নির্বাচন নিয়ে ঝামেলায় পড়ে গেছেন মাদুরো

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৪, ০০: ১২
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৪, ০০: ১৫

পশ্চিমাদের কাছে ভেনেজুয়েলার নির্বাচন একটি প্রহসন মাত্র। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গত ২৫ বছর ধরে দেশটির ক্ষমতায় আছে সমাজতান্ত্রিক পিএসইউভি পার্টি। গত রোববার অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নির্বাচনে নিজেকে টানা তৃতীয়বারের মতো বিজয়ী ঘোষণা করেছেন এই দলের বর্তমান নেতা নিকোলাস মাদুরো। ২০১৩ সালে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির প্রভাবশালী নেতা হুগো শ্যাভেজের ক্যানসারে মৃত্যুর পর তিনি নেতৃত্ব নিয়েছিলেন। 

গতকাল সোমবার ভোট গণনা শেষ হলে মাদুরোকে জয়ী ঘোষণা করে ভেনেজুয়েলার নির্বাচন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল কাউন্সিল (সিএনই)। কিন্তু এই ফল তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধী দলগুলো। গতকালই তাঁরা সারা দেশে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনীও। 

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানী কারাকাসের রাস্তায় জড়ো হতে থাকেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। তাঁদের অনেকেই দেশের প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চল থেকে মাইলের পর মাইল হেঁটে রাজধানীতে জড়ো হন। মাদুরোর জয়কে তাঁরা ‘জোচ্চুরি’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁরা দাবি করছেন, তাঁদের প্রার্থী অ্যাডমান্ডো গনজালেস উরুতিয়া ৭৩ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। তাঁরা সিএনই প্রধানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট অ্যালভিস আমরোসো মাদুরোর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। 

বিরোধীরা বলছেন—নির্বাচনের আগে পরিচালিত একাধিক জরিপে গনজালেস সুস্পষ্ট ব্যবধানে জয়ী হচ্ছেন বলে আভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভোট গণনা শেষে মাদুরোকেই জয়ী ঘোষণা করা হলো! 

বিরোধীদের এমন দাবিকে যৌক্তিক বলছে কয়েকটি পশ্চিমা ও প্রতিবেশী দেশ। ভোটের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল আলাদা করে প্রকাশ করার জন্য ভেনেজুয়েলা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাও। 

বিরোধীদলীয় প্রার্থীকে গনজালেসকে বিজয়ী দাবি করছে বিরোধী দলগুলোবৈশ্বিক বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মাদুরোকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে আর্জেন্টিনা। এর জের ধরে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেস থেকে নিজেদের কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নিয়ে গেছে ভেনেজুয়েলা। শুধু আর্জেন্টিনাই নয়, দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য দেশের মধ্যে চিলি, পানামা, উরুগুয়ে, পেরু, কোস্টারিকা ও ডমিনিকান রিপাবলিক থেকেও কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। 

উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাস থেকে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ ও সরিয়ে দিতে বিপুলসংখ্যক সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা যেন কিছুতেই প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে পৌঁছাতে না পারে সেই চেষ্টা করছে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো। মাদুরো সরকারের সম্ভাব্য পতনকে মঙ্গলবার দেশের স্বাধীনতার সঙ্গে তুলনা করে স্লোগান দেয় বিরোধীরা। রাজপথে টায়ার জ্বেলে ও ইট-পাটক্যাল ছুঁড়ে পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের জবাব দিচ্ছে বিপুলসংখ্যক মানুষ। চলছে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। রাজধানীতে প্রয়াত নেতা হুগো শ্যাভেজের বিশাল একটি ভাস্কর্য ভেঙে ফেলতেও দেখা গেছে বিক্ষোভকারীদের। 

পরিস্থিতি সামাল দিতে বিক্ষোভকারীদের আইনের ভয় দেখানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সাত শতাধিক বিক্ষোভকারী এবং বিরোধীদলীয় এক প্রভাবশালী নেতাকে আটক করা হয়েছে। 

ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে অবস্থান নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।আল-জাজিরার লাইভ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভকারীদের প্রতি বিরূপ আচরণ না করার জন্য ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মাদুরোর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী গনজালেস। নির্বাচনী ফলাফলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সারা দেশজুড়ে। 

এদিকে মাদুরোর প্রতি অনুগত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষা প্রধান ভ্লাদিমির প্যাডরিনো। মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছোড়ারও অভিযোগ উঠেছে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে। অন্তত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আরও রক্তপাতের আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকেরা। দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনী ফলাফলের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তুলেছেন সাংবাদিকেরা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত