আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বৈঠক হট্টগোলে শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
Thumbnail image
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আয়োজিত সভায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। আজ রোববার নিজেদের মধ্যে কয়েক দফা হাতাহাতিতে জড়ান তাঁরা। উপাচার্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সভায় বসলেও সিদ্ধান্ত ছাড়াই হট্টগোলের মাধ্যমে তা শেষ হয়।

উপাচার্যবিরোধীদের অভিযোগ, চেয়ার রক্ষায় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের একাংশের সঙ্গে আঁতাত করেছেন। তাই তাঁরা আগামীকাল সোমবার চূড়ান্ত আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। উপাচার্যের (ভিসি) পদত্যাগের দাবিতে গত বুধবার থেকে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একাংশও এ আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ফ্যাসিবাদের দোসর, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য ও জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর সহযোগী উপাচার্য শুচিতা শরমিন। কলিমুল্লাহর অনেক সহযোগীকে ববির গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করছেন উপাচার্য।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য গত মঙ্গলবার থেকে ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছিলেন। শনিবার দিবাগত রাতে তিনি ক্যাম্পাসের বাংলোতে ফেরেন। পূর্ব সূচি অনুযায়ী আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে জীবনানন্দ দাশ মিলনায়তনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁর সভা করার কথা ছিল। কিন্তু তাঁর আগেই আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরোধ বাধে। ফলে সকালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েক দফা হাতাহাতি হয়। পরে বেলা ১টার দিকে সভা শুরু হলেও সিদ্ধান্ত ছাড়াই বিকেল ৪টার দিকে তা শেষ হয়।

সভা সূত্রে জানা গেছে, সভায় ড. কলিমুল্লাহকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন উপাচার্য। অস্বস্তিতে পড়ে সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা শেষ করেন। সেই সঙ্গে আগামীকাল সোমবার থেকে বিভাগভিত্তিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করার ঘোষণা দেন।

পরে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম জানান, আগামীকাল সোমবার জীবনানন্দ দাশ মিলনায়তনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন উপাচার্য।

উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের অন্যতম, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রেজা শরীফ জানান, তমাল, সিরাজ, ইমরান, রাজু ও সজীব নামে পাঁচ ছাত্র উপাচার্যের দালালের ভূমিকায় নেমেছেন। সভায় তাঁরা উপাচার্যকে ২০টি প্রশ্ন করেছিলেন। কোনোটার সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে হট্টগোলে সভা শেষ হয়।

রেজা বলেন, ‘উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে সোমবার সকাল ১০টায় বিক্ষোভ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র আন্দোলন ও সব বাম সংগঠন এ আন্দোলনের সঙ্গে আছে।’

ববি গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় শুভ বলেন, ‘ভিসির পদত্যাগের এক দফা প্রত্যাহার করা হয়নি। বাকি সিদ্ধান্ত সোমবার হবে। ভিসি যে বিভাগ পর্যায়ে সভা করছেন, তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।’

এ ব্যাপারে প্রক্টর ড. এ টি এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রদের কয়েকটি গ্রুপ হওয়ায় তাঁদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে; যে কারণে আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। হয়তো ওই সভায় যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সব ছাত্রের প্রতিনিধিত্ব করেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত