পটুয়াখালীতে বিনা চাষে আলুর দারুণ ফলন

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
Thumbnail image

পটুয়াখালীতে প্রথমবারের মতো বিনা চাষে আলু উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন কৃষকেরা। লবণাক্ত জমিতে কম খরচ, কম সার ও কম সেচ দিয়ে ভালো ফসল পাওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে এ পদ্ধতি ব্যবহারে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। 

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগ এই পদ্ধতিতে আলু উৎপাদনে বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক ও বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়েছে। 

জানা গেছে, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে ৫০ শতাংশ জমিতে বিনা চাষে আলুর আবাদ করেছেন স্থানীয় কৃষক জাকির হোসেন। ধান কাটার পরপরই ভেজা মাটিতে কোনো চাষ না দিয়েই নির্দিষ্ট দূরত্বে আলু বপন করেন। পরে খেতে খড়কুটা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। 

ধান কাটার পর বিনা চাষেই আলু আবাদে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক জাকির হোসেন। কৃষি বিভাগ বলছে, প্রচলিত পদ্ধতিতে বেশি ফলন হলেও এখানে প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করেও বিনা চাষে এই আলু একর প্রতি ২০ থেকে ২৫ টন পর্যন্ত ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা দেখিয়েছে। এ ছাড়া এই আলু দেখতেও অনেক সুন্দর। কম খরচে ভালো ফলন পেয়ে খুশি কৃষক জাকির হোসেন। 

ধানখালী এলাকার কৃষক জাকির হোসেন বলেন, ‘বিনা চাষেও আলু হতে পারে এটা আমাদের জানাই ছিল না। কৃষি গবেষণা বিভাগ আমাদের এই আলুর বীজ দেয়। তাঁদের সহযোগিতায় বিনা চাষে ভালো আলু পাওয়া গেছে। আলহামদুলিল্লাহ, আলুর ভালো ফলন হওয়ায় আমি খুশি। প্রতিবছরই এভাবে আলু আবাদ করব।’ 

ওই এলাকার কৃষক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিনা পরিশ্রমে আলু আবাদ করা যায় তা এই প্রথম দেখলাম জাকির ভাইয়ের খেত থেকে। আমাদের এই লবণাক্ত জমিতে ধান ছাড়া কিছুই হতো না। আমরা কৃষি কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই, আমাদের এলাকায় এই আলুর বীজ দেওয়ার জন্য। এখন আমি নিজেও এভাবে আলু আবাদ করব।’ 

ধান কাটার পর বিনা চাষেই আলু আবাদে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক জাকির হোসেন।এ ব্যাপারে বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি অতিরিক্ত পরিচালক মো. তাওফিকুল আলম বলেন, ‘দক্ষিণ অঞ্চলে আমন ধান কিছুটা বিলম্বে কাটা হয়। পরে জমি চাষ দেওয়াসহ প্রস্তুত করার আর সময় থাকে না। সে কারণে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সহজেই আলু চাষ বাড়ানো সম্ভব।’ 

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি আলু ৭২ এবং ৭৮ জাত দুটি প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করেও ভালো ফলন দিতে পারে। এ কারণে লবণ ও তাপ সহনশীল এই জাতটি চাষে কৃষকদের পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত