ভ্যান গঘ হচ্ছেন সেই শিল্পী, যিনি জীবদ্দশায় তাঁর কীর্তির জন্য বাহবা পাননি। তাঁর আঁকা ছবি পেয়েছে শুধু তাচ্ছিল্য। ভ্যান গঘ বড় শিল্পী হিসেবে স্বীকৃত হন মরণের পর। একটা অসুখ ছিল তাঁর। মানসিক অসুখ। সেই অসুখ তাঁকে স্বস্তি দেয়নি।
এমএ পড়ার সময় আমি কবিতা লিখেছি, প্রবন্ধ লিখেছি; কিন্তু কোনো গোষ্ঠীতে যোগ দিইনি। আমি দেখেছি কবি হওয়ার জন্যেও সাহিত্যিক রাজনীতি লাগে, বিভিন্ন সংঘে যোগ দিতে হয়, গুরু ধরতে হয়, অনেকের কাছে খুব বিনীত থাকতে হয়, লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে গাঁজাটাজা খেতে হয়, বেশ্যাবাড়ি যেতে হয়—আমি এসব করিনি।
আনুমানিক ১৬৬৩ থেকে ১৬৬৪ সালের দিকে হাকিম হাবিবুর রহমান লেনে বড় কাটরার আদলে কিন্তু আকৃতিতে ছোট ইমারতের নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং শেষ হয় ১৬৭১ সালে। ইমারতটি পরিচিত ছোট কাটরা নামে। শায়েস্তা খাঁর আমলে এটি নির্মিত হয়েছিল সরাইখানা বা প্রশাসনিক কাজে ব্যবহারের জন্য।
টেরাকোটা শিল্পের অনন্য নিদর্শন দিনাজপুরের মধ্যযুগীয় কান্তজিউ মন্দির। নানা পৌরাণিক কাহিনি পোড়ামাটির অলংকরণে মন্দিরের দেয়ালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মহারাজা প্রাণনাথ রায় মন্দিরটি শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর স্ত্রী রুক্মিণীকে উৎসর্গ করে নির্মাণ শুরু করেন ১৭০৪ খ্রিষ্টাব্দে।
রাজধানীর লালবাগে খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদের ভেতরে এখনো ফারসি ভাষার যে শিলালিপিটি আছে, তাতে পাওয়া তথ্যমতে, ঢাকার প্রধান বিচারক কাজী ইবাদুল্লাহের আদেশে আতিশখানা এলাকায় হিজরি ১১১৬ সালে খান মোহাম্মদ নির্মাণ করেন এই মসজিদটি।
ঢাকার প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলে এখন যে স্টেডিয়ামটি রয়েছে সেটির বয়স ৭১ বছর। যখন ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ছিল, সেই ১৯৫৪ সালে নির্মাণ করা হয় অন্যতম প্রাচীন এই ক্রীড়া স্থাপনা। এর আগে এখানে ছিল ঢাকা ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের মাঠ। শুরুতে এটি ঢাকা স্টেডিয়াম হিসেবেই পরিচিতি পায়।
আইচ্ছা, আমি প্রথম যখন ক্যামেরা হাতে নিলাম তখন কিন্তু আমি ফটোগ্রাফারদের কোন কাজই দেহি নাই। ওই যে, পেপারের মধ্যে কাজ-টাজ দেখতাম, বিভিন্ন ম্যাগাজিনে দেখতাম, চিত্রালীতে দেখতাম। তারপর মাঝে মইদ্দে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ওই সময়, ব্রিটিশ কাউন্সিলে যে যাই নাই, তাও না। তখন ফটোগ্রাফির কিছু বই-টই দেখছি...।
সপ্তদশ শতকের আগে ঢাকাকে রক্ষার জন্য তিনটি জলদুর্গ নির্মিত হয়েছিল। একটি সোনাকান্দা দুর্গ, দ্বিতীয়টি ইদ্রাকপুর দুর্গ আর তৃতীয়টি ছবির হাজিগঞ্জ দুর্গ। নারায়ণগঞ্জের হাজিগঞ্জ এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরে স্থাপিত দুর্গটি খিজিরপুর দুর্গ নামেও পরিচিত।
আমি কোনো সময়েই একটা সাধারণ পুতু-পুতু মার্কা গল্প বলি না—যে একটি ছেলে একটি মেয়ে প্রেমে পড়েছে, প্রথমে মিলতে পারছে না, তাই দুঃখ পাচ্ছে, পরে মিলে গেল বা একজন পটল তুলল—এমন বস্তাপচা সাজানো গল্প লিখে বা ছবি করে নির্বোধ দর্শকদের খুব হাসিয়ে বা কাঁদিয়ে ওই গল্পের মধ্যে ইনভলভ করিয়ে দিলাম, দুই মিনিটেই...
অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে জালালপুর পরগনার জমিদার শেখ ইনায়েতউল্লাহ বুড়িগঙ্গার কাছে রংমহল নামে একটি প্রমোদভবন তৈরি করেন। পরে তাঁর পুত্র রংমহলটি এক ফরাসি বণিকের কাছে বিক্রি করে দেন।
বছরের শেষ রাত। আকাশ আলোয় ভরে উঠবে, নতুন বছরের আবাহনে মেতে উঠবে মানুষ। তবে সেই উল্লাসের মাঝে আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, আমাদের কর্মকাণ্ডে এই পৃথিবীর অন্য বাসিন্দাদের ওপর কী ভয়াবহ প্রভাব পড়ে?
মণি সিংহের নামটিই হয়ে উঠেছিল সংগ্রামের প্রতীক। বিপ্লবের প্রতি অবিচল নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, মেহনতি মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার মতো বহু মহৎ মানবিক গুণের সমাহার ঘটেছিল তাঁর মধ্যে।
রোম্যাঁ রোলাঁ ১৮৬৬ সালের ২৯ জানুয়ারি ফ্রান্সের ক্লিভেন্সি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি ফ্লামেসি কলেজে অধ্যয়ন করেন। পরে তিনি পড়াশোনার জন্য ইতালির রোমে যান। ফিরে এসে সংগীতের ওপর উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার জন্য ভর্তি হন প্যারিসের সবর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে।
গত শতকের পঞ্চাশের দশকে যে তরুণদের হাতে এ দেশের শিল্পের বড় ধরনের পালাবদল ঘটে, সেই প্রজন্মেরই একজন প্রধান শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর। বাংলাদেশের চিত্রকলায় নদী-নিসর্গের আলো-অন্ধকার নিরীক্ষণ করে আর মানুষের দেহের অন্ধিসন্ধির জ্ঞান আহরণ করে যাঁরা তালিম নিয়েছিলেন গুরুশিল্পী জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, সফিউদ্দীন
রিজিয়া রহমান ভীষণভাবে নির্জনতাপ্রিয় লেখক ছিলেন। এক অর্থে নির্জনতাই তাঁর জীবন ও লেখালেখির মূল শক্তি ছিল। তিনি লেখালেখিকে সাংসারিক কাজের ফাঁকে অবসরের কাজ হিসেবে গ্রহণ করেননি। তিনি একজন পূর্ণকালীন লেখক ছিলেন। লেখার প্রতি সৎ ও নিবেদিত থাকার প্রত্যয়ে কলেজের অধ্যাপনার চাকরিও ছেড়ে দিয়েছিলেন।
সোহরাব হোসেন দীর্ঘ আট দশক ধরে নজরুলসংগীতের সাধনায় নিজেকে নিমগ্ন রেখেছিলেন। তাঁর জন্ম ১৯২২ সালের ৯ এপ্রিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার রানাঘাটের আয়েশতলা গ্রামে। খুব ছোটবেলা থেকেই গান শুনতে শুনতে তাঁর ভেতর সংগীতের বীজ অঙ্কুরিত হয়। তিনি যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়েন, তখন একদিন গ্রাম থেকে নৌকায় চড়ে রানাঘাট
মুনশী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ ছিলেন সমাজসংস্কারক। তিনি বহুবিধ জনকল্যাণকর কাজের মধ্যে আজীবন নিজেকে নিযুক্ত রেখেছিলেন। যদিও মেহেরুল্লাহ পেশায় ছিলেন একজন দরজি। জ্ঞান অন্বেষণের প্রবল ইচ্ছাশক্তির কারণে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর নিজগৃহ ত্যাগ করেন। এরপর স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠেন।