Ajker Patrika

আশুলিয়ায় স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি ও খুনের মামলায় দুই নারীসহ গ্রেপ্তার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
ঢাকার আশুলিয়ায় ডাকাতদের চাপাতির কোপে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী মারা গেছেন। গত রোববার রাতে নয়ারহাট বাজারের দিলীপ স্বর্ণালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার আশুলিয়ায় ডাকাতদের চাপাতির কোপে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী মারা গেছেন। গত রোববার রাতে নয়ারহাট বাজারের দিলীপ স্বর্ণালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি ও ব্যবসায়ী দিলীপ দাস খুনের ঘটনায় দুই নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আজ মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

গত রোববার রাতে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের নয়ারহাট বাজারে স্বর্ণ লুট ও খুনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নিহত দিলীপ দাসের স্ত্রী সরস্বতী দাস গতকাল সোমবার আশুলিয়া থানায় মামলা করেছেন।

মামলা দায়েরের পর পুলিশ পাথালিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পারভিন বেগম (৪৫), জহুরা বেগম (৪৪) ও হান্নান (৫০) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। স্বর্ণ লুট ও খুনের ঘটনায় তাঁরা সরাসরি জড়িত না থাকলেও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকতে পারে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এদিকে স্বর্ণ লুট ও ব্যবসায়ী খুনের ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধন থেকে অনতিবিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তারসহ নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান আজকের পত্রিকা বলেন, গত রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দিলীপ দাস দোকান বন্ধ করে দোকানে থাকা স্বর্ণ নিয়ে বাড়ি চলে যান। তাঁর বাড়ি বাজার থেকে এক কিলোমিটার দূরে গোপীনাথপুর গ্রামে। এর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে পারভিন বেগম দিলীপ দাসকে মোবাইল ফোন করে জহুরার জন্য স্বর্ণের চেইন কেনার কথা বলে তাঁকে দোকানে ডেকে আনেন। হান্নানের অটোরিকশা করে তাঁরা নয়ারহাট বাজারে গিয়েছিলেন।

মামলার বাদী দিলীপ দাসের স্ত্রী সরস্বতী দাস বলেন, ‘রাতে বাড়ি আসার পর ফোন কল পেয় আমার স্বামী আবার যখন স্বর্ণ নিয়ে দোকানে যান, তখন আমিও তাঁর সঙ্গে ছিলাম। দোকানে যাওয়ার পর দুই নারী আমার স্বামীর কাছ থেকে পাঁচ আনা স্বর্ণের একটি চেইন কেনেন। এরপর ব্যাগে স্বর্ণ ভরে দোকানের শাটার লাগানোর সময় তিন থেকে চারজন লোক এসে আমার স্বামীর হাত থেকে স্বর্ণের ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। বাধা দিলে তাঁরা আমার স্বামীকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যান। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর আমার স্বামী মারা যান।’

নয়ারহাট বাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আশুতোষ ঘোষ বলেন, ‘আমাদের বাজারে ৩৫টি স্বর্ণের দোকান রয়েছে। যার অধিকাংশই গয়না তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে। বড় কোনো জুয়েলারি বা স্বর্ণ ব্যবসায়ী এই বাজারে নেই। তারপরেও আমাদেরই কেন বারবার টার্গেট করা হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি না। এর আগেও ২০২১ সালে ডাকাতেরা আমাদের স্বর্ণপট্টিতে হানা দিয়ে ১৭টি দোকান থেকে স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে যায়।’

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পারভিন, জহুরা ও হান্নান হচ্ছেন ডাকাতদের প্রথম দল। যাদের মাধ্যমে দিলীপ দাসকে ডেকে আনা হয়। ঘটনা ঘটিয়েছে অপর একটি দল। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

পরিদর্শক কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘পারভিন, জহুরা ও হান্নানকে লুট ও খুনের ঘটনায় সরস্বতী দাসের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত