অনলাইন ডেস্ক
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়কে ‘দুঃস্বপ্ন’ হিসেবেই বিবেচনা করছে ইরান ও তাঁর মধ্যপ্রাচ্যের মিত্ররা। জরিপে দেখা যাচ্ছে, রিপাবলিকান ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের মধ্যে প্রতিযোগিতা তীব্র। এমন পরিস্থিতিতে ইরান, লেবানন, ইরাক ও ইয়েমেনে তাদের আঞ্চলিক মিত্ররা আশঙ্কা করছেন, ৫ নভেম্বর ট্রাম্প পুনরায় জয়ী হলে তা তাঁদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে উঠবে।
ইরানের মূল উদ্বেগ হচ্ছে, ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু করে হত্যার উৎসাহ দিতে পারেন। একই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের তেল বাণিজ্যের ওপরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করতে পারে। ইরান, আরব এবং পশ্চিমা কর্মকর্তাদের মতে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে পারমাণবিক চুক্তি মানতে চরম চাপ প্রয়োগ করতে পারেন ট্রাম্প।
এই সম্ভাব্য পরিবর্তন মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। ইরানের পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকেও বিনষ্ট করে দিতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রশাসনের নেতৃত্বে ট্রাম্প বা হ্যারিস যেই আসুক না কেন—ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানের ফলে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে আগের মতো প্রভাব ধরে রাখতে পারবে না। তবে ট্রাম্পের অবস্থানকে ইরানের জন্য বেশি ক্ষতিকর মনে করা হচ্ছে, কারণ তিনি ইসরায়েলকে আরও সরাসরি সমর্থন দিতে পারেন।
এ বিষয়ে গালফ রিসার্চ সেন্টারের প্রধান আবদেল আজিজ আল-সাগার বলেন, ‘ট্রাম্প হয় ইরানের ওপর কঠিন শর্ত আরোপ করবেন অথবা ইসরায়েলকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার অনুমতি দেবেন। এটি নেতানিয়াহুর জন্য স্বপ্ন পূরণের মতো।’
ইরানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা সকল পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আছি।’ তবে অপর এক কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্পের জয় একটি ‘দুঃস্বপ্ন’ হতে পারে, কারণ তিনি ইরানের ওপর চাপ বৃদ্ধি করবেন ও তেল বাণিজ্যের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করবেন, যা ইরানের অর্থনীতি স্থবির করে ফেলতে পারে।
অক্টোবরে একটি নির্বাচনী প্রচারসভায় ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে চান না, তবে ইরানের ওপর হামলা করতে ইসরায়েলকে উৎসাহিত করেছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে ইরানের সামনে বিকল্প তেমন কোনো থাকবে না।
কমলা হ্যারিস নির্বাচনী প্রচারণায় ইরানকে ‘বিপজ্জনক’ ও ‘অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী’ শক্তি উল্লেখ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ‘আক্রমণাত্মক আচরণ’ মোকাবিলায় মিত্রদের সঙ্গে কাজ করবে। আর ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হলে সেটি খামেনির জন্য আরও বিপজ্জনক হতে পারে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
ট্রাম্প নির্বাচিত হলে খামেনির জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যকার প্রতিরক্ষা চুক্তি। এই চুক্তিতেই সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি রয়েছে। এই জোট একটি শক্তিশালী ফ্রন্ট তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্য প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এতে ইরানের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ও মধ্যপ্রাচ্যে তাঁদের দাপট বাধাগ্রস্ত হবে।
বিভিন্ন ইসলামিক গোষ্ঠী বিষয়ক গবেষক ও লেখক হাসান বলেন, ‘বাস্তবতা হলো, ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে পুরোপুরি সমর্থন দেবেন এবং তাঁকে যা ইচ্ছা তাই করার সবুজ সংকেত দেবেন। ইরানের জন্য ট্রাম্প হ্যারিসের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। এবারের পরিস্থিতি ইরানের জন্য সত্যিই খারাপ। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয়ই ইরানকে এখন সমস্যা হিসেবে দেখছে।’
হাসানের মতে, ইরান ও তার মিত্রদের ওপর সাম্প্রতিক হামলাগুলো ইসরায়েলের জন্য একটি বড় সাফল্য। এর মধ্য দিয়ে ইরানে হামলা চালানোর কৌশল জানতে পারছে প্রতিপক্ষ। ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান মানেই মধ্যপ্রাচ্যে বড় যুদ্ধ—এমন ধারণা বদলে দিয়েছে।
আরব অঞ্চলের এক শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের পর তেহরান আর সশস্ত্র মিত্রদের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না।’
২০১৮ সালে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করে কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সোলেইমানি ছিলেন খামেনির ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিদেশে মার্কিন মিত্রদের ওপর হামলা চালানোর মূল নীতিনির্ধারক। তাই ইরানের জন্য ট্রাম্পের আরেক মেয়াদ অত্যন্ত ভীতিকর হবে বলেই মনে হচ্ছে।
তা ছাড়া, ট্রাম্প আগের মেয়াদে ইরানের তেল রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক ব্যাংকিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেশটির বড় অঙ্কের টাকা আটকে দিয়েছিলেন, যা ইরানে কঠিন অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করেছিল এবং জন-অসন্তোষ বাড়িয়েছিল। ট্রাম্প এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় বলেছেন, ‘বাইডেনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর না করার নীতি তেহরানকে আরও শক্তিশালী করেছে। তেহরান তেল বিক্রির টাকায় হামাস-হিজবুল্লাহকে অস্ত্র দিচ্ছে।’
মার্চে ইসরায়েলের হাইওম পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ইরান মাত্র ৩৫ দিনের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে। ফলে ইসরায়েল ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
এক আরব সরকারি উপদেষ্টা জানান, তেহরান স্বীকার করেছে যে মধ্যপ্রাচ্যে একটি নতুন কৌশলগত কাঠামো তৈরি হচ্ছে। তবে, ট্রাম্প নিজের কঠোর অবস্থানের পরও বুঝতে পেরেছেন যে ইরানের সঙ্গে চুক্তির বিকল্প নেই।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ট্রাম্প হয়তো ইরানের সঙ্গে নতুন পারমাণবিক চুক্তির চেষ্টা করবেন এবং ২০১৫ সালের চুক্তি অসম্পূর্ণ ছিল বলবেন। তিনি এটি বাতিল করে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে চাইবেন যা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা করবে।’
২০১৫ সালের চুক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধির মাত্রা বাড়িয়েছে, ফলে দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে খুব বেশি দিন লাগবে না। যদিও ইরান দাবি করেছে, তাঁদের এমন কোনো ইচ্ছা নেই।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরান অনলাইন জানিয়েছে, ট্রাম্প যখন ক্ষমতা ছাড়ার সময় ইরান ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধি করছিল। কিন্তু এখন দেশটি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে ও কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করছে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এটি ইরানের বড় কৌশলগত পুঁজি।’
আরব ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, ইরান যত বেশি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেবে, ততই ইসরায়েলের আক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে।
এক পশ্চিমা কর্মকর্তা বলেছে, ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে তিনি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানার জন্য ইসরায়েলি পরিকল্পনাগুলোর প্রতি সমর্থন দেবেন।
রয়টার্স থেকে অনুবাদ করেছেন আবদুল বাছেদ
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়কে ‘দুঃস্বপ্ন’ হিসেবেই বিবেচনা করছে ইরান ও তাঁর মধ্যপ্রাচ্যের মিত্ররা। জরিপে দেখা যাচ্ছে, রিপাবলিকান ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের মধ্যে প্রতিযোগিতা তীব্র। এমন পরিস্থিতিতে ইরান, লেবানন, ইরাক ও ইয়েমেনে তাদের আঞ্চলিক মিত্ররা আশঙ্কা করছেন, ৫ নভেম্বর ট্রাম্প পুনরায় জয়ী হলে তা তাঁদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে উঠবে।
ইরানের মূল উদ্বেগ হচ্ছে, ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু করে হত্যার উৎসাহ দিতে পারেন। একই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের তেল বাণিজ্যের ওপরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করতে পারে। ইরান, আরব এবং পশ্চিমা কর্মকর্তাদের মতে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে পারমাণবিক চুক্তি মানতে চরম চাপ প্রয়োগ করতে পারেন ট্রাম্প।
এই সম্ভাব্য পরিবর্তন মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। ইরানের পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকেও বিনষ্ট করে দিতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রশাসনের নেতৃত্বে ট্রাম্প বা হ্যারিস যেই আসুক না কেন—ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানের ফলে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে আগের মতো প্রভাব ধরে রাখতে পারবে না। তবে ট্রাম্পের অবস্থানকে ইরানের জন্য বেশি ক্ষতিকর মনে করা হচ্ছে, কারণ তিনি ইসরায়েলকে আরও সরাসরি সমর্থন দিতে পারেন।
এ বিষয়ে গালফ রিসার্চ সেন্টারের প্রধান আবদেল আজিজ আল-সাগার বলেন, ‘ট্রাম্প হয় ইরানের ওপর কঠিন শর্ত আরোপ করবেন অথবা ইসরায়েলকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার অনুমতি দেবেন। এটি নেতানিয়াহুর জন্য স্বপ্ন পূরণের মতো।’
ইরানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা সকল পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আছি।’ তবে অপর এক কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্পের জয় একটি ‘দুঃস্বপ্ন’ হতে পারে, কারণ তিনি ইরানের ওপর চাপ বৃদ্ধি করবেন ও তেল বাণিজ্যের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করবেন, যা ইরানের অর্থনীতি স্থবির করে ফেলতে পারে।
অক্টোবরে একটি নির্বাচনী প্রচারসভায় ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে চান না, তবে ইরানের ওপর হামলা করতে ইসরায়েলকে উৎসাহিত করেছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে ইরানের সামনে বিকল্প তেমন কোনো থাকবে না।
কমলা হ্যারিস নির্বাচনী প্রচারণায় ইরানকে ‘বিপজ্জনক’ ও ‘অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী’ শক্তি উল্লেখ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ‘আক্রমণাত্মক আচরণ’ মোকাবিলায় মিত্রদের সঙ্গে কাজ করবে। আর ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হলে সেটি খামেনির জন্য আরও বিপজ্জনক হতে পারে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
ট্রাম্প নির্বাচিত হলে খামেনির জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যকার প্রতিরক্ষা চুক্তি। এই চুক্তিতেই সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি রয়েছে। এই জোট একটি শক্তিশালী ফ্রন্ট তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্য প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এতে ইরানের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ও মধ্যপ্রাচ্যে তাঁদের দাপট বাধাগ্রস্ত হবে।
বিভিন্ন ইসলামিক গোষ্ঠী বিষয়ক গবেষক ও লেখক হাসান বলেন, ‘বাস্তবতা হলো, ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে পুরোপুরি সমর্থন দেবেন এবং তাঁকে যা ইচ্ছা তাই করার সবুজ সংকেত দেবেন। ইরানের জন্য ট্রাম্প হ্যারিসের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। এবারের পরিস্থিতি ইরানের জন্য সত্যিই খারাপ। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয়ই ইরানকে এখন সমস্যা হিসেবে দেখছে।’
হাসানের মতে, ইরান ও তার মিত্রদের ওপর সাম্প্রতিক হামলাগুলো ইসরায়েলের জন্য একটি বড় সাফল্য। এর মধ্য দিয়ে ইরানে হামলা চালানোর কৌশল জানতে পারছে প্রতিপক্ষ। ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান মানেই মধ্যপ্রাচ্যে বড় যুদ্ধ—এমন ধারণা বদলে দিয়েছে।
আরব অঞ্চলের এক শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের পর তেহরান আর সশস্ত্র মিত্রদের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না।’
২০১৮ সালে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করে কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সোলেইমানি ছিলেন খামেনির ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিদেশে মার্কিন মিত্রদের ওপর হামলা চালানোর মূল নীতিনির্ধারক। তাই ইরানের জন্য ট্রাম্পের আরেক মেয়াদ অত্যন্ত ভীতিকর হবে বলেই মনে হচ্ছে।
তা ছাড়া, ট্রাম্প আগের মেয়াদে ইরানের তেল রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক ব্যাংকিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেশটির বড় অঙ্কের টাকা আটকে দিয়েছিলেন, যা ইরানে কঠিন অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করেছিল এবং জন-অসন্তোষ বাড়িয়েছিল। ট্রাম্প এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় বলেছেন, ‘বাইডেনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর না করার নীতি তেহরানকে আরও শক্তিশালী করেছে। তেহরান তেল বিক্রির টাকায় হামাস-হিজবুল্লাহকে অস্ত্র দিচ্ছে।’
মার্চে ইসরায়েলের হাইওম পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ইরান মাত্র ৩৫ দিনের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে। ফলে ইসরায়েল ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
এক আরব সরকারি উপদেষ্টা জানান, তেহরান স্বীকার করেছে যে মধ্যপ্রাচ্যে একটি নতুন কৌশলগত কাঠামো তৈরি হচ্ছে। তবে, ট্রাম্প নিজের কঠোর অবস্থানের পরও বুঝতে পেরেছেন যে ইরানের সঙ্গে চুক্তির বিকল্প নেই।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ট্রাম্প হয়তো ইরানের সঙ্গে নতুন পারমাণবিক চুক্তির চেষ্টা করবেন এবং ২০১৫ সালের চুক্তি অসম্পূর্ণ ছিল বলবেন। তিনি এটি বাতিল করে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে চাইবেন যা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা করবে।’
২০১৫ সালের চুক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধির মাত্রা বাড়িয়েছে, ফলে দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে খুব বেশি দিন লাগবে না। যদিও ইরান দাবি করেছে, তাঁদের এমন কোনো ইচ্ছা নেই।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরান অনলাইন জানিয়েছে, ট্রাম্প যখন ক্ষমতা ছাড়ার সময় ইরান ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধি করছিল। কিন্তু এখন দেশটি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে ও কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করছে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এটি ইরানের বড় কৌশলগত পুঁজি।’
আরব ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, ইরান যত বেশি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেবে, ততই ইসরায়েলের আক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে।
এক পশ্চিমা কর্মকর্তা বলেছে, ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে তিনি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানার জন্য ইসরায়েলি পরিকল্পনাগুলোর প্রতি সমর্থন দেবেন।
রয়টার্স থেকে অনুবাদ করেছেন আবদুল বাছেদ
সদ্য নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে নাটকীয় ঘটনা। ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে প্রেসিডেন্ট পদ হারানোর চার বছর পর লাখ লাখ আমেরিকানের সমর্থনে ট্রাম্প আবারও হোয়াইট হাউসে ফিরে আসতে যাচ্ছেন।
৬ ঘণ্টা আগেচলমান ফৌজদারি এবং দেওয়ানি মামলার মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া একটি নজিরবিহীন আইনি পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তিনি এমন এক সময়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন যখন ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে দোষ প্রমাণিত হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগেভারতের যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হলেও ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ নয়া দিল্লির জন্য বেশ কিছু সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসতে পারে। বিশেষ করে, বাণিজ্য, অভিবাসন, সামরিক সহযোগিতা এবং কূটনীতি—এই চারটি ক্ষেত্রে। ট্রাম্প ও মোদি পরস্পরকে একাধিকবার বন্ধু বলে সম্বোধন করলেও সামগ্রিকভাবে ট্রাম্প
১১ ঘণ্টা আগেনির্বাচনে ট্রাম্প জয়ী হলে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের চীন নীতিতেও পরিবর্তন আসতে পারে। ট্রাম্প নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর যে, চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে বোদ্ধাদের নতুন করে ভাবতে হবে এ বিষয়ে কোনো সন্দ
১২ ঘণ্টা আগে