Ajker Patrika

তিস্তার তীর রক্ষা প্রকল্প

তোলা হচ্ছে বাঁধের পাশের বালু

  • বাঁধের ৩০ মিটার দূর থেকে বালু তুলে ভরা হচ্ছে জিও ব্যাগে।
  • নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও বোমা মেশিন ব্যবহার করে তোলা হচ্ছে বালু।
  • এলাকাবাসী বলছেন, বাঁধের কাছ থেকে বালু তুলে জলে ফেলা হচ্ছে টাকা।
মাসুদ পারভেজ রুবেল, ডিমলা (নীলফামারী)
তিস্তার তীরে ভাঙন রোধে ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ। তবে সেই ব্যাগ ভরতে বালু তোলা হচ্ছে ভাঙনপ্রবণ এলাকা ও বাঁধের পাশ থেকে। ছবি: আজকের পত্রিকা
তিস্তার তীরে ভাঙন রোধে ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ। তবে সেই ব্যাগ ভরতে বালু তোলা হচ্ছে ভাঙনপ্রবণ এলাকা ও বাঁধের পাশ থেকে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর তীর রক্ষায় জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। জিও ব্যাগে বালু ভরাট করতে নদীর ভাঙন ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নিষিদ্ধ বোমা মেশিন বসিয়ে বালু তুলছে পাউবোর ঠিকাদার। বালু তোলার কারণে পাড়ের ফসলি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজসহ আশপাশের গ্রামের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বাঁধসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙন এলাকায় বালু উত্তোলন করা হলেও তা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেই পাউবো ও স্থানীয় প্রশাসনের। অবৈধভাবে বালু তোলায় জলে যাবে সরকারের কোটি কোটি টাকার এ প্রকল্প।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তিস্তা নদীর তীর রক্ষায় ২০ কোটি টাকার প্রকল্প চলমান। এর মধ্যে ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশপুকুর এলাকায় ১০৭০ মিটার তীরে জিও ব্যাগ ফেলার প্রকল্প চলমান। এতে ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। চারটি প্যাকেজে ভাগ করে ঠিকাদার নিয়োগ করে পাউবো। তবে কাজ সম্পন্ন করছে সাব ঠিকাদার। এ ছাড়া জরুরি কাজের নামে দরপত্র ছাড়াই ঝুনাগাছ চাপানির ভেণ্ডাবাড়ী ও সোনাখুলি স্পার বাঁধ রক্ষায় ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ ফেলছে ডালিয়া পাউবো।

এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এসব স্পার বাঁধ রক্ষায় দুটি প্রকল্পে সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ ফেলা হয়। জিও ব্যাগ ভরাট করা হয়েছিল বাঁধের নিচের বালু তুলে। তবে বছর না ঘুরতেই জিও ব্যাগ ধসে পড়ে নদীতে বিলীন হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বাইশপুকুর, ভেণ্ডাবাড়ী ও সোনাখুলি স্পার বাঁধের নিচে ভাঙন এলাকা থেকে বালু তুলে ভরা হচ্ছে ব্যাগে। বাঁধ থেকে ৩০ মিটার দূরত্বে নদীর ভাঙন ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচটি বোমা মেশিনে ১০ ইঞ্চি পাইপ যুক্ত করে বালু তোলা হচ্ছে। যদিও এমন মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমনকি নদীর তীর ভাঙনের শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও বালু তোলা নিষেধ। তবে এরপরও উত্তোলন করা পলিমিশ্রিত চিকন বালু দিয়ে পাশেই ভরা হচ্ছে জিও ব্যাগে। অথচ শুষ্ক ও মোটা বালু দিয়ে জিও ব্যাগ ভরাটের নিয়ম রয়েছে।

কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা কাজের ঠিকাদারদের অধীনে প্রায় আট দিন ধরে বালু তোলার কাজ করছেন। আর স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার অধিক মুনাফার লোভে কোনো আইন না মেনে নদীর ভাঙন যেখানে বেশি, সেখান থেকেই বালু উত্তোলন করছে। এর ফলে বস্তাগুলো (জিও ব্যাগ) কাজে আসবে না। প্রশাসন তা বন্ধও করে না। এ ক্ষেত্রে পাউবো কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকার সন্দেহ করেন তাঁরা।

সোনাখুলি ভাঙনকবলিত এলাকার সামছুল হক বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে প্রতিবছর বড় বড় বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলা হয় নদীতে। নদীর তলদেশে যেখানে ভাঙনটা হয়, সেখানে মেশিন দিয়ে বালু তুলে আবার সেখানেই বালুর বস্তা ফেলে প্রতিরোধ তৈরি করা হয়। এই প্রতিরোধব্যবস্থা শুধু পানিতে টাকা ফেলা।

একই এলাকার জমির উদ্দিন অভিযোগ করেন, বানের জলে এসব বালুর বস্তা নদীর গভীরে চলে যায়। আর একই প্রক্রিয়ায় বছরের পর বছর কাজ হচ্ছে। সরকারি টাকা পানিতে যায়, অথচ ভাঙন রোধে তেমন কাজে আসে না।

বাইশপুকুর এলাকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, বস্তার মধ্যে মোটা বালু দেওয়ার কথা, কিন্তু ঠিকাদারেরা দিচ্ছেন নদীর চিকন বালু-মাটি। মোটা বালু দিয়ে নদীর মধ্যে বস্তা ফেললে, তা শক্ত ও মজবুত হতো।

তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য সোহেল হাসান বলেন, নদী এলাকায় বালু উত্তোলন করলে তা হবে আত্মঘাতী। এতে নদীর তলদেশে বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। সে গর্তে নদীর তীর ধসে ভাঙন সৃষ্টি হচ্ছে। বাঁধ টিকিয়ে রাখতে অর্থ খরচ করা হচ্ছে ঠিকই, তবে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে এ অর্থ ব্যয় কোনো কাজে আসবে না।

এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভাঙন এলাকায় মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের সুযোগ নেই। তিনি বোমা মেশিন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ‘ইতিমধ্যে ইউএনওকে এগুলো বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম আমরা বরদাশত করব না। কেউ নির্দেশনা না মানলে আইনি ব্যবস্থা নেব। আর পাউবোর এক্সিয়েনকে বলব এইভাবে যাতে টাকার অপচয় করা না হয়, বালু যেখান থেকে তুলবে সেখানেই জিও ব্যাগ ফেলার মানে হয় না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যমুনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি

আব্দুল্লাহ আল মারুফ, সিরাজগঞ্জ
যমুনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে অন্যের দেওয়া এই ডেরাঘরে আশ্রয় নিয়েছেন আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
যমুনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে অন্যের দেওয়া এই ডেরাঘরে আশ্রয় নিয়েছেন আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাদা দাড়িতে অর্ধেক মেহেদি, কপালে গভীর চিন্তার ভাঁজ। ডান পায়ে ফোঁড়ার// কারণে বাঁধা ব্যান্ডেজ। কাঠের টুলে বসে থাকা মানুষটির দিকে তাকালে বোঝার উপায় নেই—মাত্র এক বছর আগেও তিনি ছিলেন সাড়ে চার বিঘা আবাদি জমির মালিক।

৬৬ বছর বয়সী এই বৃদ্ধের নাম আব্দুল রাজ্জাক। স্ত্রী মর্জিনা বেগমের বয়স ৫৫। চার ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে একসময় ভালোই চলছিল তাঁদের সংসার। জমিতে বছরে বিভিন্ন সময়ে গম, ভুট্টা, খেসারি, কালাই ও বাদামের চাষ হতো। পরিশ্রম করেই চলত জীবন। তবে হঠাৎ করেই সবকিছু বদলে দেয় যমুনা নদীর ভাঙন।

ভিটেবাড়ি ও ফসলি জমি একে একে নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় এখন আব্দুল রাজ্জাক দম্পতি কার্যত আশ্রয়হীন। একসময় যাঁর নিজের জমি ছিল, আজ তিনি অন্যের দেওয়া সামান্য জমিতে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছেন। বন, বস্তার চাটাই আর পলিথিনে মোড়ানো ছোট একটি ঘরই তাঁদের বর্তমান ঠিকানা। আব্দুল রাজ্জাক সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াখোলা ইউনিয়নের দোরতা এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওই এলাকার মৃত রহিজ তালুকদারের ছেলে।

শনিবার দুপুর গড়িয়ে বিকেলে সিরাজগঞ্জ ক্রসবার এলাকায় প্লাস্টিকের টুলে বসে কথা বলছিলেন আব্দুল রাজ্জাক। তিনি জানান, তাঁর দাদার প্রায় ২৪ বিঘা জমি ছিল। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি পান সাড়ে চার বিঘা। গত বছরেও সেই জমিতে গম, ভুট্টা, কালাইসহ নানা ফসল আবাদ করেছিলেন। ‘বুড়া-বুড়ির ভালোই চলছিল,’ বলেন তিনি।

সন্তানদের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কিছুক্ষণ নীরব থাকেন আব্দুল রাজ্জাক। এরপর ধীর কণ্ঠে বলেন, ‘ওদের নিজেদেরই খুব কষ্ট। আমাদের দেখবে কীভাবে?’

বর্তমানে ফুফাতো ভাইয়ের জমির ওপর কোনোমতে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। শীত এলে দুর্ভোগ আরও বাড়ে। আয়ের একমাত্র সম্বল পাঁচটি গরু। তবে বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে এখন বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারেন না তিনি।

আব্দুল রাজ্জাক বলেন, ‘তোমার চাচি যমুনার চরে গিয়ে গরুর জন্য ঘাস কেটে আনে। আর অন্যদের সামান্য সহযোগিতা আর মেয়েরা মাঝে মাঝে যা দেয়, তা দিয়েই কোনোমতে সংসার চলে।’

কথার একপর্যায়ে তাঁর কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে। শেষবারের মতো বলেন, ‘আমাকে যদি কেউ একটা ঘর আর মাসে মাসে একটু খাবার বা কিছু টাকার ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে সারা জীবন দোয়া করতাম।’

যমুনার ভাঙনে হারিয়ে যাওয়া অসংখ্য জীবনের ভিড়ে আব্দুল রাজ্জাক ও মর্জিনা বেগমের গল্পটি শুধু একটি উদাহরণ—নদীভাঙনে সর্বস্ব হারানো মানুষের নীরব দীর্ঘশ্বাসের গল্প।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনার পূর্ব রূপসায় যুবককে গুলি করে হত্যা

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনার পূর্ব রূপসায় দুর্বৃত্তের গুলিতে সাগর শেখ (৩৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাত ১১টার দিকে রূপসা সেতুর পূর্বপাশে জাপুসা চৌরাস্তা সিএনজি স্টেশনের পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক গ্রিন বাংলা আবাসিকের পেছনের বাসিন্দা ফয়েক শেখের ছেলে। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপসা থানার এসআই সৌরভ দাশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সাগর বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে রাত ১১টায় কয়েকজন যুবক তার গতি রোধ করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। একটি গুলি তার মাথায় এবং অপরটি তার হাঁটুতে লাগে। গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তী সময়ে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রূপসা থানার এএসআই গৌতম বলেন, গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়ে ওই এলাকার বাসিন্দা আ. রহমান রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। পরে ৯৯৯ থেকে আমাদের ফোন দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়।

রূপসা থানার এসআই সৌরভ দাশ বলেন, ‘রাতে জাপুসা এলাকায় ডিউটি করছিলাম। থানা থেকে ফোন আসলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষয়টি জানার চেষ্টা করি। পরে জানতে পারলাম তারা এখানে জায়গা কিনে নতুন বাড়ি করেছে।’ তবে কারা এবং কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তার প্রকৃত কারণ তিনি বলতে পারেনি।

রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. রাজ্জাক মীর বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। খুনিদের গ্রেপ্তারে আশপাশের এলাকায় অভিযান শুরু হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১৫ দিনেও পরিচয় মেলেনি সীতাকুণ্ডে উদ্ধার হওয়া পোড়া নারীর মরদেহের

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহাসড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া এক নারীর পোড়া মরদেহের পরিচয় ১৫ দিনেও শনাক্ত করা যায়নি। আঙুল আগুনে পুড়ে যাওয়ায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ সম্ভব না হওয়ায় পরিচয় শনাক্তে জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে মরদেহটি আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাদের তত্ত্বাবধানে অজ্ঞাত ওই নারীর দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ২৯ নভেম্বর গভীর রাতে সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের আব্দুল্লাহ ঘাটা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসংলগ্ন একটি ডিপোর সামনে থেকে আনুমানিক ৪৫ বছর বয়সী এক নারীর আগুনে পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, আগুনে পুড়ে নারীর মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক। তাঁদের ভাষ্য, ওই নারী কীভাবে ঘটনাস্থলে এলেন এবং কেন নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরালেন—তা বোধগম্য নয়। তাঁদের ধারণা, পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে মরদেহে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হতে পারে।

স্থানীয়রা আরও জানান, প্রযুক্তির আধুনিকতার এই সময়ে ১৫ দিনেও পরিচয় শনাক্ত না হওয়া কিংবা মৃত্যুর কারণ উদ্‌ঘাটন না হওয়ায় তাঁরা উদ্বিগ্ন। প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে নারীর পরিচয় ও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করার দাবি জানান তাঁরা।

ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. সোহেল রানা বলেন, আগুনে পুড়ে আঙুল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে মরদেহটি আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলমগীর জানান, মরদেহের পরিচয় ও মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে। কোনো স্বজন সামনে এলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হবে। এরপর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল সোয়া ৭টায় আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পল্টন থানার ডিউটি অফিসার উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) রকিবুল হাসান।

তিনি জানান, ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় তার এক আত্মীয় বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলা করেছেন। মামলাটি তদন্ত করছেন পল্টন থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াসিন মিয়া।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর সন্ধ্যার দিকে হাদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।

হামলার এ ঘটনার পর থেকে র‍্যাব ও ঢাকা মহানগর পুলিশ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করলেও তাঁরা কেউ সরাসরি হামলাকারী নন।

গতকাল রোববার রাত পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক, মানব পাচারে জড়িত চক্রের দুই সহযোগী, সন্দেহভাজন শুটার ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবী। তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে।

হাদির হত্যাচেষ্টাকে কেন্দ্র করে অভিযানে সর্বশেষ গতকাল রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সামিয়া, শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে র‍্যাব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত