বিনদ ঘোষাল

এই লেখাটি লিখতে বসে প্রথমে যে কথাটি মনে হচ্ছে তা হলো, নারায়ণ দেবনাথের কারণেই আমার অতি দ্রুত বাংলা অক্ষরজ্ঞান হয়েছিল। কীভাবে? সে কথা একটু বলি।
আমি তখন সবে পাঁচ বছরে পা দিয়েছি। উনিশ শ সত্তরের দশকে পাঁচ বছর বয়সের আগে ইশকুলে ভর্তি করানো যেত না। তাই পাঁচে পড়তেই বাবা আমাকে নবগ্রামের শিশু ভারতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেজি ওয়ানে ভর্তি করে দিলেন। ভর্তি হয়েছি কি হইনি অত সব বোঝার ক্ষমতা হয়নি, তবে একদিন লোডশেডিংয়ের সন্ধেবেলায় বারান্দায় বসে রয়েছি, দেখলাম বাবা দোকান থেকে আমার জন্য অনেক রংচঙে বই এনেছেন। সেই সব বইয়ের মধ্যে বর্ণপরিচয় নামের একটা বই ছিল আর ছিল নন্টে-ফন্টের নানান কীর্তি নামের একটা বই। সাদাকালো সেই বইটার মলাটে একটা মোটা, টেকো মানুষের রাগী মুখ আর দু’জন আমার থেকে একটু বড় ছেলের হাসি-হাসি মুখ। সেই বইটার পাতা ওল্টালাম। তখন মা আমাকে বাড়িতে অ আ ক খ শেখাচ্ছেন। খুব অল্পই শিখেছি।
বইয়ের পাতায় পাতায় দেখলাম অনেক মজার ছবি। দুটো ছেলে অনেক হাসছে, মজা করছে। আমার বাবার মতো ধুতি-পাঞ্জাবি পরা ভুঁড়িওয়ালা একটা লোক খুব রাগী-রাগী মুখ করে কখনো ওদের পেটাচ্ছে, কখনো তাড়া করছে। কিন্তু ছবিগুলোর মাথায় কী লেখা রয়েছে ভালোভাবে পড়ে উঠতে পারছি না। দিদিকে জিজ্ঞাসা করলাম। দিদি পড়ে শোনাল। খুব মজা লাগল শুনে। মনে জেদ চাপল এমন মজার লেখা নিজেই পড়ব। কিন্তু তার জন্য খুব দ্রুত বাংলা শিখতে হবে। সেদিন থেকেই খুব মন দিয়ে ফেললাম পড়াশোনায়। বর্ণ-পরিচয়ের পাশাপাশি আমার নন্টে-ফন্টের নানান কীর্তি পড়া শুরু। পাড়ায় আমার বয়সী বন্ধুদের মধ্যে সব থেকে আগে আমি পুরো বাক্য লিখতে ও পড়তে শিখেছিলাম আর সেটা একমাত্র সম্ভব হয়েছিল ওই নারায়ণ দেবনাথের জন্য।
তারপর? তারপর পুরো নেশা লেগে গেল। কেজি ওয়ান, টু-থ্রি-ফোর...টেন-টুয়েলভ-কলেজ। আজ এখন মধ্য-চল্লিশে পৌঁছে জীবনের নানা জটিলতায় যখন হাঁপিয়ে পড়ি তখন মোবাইল নয়, ট্যাব-ল্যাপটপ-টিভি-গান-গল্প-উপন্যাস কিচ্ছু না, আলমারি থেকে হাতে টেনে নিই নন্টে-ফন্টে কিংবা বাঁটুল দি গ্রেট সমগ্র। কারণ আমি জানি, মন খারাপ দূর করার জন্য এর থেকে বড় ম্যাজিক আর কারও নেই। বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ একটা মানুষ কীভাবে এত চরিত্র নির্মাণ করে গেছেন, তাদের নিয়ে রাশি রাশি গল্প লিখে গেছেন, তাদের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তা ভাবলে এই বয়সে বিস্মিত হই। নন্টে-ফন্টে, হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুল দি গ্রেট, বাহাদুর বেড়াল, ডানপিটে খাঁদু, গোয়েন্দা কৌশিক—আরও কত যে চরিত্রের স্রষ্টা তিনি এবং প্রতি চরিত্রের মেজাজ আলাদা, গল্পের চলন আলাদা। কীভাবে এতসব চরিত্রকে সামলাতেন তা ভাবলে অবাক হয়ে যাই! আর গল্পের পাশাপাশি মুগ্ধ হতে হয় তাঁর ড্রয়িং দেখে। ফিগার ড্রয়িংয়ে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। যে কোনো পশচার, যে কোনো মুভমেন্টকে অভাবনীয় অনায়াসে আঁকতেন!
আমাদের ছোটবেলায় ভিডিও গেম ছিল না, টিভি ছিল না, মোবাইল, হেন-তেন কিছুই ছিল না। ছিল অনেক বন্ধু, খেলার মাঠ আর ছিল নারায়ণ দেবনাথের অলৌকিক জগৎ। যেখানে ডুব দিলেই সুপারিন্টেন্ডেন্ট বাবু, পিসেমশাইয়ের শাসন, কেল্টুদার বদমাইশি, নন্টে-ফন্টের বন্ধুত্ব, বাঁটুলের অভাবনীয় দৈহিক শক্তি, পিসিমা, দুই বিচ্ছু—আরও অনেকের দেখা মিলত। তারা সকলেই ছিল আমার বন্ধু, আমার আপনার জন। আমার মন খারাপ হতোই না কখনো। ডিপ্রেশন কী কখনো বুঝিইনি ওদের জন্য।
সাদাকালো ওই খোপগুলোয় আঁকা ছবি আর ডায়লগবক্সের ‘ইররক, ওকৎ, উলস, আফস, সুরুৎ’ শব্দগুলোর সঙ্গে সেই যে পরিচয় হয়ে গিয়েছিল নারায়ণ দেবনাথের হাত ধরে, আজও ভুলিনি।
অনেক বড় হয়ে যাওয়ার পর একদিন চাকরিসূত্রে আমার সুযোগ হয়েছিল ওই জাদুকরের সাক্ষাৎকার নেওয়ার। হাওড়ার এক শতাব্দীপ্রাচীন বাড়ির নোনাধরা ছোট ঘরের ভেতরে যখন প্রবেশ করেছিলাম আর সেই মানুষটির সঙ্গে কথা বলতে বলতে ডুবে যাচ্ছিলাম শৈশবের স্মৃতিতে, সে এক অনির্বচনীয় অনুভূতি আর জীবনের সেরা প্রাপ্তি ছিল আমার। আর সেদিনই মানুষটির শিশুর মতো সারল্য, মনের স্বচ্ছতা টের পেয়ে উপলব্ধি করেছিলাম, এমন শিশুসুলভ মন না থাকলে অমন চরিত্রদের সৃষ্টি করাই যায় না। আমি জীবনে নিজের পেশার সূত্রে অনেক কৃতী মানুষের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু নারায়ণ দেবনাথের মতো এমন সহজ, নিরহংকার মানুষ দুটি দেখিনি। এই আত্মপ্রচারের যুগে, এই আপন দামামা বাজানোর যুগে তিনি সত্যি এক বিস্ময়, নিজের সম্পর্কে বলতে ওঁর কত কুণ্ঠা! মস্ত শিক্ষা নিয়ে সেদিন ফিরেছিলাম আমি।
নারায়ণ দেবনাথ চলে গেলেন। আটানব্বই বছর বয়সে। হ্যাঁ, চলে যাওয়ার বয়স হয়েছিল ওঁর। সবই জানি, সবই বুঝি, কিন্তু...। এখন অনেকেই বলেন, এই বাংলায় জন্মেছিলেন বলে, এই বাংলায় কাজ করেছিলেন বলে তিনি তাঁর প্রতিভার যোগ্য সমাদর পাননি, অনেক বড় সম্মান তাঁর প্রাপ্য ছিল। তবু জীবনের শেষপ্রান্তে এসে শিশুসাহিত্যে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবিভূষণ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট এবং শেষশয্যায় তিনি পদ্মশ্রী পেয়েছেন—এই আমাদের গৌরব।
হয়তো এইটুকুও যথেষ্ট নয়, ইউরোপ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের দেশগুলোতে তিনি জন্মালে বিশ্ববিখ্যাত হতে পারতেন স্ট্যান লি অথবা ডিজনির মতো। সেই যোগ্যতা তাঁর ছিল। কিন্তু এটাও তো সত্যি, তাঁর চলে যাওয়ার খবরটি পেয়ে আমার মতো এক মধ্য-চল্লিশ মানুষ সকাল থেকে বারংবার চোখ মুছছে আর আবারও চোখ দুটি ঝাপসা হয়ে উঠছে। এই পুরস্কারের মূল্য যে কিছু কম নয়, এই সম্মানের যে কোনো তুলনা নেই তা তিনি অন্তত জানেন।
নারায়ণ দেবনাথ কয়েকটি প্রজন্মকে আশ্রয় দিয়েছিলেন, কল্পনা করতে, নির্মলভাবে হাসতে শিখিয়েছিলেন। তিনি চলে গেলেন। শুধু একটা কথাই শেষে বলার, নারায়ণ দেবনাথ কারও বিকল্প ছিলেন না, নারায়ণ দেবনাথেরও কোনো দিন বিকল্প হবে না। তিনি চিরকালের এক জাদুকর।
লেখক: কথাসাহিত্যিক, কলকাতা

এই লেখাটি লিখতে বসে প্রথমে যে কথাটি মনে হচ্ছে তা হলো, নারায়ণ দেবনাথের কারণেই আমার অতি দ্রুত বাংলা অক্ষরজ্ঞান হয়েছিল। কীভাবে? সে কথা একটু বলি।
আমি তখন সবে পাঁচ বছরে পা দিয়েছি। উনিশ শ সত্তরের দশকে পাঁচ বছর বয়সের আগে ইশকুলে ভর্তি করানো যেত না। তাই পাঁচে পড়তেই বাবা আমাকে নবগ্রামের শিশু ভারতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেজি ওয়ানে ভর্তি করে দিলেন। ভর্তি হয়েছি কি হইনি অত সব বোঝার ক্ষমতা হয়নি, তবে একদিন লোডশেডিংয়ের সন্ধেবেলায় বারান্দায় বসে রয়েছি, দেখলাম বাবা দোকান থেকে আমার জন্য অনেক রংচঙে বই এনেছেন। সেই সব বইয়ের মধ্যে বর্ণপরিচয় নামের একটা বই ছিল আর ছিল নন্টে-ফন্টের নানান কীর্তি নামের একটা বই। সাদাকালো সেই বইটার মলাটে একটা মোটা, টেকো মানুষের রাগী মুখ আর দু’জন আমার থেকে একটু বড় ছেলের হাসি-হাসি মুখ। সেই বইটার পাতা ওল্টালাম। তখন মা আমাকে বাড়িতে অ আ ক খ শেখাচ্ছেন। খুব অল্পই শিখেছি।
বইয়ের পাতায় পাতায় দেখলাম অনেক মজার ছবি। দুটো ছেলে অনেক হাসছে, মজা করছে। আমার বাবার মতো ধুতি-পাঞ্জাবি পরা ভুঁড়িওয়ালা একটা লোক খুব রাগী-রাগী মুখ করে কখনো ওদের পেটাচ্ছে, কখনো তাড়া করছে। কিন্তু ছবিগুলোর মাথায় কী লেখা রয়েছে ভালোভাবে পড়ে উঠতে পারছি না। দিদিকে জিজ্ঞাসা করলাম। দিদি পড়ে শোনাল। খুব মজা লাগল শুনে। মনে জেদ চাপল এমন মজার লেখা নিজেই পড়ব। কিন্তু তার জন্য খুব দ্রুত বাংলা শিখতে হবে। সেদিন থেকেই খুব মন দিয়ে ফেললাম পড়াশোনায়। বর্ণ-পরিচয়ের পাশাপাশি আমার নন্টে-ফন্টের নানান কীর্তি পড়া শুরু। পাড়ায় আমার বয়সী বন্ধুদের মধ্যে সব থেকে আগে আমি পুরো বাক্য লিখতে ও পড়তে শিখেছিলাম আর সেটা একমাত্র সম্ভব হয়েছিল ওই নারায়ণ দেবনাথের জন্য।
তারপর? তারপর পুরো নেশা লেগে গেল। কেজি ওয়ান, টু-থ্রি-ফোর...টেন-টুয়েলভ-কলেজ। আজ এখন মধ্য-চল্লিশে পৌঁছে জীবনের নানা জটিলতায় যখন হাঁপিয়ে পড়ি তখন মোবাইল নয়, ট্যাব-ল্যাপটপ-টিভি-গান-গল্প-উপন্যাস কিচ্ছু না, আলমারি থেকে হাতে টেনে নিই নন্টে-ফন্টে কিংবা বাঁটুল দি গ্রেট সমগ্র। কারণ আমি জানি, মন খারাপ দূর করার জন্য এর থেকে বড় ম্যাজিক আর কারও নেই। বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ একটা মানুষ কীভাবে এত চরিত্র নির্মাণ করে গেছেন, তাদের নিয়ে রাশি রাশি গল্প লিখে গেছেন, তাদের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তা ভাবলে এই বয়সে বিস্মিত হই। নন্টে-ফন্টে, হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুল দি গ্রেট, বাহাদুর বেড়াল, ডানপিটে খাঁদু, গোয়েন্দা কৌশিক—আরও কত যে চরিত্রের স্রষ্টা তিনি এবং প্রতি চরিত্রের মেজাজ আলাদা, গল্পের চলন আলাদা। কীভাবে এতসব চরিত্রকে সামলাতেন তা ভাবলে অবাক হয়ে যাই! আর গল্পের পাশাপাশি মুগ্ধ হতে হয় তাঁর ড্রয়িং দেখে। ফিগার ড্রয়িংয়ে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। যে কোনো পশচার, যে কোনো মুভমেন্টকে অভাবনীয় অনায়াসে আঁকতেন!
আমাদের ছোটবেলায় ভিডিও গেম ছিল না, টিভি ছিল না, মোবাইল, হেন-তেন কিছুই ছিল না। ছিল অনেক বন্ধু, খেলার মাঠ আর ছিল নারায়ণ দেবনাথের অলৌকিক জগৎ। যেখানে ডুব দিলেই সুপারিন্টেন্ডেন্ট বাবু, পিসেমশাইয়ের শাসন, কেল্টুদার বদমাইশি, নন্টে-ফন্টের বন্ধুত্ব, বাঁটুলের অভাবনীয় দৈহিক শক্তি, পিসিমা, দুই বিচ্ছু—আরও অনেকের দেখা মিলত। তারা সকলেই ছিল আমার বন্ধু, আমার আপনার জন। আমার মন খারাপ হতোই না কখনো। ডিপ্রেশন কী কখনো বুঝিইনি ওদের জন্য।
সাদাকালো ওই খোপগুলোয় আঁকা ছবি আর ডায়লগবক্সের ‘ইররক, ওকৎ, উলস, আফস, সুরুৎ’ শব্দগুলোর সঙ্গে সেই যে পরিচয় হয়ে গিয়েছিল নারায়ণ দেবনাথের হাত ধরে, আজও ভুলিনি।
অনেক বড় হয়ে যাওয়ার পর একদিন চাকরিসূত্রে আমার সুযোগ হয়েছিল ওই জাদুকরের সাক্ষাৎকার নেওয়ার। হাওড়ার এক শতাব্দীপ্রাচীন বাড়ির নোনাধরা ছোট ঘরের ভেতরে যখন প্রবেশ করেছিলাম আর সেই মানুষটির সঙ্গে কথা বলতে বলতে ডুবে যাচ্ছিলাম শৈশবের স্মৃতিতে, সে এক অনির্বচনীয় অনুভূতি আর জীবনের সেরা প্রাপ্তি ছিল আমার। আর সেদিনই মানুষটির শিশুর মতো সারল্য, মনের স্বচ্ছতা টের পেয়ে উপলব্ধি করেছিলাম, এমন শিশুসুলভ মন না থাকলে অমন চরিত্রদের সৃষ্টি করাই যায় না। আমি জীবনে নিজের পেশার সূত্রে অনেক কৃতী মানুষের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু নারায়ণ দেবনাথের মতো এমন সহজ, নিরহংকার মানুষ দুটি দেখিনি। এই আত্মপ্রচারের যুগে, এই আপন দামামা বাজানোর যুগে তিনি সত্যি এক বিস্ময়, নিজের সম্পর্কে বলতে ওঁর কত কুণ্ঠা! মস্ত শিক্ষা নিয়ে সেদিন ফিরেছিলাম আমি।
নারায়ণ দেবনাথ চলে গেলেন। আটানব্বই বছর বয়সে। হ্যাঁ, চলে যাওয়ার বয়স হয়েছিল ওঁর। সবই জানি, সবই বুঝি, কিন্তু...। এখন অনেকেই বলেন, এই বাংলায় জন্মেছিলেন বলে, এই বাংলায় কাজ করেছিলেন বলে তিনি তাঁর প্রতিভার যোগ্য সমাদর পাননি, অনেক বড় সম্মান তাঁর প্রাপ্য ছিল। তবু জীবনের শেষপ্রান্তে এসে শিশুসাহিত্যে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবিভূষণ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট এবং শেষশয্যায় তিনি পদ্মশ্রী পেয়েছেন—এই আমাদের গৌরব।
হয়তো এইটুকুও যথেষ্ট নয়, ইউরোপ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের দেশগুলোতে তিনি জন্মালে বিশ্ববিখ্যাত হতে পারতেন স্ট্যান লি অথবা ডিজনির মতো। সেই যোগ্যতা তাঁর ছিল। কিন্তু এটাও তো সত্যি, তাঁর চলে যাওয়ার খবরটি পেয়ে আমার মতো এক মধ্য-চল্লিশ মানুষ সকাল থেকে বারংবার চোখ মুছছে আর আবারও চোখ দুটি ঝাপসা হয়ে উঠছে। এই পুরস্কারের মূল্য যে কিছু কম নয়, এই সম্মানের যে কোনো তুলনা নেই তা তিনি অন্তত জানেন।
নারায়ণ দেবনাথ কয়েকটি প্রজন্মকে আশ্রয় দিয়েছিলেন, কল্পনা করতে, নির্মলভাবে হাসতে শিখিয়েছিলেন। তিনি চলে গেলেন। শুধু একটা কথাই শেষে বলার, নারায়ণ দেবনাথ কারও বিকল্প ছিলেন না, নারায়ণ দেবনাথেরও কোনো দিন বিকল্প হবে না। তিনি চিরকালের এক জাদুকর।
লেখক: কথাসাহিত্যিক, কলকাতা

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৯ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণ দেবনাথ চলে গেলেন। আটানব্বই বছর বয়সে। তিনি শিশুসাহিত্যে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবিভূষণ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট এবং শেষশয্যায় পদ্মশ্রী উপাধি পেয়েছেন। নারায়ণ দেবনাথ কারও বিকল্প ছিলেন না, নারায়ণ দেবনাথেরও কোনো দিন বিকল্প হবে না।
২৩ জানুয়ারি ২০২২
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

নারায়ণ দেবনাথ চলে গেলেন। আটানব্বই বছর বয়সে। তিনি শিশুসাহিত্যে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবিভূষণ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট এবং শেষশয্যায় পদ্মশ্রী উপাধি পেয়েছেন। নারায়ণ দেবনাথ কারও বিকল্প ছিলেন না, নারায়ণ দেবনাথেরও কোনো দিন বিকল্প হবে না।
২৩ জানুয়ারি ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৯ ঘণ্টা আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণ দেবনাথ চলে গেলেন। আটানব্বই বছর বয়সে। তিনি শিশুসাহিত্যে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবিভূষণ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট এবং শেষশয্যায় পদ্মশ্রী উপাধি পেয়েছেন। নারায়ণ দেবনাথ কারও বিকল্প ছিলেন না, নারায়ণ দেবনাথেরও কোনো দিন বিকল্প হবে না।
২৩ জানুয়ারি ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৯ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

নারায়ণ দেবনাথ চলে গেলেন। আটানব্বই বছর বয়সে। তিনি শিশুসাহিত্যে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবিভূষণ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট এবং শেষশয্যায় পদ্মশ্রী উপাধি পেয়েছেন। নারায়ণ দেবনাথ কারও বিকল্প ছিলেন না, নারায়ণ দেবনাথেরও কোনো দিন বিকল্প হবে না।
২৩ জানুয়ারি ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৯ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে