নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের কাচারীকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন কাচারীকান্দি গ্রামের মৃত মলফত মিয়ার ছেলে সাদির মিয়া (২২) ও আসাদ মিয়ার ছেলে হিরণ মিয়া (৩৫)।
এ সময় গুরুতর আহত হয়েছে আরও অন্তত ৪০ জন। আহতদের রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নরসিংদী সদরসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে যাঁদের নাম জানা গেছে তাঁরা হলেন আল আমিন (২০), হক মিয়া (৪৮), দানু মিয়া (৬০), নাজমা বেগম (২৪), সামসুন্নাহার (৩৪), নাজির মিয়া (২১), মহারাজ মিয়া (২০), শুক্কুর মিয়া (৩০), রাকিব মিয়া (১৮), রমজান (১৮), মোখলেছ (১৮), জজ মিয়া (১৬), শহিদ মিয়া (৪৫), হান্নান মিয়া (১৯), সালাম মিয়া (৩৩), জাহাঙ্গীর (২৯), জামাল মিয়া (৩০), মোবারক (২৭) ও শাহ মিয়ার ছেলে অহিদ মিয়া (৩০)। অহিদ মিয়াকে চোখে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, একই গ্রামে সাবেক ইউপি সদস্য মৃত ফজলু মিয়ার ছেলে শাহ আলম ওরফে ছোট শাহ আলমের সঙ্গে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল কাদির মেম্বারের ছেলে বর্তমান ইউপি সদস্য শাহ আলম ওরফে বড় শাহ আলমের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। তাঁদের দ্বন্দ্বের জেরে গত রোজার ঈদের পরদিন উভয় গ্রুপের সংঘর্ষে ছোট শাহ আলম সমর্থক শহিদ মিয়া ও ইয়াসিন মিয়া নামে দুজন টেঁটাবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। এ ঘটনার পর বড় শাহ আলমের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। চলমান ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়ানো লোকজন আবার এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করছেন।
এরই জেরে বৃহস্পতিবার ভোরে বড় শাহ আলমের লোকজন দেশি-বিদেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছোট শাহ আলমের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় হামলাকারীদের গুলি ও টেঁটায় উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন গুরুতর আহত হন।
ঘটনাস্থলেই ছোট শাহ আলমের সমর্থক হিরন মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং সাদির মিয়াকে কাছের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মোখলেছসহ বেশ কয়েকজনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আহত রাকিব মিয়া বলেন, ``আজ ভোরে বড় শাহ আলমের লোকজন অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তাদের হাতে থাকা টেঁটা, বল্লম, বন্দুকসহ দেশি-বিদেশি অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।'
এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোবিন্দ সরকার বলেন, `সংঘর্ষে দুজন নিহতের সংবাদ পেয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'