মইনুল হাসান
প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষের যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তানের রক্তাক্ত ইতিহাসে ১৫ আগস্ট তারিখটি এক ঐতিহাসিক দিন হিসেবে চিহ্নিত হলো। প্রায় দুই দশক আগে ২০০১ সালের ১৩ নভেম্বর ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর এই দিনে তালেবান অনেকটা বিনা বাধায় ও রক্তপাতহীনভাবে দ্বিতীয়বারের মতো রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। উল্লেখ করা যেতে পারে, ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত আগ্রাসনের পর গড়ে ওঠা গোষ্ঠীটি ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো দেশটির ক্ষমতা দখল করেছিল। এ অবস্থায় আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কী ভাবছে ইউরোপ?
আফগানিস্তানের ‘সদ্য সাবেক’ রাষ্ট্রপতি আশরাফ গনি আহমদজাই দেশ ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। তালেবান নেতৃবৃন্দের একটি দল কাবুলে প্রেসিডেন্ট প্রসাদে অবস্থান নিয়েছে। পশ্চিমা রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা আফগানিস্তানে এত দ্রুত ক্ষমতার পালা বদলকে তালেবানের বিজয় হিসেবে দেখছেন। অনেকে কিছুটা রাখঢাক করে হলেও একে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর পরাজয় বলে বর্ণনা করছেন।
কাবুলের পতনের পর, ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই গতকাল সোমবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর সরকারি কার্যালয় ও বাসস্থান এলিজে প্রসাদ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়। সেখানে বলা হয়, ‘আফগানিস্তানকে নিয়ে যে ভূরাজনৈতিক সংকট, তার সঙ্গে সমগ্র অঞ্চল ও বিশ্বের স্থিতিশীলতাই জড়িত।’ সেদিন দুপুরে প্রেসিডেন্টের সভাপতিত্বে ফরাসি প্রতিরক্ষা পর্ষদের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের সঙ্গে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। এই তিন নেতা এ ব্যাপারে একসঙ্গে কাজ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। সন্ধ্যায় তিনি আফগান পরিস্থিতি নিয়ে গ্রীষ্মকালীন বাসভবন ব্রেগানসন দুর্গ থেকে জাতির উদ্দেশে ১০ মিনিটের এক ভাষণে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
বক্তব্যে আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখলকে কীভাবে দেখছেন এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি কী করতে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে ফরাসিদের একটি ধারণা দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ও দেশটির সেনাপ্রধান ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। ম্যাখোঁ বলেন, ‘এটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।’
ম্যাখোঁ তাঁর ভাষণে দুটি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, তালেবান অধিকৃত আফগানিস্তান ‘ইসলামি জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর’ যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একই সঙ্গে আফগান নারীদের ‘স্বাধীনতা ও মর্যাদা’ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ মিলে একসঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতির রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজে বের করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
ম্যাখোঁ তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, দোভাষী, ড্রাইভার, বাবুর্চিসহ বিভিন্ন পেশার যেসব আফগান ফরাসিদের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের সুরক্ষার দায়িত্ব নেবে ফ্রান্স। সেই সঙ্গে তিনি সাধারণ আফগানদের পাশে থাকার নিশ্চয়তা দেন। ম্যাখোঁ রক্তক্ষয়ী দীর্ঘ যুদ্ধে আহত ও নিহতদের স্মরণ করেন। আফগানিস্তানে মার্কিন ও ন্যাটো জোটের সঙ্গে ২০০১ থেকে ২০১৪—এই ১৩ বছরে ফরাসি সেনাদের উপস্থিতির কথাও উল্লেখ করেন। ম্যাখোঁ বলেন, জীবনের ঝুঁকি আছে—এমন আফগান লেখক, সাংবাদিক, খেলোয়াড়, শিল্পী, সমাজকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের আশ্রয় দিতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দেরি না করে জার্মানিসহ ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে একটি শক্তিশালী, সমন্বিত ও ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়া গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবেন বলেও জানান ম্যাখোঁ।
একই অবস্থান ব্যক্ত করেছে জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। তারা সবাই আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বলছে। যুক্তরাজ্য ও জার্মানি তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, দেশ ছাড়তে চাওয়া আফগানদের যেন নিরাপদে দেশ ছাড়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকলেও তালেবানকে বাদ দিয়ে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ আফগানিস্তানের আশা করা বাতুলতা মাত্র। এটি মার্কিনরা যেমন বুঝতে পেরেছিল, তেমনি ইউরোপীয়রাও সে প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিল। আর তাই বিগত বছরগুলোতে তালেবানদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা, দর কষাকষি হয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিনরা তালেবানদের সঙ্গে একটি গোপন সমঝোতা চুক্তি করেছিল। মোট কথা, আফগানিস্তানে দীর্ঘতম যুদ্ধের অবসান ও অভ্যন্তরীণ শান্তি ফিরিয়ে আনতে হলে দেশটির নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ আফগানদের হাতেই থাকতে হবে। তাদেরই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। আফগানিস্তানে দীর্ঘদিন অবস্থান ও জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির পরও ব্যর্থ হওয়াতে, তীব্র সমালোচনার মুখে এই যুক্তি এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয়রা তুলে ধরে গা বাঁচাতে চাইছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা আগে থেকেই সতর্ক দৃষ্টি রাখছিলেন আফগানিস্তান পরিস্থিতির ওপর। তালেবান নেতৃবৃন্দকে এরই মধ্যে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, যেন তাঁরা সহিংসতা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন থেকে বিরত থাকেন। বিশেষ করে নারী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও সাংবাদিকদের অধিকার যাতে কোনোভাবেই লঙ্ঘন না হয়, সে ব্যাপারে বিশেষভাবে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ইইউ নেতারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, আফগানিস্তানে সহিংসতা চলতে থাকলে এবং ফের তাদের পুরোনো আইন চালু করলে আন্তর্জাতিক সমর্থন ও স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত হতে পারে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
এদিকে ইউরোপের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষেরা তালেবানদের ওপর মোটেই আস্থা রাখতে পারছেন না। তালেবানদের আল–কায়েদা থেকে আলাদা ভাবছেন না। কারণ, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতিভেদে সব মানুষের সহাবস্থান শান্তিপূর্ণ করতে ধর্মকে রাজনীতি থেকে বহু আগে থেকেই আলাদা করা হয়েছে। এ ছাড়া নারীদেরও পুরুষের সমকক্ষ ভাবা হয়, যা কিনা তালেবান আদর্শ ও ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিপন্থী। আর তাই বিশ্বের অনেক দেশের মতোই ইউরোপীয়রা আফগানিস্তানে তালেবান পুনরুত্থানকে মোটেই ভালো চোখে দেখছে না।
মইনুল হাসান: ফ্রান্স প্রবাসী গবেষক
প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষের যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তানের রক্তাক্ত ইতিহাসে ১৫ আগস্ট তারিখটি এক ঐতিহাসিক দিন হিসেবে চিহ্নিত হলো। প্রায় দুই দশক আগে ২০০১ সালের ১৩ নভেম্বর ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর এই দিনে তালেবান অনেকটা বিনা বাধায় ও রক্তপাতহীনভাবে দ্বিতীয়বারের মতো রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। উল্লেখ করা যেতে পারে, ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত আগ্রাসনের পর গড়ে ওঠা গোষ্ঠীটি ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো দেশটির ক্ষমতা দখল করেছিল। এ অবস্থায় আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কী ভাবছে ইউরোপ?
আফগানিস্তানের ‘সদ্য সাবেক’ রাষ্ট্রপতি আশরাফ গনি আহমদজাই দেশ ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। তালেবান নেতৃবৃন্দের একটি দল কাবুলে প্রেসিডেন্ট প্রসাদে অবস্থান নিয়েছে। পশ্চিমা রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা আফগানিস্তানে এত দ্রুত ক্ষমতার পালা বদলকে তালেবানের বিজয় হিসেবে দেখছেন। অনেকে কিছুটা রাখঢাক করে হলেও একে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর পরাজয় বলে বর্ণনা করছেন।
কাবুলের পতনের পর, ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই গতকাল সোমবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর সরকারি কার্যালয় ও বাসস্থান এলিজে প্রসাদ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়। সেখানে বলা হয়, ‘আফগানিস্তানকে নিয়ে যে ভূরাজনৈতিক সংকট, তার সঙ্গে সমগ্র অঞ্চল ও বিশ্বের স্থিতিশীলতাই জড়িত।’ সেদিন দুপুরে প্রেসিডেন্টের সভাপতিত্বে ফরাসি প্রতিরক্ষা পর্ষদের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের সঙ্গে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। এই তিন নেতা এ ব্যাপারে একসঙ্গে কাজ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। সন্ধ্যায় তিনি আফগান পরিস্থিতি নিয়ে গ্রীষ্মকালীন বাসভবন ব্রেগানসন দুর্গ থেকে জাতির উদ্দেশে ১০ মিনিটের এক ভাষণে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
বক্তব্যে আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখলকে কীভাবে দেখছেন এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি কী করতে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে ফরাসিদের একটি ধারণা দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ও দেশটির সেনাপ্রধান ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। ম্যাখোঁ বলেন, ‘এটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।’
ম্যাখোঁ তাঁর ভাষণে দুটি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, তালেবান অধিকৃত আফগানিস্তান ‘ইসলামি জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর’ যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একই সঙ্গে আফগান নারীদের ‘স্বাধীনতা ও মর্যাদা’ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ মিলে একসঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতির রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজে বের করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
ম্যাখোঁ তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, দোভাষী, ড্রাইভার, বাবুর্চিসহ বিভিন্ন পেশার যেসব আফগান ফরাসিদের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের সুরক্ষার দায়িত্ব নেবে ফ্রান্স। সেই সঙ্গে তিনি সাধারণ আফগানদের পাশে থাকার নিশ্চয়তা দেন। ম্যাখোঁ রক্তক্ষয়ী দীর্ঘ যুদ্ধে আহত ও নিহতদের স্মরণ করেন। আফগানিস্তানে মার্কিন ও ন্যাটো জোটের সঙ্গে ২০০১ থেকে ২০১৪—এই ১৩ বছরে ফরাসি সেনাদের উপস্থিতির কথাও উল্লেখ করেন। ম্যাখোঁ বলেন, জীবনের ঝুঁকি আছে—এমন আফগান লেখক, সাংবাদিক, খেলোয়াড়, শিল্পী, সমাজকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের আশ্রয় দিতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দেরি না করে জার্মানিসহ ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে একটি শক্তিশালী, সমন্বিত ও ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়া গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবেন বলেও জানান ম্যাখোঁ।
একই অবস্থান ব্যক্ত করেছে জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। তারা সবাই আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বলছে। যুক্তরাজ্য ও জার্মানি তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, দেশ ছাড়তে চাওয়া আফগানদের যেন নিরাপদে দেশ ছাড়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকলেও তালেবানকে বাদ দিয়ে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ আফগানিস্তানের আশা করা বাতুলতা মাত্র। এটি মার্কিনরা যেমন বুঝতে পেরেছিল, তেমনি ইউরোপীয়রাও সে প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিল। আর তাই বিগত বছরগুলোতে তালেবানদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা, দর কষাকষি হয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিনরা তালেবানদের সঙ্গে একটি গোপন সমঝোতা চুক্তি করেছিল। মোট কথা, আফগানিস্তানে দীর্ঘতম যুদ্ধের অবসান ও অভ্যন্তরীণ শান্তি ফিরিয়ে আনতে হলে দেশটির নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ আফগানদের হাতেই থাকতে হবে। তাদেরই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। আফগানিস্তানে দীর্ঘদিন অবস্থান ও জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির পরও ব্যর্থ হওয়াতে, তীব্র সমালোচনার মুখে এই যুক্তি এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয়রা তুলে ধরে গা বাঁচাতে চাইছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা আগে থেকেই সতর্ক দৃষ্টি রাখছিলেন আফগানিস্তান পরিস্থিতির ওপর। তালেবান নেতৃবৃন্দকে এরই মধ্যে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, যেন তাঁরা সহিংসতা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন থেকে বিরত থাকেন। বিশেষ করে নারী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও সাংবাদিকদের অধিকার যাতে কোনোভাবেই লঙ্ঘন না হয়, সে ব্যাপারে বিশেষভাবে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ইইউ নেতারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, আফগানিস্তানে সহিংসতা চলতে থাকলে এবং ফের তাদের পুরোনো আইন চালু করলে আন্তর্জাতিক সমর্থন ও স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত হতে পারে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
এদিকে ইউরোপের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষেরা তালেবানদের ওপর মোটেই আস্থা রাখতে পারছেন না। তালেবানদের আল–কায়েদা থেকে আলাদা ভাবছেন না। কারণ, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতিভেদে সব মানুষের সহাবস্থান শান্তিপূর্ণ করতে ধর্মকে রাজনীতি থেকে বহু আগে থেকেই আলাদা করা হয়েছে। এ ছাড়া নারীদেরও পুরুষের সমকক্ষ ভাবা হয়, যা কিনা তালেবান আদর্শ ও ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিপন্থী। আর তাই বিশ্বের অনেক দেশের মতোই ইউরোপীয়রা আফগানিস্তানে তালেবান পুনরুত্থানকে মোটেই ভালো চোখে দেখছে না।
মইনুল হাসান: ফ্রান্স প্রবাসী গবেষক
ইউক্রেনের ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র সারা বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও, রাশিয়ার এ ধরনের আক্রমণকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়েছে—যেমনটি ইসরায়েল উত্তর গাজাকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগেট্রাম্প ফিরে আসায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে পারে, সামান্য কিছু পরিবর্তন নিয়ে। ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পেছনের সারিতে থাকলেও বাংলাদেশ,
১৯ ঘণ্টা আগেড. ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন পুরো জাতি তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবে তাঁকে পরিষ্কারভাবে এই পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে যে, তিনি কীভাবে দেশ শাসন করবেন এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
২ দিন আগেসম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
২ দিন আগে