Ajker Patrika

সীতাকুণ্ডে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহান বিজয় দিবসকে ঘিরে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার ফৌজদারহাট কে এম উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে চারজনকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীর বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিএ) হাসপাতালে, একজনকে চট্টগ্রামের আল আমিন নামক বেসরকারি হাসপাতালে এবং দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের তথ্যমতে, আজ বেলা আড়াইটার দিকে সলিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মহিউদ্দিন নেতৃত্বে তাঁর অনুসারী নেতা–কর্মীরা বিজয়ের শোভাযাত্রা নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এরপর তাঁরা ফৌজদারহাট কে এম উচ্চবিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে ফুল দেন। ফুল দেওয়া শেষে মহিউদ্দিন নেতা–কর্মীদের নিয়ে ওই এলাকায় অবস্থান নেন।

ঘণ্টাখানেক পর সলিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হাসান অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি শোভাযাত্রা করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। পরে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যান। এ সময় মহিউদ্দিনের ও জাহিদুলের সমর্থকেরা পাল্টাপাল্টি উসকানিমূলক স্লোগান দিতে থাকেন। এতে উভয় পক্ষের নেতা–কর্মীর মধ্যে তর্কাতর্কির সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তাঁরা উত্তেজিত হয়ে একে অপরকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকেন এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২০ জন কর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে ১৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হলেও সাতজনকে চমেক হাসপাতালসহ নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর আজ সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপি নেতা জাহিদুল হাসানের অনুসারী নেতা–কর্মীরা মহিউদ্দিনের ঘর বাড়িয়ে ভাঙচুর করেন।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মহিউদ্দিন জানান, ফুল দেওয়া শেষে তিনি নেতা-কর্মীকে নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছিলেন। তাঁকে ও তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীকে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জাহিদুলের লোকজন উসকানিমূলক স্লোগান দেন। একপর্যায়ে তাঁর নেতা–কর্মীর ওপর হামলা করে এবং ইট পাটকেল ছুড়ে মারে। হামলায় তাঁর পক্ষের ১০ থেকে ১২ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এই ঘটনার পর সন্ধ্যায় জাহিদুলের অনুসারীরা তাঁর বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন।

ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হাসান জানান, তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছিলেন। তাঁদের দেখে মহিউদ্দিনের সঙ্গে থাকা নেতা–কর্মীরা উসকানিমূলক স্লোগান দিলে সংঘর্ষ হয়। এতে তাঁর অনুসারী বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন। শুধু হামলায় নয়, বিকেলে মহিউদ্দিনের অনুসারী নেতা–কর্মীরা তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। তাঁর গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়েকজন নেতা-কর্মী উত্তেজিত হয়ে মহিউদ্দিনের বাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন।

ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা বলেন, শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় উসকানিমূলক স্লোগানকে ঘিরে বিএনপির দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ২০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাত নেতা-কর্মী চমেকসহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কেউ কোনো মামলা করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত