তালতলীতে যুবলীগ কর্মীকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২১: ০৫
Thumbnail image

বরগুনার তালতলীতে যুবলীগ কর্মী ও উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মোসলেম উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে জাফরুল হাসান সুমনকে (৩০) বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তালতলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল হক, তাঁর দুই ছেলে নাঈম, অন্তুসহ বিএনপির নেতা–কর্মীরা এই নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন হাওলাদারের। পরে নির্যাতনকারীরা সুমনকে তালতলী থানা-পুলিশে সোপর্দ করেন।

মোসলেম উদ্দিন আরও বলেন, ছেলেকে নির্যাতন শেষে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটিতে সুমনকে বাঁধা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তালতলী বাজারে শহীদুল হকের বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে।

তবে তালতলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল হক ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিএনপির দুই কর্মী ফোরকান হোসেন ইমরান ও জহিরুল হক ছোট্টকে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কিছু নেতা–কর্মী কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। ওই ঘটনার রেশ ধরে মামলার বাদীপক্ষের লোকজন সুমনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধরের কথা তিনি অস্বীকার করেন। জখম জহিরুল হক ছোট্ট তাঁর ছোট ভাই।

আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ সুমনকে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করেছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর তালতলী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনের জের ধরে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় দুলাল হাওলাদার বাদী হয়ে ৪৯ জনের নামে তালতলী থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে যুবলীগ কর্মী জাফরুল হাসান সুমনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে আটক করা হয় বলে তালতলী থানার ওসি জানান।

জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় সুমন বাবা-মায়ের জন্য তালতলী বাজার থেকে ওষুধ কিনে গাড়িতে বাড়ি ফিরছিলেন। তালতলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল হকের বাসায় সামনে তাঁর গাড়ি আসামাত্রই শহীদুল হক, তাঁর দুই ছেলে নাঈম, অন্তুসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা–কর্মী তাঁকে টেনেহিঁচড়ে গাড়ি থেকে নিচে নামান।

পরে তাঁকে সড়কের পাশে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন। প্রায় ২০-২৫ মিনিট তাঁর ওপর নির্যাতন চালান তাঁরা। তাঁর ওপর শহীদুল হক ও তাঁর লোকজনের এমন নির্যাতনের দৃশ্য স্থানীয়রা প্রত্যক্ষ করেন কিন্তু তাঁদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।

Amtaliতালতলী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম পাটোয়ারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মারধরের শিকার জাফরুল হাসান সুমন যুবলীগ কর্মী।’

যুবলীগ কর্মী জাফরুল হাসান সুমন বলেন, ‘বাবা-মায়ের জন্য ওষুধ কিনে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল হক, তার দুই ছেলে নাঈম, অন্তুসহ ১০-১২ জন বিএনপি নেতা–কর্মী আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ফেলে। পরে তারা আমার ওপর অমানসিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতন শেষে তারা আমাকে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আমি এ ঘটনার শাস্তি দাবি করছি।’

তালতলী উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোসলেম উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘আমার ছেলেকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে শহীদুল হক, তার দুই ছেলে ও বিএনপির নেতা–কর্মীরা মারধর করেছে। আমার ছেলেকে নির্যাতন করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আমি শাস্তি দাবি করছি।’

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কালাম খান বলেন, ‘মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে জাফরুল হাসান সুমনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। তবে তাঁকে খুঁটির সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় পুলিশ পায়নি। সুমন তদন্তাধীন একটি মামলার আসামি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

দেওয়ানি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে একগুচ্ছ সুপারিশ কমিশনের

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত