অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক পুনর্গঠনের পথে রয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দক্ষিণ এশিয়ায় পরাশক্তিগুলোর প্রভাব বিস্তারের খেলায় দুই দেশের মধ্যে যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল, তা কাটিয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
এর সর্বশেষ লক্ষণ হলো—বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সম্ভাব্য সাক্ষাৎ। আজ শনিবার কিংবা আগামীকাল রোববারের মধ্যেই জার্মানির মিউনিখে চলমান নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ উপস্থিত থাকবেন। হাছান মাহমুদ মিউনিখে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
নির্বাচনের পর গত ৬ ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি পাঠান। তাতে বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবিক সমস্যাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘একযোগে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আন্তরিক ইচ্ছা’ ব্যক্ত করেছেন বাইডেন ।
চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্যকে সমর্থন এবং উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য যৌথ রূপকল্পে অংশীদারত্ব করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তবে বাংলাদেশের নির্বাচনের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর যে বিবৃতি দিয়েছিল, তার সুর ছিল বাইডেনের চিঠি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশে ‘নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি।’ শেখ হাসিনার অধীনে আওয়ামী লীগ আগের নির্বাচনে কারচুপি ও বিরোধীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জিতেছিল অভিযোগ করে প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নির্বাচন বয়কট করে।
সে সময় বাইডেন প্রশাসন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার অভিযোগ এনে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথাও বিবেচনা করেছিল। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাইডেন প্রশাসনের এই অবস্থান পরিবর্তনের মূল একটি কারণ, তাদের চাপাচাপি বাংলাদেশকে চীন-রাশিয়া বলয়ে ঠেলে দিতে পারে, যা আবার এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ভারতের পছন্দ নয়।
মার্কিন থিংকট্যাংক উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থান নিয়েছিল, তা বরং মস্কো ও বেইজিংকে সুবিধা দিচ্ছিল। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে বলে দেশ দুটির অভিযোগ ছিল। বাইডেন প্রশাসনের জন্য এমন পরিস্থিতি কখনোই কাম্য নয়।
কুগেলম্যানের ভাষ্য, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে শেখ হাসিনা বিরক্ত হলেও তিনি সব সময়ই ওয়াশিংটনের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চেয়েছেন। কারণ, বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্যের বড় আমদানিকারক যুক্তরাষ্ট্র।
যাই হোক, শেখ হাসিনা যে বাইডেনের চিঠির প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন, তার নমুনা হলো, জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত। রাশিয়ার আক্রমণের মুখে ইউক্রেনের আত্মরক্ষার বিষয়ে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রচেষ্টা।
একই সঙ্গে এই সাক্ষাৎকে বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্কে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে আনার প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখা যেতে পারে। গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে রাশিয়ার তিনটি যুদ্ধজাহাজ ভিড়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা ও যৌথ মহড়ায় অংশ নেওয়া। এ ছাড়া বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও নির্মাণ করছে রাশিয়া।
বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্ক মূল্যায়ন করতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় রাশিয়ার সহযোগিতার কথা ইঙ্গিত করে বলেন, ‘রাশিয়া আমাদের খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র এবং আমাদের এই বন্ধুত্বের শুরু স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় থেকেই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, শেখ হাসিনা ও জেলেনস্কির বৈঠকের ফলে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রভাবিত হবে না।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, একই সময়ে একাধিক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা তাঁর দক্ষতা দেখিয়েছেন এবং কৌশলগত সুবিধা হাসিলের ক্ষেত্র বাড়িয়ে নিয়েছেন।
ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘হাসিনার সম্পর্ক কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়। এর ঊর্ধ্বে গিয়ে দেখলে বোঝা যায়, অনেক আমেরিকান দেশই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।
শেখ হাসিনা পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আরও অনেক পদক্ষেপই নিয়েছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে যখন নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছিল, তখন তিনি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশে আনেন এবং এয়ারবাসের তৈরি বিমান কেনার কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তির বিষয়কে এগিয়ে নেন।
আওয়ামী লীগের থিংকট্যাংক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) আলী শাহ ফরহাদ বলেন, শেখ হাসিনা নিজেকে এমন এক শক্তির জায়গায় নিয়ে গেছেন, যেখানে তাঁর নানা ধরনের অংশীদার আছে। তাঁকে উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নেওয়ার জন্য এককভাবে কারও ওপর নির্ভরশীল হতে হয় না।
কৌশলগত বিশ্লেষক শাহাব এনাম খান বলেন, ‘যখন বিনিয়োগ ও উন্নয়নের প্রশ্ন ওঠে তখন বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বিপরীতে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ও অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ।’
শাহাব এনাম খান আরও বলেন, এই বিষয়টিই রাশিয়াকে তৃতীয় স্থানে ঠেলে দেয়। যেখানে বাংলাদেশে দেশটির অংশগ্রহণ কেবল জ্বালানি ও পারমাণবিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
তবে শেখ হাসিনা সরকারের একাধিক অংশীদার থাকার বিষয়টির সুবিধা যেমন আছে, তেমনি আছে অসুবিধাও। এর কারণে নানা ধরনের ভূ-রাজনৈতিক জটিলতার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের ওপর। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র বনাম চীন-রাশিয়া এবং ভারত বনাম চীন সম্পর্ক বাংলাদেশের জন্য প্রায়ই অস্বস্তির কারণ হয়। বিশ্বে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে ‘রাশিয়া ফ্যাক্টর’ শেখ হাসিনার বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে কুগেলম্যান মনে করেন।
কুগেলম্যানের ভাষ্য, ‘বাংলাদেশে (রাশিয়া) যা-ই করুক, তা ওয়াশিংটনের উদ্বেগ বাড়াবে এবং বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার লড়াই জোরদার হবে।’
অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক পুনর্গঠনের পথে রয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দক্ষিণ এশিয়ায় পরাশক্তিগুলোর প্রভাব বিস্তারের খেলায় দুই দেশের মধ্যে যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল, তা কাটিয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
এর সর্বশেষ লক্ষণ হলো—বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সম্ভাব্য সাক্ষাৎ। আজ শনিবার কিংবা আগামীকাল রোববারের মধ্যেই জার্মানির মিউনিখে চলমান নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ উপস্থিত থাকবেন। হাছান মাহমুদ মিউনিখে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
নির্বাচনের পর গত ৬ ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি পাঠান। তাতে বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবিক সমস্যাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘একযোগে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আন্তরিক ইচ্ছা’ ব্যক্ত করেছেন বাইডেন ।
চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্যকে সমর্থন এবং উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য যৌথ রূপকল্পে অংশীদারত্ব করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তবে বাংলাদেশের নির্বাচনের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর যে বিবৃতি দিয়েছিল, তার সুর ছিল বাইডেনের চিঠি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশে ‘নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি।’ শেখ হাসিনার অধীনে আওয়ামী লীগ আগের নির্বাচনে কারচুপি ও বিরোধীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জিতেছিল অভিযোগ করে প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নির্বাচন বয়কট করে।
সে সময় বাইডেন প্রশাসন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার অভিযোগ এনে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথাও বিবেচনা করেছিল। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাইডেন প্রশাসনের এই অবস্থান পরিবর্তনের মূল একটি কারণ, তাদের চাপাচাপি বাংলাদেশকে চীন-রাশিয়া বলয়ে ঠেলে দিতে পারে, যা আবার এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ভারতের পছন্দ নয়।
মার্কিন থিংকট্যাংক উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থান নিয়েছিল, তা বরং মস্কো ও বেইজিংকে সুবিধা দিচ্ছিল। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে বলে দেশ দুটির অভিযোগ ছিল। বাইডেন প্রশাসনের জন্য এমন পরিস্থিতি কখনোই কাম্য নয়।
কুগেলম্যানের ভাষ্য, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে শেখ হাসিনা বিরক্ত হলেও তিনি সব সময়ই ওয়াশিংটনের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চেয়েছেন। কারণ, বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্যের বড় আমদানিকারক যুক্তরাষ্ট্র।
যাই হোক, শেখ হাসিনা যে বাইডেনের চিঠির প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন, তার নমুনা হলো, জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত। রাশিয়ার আক্রমণের মুখে ইউক্রেনের আত্মরক্ষার বিষয়ে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রচেষ্টা।
একই সঙ্গে এই সাক্ষাৎকে বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্কে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে আনার প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখা যেতে পারে। গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে রাশিয়ার তিনটি যুদ্ধজাহাজ ভিড়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা ও যৌথ মহড়ায় অংশ নেওয়া। এ ছাড়া বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও নির্মাণ করছে রাশিয়া।
বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্ক মূল্যায়ন করতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় রাশিয়ার সহযোগিতার কথা ইঙ্গিত করে বলেন, ‘রাশিয়া আমাদের খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র এবং আমাদের এই বন্ধুত্বের শুরু স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় থেকেই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, শেখ হাসিনা ও জেলেনস্কির বৈঠকের ফলে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রভাবিত হবে না।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, একই সময়ে একাধিক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা তাঁর দক্ষতা দেখিয়েছেন এবং কৌশলগত সুবিধা হাসিলের ক্ষেত্র বাড়িয়ে নিয়েছেন।
ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘হাসিনার সম্পর্ক কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়। এর ঊর্ধ্বে গিয়ে দেখলে বোঝা যায়, অনেক আমেরিকান দেশই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।
শেখ হাসিনা পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আরও অনেক পদক্ষেপই নিয়েছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে যখন নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছিল, তখন তিনি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশে আনেন এবং এয়ারবাসের তৈরি বিমান কেনার কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তির বিষয়কে এগিয়ে নেন।
আওয়ামী লীগের থিংকট্যাংক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) আলী শাহ ফরহাদ বলেন, শেখ হাসিনা নিজেকে এমন এক শক্তির জায়গায় নিয়ে গেছেন, যেখানে তাঁর নানা ধরনের অংশীদার আছে। তাঁকে উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নেওয়ার জন্য এককভাবে কারও ওপর নির্ভরশীল হতে হয় না।
কৌশলগত বিশ্লেষক শাহাব এনাম খান বলেন, ‘যখন বিনিয়োগ ও উন্নয়নের প্রশ্ন ওঠে তখন বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বিপরীতে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ও অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ।’
শাহাব এনাম খান আরও বলেন, এই বিষয়টিই রাশিয়াকে তৃতীয় স্থানে ঠেলে দেয়। যেখানে বাংলাদেশে দেশটির অংশগ্রহণ কেবল জ্বালানি ও পারমাণবিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
তবে শেখ হাসিনা সরকারের একাধিক অংশীদার থাকার বিষয়টির সুবিধা যেমন আছে, তেমনি আছে অসুবিধাও। এর কারণে নানা ধরনের ভূ-রাজনৈতিক জটিলতার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের ওপর। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র বনাম চীন-রাশিয়া এবং ভারত বনাম চীন সম্পর্ক বাংলাদেশের জন্য প্রায়ই অস্বস্তির কারণ হয়। বিশ্বে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে ‘রাশিয়া ফ্যাক্টর’ শেখ হাসিনার বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে কুগেলম্যান মনে করেন।
কুগেলম্যানের ভাষ্য, ‘বাংলাদেশে (রাশিয়া) যা-ই করুক, তা ওয়াশিংটনের উদ্বেগ বাড়াবে এবং বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার লড়াই জোরদার হবে।’
অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
১ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৪ দিন আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৮ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
১২ দিন আগে