ইন্দোনেশিয়ার কয়লার জাহাজ পায়রায়, বিদ্যুৎসংকট কমার আশা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৩, ১৬: ১৩
আপডেট : ২৩ জুন ২০২৩, ১৬: ৩২

ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে পায়রা বন্দরে পৌঁছেছে জাহাজ। ১৮ দিন পর আবার চালু হচ্ছে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বেড়ে সংকট কিছুটা কমবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

৪১ হাজার ২০৭ টন কয়লা নিয়ে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী জাহাজ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পায়রা সমুদ্রবন্দরে এসে পৌঁছায় বলে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল হাসিব জানান। 

শাহ আব্দুল হাসিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাহাজ থেকে সম্পূর্ণ কয়লা খালাস করতে আরও দুই-তিন দিন লাগবে। আমরা আগামীকাল (২৪ জুন) রাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছি। পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় ইউনিটও উৎপাদনে যাবে।’

কয়লাসংকটের কারণে গত ২৫ মে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পরে গত ৫ জুন বন্ধ হয় দ্বিতীয় ইউনিট। মূলত শুরু থেকেই পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা কিনতে ঋণ দেয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চীনা অংশীদার চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (সিএমসি)। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা কেনার দায়িত্বও সিএমসির।

কয়লা কেনার জন্য সিএমসিকে অর্থ দিয়ে থাকে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রায় ৩৯০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা) পায়রার কাছে সিএমসি বকেয়া। বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় নতুন করে কয়লা কেনা যাচ্ছিল না।
 
ডলারের সংকটে সর্বশেষ প্রায় ৩০ কোটি ডলার বকেয়া পড়ে। এ কারণে কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। পরে বকেয়ার ১০ কোটি ডলার পরিশোধ করে আবার কয়লা সরবরাহ শুরু করতে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে রাজি করানো হয়।

পায়রা সমুদ্রবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আজিজুর রহমান বলেন, ‘এমভি এথেনা জাহাজটি ১০ মিটার গভীরতায় বন্দরের ইনটার অ্যাংকরে অবস্থান করছে। ১ জুলাই কয়লা নিয়ে আরও একটি জাহাজ আসার কথা রয়েছে। ঈদের পর ধাপে ধাপে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আরও অন্তত ১০টি জাহাজ আসার কথা রয়েছে।’

১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট আছে। প্রতিটির উৎপাদন সক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট পূর্ণ সক্ষমতায় চালালে প্রতিদিন সাড়ে ৬ হাজার টনের মতো কয়লা লাগে। সেই হিসাবে নতুন আমদানি করা এই কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট পূর্ণ সক্ষমতায় ছয় দিনের একটু বেশি চালানো যাবে বলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে পর্যায়ক্রমে আরও ঋণপত্র খোলা হবে। সামনের দিনগুলোতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার পরিকল্পনা আছে। 

কয়লার মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র ৫ জুন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে দেশব্যাপী ব্যাপক লোডশেডিং শুরু হয়। এর আগে গত ২৫ মে থেকে বন্ধ হয়ে যায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন। 

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিন বছর আগে উৎপাদনে আসার পর এই প্রথম ৫ জুন কয়লা সংকটের কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়েছিল।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত