আমি ওকে অনেক ভালোবাসি, আমাকে দাদুর বাড়িতে দাফন কইরো!

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২১, ০১: ২১

আত্মহত্যার একদিন পর শুক্রবার একটি চিঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ। চিঠিতে লেখা, 'যদি পারো আমাকে মাফ কইরো, আর ওরে কিছু বইলোনা, আমি ওরে খুব ভালোবাসি, আমার কছম ওরে কিছু বলবা ওর নাম কারো কাছে বলবানা, আর আমাকে দাদুর বাড়িতে দাফন কইরো।' ময়নাতদন্ত শেষে এই চিঠি উদ্ধারের পর গভীর অনুসন্ধানে নেমেছেন তাঁরা, বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা। 

গতকাল বৃহস্পতিবার বরগুনার পাথরঘাটায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন রাজিয়া সুলতানা (১৮) নামে এক তরুণী।  বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে তাঁর ঝুলে থাকা মৃতদেহ উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। মৃত রাজিয়া সুলতানা বরগুনার তালতলী উপজেলার লাউপাড়া এলাকার ফজলুল হকের মেয়ে। ঘটনার পর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পাথরঘাটা থানা পুলিশ। এরপর থেকে আত্মহত্যার পেছনের কারণ উদঘাটনের চেষ্টায় অনুসন্ধান করে থানা পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজিয়ার সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলামের দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। রাজিয়ার সঙ্গে রফিকুলের প্রেমের সম্পর্কে পারিবারিকভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত গড়ায়। তবে তা আবার ভেঙে যায়। এ কারণে রাজিয়াকে পাথরঘাটায় তাঁর খালার বাড়িতে পাঠানো হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। তবে মাঝে মাঝে রাজিয়ার সঙ্গে রফিকের যোগাযোগ হতো। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার আত্মহত্যার আগেও রফিকের সঙ্গে রাজিয়ার কথা হয়। তবে কি কথা হয়েছে সে বিষয়ে জানা যায়নি।

এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজিয়া সুলতানার খালা লাবনী আক্তার বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আমার ছোট ছেলেকে রাজিয়ার কাছে রেখে বড় মেয়েকে নিয়ে আমি স্কুলে যাই। কিন্তু স্কুল থেকে ফিরে ঘরের দরজা বন্ধ পাই। অনেক ডাকাডাকির পরেও না খোলায় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় রাজিয়াকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
 
লাবনী আক্তার আরও বলেন,  আমার ভাগনি রফিকুলের গালাগালি সহ্য না করতে পেয়ে ঘৃণায় আত্মহত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।

তবে আজ শুক্রবার রাজিয়া সুলতানার লেখা চিরকুট উদ্ধারের পর বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশ গভীর অনুসন্ধান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মামুন। তিনি জানান, শুক্রবার সকালে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে তালতলীতে দাফন করা হয়েছে। তার স্বজনরা পাথরঘাটায় ফিরে এলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এ বিষয়য়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত