হস্তান্তরের আগেই ২ কোটি টাকার মুজিব কিল্লায় ফাটল

বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩, ১৬: ৫৪
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৩, ১৬: ৫৯

বরগুনার তালতলীতে তামাতুটিলা মুজিব কিল্লা ভবন হস্তান্তরের আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে কার্যাদেশ অনুসারে ভবন বুঝিয়ে না দিলে বিল দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

তালতলী উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানুষের জানমাল রক্ষায় বরগুনার তালতলীতে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। এর আওতা একটি ভবন নির্মাণের জন্য সরকার ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে দরপত্র আহ্বান করেন। ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ পায় পটুয়াখালীর সোনালী ট্রেডার্সের মালিক সঞ্জয় কুমার কর্মকার।

এদিকে শিডিউল অনুযায়ী ভবনটি ওই অর্থ-বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

তালতলী তামাতুটিলা মুজিব কিল্লা ভবনসরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটির কাজ, ভবনের স্লোব, লিংটেন, ক্যাটল শেডে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ছাড়াও মুজিব কিল্লার চারদিকের সিসি বকও দেবে গেছে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নজরুল ইসলাম লিটু বলেন, মুজিব কিল্লায় ভবন নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করানো হয়েছে। আমরা একাধিকবার তাদের বলতে গেলে তারা বলেন, ‘উন্নয়নকাজে বাঁধা দিতে আসিয়েন না।’

তালতলী তামাতুটিলা মুজিব কিল্লা ভবনস্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নিম্নমানের ইট, পাথর ও বালু ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা বলতে গেলে ঠিকাদারের লোকজন ধমক দিয়েছে আমাদের।’

ওই বিষয়ে ভবন নির্মাণের ঠিকাদার সোনালী ট্রেডার্সের মালিক সঞ্জয় কুমার কর্মকার মুঠোফোনে বলেন, ভবনটি এখনো হস্তান্তর করা হয়নি। নির্মিত ভবনের কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে, সেগুলো সংস্কার করার পরে ভবনটি হস্তান্তর করা হবে।

তালতলী তামাতুটিলা মুজিব কিল্লা ভবনমুজিব কিল্লা প্রকল্পের প্রকৌশলী মো. শামছুদ্দোহা মোবাইল ফোনে বলেন, ‘ভবনের কয়েকটি স্থানে ফাটল আছে। ঠিকাদারকে একাধিকবার ঠিক করে দিতে বলেছি। কিন্তু তিনি ঠিক করে দিচ্ছেন না। ফাটল সংস্কার না করা পর্যন্ত আমরা ভবনটি বুঝে নেব না।’

ভবন নির্মাণকাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুহিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সম্প্রতি এই উপজেলায় যোগদান করেছি। ভবন নির্মাণের সময় ছিলাম না।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাটি ভালোভাবে সেটিং না হওয়ার কারণে ভবনে ফাটল ধরতে পারে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ারকে ফাটলগুলো মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ‘ফাইনাল বিল ধরে রাখা হয়েছে। ভবনের ফাটল সংস্কার না করা পর্যন্ত ঠিকাদারকে কোনো বিল দেওয়া হবে না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত