চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
‘এভাবে কাকাকে হাতকড়া পরা অবস্থায় আসতে হবে ভাবিনি। দাদি কাকাকে নিয়ে অনেক চিন্তা করতেন। শেষ কয়টা দিন দাদির খুব কষ্টে গেছে। কাকার জেলখানায় থাকা নিয়ে চিন্তায় ছিল।’ ভারাক্রান্ত স্বরে কথাগুলো বললেন চুয়াডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের ভাতিজা রাকিব ইসলাম।
জাহাঙ্গীর হোসেন এখন কারাবাসী। সেখানে থাকা অবস্থায় তাঁর মা স্ট্রোক করে মারা যান। মায়ের মৃত্যুর খবরে কারাগার থেকে প্যারোলে চার ঘণ্টার জন্য মুক্তি পান তিনি। হাতকড়া পরা অবস্থায় মায়ের জানাজা ও দাফনে অংশ নেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ৫ আগস্ট সংঘর্ষের একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এর আগে, ২০২২ সালে হাতকড়া-ডান্ডাবেড়ি নিয়েই মায়ের জানাজায় ইমামতি করেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম। তাঁর হাতকড়া পরা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তখনো ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
জাহাঙ্গীরের পরিবার সূত্র জানায়, পৌর ছাত্রলীগের সহসভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের মা আলেয়া খাতুন (৭০) গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে নিজ বাড়িতে স্ট্রোক করে মারা যান। প্যারোলে মুক্তির পর বাড়িতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন জাহাঙ্গীর হোসেন। হাতকড়া পরেই খাটিয়া কাঁধে বহন করে কবরস্থানে যান জাহাঙ্গীর।
জাহাঙ্গীর হোসেন চুয়াডাঙ্গা শহরের কেদারগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপুর অনুসারী ছিলেন জাহাঙ্গীর হোসেন।
জাহাঙ্গীরের মামা আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমার বোন আগেও স্ট্রোক করেছিলেন। মঙ্গলবার সকালেও আবারও স্ট্রোক করেন এবং মারা যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাহাঙ্গীর জানাজায় অংশ নিয়ে মায়ের জন্য মোনাজাত করতে পেরেছে, এতেই আমরা সন্তুষ্ট। জাহাঙ্গীরের এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, দেখছি। তবে জাহাঙ্গীর হোসেন নির্দোষ।’
জাহাঙ্গীর হোসেনের ভাতিজা রাকিব ইসলাম বলেন, ‘এভাবে কাকাকে হাতকড়া পরা অবস্থায় আসতে হবে ভাবিনি। দাদি কাকাকে নিয়ে অনেক চিন্তা করতেন। শেষ কয়টা দিন দাদির খুব কষ্টে গেছে। কাকার জেলখানায় থাকা নিয়ে চিন্তায় ছিল।’
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান জানান, গত ১২ নভেম্বর থেকে জাহাঙ্গীর জেলহাজতে। ৫ আগস্ট সংঘর্ষের একটি মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনি। মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনের একটি টিম তাঁকে প্যারোলে বাড়িতে নিয়ে যায়।