ঢাবিতে গভীর রাতে শেখ হাসিনার ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ গ্রাফিতি মুছে ফেলায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা, প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫: ০৫
Thumbnail image
ঢাবিতে মেট্রোরেলের পিলার থেকে মুছে ফেলা হয়েছে এই গ্রাফিতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মেট্রোরেলের পিলারে ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ থেকে শেখ হাসিনার ছবি মুছে ফেলা হলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানতে পেরে এর প্রতিবাদে গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিল করে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদের পদত্যাগ দাবি করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং প্রক্টর অফিস থেকে দুঃখ প্রকাশ করে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলে জানান।

ঘৃণাস্তম্ভ থেকে শেখ হাসিনার ছবি মুছে ফেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও সরব হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ সালেহীন অয়ন লেখেন, ‘মেট্রোরেলের দুই পিলারে দুই ফ্যাসিস্টের রক্তাক্ত ছবি মুছে দিয়ে চব্বিশের ইতিহাস মুছে ফেলার প্রতিবাদে আমরা আজকে রাতে রাজুতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। প্রশাসনকে এর জবাব দিতে হবে।’

ঢাবিতে মধ্যরাতে মুছে ফেলা হয় শেখ হাসিনার ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ গ্রাফিতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাবিতে মধ্যরাতে মুছে ফেলা হয় শেখ হাসিনার ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ গ্রাফিতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

আরেক সমন্বয়ক আহনাফ সাইদ খান লেখেন, ‘খুনি হাসিনার নিকৃষ্টতার নিশান মুছে দেওয়ার পেছনে দায়ী প্রত্যেক কর্তৃপক্ষকে এর দায় বহন করতে হবে। এ দেশের মানুষ স্পষ্টভাবেই জানে আওয়ামী লীগের ফেলে যাওয়া পতিত প্রশাসন এখন কাদের ইশারায় চলে। প্রশাসনিক দুর্বৃত্তরা জানে গতানুগতিক ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে চাওয়া রাজনৈতিক শক্তিই লীগের পর তাদের শেষ আশ্রয়স্থল। জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র প্রকাশের আগমুহূর্তে এই স্যাবোটাজ করার উদ্দেশ্যই হলো জুলাইয়ের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আটকে দেওয়ার জঘন্য চেষ্টা। আমাদের সচেতনতা এবং সমবেত কণ্ঠস্বরই পারে এসব ঘৃণ্য অপচেষ্টা রুখে দিতে।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন লেখেন, ‘জুলাইকে মুছে দেওয়া এতই সহজ? আবার আঁকা হবে, আবার ঘৃণাভরে লেখা হবে “খুনি হাসিনা”।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মেট্রোরেলের পিলারে ‘ঘৃণাস্তম্ভ’। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মেট্রোরেলের পিলারে ‘ঘৃণাস্তম্ভ’। ছবি: আজকের পত্রিকা

শুধু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা নন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থী, অ্যাক্টিভিস্টসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এর প্রতিবাদ করেন। পরে রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীনের উপস্থিতিতে নতুন করে একটি ছবি আঁকা হয়। এটি এঁকেছেন ছাত্র ইউনিয়ন চারুকলা অনুষদ শাখার সদস্য মৃধা রাইয়ান ও ঋষি । সঙ্গে ছিলেন রাইয়ান ফেরদৌস ও সর্দার নাদিম মাহমুদ শুভ।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস মেট্রোর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে, পরে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সেটি মুছে ফেলার উদ্যোগ নেয়। এটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছি এবং এটাকে ঘৃণাস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার কথা বলেছি। আজ প্রক্টর অফিস থেকে দুঃখ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা যদি আগের মতো আঁকতে চায়, তাহলে সেটা আমরা স্বাগত জানাই। তবে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক একটি এঁকেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত