সানজিদা সামরিন
প্রায় দেড় বছরের মতো করোনা মহামারির কারণে স্কুলগুলো বন্ধ রয়েছে। গোটা বিশ্বেই স্কুলগামী শিশুরা ঘরবন্দী সময় কাটিয়েছে, কাটাচ্ছেও। এখন অনেকটা সয়ে এলেও শুরুর দিকে স্কুলের মাঠ, বন্ধু আর ক্লাসরুমকে ভেবেই কত খারাপ লাগা পার করেছে শিশুরা। বলা বাহুল্য, পড়াশোনা ছাড়াও শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার জন্য প্রাথমিক স্কুলগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বাচ্চাদের বিমর্ষ মুখের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। করোনাকালে বাংলাদেশের প্রায় সব জাতীয় দৈনিকে শিশুদের ভিডিও গেমসে আসক্তি নিয়ে কম–বেশি খবর প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিও গেমস আসক্তি থেকে শিশুদের মুক্ত করা নিয়েও নানা টিপস প্রকাশিত হচ্ছে নিয়মিত। এই আসক্তির অন্যতম কারণ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার মধ্যে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্তের পর ওই বছরের ১৬ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও তা শিশুদের ঘরবন্দী দশা থেকে মুক্তি দিতে পারছে না। ফলে তীব্র মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে শিশুরা। এর মাত্রা একেক দেশে একেক রকম হয়তো, কিন্তু চিত্রটা কম–বেশি একই।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এই কথাগুলো তো খুবই সত্য। সবকিছুই তো বন্ধ আছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় ধকলটা যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের ওপর দিয়ে। তারা বন্দী হয়ে আছে। কোনো বিনোদন নেই। এমন বন্দী দশায় তাদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে।’
এবার একটু গোটা বিশ্বের দিকে নজর বোলানো যাক। নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামের রাস্তায় শিশুরা যেমন স্কুটারে পা রেখে ঘুরে ঘুরে করোনাকালীন ছুটি কাটাচ্ছে। অন্যদিকে স্পেনের মাদ্রিদে তাদেরই সমবয়সীরা ঘরে মুখ গুঁজে পড়ে আছে ভিডিও গেমসে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর তথ্যমতে, করোনাকালে বিশ্বের ১৩৮টি দেশ কোনো না কোনো মেয়াদে জাতীয়ভাবে স্কুল বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছে। বাকি বহু দেশ এলাকা ধরে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও নিচ্ছে। করোনার কারণে বিশ্বের দেড় শ কোটি স্কুল শিক্ষার্থীর তিন–চতুর্থাংশকেই একটা লম্বা সময় ক্লাসরুম থেকে দূরে থাকতে হয়েছে।
বিভিন্ন দেশ টিকা আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে ধীরে ধীরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে। কিন্তু এখনো বাংলাদেশসহ ১৯টি দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। গতকাল সোমবার এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইউনিসেফ ও ইউনেসকো। করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার ১৮ মাস পেরিয়ে গেছে। এ দীর্ঘ সময়ে লাখ লাখ শিশুর পড়াশোনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থা দুটি। তারা বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত ব্যবস্থা হিসেবে নেওয়ার কথা থাকলেও অনেক দেশের সরকার এটি প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে নিয়েছে।
বাংলাদেশও পড়ে এই অনেক দেশের তালিকায়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে কয়েকবার ঘোষণা দেওয়া হলেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় পিছু হটেছে সরকার। সর্বশেষ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পরই খুলে দেওয়া হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে তেমন কোনো উদ্যোগ আগে থেকে না থাকা ও অব্যবস্থাপনাকে কারণ হিসেবে দেখছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘এমনটা হওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে অব্যবস্থাপনা। টিকা ব্যবস্থাপনা বেশ দুর্বল। এটা খুবই দুঃখজনক। টিকার ক্ষেত্রে একটি কোম্পানির ওপর নির্ভরশীলতা এই অবস্থার সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারে অনেক দেরিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শিক্ষা ক্ষেত্রটিকেই কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ভীষণ অমনোযোগ ও উদাসীনতা আমরা দেখেছি। শিক্ষা তো কারখানার চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু কারখানা চালু রাখার বিষয়ে যে উদ্যোগ আমরা দেখেছি, তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। চালু রাখার চেষ্টা করা হয়নি। বন্ধ করার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আবার কীভাবে খুলে দেওয়া যায়, তার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনাও নেই।’
উন্নত বিশ্বের চিত্রটি কিন্তু আলাদা। উন্নত দেশগুলোয় এখনো স্কুল পুরোপুরি বন্ধের উদাহরণ বেশি নয়। তবে অনলাইন ক্লাস চললেও ক্ষতি এড়ানো যায়নি। এই স্কুল বন্ধের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্কুলে পড়া ছোট শিশুরা। কারণ, ঘরে বসে হয়তো অঙ্কের মতো বিষয়গুলো শেখানো সম্ভব। কিন্তু সামাজিক ও মানসিক দক্ষতা, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, অধ্যবসায় এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণ, যা শিশুরা স্কুল থেকে শেখে, তা কেবল ঘরে বসে শেখা সম্ভব নয়। অন্যদিকে এ সময়টায় টিনএজাররা স্ক্রিন অ্যাডিকটেড হয়ে পড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, স্কুলে যেতে না পারার এই ক্ষতিকর প্রভাবগুলো সারা জীবন স্থায়ী হতে পারে। এ কারণে ২০০৩ সালে সিঙ্গাপুর জুন মাসের এক মাস ছুটি দুই সপ্তাহে কমিয়ে আনে, যাতে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটোরি সিনড্রোমের (সার্স) কারণে সৃষ্ট মহামারির সময়ে স্কুল বন্ধ থাকার ক্ষতি পুষিয়ে আনা যায়। স্কুল বন্ধ থাকা মানে শিশুদের সম্ভাবনাকেও স্তিমিত করা।
ইকোনমিস্ট জানাচ্ছে, পরিবেশগত কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় গ্রেডের (সাত বছর বয়সী) শিক্ষার্থীরা সরকারি পরীক্ষায় অপেক্ষাকৃত কম ভালো করেছিল। ১৯৯০ সালে দুই মাসব্যাপী শিক্ষকদের ধর্মঘট থাকায় ফরাসিভাষী বেলজিয়ান শিক্ষার্থীদের একই ক্লাসে দ্বিতীয়বারের মতো পড়তে হয়েছিল। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের শিশুরা সারা বছর বিভিন্ন বিষয়ে যে দক্ষতা অর্জন করে, গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে তা ২০ থেকে ৫০ শতাংশ হারিয়ে ফেলে।
করোনাকালে স্কুলের দরজা বন্ধ থাকলেও পড়াশোনা পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে—এ কথা অবশ্য বলা যাবে না। বলা যায়, বিশ্বের প্রতি ১০টি সমৃদ্ধ দেশের মধ্যে প্রায় নয়টি দেশ অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়েছে। এদিকে দরিদ্র দেশগুলোর মাত্র এক–চতুর্থাংশ এ সুবিধা দিতে পারছে। দরিদ্র দেশগুলোয় সবখানে শিশুদের অনলাইনে স্কুলের পড়াশোনার জন্য ইন্টারনেট সংযোগ ও ডিভাইস পাওয়া কষ্টসাধ্য বিষয়। আবার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত শিশুদের বাবা–মাও এত শিক্ষিত নয় যে, তারা সন্তানদের পড়াশোনায় সাহায্য করতে পারবে।
তবে অনলাইনে স্কুলের পড়াশোনা এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও কিছু অসুবিধা রয়েছে। মার্কিন স্কুলগুলোর দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, লকডাউনের প্রথম কয়েক সপ্তাহে এক–তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে লগ ইন–ই করেনি। এলিট স্কুলগুলোয় অবশ্য পুরোপুরি উপস্থিতি ছিল। শিক্ষার্থীদের যাতে পূর্ণাঙ্গ সময় দেওয়া যায়, সে জন্য তারা বাড়তি শিক্ষকও নিয়োগ দিয়েছে।
কিন্তু এই অনলাইন ক্লাস বা বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোটা করোনাকালীন বাস্তবতার একটি দিক। অন্য দিকটি হচ্ছে অর্থনৈতিক সংকট। করোনাকালে বহু মানুষ চাকরি হারিয়েছে। স্কুল বন্ধ হওয়ায় বিশেষত বেসরকারি স্কুলগুলোর শিক্ষকদের অনেকেই পেশা বদল পর্যন্ত করেছেন। গত দেড় বছরে বাংলাদেশে বহু শিক্ষকের পেশা বদলের খবর পত্রিকায় এসেছে। পরিবারের এমন আর্থিক সংকটে শিশু–কিশোরদের অনেককেই উপার্জনের পথে নামতে হয়েছে।
রয়েছে অন্য বাস্তবতাও। স্কুল বন্ধ থাকা মানে প্রতি দুপুরে স্কুল থেকে দেওয়া খাবারও বন্ধ। এর প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেই ভয়াবহ। বিখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বসের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি পাঁচটি শিশুর একটি দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করে। তাদের এই একবেলা খাবারের ব্যবস্থা বন্ধ হওয়াটা অনেক বড় ব্যাপার। তারা বলছে, বৈশ্বিক এ মহামারির কারণে বিশ্বে দরিদ্র শিশুর সংখ্যা আরও ১৪ কোটি ২০ লাখ বাড়বে। এ নিয়ে কোনো সুচিন্তিত পরিকল্পনা না থাকলে গোটা বিশ্বে দরিদ্র শিশুর সংখ্যা ৭২ কোটি ৫০ লাখে গিয়ে পৌঁছাবে বলেও পূর্বাভাস করা হয়।
এ বিষয়ে কলোরাডোর ডেনভারের কিপ হাইস্কুলের শিক্ষক অ্যাশলে ফারিস ইকোনমিস্টকে বলেন, স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিউটার বা ওয়াইফাই সংযোগের ব্যবস্থা করা বা না করাটা এই গোটা দৃশ্যের একটি ক্ষুদ্র অংশ। বড় বিষয় হচ্ছে, এ সময়ে অনেক বাবা–মা কাজ হারিয়েছেন। ফলে অনেক ছেলেমেয়েই কাজ করতে শুরু করেছে। অন্যদিকে বাকিরা ছোট ভাইবোনদের দেখাশোনা করে কাটিয়েছে।
এ তথ্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোয় এর প্রভাব কতটা। ফলে শুধু মানসিক স্বাস্থ্য নয়, স্কুল বন্ধ থাকার সঙ্গে শিশুর শারীরিক স্বাস্থ্য, বিশেষত পুষ্টির বিষয়টি জড়িত। এটি আরও বড় আকার ধারণ করেছে করোনাকালে বহু মানুষ কাজ হারানোর কারণে, যার একটি বড় অংশই সমাজের দরিদ্র স্তরের।
শেষ পর্যন্ত বলতেই হয়, শিশুদের পড়াশোনা করা নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হলো স্কুলের দরজা আবার খোলা। বিশ্বের বহু দেশই বিষয়টি অনুধাবন করে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যুক্তিটি হচ্ছে—করোনাভাইরাসে শিশুদের আক্রান্ত হতে খুব কম দেখা গেছে। আবার স্কুল বন্ধের কারণে সব বিবেচনাতেই শিশুদের দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির আশঙ্কা প্রবল।
এই ক্ষতি এড়াতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য, চীনসহ বহু দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিয়ে এগিয়েছে। তার ফলও মিলেছে। তবে ভয়ও আছে। এ ভয়ের কারণে অনেক দেশ এখনই এমন পদক্ষেপ নিতে রাজি নয়। এ তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে পরিবারের ভূমিকা অনেক বড়। কিন্তু বাংলাদেশের পরিবারগুলো কি এমন পরিস্থিতিতে শিশু–কিশোরদের যথাযথ যত্ন নিতে প্রস্তুত।
এ বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলছেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে তো পরিবারই ভরসা। তারাই তো এই বন্দী শিশু–কিশোরদের সঙ্গে আছে। কিন্তু আমাদের পরিবারগুলোও তো এ বিষয়ে তেমন সচেতন নয়। এটা আসলে শুধু এ জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখলে হবে না। এটা তো গোটা সমাজ ব্যবস্থার সংকট। এই সচেতনতাটা আমাদের সমাজ ব্যবস্থার ভেতরেই নেই। এ কারণে কিশোর অপরাধ বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে সচেতনতা তৈরির কোনো বিকল্প নেই।’
ঠিক তাই। করোনা মহামারি আমাদের এক নতুন পরিস্থিতির মধ্যে এনে দাঁড় করিয়েছে। এত দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার অভিজ্ঞতা না আছে শিক্ষার্থীদের, না আছে শিক্ষকদের, না আছে অভিভাবকদের। এই সংকটের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কাজ হারানো, শিশুদের পুষ্টির জোগানের মতো অনেক বিষয়। শিশু–কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি তো রয়েছেই। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যত দ্রুত খুলে দেওয়া যায়, ততই মঙ্গল। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী যেমনটা বলেছেন, ঠিক সেভাবেই উৎপাদন খাতের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা খাতের গুরুত্বও অনুধাবন করা জরুরি।
প্রায় দেড় বছরের মতো করোনা মহামারির কারণে স্কুলগুলো বন্ধ রয়েছে। গোটা বিশ্বেই স্কুলগামী শিশুরা ঘরবন্দী সময় কাটিয়েছে, কাটাচ্ছেও। এখন অনেকটা সয়ে এলেও শুরুর দিকে স্কুলের মাঠ, বন্ধু আর ক্লাসরুমকে ভেবেই কত খারাপ লাগা পার করেছে শিশুরা। বলা বাহুল্য, পড়াশোনা ছাড়াও শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার জন্য প্রাথমিক স্কুলগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বাচ্চাদের বিমর্ষ মুখের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। করোনাকালে বাংলাদেশের প্রায় সব জাতীয় দৈনিকে শিশুদের ভিডিও গেমসে আসক্তি নিয়ে কম–বেশি খবর প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিও গেমস আসক্তি থেকে শিশুদের মুক্ত করা নিয়েও নানা টিপস প্রকাশিত হচ্ছে নিয়মিত। এই আসক্তির অন্যতম কারণ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার মধ্যে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্তের পর ওই বছরের ১৬ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও তা শিশুদের ঘরবন্দী দশা থেকে মুক্তি দিতে পারছে না। ফলে তীব্র মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে শিশুরা। এর মাত্রা একেক দেশে একেক রকম হয়তো, কিন্তু চিত্রটা কম–বেশি একই।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এই কথাগুলো তো খুবই সত্য। সবকিছুই তো বন্ধ আছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় ধকলটা যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের ওপর দিয়ে। তারা বন্দী হয়ে আছে। কোনো বিনোদন নেই। এমন বন্দী দশায় তাদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে।’
এবার একটু গোটা বিশ্বের দিকে নজর বোলানো যাক। নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামের রাস্তায় শিশুরা যেমন স্কুটারে পা রেখে ঘুরে ঘুরে করোনাকালীন ছুটি কাটাচ্ছে। অন্যদিকে স্পেনের মাদ্রিদে তাদেরই সমবয়সীরা ঘরে মুখ গুঁজে পড়ে আছে ভিডিও গেমসে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর তথ্যমতে, করোনাকালে বিশ্বের ১৩৮টি দেশ কোনো না কোনো মেয়াদে জাতীয়ভাবে স্কুল বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছে। বাকি বহু দেশ এলাকা ধরে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও নিচ্ছে। করোনার কারণে বিশ্বের দেড় শ কোটি স্কুল শিক্ষার্থীর তিন–চতুর্থাংশকেই একটা লম্বা সময় ক্লাসরুম থেকে দূরে থাকতে হয়েছে।
বিভিন্ন দেশ টিকা আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে ধীরে ধীরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে। কিন্তু এখনো বাংলাদেশসহ ১৯টি দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। গতকাল সোমবার এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইউনিসেফ ও ইউনেসকো। করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার ১৮ মাস পেরিয়ে গেছে। এ দীর্ঘ সময়ে লাখ লাখ শিশুর পড়াশোনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থা দুটি। তারা বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত ব্যবস্থা হিসেবে নেওয়ার কথা থাকলেও অনেক দেশের সরকার এটি প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে নিয়েছে।
বাংলাদেশও পড়ে এই অনেক দেশের তালিকায়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে কয়েকবার ঘোষণা দেওয়া হলেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় পিছু হটেছে সরকার। সর্বশেষ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পরই খুলে দেওয়া হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে তেমন কোনো উদ্যোগ আগে থেকে না থাকা ও অব্যবস্থাপনাকে কারণ হিসেবে দেখছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘এমনটা হওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে অব্যবস্থাপনা। টিকা ব্যবস্থাপনা বেশ দুর্বল। এটা খুবই দুঃখজনক। টিকার ক্ষেত্রে একটি কোম্পানির ওপর নির্ভরশীলতা এই অবস্থার সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারে অনেক দেরিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শিক্ষা ক্ষেত্রটিকেই কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ভীষণ অমনোযোগ ও উদাসীনতা আমরা দেখেছি। শিক্ষা তো কারখানার চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু কারখানা চালু রাখার বিষয়ে যে উদ্যোগ আমরা দেখেছি, তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। চালু রাখার চেষ্টা করা হয়নি। বন্ধ করার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আবার কীভাবে খুলে দেওয়া যায়, তার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনাও নেই।’
উন্নত বিশ্বের চিত্রটি কিন্তু আলাদা। উন্নত দেশগুলোয় এখনো স্কুল পুরোপুরি বন্ধের উদাহরণ বেশি নয়। তবে অনলাইন ক্লাস চললেও ক্ষতি এড়ানো যায়নি। এই স্কুল বন্ধের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্কুলে পড়া ছোট শিশুরা। কারণ, ঘরে বসে হয়তো অঙ্কের মতো বিষয়গুলো শেখানো সম্ভব। কিন্তু সামাজিক ও মানসিক দক্ষতা, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, অধ্যবসায় এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণ, যা শিশুরা স্কুল থেকে শেখে, তা কেবল ঘরে বসে শেখা সম্ভব নয়। অন্যদিকে এ সময়টায় টিনএজাররা স্ক্রিন অ্যাডিকটেড হয়ে পড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, স্কুলে যেতে না পারার এই ক্ষতিকর প্রভাবগুলো সারা জীবন স্থায়ী হতে পারে। এ কারণে ২০০৩ সালে সিঙ্গাপুর জুন মাসের এক মাস ছুটি দুই সপ্তাহে কমিয়ে আনে, যাতে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটোরি সিনড্রোমের (সার্স) কারণে সৃষ্ট মহামারির সময়ে স্কুল বন্ধ থাকার ক্ষতি পুষিয়ে আনা যায়। স্কুল বন্ধ থাকা মানে শিশুদের সম্ভাবনাকেও স্তিমিত করা।
ইকোনমিস্ট জানাচ্ছে, পরিবেশগত কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় গ্রেডের (সাত বছর বয়সী) শিক্ষার্থীরা সরকারি পরীক্ষায় অপেক্ষাকৃত কম ভালো করেছিল। ১৯৯০ সালে দুই মাসব্যাপী শিক্ষকদের ধর্মঘট থাকায় ফরাসিভাষী বেলজিয়ান শিক্ষার্থীদের একই ক্লাসে দ্বিতীয়বারের মতো পড়তে হয়েছিল। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের শিশুরা সারা বছর বিভিন্ন বিষয়ে যে দক্ষতা অর্জন করে, গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে তা ২০ থেকে ৫০ শতাংশ হারিয়ে ফেলে।
করোনাকালে স্কুলের দরজা বন্ধ থাকলেও পড়াশোনা পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে—এ কথা অবশ্য বলা যাবে না। বলা যায়, বিশ্বের প্রতি ১০টি সমৃদ্ধ দেশের মধ্যে প্রায় নয়টি দেশ অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়েছে। এদিকে দরিদ্র দেশগুলোর মাত্র এক–চতুর্থাংশ এ সুবিধা দিতে পারছে। দরিদ্র দেশগুলোয় সবখানে শিশুদের অনলাইনে স্কুলের পড়াশোনার জন্য ইন্টারনেট সংযোগ ও ডিভাইস পাওয়া কষ্টসাধ্য বিষয়। আবার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত শিশুদের বাবা–মাও এত শিক্ষিত নয় যে, তারা সন্তানদের পড়াশোনায় সাহায্য করতে পারবে।
তবে অনলাইনে স্কুলের পড়াশোনা এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও কিছু অসুবিধা রয়েছে। মার্কিন স্কুলগুলোর দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, লকডাউনের প্রথম কয়েক সপ্তাহে এক–তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে লগ ইন–ই করেনি। এলিট স্কুলগুলোয় অবশ্য পুরোপুরি উপস্থিতি ছিল। শিক্ষার্থীদের যাতে পূর্ণাঙ্গ সময় দেওয়া যায়, সে জন্য তারা বাড়তি শিক্ষকও নিয়োগ দিয়েছে।
কিন্তু এই অনলাইন ক্লাস বা বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোটা করোনাকালীন বাস্তবতার একটি দিক। অন্য দিকটি হচ্ছে অর্থনৈতিক সংকট। করোনাকালে বহু মানুষ চাকরি হারিয়েছে। স্কুল বন্ধ হওয়ায় বিশেষত বেসরকারি স্কুলগুলোর শিক্ষকদের অনেকেই পেশা বদল পর্যন্ত করেছেন। গত দেড় বছরে বাংলাদেশে বহু শিক্ষকের পেশা বদলের খবর পত্রিকায় এসেছে। পরিবারের এমন আর্থিক সংকটে শিশু–কিশোরদের অনেককেই উপার্জনের পথে নামতে হয়েছে।
রয়েছে অন্য বাস্তবতাও। স্কুল বন্ধ থাকা মানে প্রতি দুপুরে স্কুল থেকে দেওয়া খাবারও বন্ধ। এর প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেই ভয়াবহ। বিখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বসের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি পাঁচটি শিশুর একটি দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করে। তাদের এই একবেলা খাবারের ব্যবস্থা বন্ধ হওয়াটা অনেক বড় ব্যাপার। তারা বলছে, বৈশ্বিক এ মহামারির কারণে বিশ্বে দরিদ্র শিশুর সংখ্যা আরও ১৪ কোটি ২০ লাখ বাড়বে। এ নিয়ে কোনো সুচিন্তিত পরিকল্পনা না থাকলে গোটা বিশ্বে দরিদ্র শিশুর সংখ্যা ৭২ কোটি ৫০ লাখে গিয়ে পৌঁছাবে বলেও পূর্বাভাস করা হয়।
এ বিষয়ে কলোরাডোর ডেনভারের কিপ হাইস্কুলের শিক্ষক অ্যাশলে ফারিস ইকোনমিস্টকে বলেন, স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিউটার বা ওয়াইফাই সংযোগের ব্যবস্থা করা বা না করাটা এই গোটা দৃশ্যের একটি ক্ষুদ্র অংশ। বড় বিষয় হচ্ছে, এ সময়ে অনেক বাবা–মা কাজ হারিয়েছেন। ফলে অনেক ছেলেমেয়েই কাজ করতে শুরু করেছে। অন্যদিকে বাকিরা ছোট ভাইবোনদের দেখাশোনা করে কাটিয়েছে।
এ তথ্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোয় এর প্রভাব কতটা। ফলে শুধু মানসিক স্বাস্থ্য নয়, স্কুল বন্ধ থাকার সঙ্গে শিশুর শারীরিক স্বাস্থ্য, বিশেষত পুষ্টির বিষয়টি জড়িত। এটি আরও বড় আকার ধারণ করেছে করোনাকালে বহু মানুষ কাজ হারানোর কারণে, যার একটি বড় অংশই সমাজের দরিদ্র স্তরের।
শেষ পর্যন্ত বলতেই হয়, শিশুদের পড়াশোনা করা নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হলো স্কুলের দরজা আবার খোলা। বিশ্বের বহু দেশই বিষয়টি অনুধাবন করে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যুক্তিটি হচ্ছে—করোনাভাইরাসে শিশুদের আক্রান্ত হতে খুব কম দেখা গেছে। আবার স্কুল বন্ধের কারণে সব বিবেচনাতেই শিশুদের দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির আশঙ্কা প্রবল।
এই ক্ষতি এড়াতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য, চীনসহ বহু দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিয়ে এগিয়েছে। তার ফলও মিলেছে। তবে ভয়ও আছে। এ ভয়ের কারণে অনেক দেশ এখনই এমন পদক্ষেপ নিতে রাজি নয়। এ তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে পরিবারের ভূমিকা অনেক বড়। কিন্তু বাংলাদেশের পরিবারগুলো কি এমন পরিস্থিতিতে শিশু–কিশোরদের যথাযথ যত্ন নিতে প্রস্তুত।
এ বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলছেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে তো পরিবারই ভরসা। তারাই তো এই বন্দী শিশু–কিশোরদের সঙ্গে আছে। কিন্তু আমাদের পরিবারগুলোও তো এ বিষয়ে তেমন সচেতন নয়। এটা আসলে শুধু এ জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখলে হবে না। এটা তো গোটা সমাজ ব্যবস্থার সংকট। এই সচেতনতাটা আমাদের সমাজ ব্যবস্থার ভেতরেই নেই। এ কারণে কিশোর অপরাধ বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে সচেতনতা তৈরির কোনো বিকল্প নেই।’
ঠিক তাই। করোনা মহামারি আমাদের এক নতুন পরিস্থিতির মধ্যে এনে দাঁড় করিয়েছে। এত দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার অভিজ্ঞতা না আছে শিক্ষার্থীদের, না আছে শিক্ষকদের, না আছে অভিভাবকদের। এই সংকটের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কাজ হারানো, শিশুদের পুষ্টির জোগানের মতো অনেক বিষয়। শিশু–কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি তো রয়েছেই। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যত দ্রুত খুলে দেওয়া যায়, ততই মঙ্গল। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী যেমনটা বলেছেন, ঠিক সেভাবেই উৎপাদন খাতের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা খাতের গুরুত্বও অনুধাবন করা জরুরি।
ইউক্রেনের ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র সারা বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও, রাশিয়ার এ ধরনের আক্রমণকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়েছে—যেমনটি ইসরায়েল উত্তর গাজাকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে হয়েছে।
৪ দিন আগেট্রাম্প ফিরে আসায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে পারে, সামান্য কিছু পরিবর্তন নিয়ে। ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পেছনের সারিতে থাকলেও বাংলাদেশ,
৪ দিন আগেড. ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন পুরো জাতি তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবে তাঁকে পরিষ্কারভাবে এই পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে যে, তিনি কীভাবে দেশ শাসন করবেন এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
৫ দিন আগেসম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
৬ দিন আগে