কেঁচো সার তৈরি করে হাজার থেকে লাখোপতি

মনজুর রহমান (লালমোহন) ভোলা
প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ২১
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৫৩

ভোলার লালমোহনে কেঁচো সার উৎপাদন করে বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি নিজের ভাগ্য বদল করেছেন শিক্ষিত যুবক মঞ্জুর হোসেন। ১ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে তিনি এখন লাখোপতি। গড়ে তুলেছেন কেঁচো বা জৈব সারের একটি খামার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালমোহনের পশ্চিম চর উমেদ গ্রামে যুবক মঞ্জুর হোসেন নিজ খামারে কেঁচো সার তৈরি করেন। মাত্র ১ হাজার টাকা নিয়ে গড়ে তোলেন কেঁচো সারের খামার। প্রতি মাসে আয় করেন ৩০ হাজার টাকা। বর্তমানে তিনি ৫ লাখ টাকার মালিক। নিরাপদ ফসল উৎপাদনে এই সার দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দুই বছরে তিনি হয়ে উঠেছেন সফল খামারি। 

এ বিষয়ে মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘বিষমুক্ত নিরাপদ ফসল উৎপাদনে কেঁচো সারের কোনো বিকল্প নেই। দুই বছর আগে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কেঁচো সার উৎপাদনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এরপর ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছি ভার্মি কম্পোস্ট খামার। অনলাইন ও অফলাইনের মাধ্যমে শুরু করি সার বিক্রি। রিং, কারেন্ট ও হাউস পদ্ধতিতে এই সার উৎপাদন করা হয়। কেঁচো, গোবর, কচুরিপানা, কলাগাছ, খড়কুটা, ও তরিতরকারি দিয়ে ২৫-৩০ দিনের মধ্যেই তৈরি করা হয় এই কেঁচো বা জৈব সার। এই সার কুমিল্লা, যশোর, ঢাকা ও পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করছি। এই সারে কৃষকেরাও ভালো ফলন পাচ্ছেন।’

ফসলের খেতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে গিয়ে যখন কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। ঠিক তখনই স্বল্পমূল্যের কেঁচো সারে ভালো মানের ফসল উৎপাদন করছেন কৃষকেরা। শিক্ষিত যুবক মঞ্জুরের দেখাদেখি এখন অনেকেই ঝুঁকে পড়ছেন কেঁচো সার তৈরিতে। লালমোহনে বেশির ভাগ কৃষক এখন অন্যান্য সারের পরিবর্তে ব্যবহার করছেন কেঁচো সার। এতে ফসলের উৎপাদন ভালো হচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা। বর্তমানে ওই এলাকার ৫০ জন কৃষক-কৃষানি কেঁচো সার উৎপাদন করছেন। কৃষি অফিসও তাঁদের দিচ্ছে নানা পরামর্শ। 

এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষানি ভুলু রানি বলেন, ‘মঞ্জুকে দেখে আমিও কেঁচো সার তৈরি শুরু করেছি, বর্তমানে আমি আটটি রিং দিয়ে কেঁচো সার উৎপাদন করছি।’ 

স্থানীয় কৃষক মো. হানিফ বলেন, ‘এ বছর কেঁচো সার দিয়ে বাদাম, ধান ও মরিচের আবাদ করেছি। এতে ফলন অনেক ভালো হয়েছে।’ 

স্থানীয় কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘এই সারে ধান, ভুট্টা, মরিচ ও মুগডাল আবাদ করেছি। অন্য সারের তুলনায় অর্ধেক খরচ হয়েছে।’ 

এ ব্যাপারে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. এমাজ উদ্দিন জানান, কেঁচো সারটি ফসল উৎপাদনের জন্য অনেক ভালো। মঞ্জুর হোসেন কৃষি অফিসের সহযোগিতা নিয়ে সফল হয়েছেন। এই সার ব্যবহারে খরচও অনেক কম। এই সার ব্যবহারে একদিকে যেমন ফসলের উৎপাদন ভালো হয়, অন্যদিকে রাসায়নিক সারের জন্য কৃষকদের বাড়তি অর্থ গুনতে হয় না। এই সার উৎপাদন করে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন মঞ্জুর হোসেন। আর তাঁকে দেখে গ্রামের অনেক যুবক ও নারী ঝুঁকে পড়ছেন বিষমুক্ত জৈব সার উৎপাদনে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণের ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত