তামান্না-ই-জাহান
মহামারি করোনা ভারতের অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। দেশটির অর্থনীতির প্রায় সব খাত রেকর্ড পরিমাণ সংকুচিত হয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ, টিকে থাকার জন্য চলছে প্রতিনিয়ত লড়াই। কিন্তু বিস্ময়কর বিষয় হলো, ভয়াবহ এই সংকটের মধ্যেও ভারতীয়দের সোনা কেনার উৎসাহে এতটুকু ভাটা পড়েনি! বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা বেড়েছে।
রাজধানী দিল্লির সোনার দোকানিরা জানান, লকডাউন শেষ হওয়ার পর থেকে তাঁদের বেচাবিক্রি বেড়ে গেছে। লকডাউনের কারণে কয়েক মাস ঘরবন্দী থাকার পর বিশেষ করে বিয়ে ও দিওয়ালি উৎসব উপলক্ষে সোনার দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা।
স্বর্ণের সঙ্গে ভারতীয়দের ঐতিহ্যগত বিশেষ সম্পর্ক আছে। এ কারণেই দেশটিতে স্বর্ণের বাজার প্রসারিত হয়েছে। চীনের পর হলুদ ধাতুর জন্য বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার ভারত।
ভারতে বিশেষ করে বিয়েতে নববধূদের সোনার গয়না দেওয়ার রীতি অতি প্রাচীন। এ ছাড়া নির্দিষ্ট ধর্মীয় উৎসবে স্বর্ণ কেনাকে সে দেশে শুভ বলে মনে করা হয়। দিওয়ালির আগে ধনতেরস উৎসবে এক টুকরো সোনা কিনলেই লক্ষ্মী লাভ করা যায়—এমন বিশ্বাসের কারণে উৎসবকালে এই ধাতুর চাহিদা আরও বেড়ে যায়। চাহিদার বাড়বাড়ন্তে ভারতের বাজারে বেড়ে যায় স্বর্ণের দাম। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও সোনার দোকানে ভিড় কমে না।
সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘দুর্দিনের সহায়’ হিসেবেও দেশটিতে সোনার বেশ কদর রয়েছে। দিনদিন এই কদর বাড়ছে। গত দুই বছরে অনেক পরিবার অপ্রাতিষ্ঠানিক বাজারে স্বর্ণের অলংকার, বার ও কয়েন বিক্রি করে সংকটকালীন চাহিদা মিটিয়েছে। আবার অনেকে বিপদ সামাল দিতে স্বর্ণ গচ্ছিত রেখে ঋণ নিয়েছেন। স্থানীয় জরিপে দেখা গেছে, সোনার বিপরীতে ঋণ প্রদানকারী তিনটি বৃহত্তম আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ২০২০ সালে ৩২ শতাংশ, ২৫ শতাংশ ও ৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি লকডাউনের সময় যখন দেশটিতে দোকানপাট বন্ধ ছিল, তখনো মানুষ সোনা কেনাসহ এসংক্রান্ত অন্যান্য কাজে অনলাইন মাধ্যমকে বেছে নিয়েছিল।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্যমতে, করোনা মহামারি ও অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও ২০২১ সালে ভারতে সোনার চাহিদা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯৭ দশমিক ৩ টন, যার অর্থমূল্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৬০ কোটি রুপি। আর এই হিসাবই প্রমাণ করে যে, ভারতীয়রা এখনো এই হলুদ ধাতুতে আস্থা রাখছেন। আগের বছর দেশটিতে সোনার চাহিদা ছিল ৪৪৬ দশমিক ৪ টন, যার অর্থমূল্য ১ লাখ ৮৮ হাজার ২৮০ কোটি রুপি।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট শুরুর আগে থেকেই ভারতে সোনার দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। গত কয়েক মাসে দেশটিতে কয়েক দফায় সোনার দাম বেড়েছে। বর্তমানে ভারতীয় বাজারে মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে (এমসিএক্স) ১০ গ্রাম সোনার দাম ৫১ হাজার ৬০০ রুপি। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর ভারতের বাজারে সোনার দাম গত কয়েক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়। বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, অচিরেই দেশটিতে ১০ গ্রাম সোনার দাম ৫২ হাজার রুপি ছাড়িয়ে যেতে পারে। দাম বেড়েছে রুপারও। ভারতের বাজারে এক কিলোগ্রাম রুপার দাম ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার ৩০০ রুপি।
শুধু ভারতে নয়, বর্তমানে স্বর্ণের দাম আন্তর্জাতিক বাজারেও বাড়তি। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটময় পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সুরক্ষিত বিনিয়োগ হিসেবে সোনার দিকেই বেশি ঝুঁকছেন তাঁরা। বাজার বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত যত দিন থাকবে, তত দিন আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম বাড়তে থাকবে।
সোনাকে সাধারণত মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে রক্ষক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইউক্রেনে হামলার জেরে রাশিয়ার ওপর নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা স্বর্ণের দামকে প্রভাবিত করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারের দিকে তাকালে দেখা যায়, প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের জেরে সোনা-রুপার দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চলমান সংকটের ওপর বিনিয়োগকারীদের নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভারতে সব মূল্যবান ধাতুর মধ্যে স্বর্ণের চাহিদা সব সময়ই প্রথমে। তাই দাম বাড়ুক বা কমুক, ক্রেতারা ঠিকই হাজির হন সোনার দোকানে। বিশ্লেষকদের ধারণা, বৈশ্বিক করোনা মহামারি, অর্থনৈতিক সংকট কিংবা সংঘাতময় পরিস্থিতির মধ্যে সোনার দোকানে ক্রেতার ভিড় প্রমাণ করে যে, ভারতীয়দের সোনা কেনায় অনাগ্রহ হয়তো কখনোই হবে না!
তথ্যসূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, হিন্দুস্তান টাইমস ও দ্য ইকোনমিক টাইমস
মহামারি করোনা ভারতের অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। দেশটির অর্থনীতির প্রায় সব খাত রেকর্ড পরিমাণ সংকুচিত হয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ, টিকে থাকার জন্য চলছে প্রতিনিয়ত লড়াই। কিন্তু বিস্ময়কর বিষয় হলো, ভয়াবহ এই সংকটের মধ্যেও ভারতীয়দের সোনা কেনার উৎসাহে এতটুকু ভাটা পড়েনি! বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা বেড়েছে।
রাজধানী দিল্লির সোনার দোকানিরা জানান, লকডাউন শেষ হওয়ার পর থেকে তাঁদের বেচাবিক্রি বেড়ে গেছে। লকডাউনের কারণে কয়েক মাস ঘরবন্দী থাকার পর বিশেষ করে বিয়ে ও দিওয়ালি উৎসব উপলক্ষে সোনার দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা।
স্বর্ণের সঙ্গে ভারতীয়দের ঐতিহ্যগত বিশেষ সম্পর্ক আছে। এ কারণেই দেশটিতে স্বর্ণের বাজার প্রসারিত হয়েছে। চীনের পর হলুদ ধাতুর জন্য বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার ভারত।
ভারতে বিশেষ করে বিয়েতে নববধূদের সোনার গয়না দেওয়ার রীতি অতি প্রাচীন। এ ছাড়া নির্দিষ্ট ধর্মীয় উৎসবে স্বর্ণ কেনাকে সে দেশে শুভ বলে মনে করা হয়। দিওয়ালির আগে ধনতেরস উৎসবে এক টুকরো সোনা কিনলেই লক্ষ্মী লাভ করা যায়—এমন বিশ্বাসের কারণে উৎসবকালে এই ধাতুর চাহিদা আরও বেড়ে যায়। চাহিদার বাড়বাড়ন্তে ভারতের বাজারে বেড়ে যায় স্বর্ণের দাম। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও সোনার দোকানে ভিড় কমে না।
সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘দুর্দিনের সহায়’ হিসেবেও দেশটিতে সোনার বেশ কদর রয়েছে। দিনদিন এই কদর বাড়ছে। গত দুই বছরে অনেক পরিবার অপ্রাতিষ্ঠানিক বাজারে স্বর্ণের অলংকার, বার ও কয়েন বিক্রি করে সংকটকালীন চাহিদা মিটিয়েছে। আবার অনেকে বিপদ সামাল দিতে স্বর্ণ গচ্ছিত রেখে ঋণ নিয়েছেন। স্থানীয় জরিপে দেখা গেছে, সোনার বিপরীতে ঋণ প্রদানকারী তিনটি বৃহত্তম আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ২০২০ সালে ৩২ শতাংশ, ২৫ শতাংশ ও ৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি লকডাউনের সময় যখন দেশটিতে দোকানপাট বন্ধ ছিল, তখনো মানুষ সোনা কেনাসহ এসংক্রান্ত অন্যান্য কাজে অনলাইন মাধ্যমকে বেছে নিয়েছিল।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্যমতে, করোনা মহামারি ও অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও ২০২১ সালে ভারতে সোনার চাহিদা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯৭ দশমিক ৩ টন, যার অর্থমূল্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৬০ কোটি রুপি। আর এই হিসাবই প্রমাণ করে যে, ভারতীয়রা এখনো এই হলুদ ধাতুতে আস্থা রাখছেন। আগের বছর দেশটিতে সোনার চাহিদা ছিল ৪৪৬ দশমিক ৪ টন, যার অর্থমূল্য ১ লাখ ৮৮ হাজার ২৮০ কোটি রুপি।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট শুরুর আগে থেকেই ভারতে সোনার দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। গত কয়েক মাসে দেশটিতে কয়েক দফায় সোনার দাম বেড়েছে। বর্তমানে ভারতীয় বাজারে মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে (এমসিএক্স) ১০ গ্রাম সোনার দাম ৫১ হাজার ৬০০ রুপি। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর ভারতের বাজারে সোনার দাম গত কয়েক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়। বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, অচিরেই দেশটিতে ১০ গ্রাম সোনার দাম ৫২ হাজার রুপি ছাড়িয়ে যেতে পারে। দাম বেড়েছে রুপারও। ভারতের বাজারে এক কিলোগ্রাম রুপার দাম ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার ৩০০ রুপি।
শুধু ভারতে নয়, বর্তমানে স্বর্ণের দাম আন্তর্জাতিক বাজারেও বাড়তি। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটময় পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সুরক্ষিত বিনিয়োগ হিসেবে সোনার দিকেই বেশি ঝুঁকছেন তাঁরা। বাজার বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত যত দিন থাকবে, তত দিন আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম বাড়তে থাকবে।
সোনাকে সাধারণত মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে রক্ষক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইউক্রেনে হামলার জেরে রাশিয়ার ওপর নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা স্বর্ণের দামকে প্রভাবিত করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারের দিকে তাকালে দেখা যায়, প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের জেরে সোনা-রুপার দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চলমান সংকটের ওপর বিনিয়োগকারীদের নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভারতে সব মূল্যবান ধাতুর মধ্যে স্বর্ণের চাহিদা সব সময়ই প্রথমে। তাই দাম বাড়ুক বা কমুক, ক্রেতারা ঠিকই হাজির হন সোনার দোকানে। বিশ্লেষকদের ধারণা, বৈশ্বিক করোনা মহামারি, অর্থনৈতিক সংকট কিংবা সংঘাতময় পরিস্থিতির মধ্যে সোনার দোকানে ক্রেতার ভিড় প্রমাণ করে যে, ভারতীয়দের সোনা কেনায় অনাগ্রহ হয়তো কখনোই হবে না!
তথ্যসূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, হিন্দুস্তান টাইমস ও দ্য ইকোনমিক টাইমস
বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো ছোট দেশগুলোকে অর্থনৈতিক সমন্বয়ে জোর দিতে দেখা যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সমন্বয় বলতে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনীতিতে পরিবর্তন বা সমন্বয় আনার চেষ্টাকে বোঝানো হচ্ছে।
১৭ ঘণ্টা আগেআরব দেশগুলোর ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে আপাত-নীরবতা একটি জটিল এবং বহুমাত্রিক বিষয়। এর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, কৌশলগত এবং ঐতিহাসিক কারণ। স্বাধীন ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের দাবি এবং বাসিন্দাদের ওপর এই দীর্ঘ নিপীড়ন নিয়ে যে আরব দেশগুলো কিছুই করছে না, বা নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকছে—এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়।
১ দিন আগেপ্রবাদ আছে, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। চলুন দেখি, এই দুই রাজার যুদ্ধে কার প্রাণ যায়! ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজ দেশে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। চীন থেকে আমদানি করা সব পণ্যে ইতিমধ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক আর
২ দিন আগেদখলকৃত অর্থনীতিতে প্রতিভা এবং সাফল্যের মধ্যকার সম্পর্ক ছিন্ন হয়। রাজনৈতিক যোগাযোগ নেই এমন দক্ষ কর্মীরা দেশ ছেড়ে চলে যান এবং সক্ষম সংস্থাগুলো দেউলিয়া হয়ে যায়। অন্যদিকে, ভালো যোগাযোগ আছে এমন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানগুলো উদ্ভাবন বা মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করা ছাড়াই (বা কখনো কখনো পণ্য সরবরাহ না করেও)
৩ দিন আগে