পিকে হালদারসহ ২৩ জনের নামে দুদকের অভিযোগপত্র অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৫: ৫৬
Thumbnail image

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আসামিদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ ও দণ্ডবিধির ৪০৯ / ৪২০ / ১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। 

সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠক থেকে চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়। দুদকের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

জানা যায়, ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান আনান কেমিক্যাল লিমিটেডের এমডি অমিতাভ অধিকারী ২০১৫ সালের ১৪ অক্টোবর ২৯ কোটি টাকা ঋণের জন্য ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাশেদুল ইসলাম বরাবরে আবেদন করেন। আবেদনের পর কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই ২৫ অক্টোবর ২৩২ তম বোর্ড সভায় ঋণ মঞ্জুর করা হয়। 

এর পর বিভিন্ন সময়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে বেনামি প্রতিষ্ঠান আনান কেমিক্যালের নামে ৬৩ কোটি ৪১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০০ টাকা উত্তোলন করা হয়। যা ২০২২ সালে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত সুদসহ ১০৩ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ৭১৯ টাকা দাঁড়ায়।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আনান কেমিক্যালের নামে যে টাকা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে নেওয়া হয়েছে সেটি আত্মসাৎ ও পাচারে পিকেসহ ২৩ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলছে। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লি: এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অসৎ উদ্দেশ্যে আনান কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লি: এর চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকদেরকে ঋণ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন।

এর আগে ২০২১ সালে পাঁচটি ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৫১ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে তা আত্মসাতের অভিযোগে পি কে হালদারসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা করে দুদক। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠান আনান কেমিক্যাল লিমিটেডের নামে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণ তুলে নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলা হয়। ওই মামলা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে দুদক।

সংশ্লিষ্ট মামলার আসামি ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের এমডি রাশেদুল হক, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ আবেদ হাসান, ও সিনিয়র ম্যানেজার রাফসান রিয়াদ চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ড শেষে আদালতে ফৌ: কা: ১৬৪ ধারায় নিজেকে অপরাধের সঙ্গে শতভাগ জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। আসামিরা পরবর্তীতে, অপরাধলব্ধ ও আত্মসাৎকৃত উক্ত অর্থ বিভিন্ন লেয়ারিং এর মাধ্যমে পিকে হালদার সিন্ডিকেটের ভুয়া কোম্পানি ও বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন পূর্বক আত্মসাৎ ও পাচার করেন। 

২০২৩ সালে অর্থ পাচারকারী প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারকে ২২ বছরের সাজা দেন ঢাকার আদালত। ২০২২ সালে ১৪ জুন পিকে হালদারকে তার চার সহযোগীসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার করে দেশটির অর্থসংক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)। বর্তমানে পিকে হালদার ভারতে অবস্থান করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত