Ajker Patrika

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: ডিএনএ পরীক্ষায় প্রধান আসামির সম্পৃক্ততা মিলেছে

মাগুরা প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ৫০
মাগুরায় ধর্ষণ ও নির্যাতের শিকার হয়ে মারা যাওয়া শিশুটির বই ও ব্যাগ দেখাচ্ছে বড় বোন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাগুরায় ধর্ষণ ও নির্যাতের শিকার হয়ে মারা যাওয়া শিশুটির বই ও ব্যাগ দেখাচ্ছে বড় বোন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাগুরার সেই ৮ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের মামলায় এক মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়নি। তবে পুলিশ বলছে, দ্রুত অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে। ডিএনএ পরীক্ষা করে ঘটনার সঙ্গে প্রধান আসামি শিশুটির বোনের শ্বশুরের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে।

শিশুটি মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে গত ৬ মার্চ ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়। এ ঘটনায় শিশুর মা বাদী হয়ে ৮ মার্চ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এতে শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়। গ্রেপ্তার হয়ে চারজনই কারাগারে রয়েছেন। নির্যাতনের শিকার শিশুটি ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

প্রধান আসামি ১৫ মার্চ মাগুরার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায়ের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এতে তিনি স্বীকার করেন, মেয়েটিকে ধর্ষণের সময় চিৎকার আটকাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টেনে ধরেছিলেন।

শিশুটির মায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এক মাস হয়ে গেলেও তাঁরা কোনো বিচার পাচ্ছেন না। কবে বিচার হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক মো. আলাউদ্দিন বলেন, মামলার অভিযোগপত্র দ্রুত আদালতে জমা দেওয়া হবে। কিছু প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার কাজ শেষ পর্যায়ে।

মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. রেজাউল হক আজ সোমবার আজকে পত্রিকাকে জানান, মামলায় প্রধান আসামির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ডিএনএ প্রতিবেদনে এটি প্রমাণিত হয়েছে। অন্য যাঁরা আসামি রয়েছেন, তাঁদের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে বিভিন্ন ছুটির কারণে দেড় মাস পর আজ শিশুটির বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হয়েছে। ক্লাসে শিক্ষক ও সহপাঠীরা তার অভাব বোধ করার কথা জানিয়েছেন।

এক সহপাঠী বলে, ‘ও খুব হাসিখুশি ছিল, প্রতিদিন স্কুলে আসত। এত দিন স্কুল বন্ধ থাকায় আমরা ওর অভাব তেমন বুঝিনি। এখন স্কুল খুলেছে; কিন্তু ও আর আসবে না কোনো দিন। এটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টের।’

বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক বলেন, ‘শিশুটি খুব মেধাবী ছিল। প্রায় অঙ্কই সে করতে পারত। দরিদ্র ঘরের সন্তান হয়েও পড়াশোনায় ভালো ছিল। তার চিরবিদায় মেনে নেওয়া আমাদের জন্য খুবই কষ্টের। এই বিদ্যালয়ে সে ঘুরে বেড়াত। আর কোনো দিন সে আসবে না এখানে। কোথাও তাকে আমরা খুঁজে পাব না। তার সঙ্গে ঘটা এই পাশবিক ঘটনায় দোষীদের ফাঁসি চাই দ্রুত।’

শ্রীপুর উপজেলায় শিশুটির বাড়িতে গিয়ে দেখা হয় বড় বোনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ওর স্কুল খুলেছে। ওর নীল ব্যাগ ও নতুন বইগুলো পড়ে রয়েছে। সবাই স্কুলে যাচ্ছে অথচ আমার বোন বেঁচে নেই। সে আর কখনো স্কুলে যাবে না। এটা কষ্ট দিচ্ছে আমাদের। আমরা দ্রুততম সময়ে দোষীদের ফাঁসি চাই। আমরা সঠিক বিচার চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনায় আদালত প্রাঙ্গণে জোড়া খুনের ঘটনায় যুবক গ্রেপ্তার

খুলনা প্রতিনিধি
র‍্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার যুবক
র‍্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার যুবক

খুলনায় আদালত প্রাঙ্গণে জোড়া খুনের ঘটনায় মো. এজাজুল হোসেন (২৬) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র‍্যাব-৬-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নিস্তার আহমেদ।

গ্রেপ্তার এজাজুল রূপসা উপজেলার আইচগাতি এলাকার ফারুক হোসেনের ছেলে। গতকাল বুধবার বিকেলে আইচগাতি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব কর্মকর্তা নিস্তার আহমেদ বলেন, গত ৩০ নভেম্বর খুলনা মহানগরীর আদালত চত্বরের প্রধান ফটকের সামনে ফজলে রাব্বী রাজন (৩০) ও হাসিব হাওলাদারকে (৪০) প্রকাশ্যে গুলি করে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে র‍্যাব-৬-এর একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তসমূহ সংগ্রহ করে এবং বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও সংগ্রহ করে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় জোড়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত, মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজে সরাসরি দৃশ্যমান এজাজুল হোসেন নামে এক অভিযুক্তকে রূপসার আইচগাতি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার এজাজুল জোড়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। একই সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকা সাতজনের নাম প্রকাশ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন অভিমুখে যাত্রা, পুলিশি বাধায় পণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীতে মার্চ টু ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে মার্চ টু ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে মার্চ টু ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কর্মসূচি পালন করেছে ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী ‘জুলাই ৩৬ মঞ্চ’। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় নগরের ভদ্রা মোড় থেকে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয় পর্যন্ত মার্চ কর্মসূচি শুরু করে তারা। তবে মাঝপথে পুলিশের বাধায় কর্মসূচি পণ্ড হয়ে গেছে।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মার্চ শুরু হলে সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের প্রায় ১০০ মিটার আগেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে মিছিলটি আটকে দেয়। এ সময় অংশগ্রহণকারীরা ব্যারিকেডের সামনে অবস্থান নেন এবং সামনে অগ্রসর হওয়ার অনুমতি চান।

তবে প্রায় ১৫ মিনিট অপেক্ষার পরও অনুমতি না পাওয়ায় তাঁরা জোরপূর্বক সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করেন। এতে পুলিশ বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ করেন।

ঘটনার পর অংশগ্রহণকারীরা ব্যারিকেডের সামনে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এক ঘণ্টার বেশি সময় তাঁরা সেখানে অবস্থান করলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনোভাবেই সহকারী হাইকমিশন-সংলগ্ন সড়কে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি।

এ সময় জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক হযরত আনাস, রাজশাহী মহানগরের অব্যাহতিপ্রাপ্ত যুগ্ম সদস্যসচিব সোয়েব আহমেদ, জেলা এনসিপি থেকে পদত্যাগ করা সাংগঠনিক সম্পাদক ইফফাত উদ্দিন আবির, জুলাই যোদ্ধা আবু রায়হান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাটোর জেলার মুখপাত্র বুশরাসহ ১৫-২০ জন নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

পরে জুলাই যোদ্ধা মিফতাহুল জান্নাত বিভা জানান, ভারত পলাতক সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়েছে। তাই এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। এ সময় তিনি তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ভারতে সব পলাতক আসামিকে ফেরত পাঠাতে হবে, তাঁদের ফেরত না দিলে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় হাইকমিশনকে প্রত্যাহার বা স্থগিতাদেশ দিতে হবে এবং এই কর্মসূচিতে পুলিশি হামলার জন্য জবাবদিহি করতে হবে।

এসব দাবি লেখা একটি কাগজ তাঁরা নগরের বোয়ালিয়া জোনের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) গোলাম রাব্বানী শেখের কাছে হস্তান্তর করেন। গোলাম রাব্বানী শেখ বলেন, ‘তিনটি দাবির মধ্যে দুটি জাতীয় পর্যায়ের বিষয়। আমরা এই চিঠি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেব। আর পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, সেটা আমরা ভিডিও দেখে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রঙের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত মিস্ত্রির মৃত্যু

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাইবান্ধা পৌর শহরের এক বাসায় রঙের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে রাকিব মিয়া (২৩) নামের এক মিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে গাইবান্ধা পৌরসভার কলেজপাড়া এলাকার একটি নির্মাণাধীন বাসায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত রাকিব মিয়া সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের পূর্ব কোমরনই গ্রামের মাহবুব আলম খাজার ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, আজ পৌর শহরের কলেজপাড়ায় সোহেল রানা নির্মাণাধীন বাসার পিলারের রং করছিলেন। কাজ করতে করতে অসাবধানতায় ঝুলন্ত তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নিহতের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায়, তাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কলাবাগানে পড়ে ছিল রিকশাচালকের মরদেহ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ১৪
ঘটনাস্থলে স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরে কলাবাগানে টিপু সুলতান (৪০) নামের এক রিকশাচালকের মরদেহ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে ওই রিকশাচালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত টিপু সুলতান একই এলাকার মৃত জায়েদ আলী শেখের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে টিপু সুলতানকে হত্যা করে রেখে যায়। ভোরে কলাবাগানের মালিক ইলিয়াস শেখ মরদেহটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের জানান। পরে এলাকাবাসী থানা-পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আজমীর হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত