ইয়াসিন আরাফাত
বিশ শতকে আফগানিস্তান যুদ্ধে হেরেছে রাশিয়া ও ব্রিটেন। একুশ শতকে যুক্তরাষ্ট্রও হেরেছে আফগানিস্তানে গিয়ে। দেশটির নিয়ন্ত্রণ এরই মধ্যে নিয়েছে সেখানকার এক সময়ের বিদ্রোহীগোষ্ঠী তালেবান। আফগানিস্তানের নতুন এই খেলায় নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে মরিয়ে হয়ে উঠেছে চীন, পাকিস্তান ও ভারত।
অভিযোগ রয়েছে, পাকিস্তানের আশীর্বাদে সহজেই কাবুলের দখল নিয়েছে তালেবান। যদিও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তালেবান কাবুল দখলের পরই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, আফগানরা দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙেছে। আর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবানের নতুন সরকার গঠনের আলোচনায় পাকিস্তানের কর্মকর্তারাও জড়িত রয়েছেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ইসলামাবাদ চায় আফগানিস্তানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হোক, যা এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। কিন্তু এর জন্য আফগানদেরই ভূমিকা রাখতে হবে।
চীনের এর আগে তালেবানের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তবে দেশটির সঙ্গে পাকিস্তানের গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ আফগানিস্তানে চোখ পড়েছে চীনের। দেশটিতে লিথিয়ামের বড় মজুত রয়েছে। এটি ইলেকট্রিক যান থেকে শুরু করে হালের ব্যাটারিসহ বহু প্রযুক্তিপণ্য তৈরিতে আবশ্যিক একটি পদার্থ। এ ছাড়া কারাকোরাম পর্বতমালা দিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের যে রাস্তা গেছে, সেটিরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় চীন সরকার।
অন্যদিকে রয়েছে ভারত, যারা পাকিস্তানের পুরোনো শত্রু। গত বছর থেকেই সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে উত্তেজনা চলছে ভারতের। আফগানিস্তানের সাবেক সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক ছিল ভারত। এ অবস্থায় পাকিস্তান ও চীন তালেবানকে সমর্থন করায় নয়া দিল্লির আতঙ্ক দিন দিন বাড়ছে।
চীন বলছে, পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশের ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টের (ইটিআইএম) জঙ্গিদের ঠেকাতেই তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক চায় তারা। চীন চায় না ইটিআইএম তালেবানের সঙ্গে যোগসাজশ করে কোনো হামলা চালিয়ে তাদের ক্ষতি করুক।
এ নিয়ে চীনের সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া স্টাডিজের অধ্যাপক ঝ্যাং লি রয়টার্সকে বলেন, পাকিস্তান হয়তো ভারতের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানকে কাজে লাগানোর কথা ভাবছে। কিন্তু চীনের ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন নয়। চীন প্রাথমিক চাওয়া হচ্ছে তালেবান একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মধ্যপন্থী শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলুক, যাতে জিনজিয়াং ও পুরো অঞ্চলটিতে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে না পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ইটিআইএম সংগঠনটিই চীনে উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বিরোধিতা করে আসছে। যদিও চীন উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে।
নয়া দিল্লির সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের কৌশলগত অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ব্রাহমা চেল্লানি বলেন, আফগানিস্তানকে শাসন করতে প্রয়োজনীয় দুটি জিনিসের জন্য চীনের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে তালেবানকে: কূটনৈতিক স্বীকৃতি এবং প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও অর্থনৈতিক সহায়তা। সুবিধাবাদী চীন খনিজ সমৃদ্ধ আফগানিস্তানে কৌশলগত প্রবেশ এবং পাকিস্তান, ইরান ও মধ্য এশিয়ায় তার অনুপ্রবেশকে আরও পোক্ত করার জন্য এই সুযোগকে কাজে লাগাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইথাকা কলেজের শিক্ষক রাজা আহমাদ রুমির মতে, তালেবান ক্ষমতায় আসায় ভারত অস্বস্তিতে পড়েছে। আর এটি দেখে উচ্ছ্বসিত পাকিস্তানিরা। এই দুই দেশ ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর এ পর্যন্ত তিনটি যুদ্ধে জড়িয়েছে। রুমি বলেন, তালেবান কাবুল দখলের পর পাকিস্তানের টিভি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল। কারণ, সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির ভারতপ্রীতিকে হুমকি হিসেবে দেখছিল পাকিস্তান।
১৯৯৬ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকার সময় ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল না তালেবানের। ১৯৯৯ সালে ভারতের একটি বিমান হাইজ্যাক করা হয়েছিল। পরে সেটি আফগানিস্তানের কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় জিম্মি হওয়া যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য ভারত তিন পাকিস্তানি জঙ্গিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। তখন তালেবান ছিনতাইকারীদের আফগানিস্তানে বিমান নামানোর অনুমতি দিয়েছিল। ভারত থেকে ছাড়া পাওয়া পাকিস্তানি জঙ্গিদের পাকিস্তান যেতেও সহায়তা করেছিল তালেবান। ফলে আফগানিস্তানে ভারতকে দীর্ঘ খেলাই খেলতে হবে। দেশটির সঙ্গে ভারতের সীমানা না থাকলেও সেখানে ভারতের স্বার্থ জড়িত। আফগানিস্তানে নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত কোনো রাখঢাক না রেখেই এ নিয়ে কথা বলেছেন সম্প্রতি।
নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের শান্তি চুক্তির পরই আফগানিস্তানের বর্তমান শাসক দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল ভারতীয় কূটনীতিকেরা। ভারত সবচেয়ে বড় বিপাকে পড়েছে তাদের আলোচনার একমুখী প্রবণতার কারণে। তারা কাবুলের আশরাফ গনি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। আশরাফ গনি সরকারকে দেওয়া ভারত সরকারের সরাসরি সমর্থন নিয়ে নিজ দেশেও তারা বিতর্কের মুখে পড়েছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র নিজেই তালেবানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। এ ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান ছিল কূটনৈতিক বিবেচনায় ত্রুটিপূর্ণ। তবে এখনো সময় আছে।
ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতির দেশ। আর এটি তালেবানকে আকৃষ্ট করতে পারে। চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে ভারতের দিকে ঝুঁকতে পারে তালেবান। আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ভারতের অর্থায়ন রয়েছে। কাবুলে যে পার্লামেন্ট ভবন রয়েছে সেটিও তৈরি করে দিয়েছে ভারত সরকার। তবে তালেবান ক্ষমতায় এলে এই পার্লামেন্ট ভবন কাজে আসবে কি-না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, নামমাত্র গণতন্ত্র চললে এই পার্লামেন্ট ভবনের তেমন কোনো দরকার পড়বে না।
রয়টার্সের সাবেক সাংবাদিক মাইরা ম্যাকডোনাল্ডের মতে, তালেবান ক্ষমতায় গেলেও নয়াদিল্লির খেলা শেষ হয়ে যায়নি। তালেবানের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, তারা আর আগের মতো নেই। আফগানিস্তানে ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদকে বিস্ফোরিত হতে দেওয়ার বিষয়ে এবার সবাই অনেক বেশি সতর্ক। এ ছাড়া অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তানের চেয়ে বেশি শক্তিশালী ভারত। আর তালেবানও তাদের হিসাব থেকে কাউকে বাদ দিচ্ছে না, অন্তত এখন। তারা এরই মধ্যে ইরান, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পাশাপাশি আঞ্চলিক দেশগুলোর কাছ থেকে সহায়তা চায় বলে জানিয়ে রেখেছে। ইরান থেকে জ্বালানি তেলের সরবরাহের মধ্য দিয়ে সেই সহযোগিতা এরই মধ্যে শুরুও হয়েছে। প্রকাশ্য ঘোষণার মধ্য দিয়েই তারা ইরান থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করছে। আর এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। এখন অন্যদের ভূমিকার দেখার অপেক্ষা।
বিশ শতকে আফগানিস্তান যুদ্ধে হেরেছে রাশিয়া ও ব্রিটেন। একুশ শতকে যুক্তরাষ্ট্রও হেরেছে আফগানিস্তানে গিয়ে। দেশটির নিয়ন্ত্রণ এরই মধ্যে নিয়েছে সেখানকার এক সময়ের বিদ্রোহীগোষ্ঠী তালেবান। আফগানিস্তানের নতুন এই খেলায় নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে মরিয়ে হয়ে উঠেছে চীন, পাকিস্তান ও ভারত।
অভিযোগ রয়েছে, পাকিস্তানের আশীর্বাদে সহজেই কাবুলের দখল নিয়েছে তালেবান। যদিও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তালেবান কাবুল দখলের পরই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, আফগানরা দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙেছে। আর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবানের নতুন সরকার গঠনের আলোচনায় পাকিস্তানের কর্মকর্তারাও জড়িত রয়েছেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ইসলামাবাদ চায় আফগানিস্তানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হোক, যা এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। কিন্তু এর জন্য আফগানদেরই ভূমিকা রাখতে হবে।
চীনের এর আগে তালেবানের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তবে দেশটির সঙ্গে পাকিস্তানের গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ আফগানিস্তানে চোখ পড়েছে চীনের। দেশটিতে লিথিয়ামের বড় মজুত রয়েছে। এটি ইলেকট্রিক যান থেকে শুরু করে হালের ব্যাটারিসহ বহু প্রযুক্তিপণ্য তৈরিতে আবশ্যিক একটি পদার্থ। এ ছাড়া কারাকোরাম পর্বতমালা দিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের যে রাস্তা গেছে, সেটিরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় চীন সরকার।
অন্যদিকে রয়েছে ভারত, যারা পাকিস্তানের পুরোনো শত্রু। গত বছর থেকেই সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে উত্তেজনা চলছে ভারতের। আফগানিস্তানের সাবেক সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক ছিল ভারত। এ অবস্থায় পাকিস্তান ও চীন তালেবানকে সমর্থন করায় নয়া দিল্লির আতঙ্ক দিন দিন বাড়ছে।
চীন বলছে, পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশের ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টের (ইটিআইএম) জঙ্গিদের ঠেকাতেই তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক চায় তারা। চীন চায় না ইটিআইএম তালেবানের সঙ্গে যোগসাজশ করে কোনো হামলা চালিয়ে তাদের ক্ষতি করুক।
এ নিয়ে চীনের সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া স্টাডিজের অধ্যাপক ঝ্যাং লি রয়টার্সকে বলেন, পাকিস্তান হয়তো ভারতের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানকে কাজে লাগানোর কথা ভাবছে। কিন্তু চীনের ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন নয়। চীন প্রাথমিক চাওয়া হচ্ছে তালেবান একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মধ্যপন্থী শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলুক, যাতে জিনজিয়াং ও পুরো অঞ্চলটিতে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে না পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ইটিআইএম সংগঠনটিই চীনে উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বিরোধিতা করে আসছে। যদিও চীন উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে।
নয়া দিল্লির সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের কৌশলগত অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ব্রাহমা চেল্লানি বলেন, আফগানিস্তানকে শাসন করতে প্রয়োজনীয় দুটি জিনিসের জন্য চীনের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে তালেবানকে: কূটনৈতিক স্বীকৃতি এবং প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও অর্থনৈতিক সহায়তা। সুবিধাবাদী চীন খনিজ সমৃদ্ধ আফগানিস্তানে কৌশলগত প্রবেশ এবং পাকিস্তান, ইরান ও মধ্য এশিয়ায় তার অনুপ্রবেশকে আরও পোক্ত করার জন্য এই সুযোগকে কাজে লাগাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইথাকা কলেজের শিক্ষক রাজা আহমাদ রুমির মতে, তালেবান ক্ষমতায় আসায় ভারত অস্বস্তিতে পড়েছে। আর এটি দেখে উচ্ছ্বসিত পাকিস্তানিরা। এই দুই দেশ ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর এ পর্যন্ত তিনটি যুদ্ধে জড়িয়েছে। রুমি বলেন, তালেবান কাবুল দখলের পর পাকিস্তানের টিভি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল। কারণ, সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির ভারতপ্রীতিকে হুমকি হিসেবে দেখছিল পাকিস্তান।
১৯৯৬ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকার সময় ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল না তালেবানের। ১৯৯৯ সালে ভারতের একটি বিমান হাইজ্যাক করা হয়েছিল। পরে সেটি আফগানিস্তানের কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় জিম্মি হওয়া যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য ভারত তিন পাকিস্তানি জঙ্গিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। তখন তালেবান ছিনতাইকারীদের আফগানিস্তানে বিমান নামানোর অনুমতি দিয়েছিল। ভারত থেকে ছাড়া পাওয়া পাকিস্তানি জঙ্গিদের পাকিস্তান যেতেও সহায়তা করেছিল তালেবান। ফলে আফগানিস্তানে ভারতকে দীর্ঘ খেলাই খেলতে হবে। দেশটির সঙ্গে ভারতের সীমানা না থাকলেও সেখানে ভারতের স্বার্থ জড়িত। আফগানিস্তানে নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত কোনো রাখঢাক না রেখেই এ নিয়ে কথা বলেছেন সম্প্রতি।
নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের শান্তি চুক্তির পরই আফগানিস্তানের বর্তমান শাসক দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল ভারতীয় কূটনীতিকেরা। ভারত সবচেয়ে বড় বিপাকে পড়েছে তাদের আলোচনার একমুখী প্রবণতার কারণে। তারা কাবুলের আশরাফ গনি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। আশরাফ গনি সরকারকে দেওয়া ভারত সরকারের সরাসরি সমর্থন নিয়ে নিজ দেশেও তারা বিতর্কের মুখে পড়েছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র নিজেই তালেবানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। এ ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান ছিল কূটনৈতিক বিবেচনায় ত্রুটিপূর্ণ। তবে এখনো সময় আছে।
ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতির দেশ। আর এটি তালেবানকে আকৃষ্ট করতে পারে। চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে ভারতের দিকে ঝুঁকতে পারে তালেবান। আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ভারতের অর্থায়ন রয়েছে। কাবুলে যে পার্লামেন্ট ভবন রয়েছে সেটিও তৈরি করে দিয়েছে ভারত সরকার। তবে তালেবান ক্ষমতায় এলে এই পার্লামেন্ট ভবন কাজে আসবে কি-না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, নামমাত্র গণতন্ত্র চললে এই পার্লামেন্ট ভবনের তেমন কোনো দরকার পড়বে না।
রয়টার্সের সাবেক সাংবাদিক মাইরা ম্যাকডোনাল্ডের মতে, তালেবান ক্ষমতায় গেলেও নয়াদিল্লির খেলা শেষ হয়ে যায়নি। তালেবানের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, তারা আর আগের মতো নেই। আফগানিস্তানে ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদকে বিস্ফোরিত হতে দেওয়ার বিষয়ে এবার সবাই অনেক বেশি সতর্ক। এ ছাড়া অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তানের চেয়ে বেশি শক্তিশালী ভারত। আর তালেবানও তাদের হিসাব থেকে কাউকে বাদ দিচ্ছে না, অন্তত এখন। তারা এরই মধ্যে ইরান, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পাশাপাশি আঞ্চলিক দেশগুলোর কাছ থেকে সহায়তা চায় বলে জানিয়ে রেখেছে। ইরান থেকে জ্বালানি তেলের সরবরাহের মধ্য দিয়ে সেই সহযোগিতা এরই মধ্যে শুরুও হয়েছে। প্রকাশ্য ঘোষণার মধ্য দিয়েই তারা ইরান থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করছে। আর এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। এখন অন্যদের ভূমিকার দেখার অপেক্ষা।
ট্রাম্প ফিরে আসায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে পারে, সামান্য কিছু পরিবর্তন নিয়ে। ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পেছনের সারিতে থাকলেও বাংলাদেশ,
৫ ঘণ্টা আগেড. ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন পুরো জাতি তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবে তাঁকে পরিষ্কারভাবে এই পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে যে, তিনি কীভাবে দেশ শাসন করবেন এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
১ দিন আগেসম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
২ দিন আগেএকটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
২ দিন আগে