Ajker Patrika

অফিসে না এসেও ক্লার্কের হাজিরা, ব্যবস্থা নিতে চিঠি

  • বনী আমিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ইস্যু ক্লার্ক
  • অফিসে আসেন ইচ্ছেমতো, হাজিরা খাতায় একবারে সব স্বাক্ষর করেন
  • শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে
খান রফিক, বরিশাল 
মো. বনী আমিন।
মো. বনী আমিন।

মো. বনী আমিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ইস্যু ক্লার্ক। অফিসে আসেন নিজের ইচ্ছেমতো। হাজিরা খাতায় একবারেই করেন মাসের সব স্বাক্ষর। গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। অবশেষে বনী আমিনের লাগাম টানতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. গাজী জহিরুল ইসলাম। চিঠিতে তিনি বনী আমিনের বিরুদ্ধে কাজে অবহেলা, শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, কিছুদিন আগেও সাবেক সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে বনী আমিনের ছবি সংবলিত বিলবোর্ড মহাসড়কে দেখা যেত। একসময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলাও রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. গাজী জহিরুল ইসলাম ১৯ মার্চ রেজিস্ট্রার বরাবর বনী আমিনের বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে জরুরি ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বনী আমিনের বিরুদ্ধে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীরা অসদাচরণের অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই বছরের ৬ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট গ্রন্থাগারের সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, বনী আমিন অফিসে না এসে একবারে হাজিরা খাতায় সব দিনের স্বাক্ষর করেছেন। এ বিষয়ে গত ২৪ আগস্ট চিঠি দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর ফের গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি এবং উপাচার্যকে অবহিত করা হয় বিষয়টি। কিন্তু এরপরও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। লাইব্রেরিয়ান চিঠিতে আরও উল্লেখ করেছেন, ২০২০ সালে দায়ের ধর্ষণ মামলার আসামি হওয়ায় সাময়িক বরখাস্তও হন বনী আমিন। এরপর থেকে নারীশিক্ষার্থীরা তাঁর কাছে বই ইস্যু, বই জমাদানে বিব্রতবোধ করছেন।

এ প্রসঙ্গে লাইব্রেরিয়ান ড. গাজী জহিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বনী আমিনের বিরুদ্ধে ২০২৩ সাল থেকে নানা অভিযোগ আসছে। তিনি রাজনৈতিক প্রভাবে অফিসে অনিয়মিত। এ জন্য বনী আমিনকে দ্রুত গ্রন্থাগার থেকে প্রত্যাহার করে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে গত রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ফোন করা হলে বনী আমিন জানান, তিনি বাইরে আছেন, এখনো অফিসে যাননি। অভিযোগ প্রসঙ্গে বনী আমিন পাল্টা প্রশ্ন করেন, তিনি দায়িত্ব পালন না করলে কাজটি কে করেন? তাঁর দাবি, তিনি ষড়ন্ত্রের শিকার। শিক্ষার্থীদের দেওয়া অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ তিনি দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ মহল তো তাঁকে কিছুই বলছে না। মহাসড়কে সাবেক মেয়রের ছবি দিয়ে বিলবোর্ড সাঁটানোর বিষয়ে অবশ্য তিনি কিছু বলতে চাননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম জানান, তিনি রোববার একটা চিঠি পেয়েছেন গ্রন্থাগার দপ্তর থেকে। বনী আমিনের বিষয়ে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, তা তিনি জানেন না। এটি আইনগত বিষয়। যাচাই-বাছাই শেষে হয়তো কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুচিতা শরমিনকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম রব্বানী আজকের পত্রিকাকে বলেন, গুরুতর অভিযোগ উঠলে তদন্ত করে দেখা উচিত। ড. গোলাম রব্বানী আরও বলেন, তিনি রেজিস্ট্রারের কাছে জানতে চাইবেন শিক্ষার্থীদের দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনের আগে জোট নয়, এনসিপির সঙ্গে কাজ করার ইঙ্গিত বিএনপির

জয়পুরে সম্প্রীতির নজির, ঈদগাহে আসা মুসলিমদের ওপর ফুল ছিটালেন হিন্দুরা

বাসা ভাড়ার টাকা নেই, অফিসের টয়লেটেই থাকছেন চীনা তরুণী

ঈদের মোনাজাতে খালেদা জিয়ার নাম না বলায় ইমামকে হেনস্তা, চাকরিচ্যুতির হুমকি

কোম্পানি দেউলিয়া, দেড় কোটি মানুষের ডিএনএ ডেটার এখন কী হবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত