটার পর্যন্ত পুরো কংক্রিট ভেদ করতে সক্ষম। এফ-১৫ আই যুদ্ধবিমান এই বোমাগুলো করতে পারে। কিন্তু ভারী হওয়ার কারণে, যুদ্ধবিমানগুলোর পাল্লা সংকুচিত হয়ে আসে এসব বোমা থাকলে।
 
পপআই টার্বো ক্ষেপণাস্ত্র

এই ক্ষেপণাস্ত্রটিও ফ্রান্সের রাফালে কোম্পানির তৈরি। এগুলোর পাল্লা প্রায় ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার। এগুলো পারমাণবিক ওয়ারহেডের পাশাপাশি প্রচলিত ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। মূলত, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর সাবমেরিন থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। দূরপাল্লার হওয়ার কারণে, লোহিত সাগর বা আরব সাগরে থেকেই—যা ইরান থেকে বেশ দূরে—ইসরায়েলি নৌবাহিনী এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানে হামলা চালাতে পারবে।

জেরুজালেম পোস্ট থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিরিয়ায় আইএসের হামলায় দুই মার্কিন সেনা এবং এক দোভাষী নিহত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিরিয়ায় মার্কিন সেনা। ছবি: এএফপি
সিরিয়ায় মার্কিন সেনা। ছবি: এএফপি

সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলের পালমিরায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় দুজন মার্কিন সেনা এবং একজন মার্কিন বেসামরিক দোভাষী নিহত হয়েছেন। এতে আরও তিনজন আহত হন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার এই হামলার ঘটনা ঘটে। এক বছর আগে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর এটিই প্রথম কোনো হামলা, যাতে মার্কিন বাহিনীর প্রাণহানি ঘটল।

সেন্টকম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানায়, হামলাকারীকে পাল্টা অভিযানে হত্যা করা হয়েছে। পেন্টাগনের নীতিমালা অনুযায়ী, নিকটাত্মীয়দের না জানানো পর্যন্ত নিহত সেনাদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে না।

এ ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এক্সে দেওয়া পোস্টে বলেন, হামলাকারীকে ‘হত্যা করা হয়েছে’। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘জেনে রাখুন, বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে আমেরিকানদের ওপর হামলা হলে আমরা আপনাকে খুঁজে বের করব এবং হত্যা করব।’

এর আগে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানায়, পালমিরার কাছে হোমস প্রদেশে যৌথ টহলের সময় সিরীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। ঘটনার পর দেইর আজ জোর-দামেস্ক মহাসড়কে সাময়িকভাবে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয় এবং এলাকায় সামরিক বিমান টহল দেয়।

সানা আরও জানায়, আহতদের ইরাক সীমান্তের কাছে আল-তানফ ঘাঁটিতে মার্কিন হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিরীয় সামরিক কর্মকর্তা জানান, পালমিরার একটি সিরীয় ঘাঁটিতে সিরীয় ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক চলাকালে গুলির ঘটনা ঘটে। শহরের এক প্রত্যক্ষদর্শীও জানান, তিনি ঘাঁটির ভেতর থেকে গুলির শব্দ শুনেছেন।

আইএসবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ এক দশক ধরে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সেনা মোতায়েন রেখেছে। সেখানে কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে সহায়তা দিচ্ছে ওয়াশিংটন।

২০১৫ সালে সিরিয়ায় সামরিক শক্তির চূড়ায় থাকা অবস্থায় আইএস পালমিরা দখল করে নেয়। প্রায় ১০ মাস পর শহরটি তাদের হাতছাড়া হয়। ওই সময় আইএস পালমিরার বহু প্রাচীন নিদর্শন ধ্বংস করে এবং কিছু স্থানে প্রকাশ্যে গণহত্যা চালায়। ২০১৮ সালে সিরিয়ায় আইএস পরাজিত হলেও তারা এখনো ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বিচ্ছিন্ন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে ১৪ বছরের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর দেশ পুনর্গঠনের চেষ্টা চালালেও সিরিয়া এখনো নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রকে বর্জন করে কোথায় যাচ্ছেন কানাডার পর্যটকেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৫
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ২৩ শতাংশ কমেছে। ছবি: এএফপি
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ২৩ শতাংশ কমেছে। ছবি: এএফপি

একটা সময় যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রতি চারজন বিদেশি পর্যটকের একজন ছিলেন কানাডিয়ান। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ব্যাপক শুল্ক ও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ করার ইঙ্গিতের পর কানাডার বহু নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটানো থেকে সরে যাচ্ছেন। টানা ১২ মাস চলা এই ভ্রমণ বর্জন থামার কোনো লক্ষণ এখনো নেই।

দীর্ঘদিন ধরে কানাডা ছিল যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সবচেয়ে বড় উৎস। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসা বিদেশি পর্যটকদের ২৮ শতাংশই ছিলেন কানাডিয়ান। কিন্তু ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেই সংখ্যা দ্রুত কমতে শুরু করে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন (ইউএসটিএ) জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ২৩ শতাংশ কমেছে। ফলে আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার (৩০০ কোটি পাউন্ড) আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

তবে কানাডিয়ানরা ভ্রমণ কমাননি। তাহলে প্রশ্ন হলো, তাঁরা যাচ্ছেন কোথায়?

অনেকে নিজের দেশেই ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভ্রমণবিষয়ক লেখক ও কনটেন্ট নির্মাতা এমিলি ব্রিয়োঁ জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আহ্বানে সাড়া দিয়ে কানাডিয়ানরা যুক্তরাষ্ট্র বাদ দিয়ে দেশের ভেতরেই ঘুরতে শুরু করেছেন। এমিলি ব্রিয়োঁ বলেন, ‘আমি আগে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র দুটো দেশেই রোড ট্রিপ কভার করতাম। কিন্তু গত মার্চে সিদ্ধান্ত নিই, শুধু কানাডাকেই কেন্দ্র করব। আমি ২০২৫ সালের এপ্রিলে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে যাওয়ার পারিবারিক ভ্রমণ বাতিল করে সেই বাজেট কানাডায় ঘুরে ব্যয় করেছি।’

টরন্টোভিত্তিক জনসংযোগকর্মী ট্রেসি লামুরি আরও কড়া অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি আর কখনো সীমান্ত পার হব না। ভ্রমণের জন্য ইউরোপ বেছে নিয়েছি, আর কাজের জন্য জুমই যথেষ্ট। ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ আর মানবাধিকার পরিস্থিতির কারণে আগেও যুক্তরাষ্ট্র নিরাপদ মনে হতো না, এখন তো পুরোপুরি ‘নো-গো’ তালিকায়।

এই মনোভাব শুধু কানাডিয়ানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ইউএসটিএর হিসাব অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক পর্যটকেরা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ কমিয়ে দিলে মোট ক্ষতি ৫.৭ বিলিয়ন ডলার (৪.২৮ বিলিয়ন পাউন্ড) হতে পারে।

কানাডার জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা জানায়, ২০২৫ সালে দেশের ভেতরে ভ্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। পাশাপাশি কানাডিয়ানদের ভ্রমণ বেড়েছে মেক্সিকো, পর্তুগাল, বাহামাস ও বেলিজে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, মেক্সিকোর শহরগুলোতে কানাডিয়ান পর্যটক প্রায় ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে বুয়েনস আইরেস, ওসাকা, কোপেনহেগেন ও কুরাসাওয়ের মতো গন্তব্যে কানাডিয়ানদের খরচ ২০২৪ সালের তুলনায় ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

অনেক কানাডিয়ান যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের পরিবর্তে নিজ দেশ ঘুরে দেখছেন। ছবিটি কানাডার আলবার্টার ব্যানফ ন্যাশনাল পার্কের লেক লুইসের। ছবি: এএফপি
অনেক কানাডিয়ান যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের পরিবর্তে নিজ দেশ ঘুরে দেখছেন। ছবিটি কানাডার আলবার্টার ব্যানফ ন্যাশনাল পার্কের লেক লুইসের। ছবি: এএফপি

অন্যদিকে, কানাডিয়ান পর্যটকের ওপর নির্ভরশীল যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঞ্চল ক্ষতির মুখে পড়েছে। জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা ভারমন্টে কানাডা থেকে আসা পর্যটক কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। লাস ভেগাসে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১৮ শতাংশ কানাডিয়ানের ভ্রমণ কমেছে। ফোর্ট লডারডেল, আপস্টেট নিউইয়র্কসহ অনেক এলাকাতেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।

এদিকে ইউরোপ ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট বাড়ানোয় যুক্তরাষ্ট্র এড়িয়ে যাওয়া কানাডিয়ানদের জন্য বিকল্প আরও সহজ হয়েছে। এয়ার কানাডার নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্ক গালার্ডো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বার্লিন, পন্তা দেলগাদা, নঁত ও ব্রাসেলসের মতো ইউরোপীয় শহরে নতুন নন-স্টপ রুট চালু করছি, যাতে ভ্রমণ সহজ হয় এবং পর্যটন ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হয়।’

৪ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে এয়ার কানাডা ক্যারিবীয়, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় ১৩টি নতুন রুট চালু করছে; যা মূলত শীতকালে ফ্লোরিডা বা ক্যালিফোর্নিয়ার ওপর নির্ভর করা কানাডিয়ান ‘স্নোবার্ড’দের লক্ষ্য করেই।

এই প্রবণতা কত দিন চলবে, তা স্পষ্ট নয়। তবে এমিলি ব্রিয়োঁ মনে করেন, এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এটা কানাডিয়ানদের জন্য নিজের দেশের কম পরিচিত অঞ্চল ঘুরে দেখার সুযোগ। যেমন ব্যানফের বদলে কুটেনে। আমার মনে হচ্ছে না এটা স্বল্পমেয়াদি বিষয়; বরং কানাডিয়ানদের ভ্রমণ পছন্দে একটি স্থায়ী পরিবর্তনের সূচনা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১২৩ বন্দী মুক্তির বিনিময়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার পেল বেলারুশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি ও বেলারুশের বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা। ছবি: এএফপি
শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি ও বেলারুশের বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা। ছবি: এএফপি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার পর ১২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশ। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি। বেলারুশে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জন কোয়ালের সঙ্গে আলোচনার পরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দী মুক্তির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার মিত্রদেশ বেলারুশের ওপর আরোপিত কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সার উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পটাশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা। পটাশ বেলারুশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য।

১২৩ বন্দী মুক্তির পর জন কোয়াল বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে পর্যায়ক্রমে আরও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।’ বেলারুশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, পটাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তাৎক্ষণিকভাবে তুলে নেওয়া হবে।

২০২০ সাল থেকে কারাবন্দী বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা দীর্ঘ সময় একাকী বন্দিত্বে ছিলেন। মুক্তির পর তাঁর বোন তাতিয়ানা খোমিচ ভিডিও কলে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং বিষয়টি নিশ্চিত করেন। খোমিচ বলেন, ‘সে মুক্ত। তাকে ভালো ও সুস্থই দেখাচ্ছে। তাকে জড়িয়ে ধরার অপেক্ষায় আছি।’ তিনি আরও জানান, কোলেসনিকোভা প্রথমেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আলোচনায় অংশ নেওয়া বেলারুশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

অন্যদিকে, বেলারুশের একটি আদালত ২০২৩ সালের মার্চে শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী অ্যালেস বিলিয়াতস্কিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। সে সময় দেশটির আদালত চোরাচালান ও জনজীবনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কর্মকাণ্ডে অর্থায়নে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেন।

৬৩ বছর বিলিয়াতস্কি ২০২২ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী তিনজনের একজন। ২০২১ সালে বেলারুশের বিতর্কিত নির্বাচনের পর বিক্ষোভে জড়িয়ে পড়লে বিলিয়াতস্কিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধী দলকে সহযোগিতার জন্য অবৈধভাবে বাইরে থেকে বেলারুশে অর্থ আনার অভিযোগে আনা হয়।

মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েকজনকে শিগগিরই লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বাইরে লোকজন জড়ো হচ্ছেন।

এই সমঝোতাকে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর জন্য বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই তাঁকে বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। পাঁচ বছর আগে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনের পর ব্যাপক বিক্ষোভ নিরাপত্তা বাহিনী কঠোরভাবে দমন করে। সে সময় শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হন, তাঁদের মধ্যেই ছিলেন কোলেসনিকোভা।

২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর বেলারুশের বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরও কড়া হয়। কারণ, দেশটির ভূখণ্ড ব্যবহার করেই রুশ সেনা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত কোয়াল জানান, আলোচনায় তিনি লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও কথা বলেছেন এবং সম্ভাব্য শান্তি আলোচনায় মিনস্ক কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়েও মতবিনিময় হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, মিনস্কের সঙ্গে ওয়াশিংটনের এই সম্পৃক্ততা যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত, যা ইউরোপের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ইউরোপ যেখানে এখনো বেলারুশকে বিচ্ছিন্ন ও নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে চাপে রাখতে চায়, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে এগোচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাশিয়ার হামলায় বিদ্যুৎবিহীন ইউক্রেনের ১০ লাখ পরিবার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ওডেসা শহরের বর্তমান চিত্র। ছবি: ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা বিভাগ
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ওডেসা শহরের বর্তমান চিত্র। ছবি: ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা বিভাগ

রাতভর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দেশটির অন্তত ১০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেঙ্কোর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রাতভর চালানো এসব হামলায় দেশের পাঁচটি অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আগুন নেভানো এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো রাশিয়ার হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। তবে শীতকাল ঘনিয়ে আসায় সাম্প্রতিক সময়ে এসব হামলার মাত্রা আরও বেড়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বন্ধের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জার্মানি সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করবেন। বার্লিনে প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তির সর্বশেষ খসড়া নিয়েই মূলত আলোচনা হবে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, রাতভর হামলায় রাশিয়া ৪৫০টির বেশি ড্রোন ও ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লাইমেঙ্কো জানান, হামলার শিকার অঞ্চলগুলো হলো—দনিপ্রোপেত্রোভস্ক, কিরোভোহরাদ, মাইকোলাইভ, ওডেসা ও চেরনিহিভ।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করছে, এসব হামলায় তারা কিনঝাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মাঝপথে দিক পরিবর্তন করতে পারে, ফলে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন।

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংযোগ সারা রাত বিচ্ছিন্ন ছিল। হামলার কারণে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে আবার বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। রুশ নিয়ন্ত্রণাধীন এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বর্তমানে চালু নেই, তবে রিঅ্যাক্টর ঠান্ডা রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন।

এদিকে রাশিয়ার সারাতোভ অঞ্চলে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় একটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর রোমান বুসারগিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত